সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

 

পরিবেশ আন্দোলনকারী কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক শহরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপুঞ্জের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে যে বক্তৃতা দিয়েছেন তার অনুবাদ রইল। সম্পূর্ণ মূল ভাষণের ভিডিওটি রইল এই লেখার শেষে।

"আমি বলতে চাই আমরা তোমাদের লক্ষ্য করতে থাকবো।

যা হচ্ছে সব ভুল হচ্ছে। আমার এখানে থাকার কথা নয়। আমার তো এখন মহাসাগরের অপর পারের এক স্কুলে থাকার কথা। তোমরা আমাদের মতো ছোটদের কাছে এসেছ আশা নিয়ে! কী সাহস তোমাদের!

"তোমরা আমার স্বপ্ন আমার শৈশব তোমাদের ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে চুরি করেছ। তাও বলব আমি ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন। মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে। সমগ্র প্রজাতির বিলুপ্তির যাত্রা শুরুর মুখে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, আর তোমরা কেবল টাকার গল্প আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির গল্প শোনাচ্ছ। অদ্ভুত স্পর্ধা তোমাদের!

"তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিজ্ঞান তার নিজের জায়গায় স্বচ্ছ। কিন্তু তোমরা আদৌ বিজ্ঞানের কথা শুনছ না। বলে চলেছ তোমরা নাকি যথেষ্ট কাজ করছ, কিন্তু সমস্যার সমাধান কোত্থাও দেখা যাচ্ছে না।

"তোমরা বলছ তোমরা আমাদের কথা শুনছ, সমস্যাটার গুরুত্ব বুঝছ। কিন্তু যতোই রাগ আর দুঃখ হোক না কেন, আমি একথা বিশ্বাস করতে চাই না। যদি তোমরা সত্যিই পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে, এবং তারপরেও কোনও ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হতে, তবে তোমাদের আর মানুষ বলা যেতো না। আমি সেটা বিশ্বাস করতে চাই না।

"দূষণ দশ বছরে অর্ধেক করার যে জনপ্রিয় পরিকল্পনাটি আছে, তাতে কিন্তু উষ্ণায়নের মাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ৫০%। এছাড়াও নানারকম চেইন রিয়্যাকশনের আশঙ্কা থেকে যায়, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

"৫০% হয়তো তোমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে। কিন্তু এই সংখ্যাগুলোর মধ্যে টিপিং পয়েন্ট (tipping point), ফিডব্যাক লুপ, বিষাক্ত বায়ু থেকে হওয়া অতিরিক্ত উষ্ণায়ন এসব কিছুই ধরা নেই। এরা নাকি ভরসা করে আমাদের প্রজন্মের ওপর, এমন কিছু প্রযুক্তি, যা নেই বললেই চলে, তেমন কোনও প্রযুক্তির সাহায্যে নাকি বাতাস থেকে লক্ষ লক্ষ টন কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেওয়া যাবে!

"সুতরাং, ৫০% ঝুঁকির সম্ভাবনা আমরা একেবারেই মেনে নিচ্ছি না। আমাদের এই ঝুঁকির ফলাফল ভোগ করে বেঁচে থাকতে হবে।

"উষ্ণায়নের তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির নিচে রাখার সম্ভাবনা ৬৭% রাখার জন্য IPCC -র দেওয়া উপায় -

কার্বন বাজেট অনুযায়ী ২০১৮-র জানুয়ারিতে ৪২০ গিগাটন কার্বন ডাই অক্সাইড এমিশন বাকি ছিল। এখন সেই পরিমাণটা দাঁড়িয়েছে ৩৫০ গিগাটনেরও নিচে।

"তোমরা ভান করছ যেন এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে খুব সাধারণভাবে আর কয়েকটা প্রযুক্তির মাধ্যমে! বর্তমান দূষণের মাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় আগামী সাড়ে আট বছরের মধ্যে কার্বন বাজেট পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যাবে।

"এই পরিসংখ্যান এতটাই অস্বস্তিকর যে এই সমস্যা সমাধানের কোনও উপায় এই মুহূর্তে এখানে পাওয়া যাচ্ছে না। এবং তোমরা সেকথা জানানোর মতো পরিণতও এখনও পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারোনি।

"তোমরা আমাদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। কিন্তু আমরা নতুন প্রজন্মের মানুষজন তোমাদের এই বিশ্বাসঘাতকতা বুঝতে শুরু করেছি। ভবিষ্যত প্রজন্ম এখন তোমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। যদি তোমরা আমাদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হও, জেনে রেখো আমরা তোমাদের কখনও ক্ষমা করব না।

"আমরা তোমাদের এইভাবে পালাতে দেবো না। এখানে, এই মুহূর্তে সীমারেখা টানছি আমরা। সারাপৃথিবীর মানুষ জেগে উঠছে। এবং, তোমরা পছন্দ করো বা না-ই করো,পরিবর্তন আসছে।

"ধন্যবাদ।"

ভূতপূর্ব ইঞ্জিনিয়ার, বর্তমানে সাংসারিক কাজের মাঝে সু্যোগ পেলেই পড়া আর লেখার আনন্দে মাতার চেষ্টায় থাকেন। সেই গোত্রের মানুষ, যারা আর কিছু না পেলে ঠোঙ্গায় ছাপা খবরও মন দিয়ে পড়েন। সারাদিনের অনেকটা সময় কাটে মেয়ে কুটুনের সঙ্গে; তার কীর্তিকলাপ মাঝেমধ্যে লিখতে চেষ্টা করেন;বর্তমানে ধানবাদের বাসিন্দা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা