পুজোর ক'দিন নিশ্চয়ই নতুন জামা পরে সেজেগুজে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলে? একদিন হয়তো বন্ধুদের সঙ্গেও বেরোনোর প্ল্যান হতে পারে। আর সেজেগুজে হই-হই করে ঠাকুর দেখতে বেরোনো মানেই তো আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া, আর দেদার ছবি, ভিডিও তুলে দূরে থাকা আত্মীয়-বন্ধুদের সেসব ছবি আর ভিডিও পাঠিয়ে দেওয়া। সঙ্গে আছে স্মার্টফোন, নিজের হোক, বা বাবা-মায়ের, তাতে এসব কাজ নিমেষের মধ্যে হয়ে যায়। কিংবা ধরো, এক্কেবারে নতুন একটা জায়গায় গিয়েছ বেড়াতে, রাস্তাঘাট চেনা নয়, স্থানীয় লোকজনও বিশেষ চোখে পড়ছে না, যাকে রাস্তার হদিশ জিজ্ঞেস করা যায়। চিন্তা নেই, সঙ্গে আছে স্মার্টফোন, গুগ্ল ম্যাপের অ্যাপ খুলে জেনে নাও অচেনা রাস্তার সুলুকসন্ধান। এরকমভাবেই সারাদিনের বিভিন্ন কাজে আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রযুক্তির নানা মুখ, নানা নাম। এই যে খুব চেনা নামগুলো, যাদের সঙ্গে সারাদিনের ওঠা-বসা, তাদের নামকরণের নেপথ্যের গল্পগুলোর খোঁজ নিলে কেমন হয়? তবে এসো, জেনে নিই ফেসবুক, গুগ্ল, হোয়াট্স্অ্যাপ এবং এরকম আরও কিছু নামের আড়ালের কাহিনী।
মাইক্রোসফ্ট উইণ্ডোজ। সবার খুব চেনা অপারেটিং সিস্টেম, আজকের দিনে এটিকে বাদ দিয়ে কম্পিউটার-সংক্রান্ত কোনও কাজের কথা ভাবাই যায় না। ১৯৮৫ সালে যখন এই অপারেটিং সিস্টেমের প্রথম সংস্করণ Windows 1.0 সবার সামনে আসে, সেই সময়ে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম ছিল কম্যাণ্ড-নির্ভর। গ্রাফিক ইউজার ইণ্টারফেস (GUI)-নির্ভর অপারেটিং সিস্টেম তখন একেবারেই নতুন। এই দুইপ্রকার অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান পার্থক্য ছিল এই যে, GUI- তে কম্পিউটার স্ক্রিনে ফুটে উঠত একটি চৌকোনা বাক্স, যাকে বলা হয় উইণ্ডো, মাউসের সাহায্যে সেই উইণ্ডোতে একটিমাত্র ক্লিকের দ্বারা কাজ সেরে ফেলা যেত, যেখানে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমে (যেমন MS-DOS) কাজ করতে হলে কম্যাণ্ড দিতে হত।
মাইক্রোসফ্ট সংস্থার মূলমন্ত্র হল তাদের নতুন উদ্ভাবনের নামকরণে খুব অল্প কথা, পারলে একটি শব্দ ব্যবহার করা, এমন একটি শব্দ, যা কিনা সেই নতুন পণ্যের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য খুব সহজে সবাইকে বুঝিয়ে দিতে পারে। এই যে দু'রকম অপারেটিং সিস্টেমের পার্থক্য, সেটার মূলে কিন্তু ঐ স্ক্রিনে ভেসে ওঠা 'উইণ্ডো'টি। কাজেই তাদের এই নয়া উদ্ভাবনের নাম হিসেবে সংস্থা বেছে নিলো ‘উইণ্ডো' শব্দটিকে, যা কিনা উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গেই শ্রোতাকে মনে করিয়ে দেবে তার মূল বৈশিষ্ট্য কী।
১৯৯৬ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ল্যারি পেজ আর সের্গেই ব্রিন একটা নতুন সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করলেন, যার ডাকনাম তাঁরা দিয়েছিলেন ‘BackRub'। নতুন ওয়েবসাইটের পছন্দসই নাম খুঁজতে গিয়ে তাঁদের মাথায় এল ‘Googol' শব্দটা, ১-এর পাশে ১০০-টি শূন্য বসালে যে সংখ্যাটি পাওয়া যায়, সেটিই হল Googol। কেন এমন নাম? দুই স্রষ্টা ভেবেছিলেন এমন একটা নামের কথা, যা কিনা এই সাইটের তথ্যের খোঁজ দেওয়ার অসীম ক্ষমতার একটা আঁচ দিতে পারবে। কিন্তু ডোমেন নেম বাছাই করার সময় বানানের ভুলে ‘Googol' হয়ে গেল ‘Google', সৃষ্টি হল এক ঐতিহাসিক ওয়েবসাইট, যা ইণ্টারনেটে তথ্য খোঁজার ধ্যানধারণাকেই ওলট-পালট করে দিল।
