আমি এই প্রথম ইচ্ছামতী দেখলাম। এটা ঠিক কী বল তো?
-ইচ্ছামতী বাংলা ভাষায় শুধুমাত্র ছোটদের জন্য প্রথম সম্পূর্ন ভাবে ইউনিকোড বাংলা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা ওয়েব ম্যাগাজিন। ইচ্ছামতীর কোন ছাপা সংস্করন নেই বা ছিলনা। ইচ্ছামতীর প্রথম প্রকাশ ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮; এখনো অবধি ২০টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে, মোটামুটি তিন মাস অন্তর।
তাই নাকি? তা ইচ্ছামতীর নতুন সংখ্যা আবার কবে বেরোবে?
- ইচ্ছামতীর নতুন সংখ্যা আর বেরোবে না।
সে কী ? তাহলে কী হবে? বন্ধ করে দিচ্ছ নাকি?
-একদমই না। ইচ্ছামতী এখন থেকে, সারা বছর ধরে, নিয়মিত ভাবে নতুন কন্টেন্ট আপডেট করবে, বা বলা চলে, নিয়মিত মনের রসদের যোগান দেবে। চেষ্টা করা হবে প্রতি সপ্তাহেই অন্তত একটা নতুন কোন গল্প/ কবিতা/রূপকথা/তথ্যমূলক রচনা প্রকাশ করার। একের বেশিও প্রকাশ করা হতে পারে। আসল কথা, তিন মাস পরে পরে লেখক- পাঠক বন্ধুদের সাথে মোলাকাত যথেষ্ট নয়। তাই এই প্রচেষ্টা। এবং ইচ্ছামতী এই ফরম্যাটে এসে গেছে ২০১৩-এর পুজোর সময় থেকেই।
তাই? সেরকম তো মনে হচ্ছে না। প্রতি সপ্তাহ কেন, প্রায় দুই মাস কোন নতুন লেখা প্রকাশ হয়েছে বলে দেখতে পাচ্ছি না!
-ঠিকই বলেছ। ২০১৩ এর নভেম্বর-ডিসেম্বর এ কোন নতুন লেখাই প্রায় প্রকাশিত হয়নি। চাঁদের বুড়ি বড়ই ঝড় ঝাপ্টার মধ্যে দিয়ে গেছে সেই সময়ে। তার চরকা-চশমা-রামধনুরং গুলিসুতো সবই গেছিলে ঝড়ে ভেঙে, হাওয়ায় উড়ে, জলে ভেসে... সেইসব গুছিয়ে এনে আবার কাজে কর্মে মন লাগাতে একটু সময় লাগল। এইরকম আর কোনদিন হবে না, -সেরকম কোন কঠিণ প্রতিজ্ঞা সে করছে না, তবে যেন এরকম না হয়, সেটা বজায় রাখার চেষ্টা করবে আপ্রাণ।
বুঝলাম। আমি কি ইচ্ছামতীকে লেখা পাঠাতে পারি?
-একশোবার পার। তবে সেই লেখা হতে হবে ছোটদের মনের মত।
কীভাবে পাঠাব?
-ইচ্ছামতীকে লেখা পাঠানো খুব সোজা। তোমার লেখা গল্প, ছড়া, ভ্রমণ কাহিনী, বা তথ্যমূলক যেকোন ধরনের লেখা, ইউনিকোড ফরম্যাটে টাইপ করে, doc /odt/txt ফাইলে মেইল করে দাও
ওহ! আচ্ছা! তা তোমার এত নির্দেশ আমি শুনব কেন বাপু?
-সে তুমি না শুনতেই পার, কিন্তু যদি শোন তাহলে আমার একটু সুবিধা হয়। সম্পাদকের মেইলবক্সে রোজ কত মেইল আসে, নানারকমের লেখা নিয়ে। তার মধ্যে অনেকগুলির নাম যদি শুধু "ছড়া" বা "গল্প" বা"ইচ্ছামতী"- এইরকম হয়, তাহলে সেগুলিকে বাছাই করতে অসুবিধা হয়। ফাইলের নামের মধ্যে লেখকের নাম আর লেখার নাম দুই-ই থাকলে, সম্পাদনার সময়ে সুবিধা হয়, এই আর কি!
আমার লেখা ইচ্ছামতীর পাতায় প্রকাশ হবে কিনা জানাবে তো?
-অবশ্যই। উত্তর দিতে কয়েকদিন দেরি হতে পারে, কিন্তু তোমার লেখা যদি ইচ্ছামতীতে প্রকাশনার জন্য বাছাই হয়, তাহলে অবশ্যই তোমাকে আগে থেকে মেইল করে জানানো হবে। আর লেখা প্রকাশ হওয়ার পরেও জানানো হবে।
লেখা পাঠানোর কতদিনের মধ্যে প্রকাশ হবে?
-চেষ্টা করা হবে, বাছাই হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই তোমার লেখাকে প্রকাশ করে ফেলার ।
আচ্ছা, ইচ্ছামতীর একটা ব্লগ ছিল দেখেছিলাম, সেটার এখন দেখি না কেন?
-ঠিকই বলেছ। ইচ্ছামতীর একটা ব্লগ ছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল পাঠকবন্ধুদের সাথে বেশি বেশি যোগাযোগ। সেই ব্লগ বেশ কিছুদিন নিয়মিত আপডেট হলেও, মাঝে নানারকমের সমস্যায় তাকে আর নিয়মিত রাখা যায়নি। এখন থেকে ইচ্ছামতী যেহেতু অল্প সময়ের ব্যবধানেই নতুন নতুন লেখা প্রকাশ করবে, তাই ওই ব্লগ আপাতত বন্ধ রাখা হল।
আরো একটা প্রশ্ন আছে। ইচ্ছামতী আগে নিজের পুরনো সংখ্যাগুলির ফ্রি PDF ডাউনলোড করতে দিত। এখন দেখি না কেন?
-ঠিক। ইচ্ছামতী অনেক বছর আগেই ফ্রি PDF দেওয়া শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝে বেশ কিছু সমস্যার কারণে নিয়মিত আপডেট করা হয়নি, পুরনো লিঙ্কগুলিও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন আবার পুরনো সব সংখ্যাগুলির পিডিএফ ভার্সন ডাউনলোড কর এই লিঙ্কে।
হুমমম, যদিও তুমি আগেই বলেছ একবার, তাহলেও আবার জিজ্ঞাসা করি , ইচ্ছামতীর নতুন সংখ্যা কবে বেরোবে?
- এরই মধ্যে ভুলে গেলে? ইচ্ছামতী এর পর থেকে আর আলাদা আলাদা সংখ্যা হিসাবে বেরোবে না। সারা বছরই নিয়মিত ইচ্ছামতী নতুন নতুন লেখায় ভরে উঠবে। যাতে প্রায় রোজই ইচ্ছামতীর সাথে তোমার দেখাশোনা হয়, তার জন্যেই এই ব্যবস্থা।
কিন্তু, কোন "পত্রিকা", মানে ম্যাগাজিন কি এইভাবে প্রকাশ হয় নাকি? পত্রিকা সবসময়ে সপ্তাহে একটা, বা মাসে একটা, বা তিন মাসে একটা,এইরকম নিয়ম মেনে প্রকাশ হয়। ইচ্ছামতী কি তাহলে আর ওয়েব ম্যাগাজিন রইল না?
- এই প্রশ্নটার উত্তর একটু বড়। দাঁড়াও, একটু চা খেয়ে নিই ...
এইবার বলি, যদিও আমরা বা আমাদের বন্ধুরা বেশিরভাগ ওয়েবম্যাগাজিনকে কাগজে ছাপানো পত্রিকার ধাঁচেই প্রকাশ করি - মানে ওই একটা সূচিপত্র, একটা সম্পাদকীয়, তারপরে নানা বিভাগের লেখা, এইসব নিয়ে এক, তিন বা ছয়মাস পরে একবার করে প্রকাশ করা, এটা তো ভুলে গেলে চলবে না যে সংযোগ মাধ্যম হিসাবে ওয়েব বা আন্তর্জালের ও কিছু নিজস্বতা আছে। তার সেই স্বাতন্ত্রই ওয়েবকে কাগজে মুদ্রিত পত্রিকার থেকে আলাদা রেখেছে, তাই না? যেমন ধর, ওয়েবের যে হাইপারলিঙ্ক করার ক্ষমতা, সেটা তো মুদ্রিত মাধ্যমে নেই। এবার এই হাইপারলিঙ্ক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ওয়েব ব্যবহারের অভিজ্ঞতা হয় একটা ছাপানো পত্রিকা পড়ার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সেটা তোমরা যারা নিয়মিত ইন্টারনেট সার্ফ কর, তারা খুব ভালভাবেই জান।
পাঁচ বছর এবং ২০টা সংখ্যার পরে, ইচ্ছামতীর অনেক শুভাকাঙ্খী পাঠক-লেখকদের সাথে কথাবার্তা বলে আমার মনে হয়েছে, পাঠক বন্ধুদের সাথে নিয়মিত সংযোগ রাখার জন্য তিন মাসের ব্যবধান কমিয়ে আনা উচিত। তার সাথে ইচ্ছামতীর উচিত মুদ্রিত পত্রিকার নিয়মে না চলে একটা পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট হিসাবে বড় হয়ে ওঠা। সেই লক্ষ্যেই অনেক দিন আগেই ইচ্ছামতীর একটা পোর্টাল পেজ, বা হোমপেজ তৈরি করে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। আধুনিক ওয়েবসাইটের যেগুলি প্রাথমিক সুবিধা, যেমন সার্চ/অনুসন্ধানের সুবিধা, ট্যাগ্স্ এর সুবিধা করে দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রচেষ্টাকেই আরো এক ধাপ বাড়িয়ে ইচ্ছামতীর এই নতুন চেহারা।
আজকের দিনে, বেশিরভাগ দিশি এবং আন্তর্জাতিক ওয়েব ম্যাগাজিনগুলি যে ফরম্যাটে চলছে, সেই ফরম্যাটেই নিজেকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছে ইচ্ছামতী।
বাহঃ বেশ গুছিয়ে বললে । তা এখন আরেকটা প্রশ্নের জবাব দাও- সংখ্যাই যখন নেই, তখন জানবো কি করে কবে কখন লেখা পাঠাব?
-ভাল প্রশ্ন। এর উত্তর হল- ইচ্ছামতী মাঝে মাঝেই তার লেখকদের কাছে চিঠি পাঠাবে নতুন লেখার জন্য (ঠিক যেমন আগে পাঠাত)। যদি দেরি করে বা ভুলে যায়, আর তোমার কাছে কোন একটা মনের মত লেখা থাকে যেটা তুমি ইচ্ছামতীকে দিতে চাও, তাহলে দ্বিতীয়বার না ভেবে, সেই লেখা পাঠিয়ে দাও ইচ্ছামতীর মেইল -
ঠিক আছে। কিন্তু আমার মনে যদি আরো প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমি তার উত্তর কী ভাবে পাব?
তোমার মনে ইচ্ছামতীকে নিয়ে যাই প্রশ্ন থাকুন, সেটা লিখে পাঠিয়ে দাও ইচ্ছামতীর মেইল ঠিকানায়ঃ