গেলবার পুজোয় মামাবাড়িতে অতটা মজা হয়নি তাই মামার বিয়ে ঠিক হতে ভেবেছিলাম এবার গিয়ে অনেক মজা করবো।
সেইমতো মামাবাড়িতে ঢুকে প্রথমেই মামার কম্পিউটার খুলে বসেছিলাম। মামা আমার জন্য অনেক সিনেমা ডাউনলোড করে রেখেছিল। ভেবেছিলাম মজা করে দেখব। কিন্তু বিয়েবাড়িতে দুদিন পর অনেক লোকজন চলে এসেছিল। সবাই খুব ব্যস্ত ছিল। বাবাকে কলাগাছ আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বাবা সে অনেক কান্ড করে কলাগাছ যোগাড় করেছিল। আর আমি সিনেমা দেখব কী! সারাদিন হাসি হাসি মুখে লোকজনের সাথে কথা বলছিলাম যাদের আমি কোনদিন দেখিইনি!
মামার ডেস্ক এ অনেক রং পেন্সিল রাখা থাকে, আমি খাতাপত্র নিয়ে গিয়েছিলাম আঁকবো বলে, ও মা! কোথায় কী! সব কে সরিয়ে রেখেছে! মা কে জিজ্ঞেস করলাম, মা এমন ভাব করলো যেন আমার কথা শুনতেই পায়নি!
তবে মজা হয়েছিল। একজন দাদু এসেছিলেন, উনি আমাকে আর বোনকে ম্যাজিক দেখাতেন। উনি বলেছিলেন, 'জানো বড়দিদি, আমাদের বাড়িতে হাতির মতো বড় বড় গরু মোষ আছে।'
আমি সেটা শুনে বলেছিলাম, 'তাহলে তো একটা গরু তোমাদের ওপর পড়লে তোমাদের পটল তুলতে হবে।' শুনে দাদু বললেন, ' তা বড়দিদি, আমরা তো সেই ছোটবেলা থেকেই পটল তুলছি কত!'
আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। পরে মা বলেছিল দাদুদের গ্রামের বাড়িতে আসলে অনেক পটল ক্ষেত আছে, চাষ হয়।
পরদিন সন্ধ্যা ছ'টায় সবাই গাড়ি চড়ে বরযাত্রী গিয়েছিলাম। বিয়ে হয়েছিল ধুমধাম করে কিন্তু আমি বিয়েটা দেখতেই পারিনি, মালাবদল, সিঁদুর দান কিচ্ছু না! খাওয়া দাওয়ার পর দশটা বাজতে না বাজতেই বাবা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। আমি ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
বিয়েটা ভালোই ছিল বটে, কিন্তু মামাও টিচার, মামীও। দুজনাই স্কুলে পড়ায়, আমি ভাবছিলাম আর কী মামাবাড়িতে আগের মতো মজা হবে ? না দুজনাই আমাকে ঘাড় ধরে পড়তে বসাবে!
গল্প লিখেছেঃ
রুদ্রপ্রিয়া সেন
সপ্তম শ্রেণি, সেন্ট জুডস্ হাই স্কুল, মধ্যমগ্রাম, কলকাতা
গ্রাফিকঃ মিতিল