রোববার সকালটা একটা বেশ হৈহৈ কাণ্ড রৈরৈ ব্যাপার গোবিন্দলাল অন হর্সব্যাক গোছের ব্যাপার। ইস্কুল নেই, ইচ্ছেমত বালিশ আঁকড়ে দেরী অবধি ঘুমানো যায়, তারপর ব্যাক টু দ্য ফিউচারের ডক ব্রাউনের মত চুল নিয়ে এসে খেতে বসে সামনের প্লেটে গরমাগরম লুচি- আলুভাজা বা পুরোডাশ+শাদাআলুচচ্চড়ি পাওয়া যায়।
অ্যাঁ? কী বললেন স্যার? পুরোডাশ? সিটা আবার কী?
হয় হয়, zaন্তি পারো না? শরদিন্দু পড়ো নি? হ্যাঁ রে বাবা ওই ব্যোমকেশের বাবা। উনিই তো ওনার শক্ত শক্ত গল্পগুলোয় শক্ত শক্ত বাংলা শব্দটব্দ ব্যবহার করেন। ব্যোমকেশে করেন না অবিশ্যি, করলে একটা টিকেন্দ্রজিৎমার্কা ব্যাপার হত।
যাহাই হউক, পুরোডাশ মানে পরোটা। আহা, সুরুৎ। গরম গরম পরোটা আর শাদা আ...
আহেম (গলাটলা খাঁকরিয়ে)। কন্ট্রোল কন্ট্রোল।
হ্যাঁ, যা কইচিলুম। তো এই নুচিপরোটা বড় ভাল জিনিস, তাই না গো কত্তা? খেতে বড়ই ভাল। ময়দার হলে তো কতাই নেই, আটার হলেও দৌড়বে। অবিশ্যি আটাফাটা দিয়ে বা ময়দা-টয়দা মেখে রুটিলুচি ইত্যাদি করা'টা একটু পুঁদিচ্চেরী ব্যাপার। অনেকটা ইয়র্কার বলের মত, দুম করে হেলির মত ব্যাট ঘুরিয়ে হুট করে ছক্কা মারা যায় না।
তাপ্পর ধরো, বিরিয়ানী। আজকালকার যারা ওই আপিসটাপিস করে, বাবুবিবিরা (বেশিরভাগই বাবুরা), তারা আবার বিরিয়ানী বলতে অজ্ঞান। বিরিয়ানী বড় ভাল জিনিস, সন্দেহ নেই। কিন্তু বাপু, গরম গরম শাদা ভাত দিয়ে মুর্গির ঝোল বা মাছের ঝাল বা ডিমের ডালনা বা সোনামুগের ডাল খেতেও তো লা-কেলাস লাগে, তাই না? আর তারপর খিচুড়ির তো তুলনাই নেই। আর মাস দুয়েকের মধ্যেই বর্ষা নামবে, বৃষ্টির দুপুরে খিচুড়ি-ডিমভাজা ইজ হেভেন।
ভাত, মানে যাকে বলে রান্না করা চাল। ভাত রান্না করা কিন্তু একেবারে দুইয়ে-দুইয়েচার করার মত সোজা ব্যাপার। চাল দু'বার বা তিনবার ধুয়েটুয়ে ভাল্লো করে জলে ভিজিয়ে উনুন বা স্টোভ বা গ্যাস বা ইন্ডাকশনে বসিয়ে মিনিট পঁচিশ রাখলেই কেল্লা ইজ ফতে। গরম গরম শাদা ভাত। সুরুৎ।
ভাত বাজার করাও খুব সহজ। মানে, ইয়ে, ভাত নয়, চাল। মুদিদোকানে গিয়ে "চাল দিন" বললেই দিয়ে দেবে। আটাও অমনি সোজা ব্যাপার। " আটা দিন" বললেই দিয়ে দেবে। হ্যাঁ, কত কেজি লাগবে সেটা বলতে হবে বটে। আর জিনিসটা হাতে নিয়ে টাকাটা দিতে ভুললে হয় মাথায় গাঁট্টা নয় পিঠে রদ্দা।
পেটপুজো তো হল। মানে ধরে নিচ্ছি বাজারে গিয়ে টাকা দিয়ে চাল/ আটা এনে ভাত/রুটি করে খেয়েটেয়ে এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বিছানায় ধড়াস করে লম্বা হয়ে এখন ইচ্ছামতী খুলে বসেছেন আপনি। মানে তুমি। আপনিই বলছি, তুমি / তোমরা বললে নিজেকে কেমন বুড়ো-বুড়ো লাগে। আপনি বললে একই বয়সের মনে হয়। আর একটু তো সম্মান-টম্মান দিতে হয়, তাই নয় কী? সারাদিন ইস্কুলে ইতিহাসফাঁস আর ভূগণ্ডগোলের চক্করে মাথা চড়কিবাজির মত বাঁইবাঁই করে ঘোরার পরে ক্লান্ত হয়ে ঘেমেটেমে বাড়ি ফিরে যদি এট্টু রিস্পেক্ট না পাওয়া যায়, তাহলে বৃথাই এ স্কুলজীবন।