ইয়াহু/ YAHOO, আজকের অতি পরিচিত একটা সার্চ ইঞ্জিন-এর শুরু ১৯৯৪ সালে, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দুই ছাত্র জেরি ইয়াং আর ডেভিড ফিলো-র হাত ধ'রে। ওয়েবসাইটটির নাম প্রথমে রাখা হয়েছিল ‘Jerry and David's guide to the World Wide Web'। এটি ছিল অন্যান্য ওয়েবসাইটের ঠিকানা পর্যায়ক্রমিকভাবে সাজিয়ে রাখার একটা ডাইরেক্টরি-জাতীয় ওয়েবসাইট।
Gulliver's Travels উপন্যাসের এক ভারি বেয়াড়া কাল্পনিক জাতির নাম থেকে পাওয়া YAHOO শব্দটি ছিল তাঁদের দুজনেরই বেশ পছন্দের। চলতি ভাষায় এর অর্থ হ'ল শিক্ষা-সহবৎহীন, আদবকায়দা না জানা কোনও একজন। এই YAHOO শব্দের প্রতিটি অক্ষর দিয়ে তাঁদের ওয়েবসাইটের একটা মজাদার বড়সড় নাম বা backronym-ও পেয়ে গিয়েছিলেন ইয়াং আর ফিলো, Yet Another Hierarchical Officious Oracle। শেষ অবধি ১৯৯৫ সালে YAHOO নামটাকেই ওয়েবসাইটের নাম হিসেবে পাকাপাকিভাবে বেছে নেওয়া হয়।
2017-sharodiya-dhoopchhaya-facebook.jpg
আমেরিকার কিছু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ডিরেক্টরিগুলোকে বলা হতো ফেসবুক, বা ফেস বুক, যাতে একেকটি শিক্ষাবর্ষের প্রতিটি ছাত্রছাত্রী, শিক্ষাকর্মীদের ছবি ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া থাকতো। ২০০০এর দশকে কিছু ফেস বুক অনলাইনে প্রকাশিত হতে থাকে, অনেকগুলো নতুন বৈশিষ্ট্যসমেত, যেমন, নিজের অ্যাকাউণ্টকে পাসওয়ার্ড-সুরক্ষিত করা, বিশদ তথ্য এবং ছবি যোগ করার সুবিধা, সাইটগুলোয় অনুসন্ধানের ব্যবস্থা আরও উন্নত করা ইত্যাদি।
২০০৪ সালে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মার্ক জুকারবার্গ thefacebook.com নামে একটা ওয়েবসাইটে একটি বেসরকারি অনলাইন ফেস বুক তৈরি করেন, যেটা কিনা এখনকার ফেসবুকের আদি সংস্করণ। এর আগে ২০০৩ সালে তিনি খেলাচ্ছলে তৈরি করেছিলেন www.facemash.com নামে একটি ওয়েবসাইট, ২০০৪-এ এল ফেসবুক। প্রথমদিকে কেবল হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাই এই ওয়েবসাইটের সদস্য হতে পারতেন। ২০০৬ সাল থেকে তেরো বছর এবং তার বেশি বয়সী সবার জন্য ফেসবুকের দরজা খুলে দেওয়া হয়। এরপর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর জগতে ইতিহাস তৈরি করলো ফেসবুক।
ভিডিও চ্যাট আর অনলাইন টেক্সট মেসেজিং-এর দুনিয়ায় এক বড়সড় নাম হলো স্কাইপ। ২০০৩ সালে শুরু হওয়া এই কোম্পানিটির নাম প্রথমে ছিলো Sky peer-to-peer, নামটা কোনও ব্র্যাণ্ডের নাম হওয়ার পক্ষে বেশ বড়, তাই তাকে ছোট করে নাম দেওয়া হল Skyper। কিন্তু এবারেও সমস্যা, Skyper শব্দটা দিয়ে ডোমেন নেম ইতিমধ্যেই রয়েছে, কাজেই Skyper থেকে ‘r' সরিয়ে ফেলে নতুন নাম দেওয়া হলো SKYPE, ওয়েবসাইটের নাম পাওয়া গেল, ভিডিও কলিং আর মেসেজিং-এর জগতে সাড়া ফেলে দিল SKYPE.
