একটি জঙ্গলে একটি বাচ্চা হাতি থাকত,যার নাম ছিল গুবলু। সে অন্য হাতিদের থেকে অনেক আলাদা ছিল। সে একদম খেতে চাইত না, তাই সে খুব রোগা ছিল ।
তার বন্ধুরা তাকে একটা গান করে করে ভ্যাঙাতো -----
' ঝাঁটার কাঠি, সরু কাঠি।
গায়ে নেই জোর,
তোর ঘরের সব জিনিস
নিয়ে পালাবে চোর!'
গুবলুর খুব রাগ হতো আর মনটা খারাপ হয়ে যেত।
একদিন সে মনের দুঃখে জঙ্গল ছেড়ে চলে যাচ্ছিল। পথে বন্ধু মাছরাঙা আর হরিণের সাথে দেখা হল। তারা গুবলুকে বলল ' ওই দেখ ঝাঁটার কাঠি যাচ্ছে।'
গুবলু দুঃখে আর থাকতে পারল না, সে ঘন জঙ্গলটি ছেড়ে বেরিয়ে চলে যেতে লাগল।
কিছুদূর যাওয়ার পর সে দেখল একটা কলাগাছ আগেরদিন রাতের ঝড়ে মুচড়ে গেছে। গুবলুর তা দেখে খুব মায়া হল। সে পাশেই একটা পুকুর দেখতে পেল। গুবলু তার শুঁড় দিয়ে কিছুটা জল এনে গাছের গোড়ায় দিয়ে দিল এবং শুঁড়ে জড়িয়ে গাছটাকে যতটা সম্ভব সোজা করে দাঁড় করাল।
গাছটা থেকে হঠাৎ সোনালী রঙের আলো ঝিকমিক করে উঠল। গুবলুকে অবাক করে গাছটা কথা বলতে শুরু করল,
'ধন্যবাদ গুবলু আমাকে জল খাওয়ানোর জন্য। তুমি ভয় পেয়ো না গুবলু,আমি একটা জাদুর কলা গাছ।'
গুবলু ভয়ে ভয়ে বলল,
'তুমি কী চাও?'
গাছ বলল,
'আমি কিছু চাই না বরং আমি তোমাকে কিছু দিতে চাই।'
গুবলু বলল,
'কী?'
গাছ বলল,
'আমার কাঁদি থেকে একটা কলা শুঁড়ে করে ছিঁড়ে নিয়ে খাও দেখবে তোমার সব দুঃখ দূর হয়ে যাবে।'
গুবলু বলল,
'তুমি জানলে কী করে আমি দুঃখিত ?'
গাছ বলল,
' আমি সব জানি। তোমাকে বললাম না, আমি জাদুর গাছ। এবার ঝটপট একটা কলা খেয়ে নাও তো দেখি।'
গুবলু যেই কলা খেল, অমনি সে দেখতে দেখতে অন্য হাতিদের মত মোটাসোটা হয়ে গেল! গুবলু তখন অবাক হয়ে গেল। তারপর সে গাছকে ধন্যবাদ জানিয়ে খুশিতে শুঁড় নাড়াতে নাড়াতে আবার গভীর জঙ্গলের দিকে চলে গেল।
গল্প লিখেছেঃ
প্রার্থিতা সরকার
পঞ্চম শ্রেণি, হোলি এঞ্জেল্স্ স্কুল, কাটোয়া
গ্রাফিকঃ মিতিল