অতএব, আপনি/আপনারা/আপনার/আপনাদের।
ভাত তো হল রান্না করা চাল। আর আটা? কে বলবে? আরে বাপু হাতটা তুলুন, নয়তো এই বুড়োবয়সে দেখবো কী করে? হ্যাঁ, আপনি, আটা কী? অ্যাঁ, কী বললেন? গুঁড়ো করা গম? বাব্বাঃ, এত গমগম করে বললেন যে গম বাবাজী চোখে গমফুল দেখতে লাগল।
সে যাই হোক। হযবরল'র শ্রীকাক্কেশ্বর কুচকুচেমশাইয়ের মত বলতে বাধ্য হচ্ছি : ঠিক ঠিক ঠিক।
গম। গম গুঁড়ো করে আটা। আর ধান ভেঙে চাল। কথায় বলে না, ঢেঁকি সগ্গে গেলেও ধান ভানে। ভানে কেন, ভাঙে নয় কেন, সে নিয়ে আমি এখানে মোটেও আলোচনা করব না।
ভারতবর্ষের উত্তরদিকে, বিশেষ করে পাঞ্জাবে প্রচুর গমের চাষ হয়। আবার পুবদিকে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এবং তারও পুবে বাংলাদেশে প্রচুর ধানের চাষ হয়। পাঞ্জাব মানে পাঁচটা নদী : শতদ্রু (Sutlej), রবি (Ravi), বিপাশা (Beas), চন্দ্রভাগা (Chenab) ও বিতস্তা (Jhelum)। পঞ্চ = পাঁচ। অপ = জল। সব সংস্কৃতভাষায় ব্যাপারস্যাপার। আপনারা কি ইস্কুলে সংস্কৃত পড়েন? যারা যারা ইস্কুলে সংস্কৃত নিয়ে পড়েন তারা হয়ত আরও ভাল বুঝবেন। আমি অত বুঝিনা।
গঙ্গা-মেঘনা-ব্রহ্মপুত্রের শাখা-প্রশাখা সহ বিস্তৃতি
এদিকে পুবদিকেও প্রচুর নদী। গঙ্গা ফরাক্কা থেকে দু'ভাগে ভাগ হয়ে যায়। দক্ষিণে যায় ভাগীরথী, আর পুবদিকে যায় পদ্মা। ভাগীরথী আবার পরে হুগলি নাম নিয়ে বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি গিয়ে প্রচুর ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলে যায়। ওদিকে পদ্মা বাংলাদেশে ঢুকে যমুনা-মেঘনার সঙ্গে মিলে শেষে মেঘনা নাম নিয়ে একইভাবে সুন্দরবন-বঙ্গোপসাগর করে।
এই, যমুনা বললাম বলে ভেবে নেবেন না ভুলভাল বলছি। উত্তরভারতেও একটা যমুনা আছে। গঙ্গা যেমন গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে শুরু হয়, এই যমুনা তেমন যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে যাত্রা শুরু করে। দিল্লীর পাশ দিয়ে গিয়ে এই যমুনা এলাহাবাদের প্রয়াগে গঙ্গার সঙ্গে মিলে যায়। প্রয়াগে নৌকো করে গেলে দু'টো নদীর দু'টো আলাদা আলাদা রঙ বোঝা যায়। দিব্যি দেখতে।
বাংলাদেশের যমুনা আবার কিন্তু আসলে ভারতের ব্রহ্মপুত্র। এনার জন্মস্থান তিব্বতে, নাম সেখানে সাংপো (বা ইয়ারলুং সাংপো)। সেখান থেকে অরুণাচলে ঢুকে নাম দিহাং, পরে লোহিত ও দিবাং এসে মেলার পর তিনে মিলে ব্রহ্মপুত্র। বাংলাদেশের ইনি যমুনা।