সঙ্গে স্মার্টফোন আছে, অথচ তাতে হোয়াট্স্অ্যাপ নামক অ্যাপ্লিকেশনটি নেই, এটা ভাবা যায় না, তাই না? কেবলমাত্র স্মার্টফোনের জন্য তৈরি এই ইন্সট্যাণ্ট মেসেজিং অ্যাপের যাত্রা শুরু ২০০৯-এ, ব্রায়ান অ্যাক্টন আর ইয়ান কোম-এর সঙ্গে। Yahoo!-র চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর প্রায় দু'বছর ধরে নতুন কিছু করার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। অবশেষে তৈরি হ'ল এই অ্যাপটি। 'What's Up?' রোজকার কথোপকথনে এটি খুব প্রচলিত একটি উক্তি। এই উক্তিকেই একটু বদলে নিয়ে ওনারা নতুন অ্যাপ্লিকেশনটির নাম দিলেন 'WhatsApp', অ্যাপটির সৃষ্টিই তো এই কারণে, যাতে এটির মাধ্যমে ইচ্ছে হলেই পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তে থাকা বন্ধুর কাছে পৌঁছে যেতে পারে 'What's Up?' 'কী খবর ভাই?' এই জিজ্ঞাসা।
ইন্স্টাগ্রাম। মোবাইলে বা ডেস্কটপে যেকোনও ছবি বা ভিডিও তুলেই তুমি চটপট সেটাকে পৌঁছে দিতে পারবে ইণ্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত বন্ধুদের কাছে, এই অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে। শুধুই ছবি আর ভিডিও শেয়ার করার অ্যাপ এটি। কেভিন সিস্ট্রোম এবং মাইক ক্রিগারের উদ্ভাবিত এই অ্যাপের শুরু ২০১০ সালে। Instant Camera, আর Telegram, এই দুটি শব্দের মিশেলে তৈরি হয়েছে ইন্সটাগ্রাম-এর নামখানি। অর্থাৎ কিনা, ঠিক যেমন করে টেলিগ্রামে খবর পাঠানো হতো একসময়, তেমনভাবেই,এক্ষুণি ছবি তোলো, আর পাঠিয়ে দাও একে-ওকে, যাকে তুমি তোমার ছবি দেখাতে চাও!
১৯৪৬ সালে টোকিও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন নামে একটা ছোট্ট কোম্পানির পত্তন করেন মাসারু ইবুকা নামে এক জাপানি ভদ্রলোক, মাত্র কুড়ি জন কর্মচারী নিয়ে। 'এর আগে কখনও হয়নি' এমন কিছু পণ্যদ্রব্য তৈরি করা ছিলো এই কোম্পানির লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে তারা অগণিত বৈদ্যুতিন পণ্য উৎপাদন শুরু করে, যেগুলো শুধু যে ‘জাপানে প্রথম' তা-ই নয়, সারা বিশ্বেও 'প্রথম'। কোম্পানির জনপ্রিয়তার জন্য একটা ছোট্ট অথচ আকর্ষণীয় নামের প্রয়োজন ছিলো। ল্যাটিন ‘Sonus', অর্থাৎ শব্দ, এবং ‘Sonny boys', কথ্য ভাষায় যার অর্থ ছটফটে প্রাণবন্ত ছেলে, এই দুটি শব্দকে জুড়ে পাওয়া যায় SONY শব্দটি। ঠিক এমনই একটা শব্দ খোঁজা হচ্ছিলো, যেটা উচ্চারণ করা সহজ, বিভিন্ন ভাষায় ব্যবহার করতেও সমস্যা হবে না। ব্যস, ১৯৫৮ থেকে শুরু হয়ে গেল SONY-র জয়যাত্রা।
সোনির নতুন জনপ্রিয় সিরিজ ভায়ো (SONY VAIO)- এর লোগো ভাল করে লক্ষ্য করে দেখেছ কি? বলতো, এই নতুন লোগোর মধ্যে আমাদের খুব চেনা কোন দুটো প্রযুক্তির ছবি ধরা পড়ছে?
গ্রীক পুরাণের ডানাওয়ালা পক্ষীরাজ ঘোড়া পেগ্যাসাস, যে নাকি শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অনুপ্রেরণার প্রতীক, তার নামটা ভারি মনে ধরেছিল তাইওয়ানের একটি বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র তৈরির বহুজাতিক সংস্থার কর্তাদের। নামের লিস্টে যাতে তাঁদের সংস্থার নাম বর্ণানুক্রমে ওপরের দিকে আসে, তাই PEGASUS-এর প্রথম তিনটি অক্ষরকে ছেঁটে ফেলে তাঁরা সংস্থার নাম রাখলেন ASUS. এই সংস্থার তৈরি ডেস্কটপ, বিভিন্ন হার্ডওয়্যার, ফোনের যন্ত্রাংশ, সার্ভার, বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া প্রডাক্ট দেখেছো নিশচয়ই!
