"প্রিয় গোল্টু,
কেমন আছিস ভাই ? অনেকদিন তোর সাথে কথা হয় না ৷ এবার তো রাখিবন্ধনে বাড়ি যাওয়া হচ্ছেনা , তাই ভাবলাম তোর সাথে চিঠির মাধ্যমে কথা বলি ৷ মনে আছে ভাই ,গতবার রাখিবন্ধনে টাবলুদা গিয়েছিল ? সেবার টাবলুদা একটা রকেট এনেছিল , ফ্রান্স থেকে ৷ আমার তো রকেটটা দেখে কত্ত পছন্দ হয়েছিল , কিন্তু টাবলুদা একবারও খেলতে দেয়নি ৷ আমার খুব রাগ হয়েছিল ৷ ভেবেছিলাম রকেটের মুন্ডিটা একটু থেঁতলে দি ৷ তবে মা সামনে ছিল বলে সেটা করার মতো বুকের পাটা ছিল না !
তারপর ভাই মনে আছে, পরদিন পাশের বাড়ির বাবলা মামাদের গৃহপ্রবেশে খিচুড়ি আর বেগুন ভাজা করেছিল ? আমি তো খেতে গিয়ে দেখলুম যে বেগুনের ভেতর থেকে একটা পোকা বেরিয়ে আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে ! অনেকে ছিল বলে আমি চিৎকারটা দিতে পারিনি, কিন্তু বাকী খাবারটা মায়ের হাতেই খেয়েছিলাম, নিজের আর খেতে সাহস হয়নি... কী জানি খিচুড়ি থেকে আবার আরশোলা বেরিয়ে আসে নাকি !
ফেরার পথে নবদ্বীপ গিয়েছিলাম , সেখানে রমেশ দাদুর ইজিচেয়ারটা দেখে খুব বসতে লোভ হয়েছিল ৷ দাদু খুব ভালোমানুষ , আমি যখন চেয়ারে বসতে চেয়েছিলাম উনি কিচ্ছু বলেননি ৷ তবে আমি এমন দাপাদাপি, লাফালাফি শুরু করেছিলাম যে, সেটা দেখে বাবা আমাকে ঘাড় ধরে নামিয়ে দিয়েছিলেন ৷
জানিনা আবার কবে দেখা হবে ৷ তাই একটু কথা বলার জন্য তোকে চিঠিটা লিখলাম, আর একটা ছোট্ট রাখি পাঠালাম ৷ মন দিয়ে পড়াশুনো করবি ,তার সাথে একটু দুষ্টুমিও করিস ৷ একদম লক্ষীছেলে হতে হবেনা ৷
-ইতি
তোর অতিরিক্ত বিচ্ছু মিমিদিদি"
চিঠিটা লিখে যেইনা রাখিটা খামে ভরতে গেছি দেখি আমাদের বাড়ির কুকুর জেনী রাখিটা কামড়ে ,ছিঁড়ে কুটিকুটি করে দিয়েছে ! এত রাগ হয়েছিল আমার , দুপুরে আর ওটাকে খেতে দেইনি ৷
গল্প লিখেছেঃ
রুদ্রপ্রিয়া সেন
সপ্তম শ্রেণি, সেন্ট জুডস্ হাই স্কুল, মধ্যমগ্রাম, কলকাতা
গ্রাফিকঃমিতিল