অ্যাডোব সিস্টেম্স ইনকর্পোরেটেড হল এমন একটা মার্কিন বহুজাতিক সংস্থা যারা বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া আর ক্রিয়েটিভ সফ্ট্ওয়্যার নিয়ে কাজ করে। ছবিতে নানা কারিকুরি করার সফ্ট্ওয়্যার অ্যাডোব ফোটোশপ, কম্পিউটারে বই পড়ার সফ্ট্ওয়্যার অ্যাক্রোব্যাট রিডার, অ্যাডোবেরই বিভিন্ন সফ্ট্ওয়্যারকে এক ছাদের তলায় এনে তৈরি অ্যাডোব ক্রিয়েটিভ ক্লাউড, এমন রকমারি সফ্ট্ওয়্যারের সম্ভার আছে এদের কাছে। প্রশ্ন জাগে, অ্যাডোব নামটির উৎস কী? ১৯৮২ সালে কোম্পানির এক কর্ণধার জন ওয়ার্নক-এর ক্যালিফোর্ণিয়ার বাড়ির গ্যারাজে শুরু হয়েছিল অ্যাডোবের কাজকর্ম। তাঁর বাড়ির ঠিক পিছন দিয়েই বয়ে যেত অ্যাডোব নামের একখানি সরু নদী বা খাঁড়ি। এই খাঁড়িটির নামেই কোম্পানির নাম রাখা হয়।
'ব্লুটুথ (Bluetooth)' জিনিসটা কী, তা নিয়ে খুব বেশি কথা বলার প্রয়োজন আছে কী? ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল থেকে মোবাইল ফোনে, কিংবা ল্যাপটপ থেকে মোবাইল ফোনে তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে এরিকসনের ১৯৯৪ সালের এই আবিষ্কারটি। কৌতূহল হয়, ব্লুটুথ নামটা এলো কোত্থেকে?
নব্বইয়ের দশকে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা নানারকমের প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে শুরু করে। এদের সবাইকে একত্রিত করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। এই কাজটা শুরু করলেন Intel সংস্থার জিম কার্ডাক নামে এক গবেষক। তিনি মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের সংযোগ স্থাপনের উপায় বের করেন ১৯৯৭ সাল নাগাদ। ব্যবস্থাটির কি নাম দেওয়া যায়, ভাবছিলেন তিনি। এমন সময় তাঁর হাতে এল নর্ডিক রাজা হ্যারল্ড ব্লুটুথ এবং ভাইকিংদের কাহিনী নিয়ে লেখা ‘The Long Ships' বইটি। দশম শতাব্দীতে ডেনমার্ক এবং নরওয়েতে রাজত্ব করতেন এই হ্যারল্ড ব্লুটুথ। বলা হয়, তিনি ওই অঞ্চলের বিভিন্ন জনজাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং ডেনমার্কে খ্রীষ্টধর্মের প্রসারে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। রাজামশাই নাকি ব্লুবেরী খেতে পছন্দ করতেন। এতই বেশি ব্লুবেরী খেতেন যে তাঁর নাকি একটা দাঁত নীলচে রঙের হয়ে গেছিল, আর সেখান থেকেই 'ব্লুটুথ' উপাধির জন্ম। রাজার নামটি গবেষক-মশাইয়ের ভারি পছন্দ হয়ে গেল। তিনি যে কাজটা করছিলেন, অর্থাৎ, সেই সময়ে ওয়্যারলেস প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নানা প্রকার আবিষ্কারগুলোকে একসূত্রে গেঁথে সর্বজনগ্রাহ্য একটা ব্যবস্থা তৈরির কাজ, সেটার সঙ্গে এই হ্যারল্ড ব্লুটুথের কাজকর্মের বেশ মিল খুঁজে পেলেন। তাঁর আবিষ্কৃত ব্যবস্থাটি শেষ পর্যন্ত Bluetooth নামেই জনপ্রিয়তা লাভ করলো।
ভালো করে লক্ষ্য করলে ব্লুটুথ এর লোগোর মধ্যে ল্যাটিন H আর B অক্ষরদুটির আদল খুঁজে পাবে।
এমনই নানা মজাদার ইতিহাস রয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাওয়া বিভিন্ন ব্র্যাণ্ডের নামকরণের। এবার থেকে নতুন কোনও নামের সঙ্গে পরিচিত হলেই খোঁজার চেষ্টা কোরো তার নামকরণের কাহিনী, দেখবে সেই জানার আনন্দ আবিষ্কারের আনন্দের চেয়ে কিছু কম নয়।।
তথ্যসূত্রঃ বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট এবং উইকিপিডিয়া