মানবসভ্যতায় এই নদীদের গুরুত্ব সাংঘাতিক। তেষ্টা পেয়েছে, জল চাই? যাও, নদীর কাছে যাও। খিদে পেয়েছে, খাবার চাই? যাও, নদীর কাছে যাও। গিয়ে নদীর চারপাশে উর্বর জমিতে ধানগম ইত্যাদি চাষ করো। তেষ্টার মত অত সহজে খিদে মিটবে না বটে, চাষ করে ফসল ফলিয়ে সেই ধানগম থেকে আটাচাল বানিয়ে তাকে রেঁধে ভাতরুটি করলে তারপর খিদে টাটাবাইবাই।
এইজন্যই ইতিহাসফাঁসে দেখবেন, প্রাচীন সভ্যতাগুলো সব নদীর গা ঘেঁষে রয়েচে। মিশরে নীলনদের পাশে, চীনে ইয়াংসে কিয়াং ও হোয়াং হো'র পাশে, ভারতের পশ্চিমে সিন্ধু ও পুবে গঙ্গার উপত্যকায় এক-একটা বেশ পুরনো সভ্যতা গড়ে উঠেছে।
নদী থেকে জলটল নিয়ে চানখাওয়া ইত্যাদি হবে বুঝলুম। কিন্তু চাষবাস? খেতে ফসল ফলাতে হলে জল লাগে বটে, কিন্তু আর এমন কী লাগে যার জন্য এত হন্যে হয়ে আমার-আপনার প্র-প্র-প্র-প্র-প্র-...-অনেকগুলো প্রপিতামহ-মাতামহরা নদীর ধার খুঁজতেন?
রামকৃষ্ণ বলে গেছেন, টাকা মাটি, মাটি টাকা। মাটিকে এভাবে টাকার লেভেলে নামিয়ে এনে উনি ঠিক করেননি। বেচারা মাটি বড্ড দুঃখ পেয়েছে। যার জন্য পুরো মানবসভ্যতা সম্ভব হয়েছে, যে না থাকলে আজ এই সাতশো কোটি মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যেত, তাকে কিনা টাকার সঙ্গে তুলনা? ইশ।
পঞ্চভূত হল ক্ষিতি অপ তেজ মরুৎ ব্যোম। অর্থাৎ মাটি জল আগুন হাওয়া আকাশ। প্রাচীনকালের লোকজন বিশ্বাস করত যে এই পাঁচ ভূতকে দিয়েই সবকিছু তৈরী হয়েছে। ভূত মানে যে অশরীরী আত্মা নয়, সেটা নিশ্চয় বলে দিতে হবে নে। আধুনিক বিজ্ঞান অবশ্য এই ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। রাশিয়ার কেমিস্ট মেন্দেলেফের পিরিয়ডিক টেব্যল অফ এলিমেন্টস থেকে আমরা জানি, ক্ষিতি অপ ইত্যাদি নয়, আসল মৌল হল হাইড্রোজেন হিলিয়াম অক্সিজেন কার্বন নাইট্রোজেন ইত্যাদি।
যাই হোক। পঞ্চভূত ভুল বটে, কিন্তু এ বিষয়ে জানতে দোষ নেই। এটা লক্ষ্য করতেও দোষ নেই যে প্রথম ভূতবাবাজী হলেন স্বয়ং...?
মাটি!
আচ্ছা, এই মাটি বা ক্ষিতির ইতিহাস ফাঁস করলে কেমন হয়? মানে ধরুন, আপনি নিশ্চয় মাটিফাটি দিয়ে কোনও কালে খেলেছেন, বা এখনও খেলে থাকেন। কাদামাঠে ফুটবল খেলতে বা ভিজে মাটি দিয়ে ছোটছোট মূর্তি গড়তে একটা বেশ হ্যারিপটার গোছের অনুভূতি হয় না? কিন্তু কখনও মনে হয়েছে কী, কাদা কী? মাটিও বা কী? এই মাটি কোত্থেকে এল? দুগ্গাপুজোয় কলকাতার কুমোরটুলিতে যে দুগ্গাঠাকুর ও তাঁর ছেলেমেয়েরা মৃত্তিকারূপ পায়, সেই মৃত্তিকা আসে কোত্থেকে? মানে, তার জন্ম কোথায়? কীভাবে?
মাটির জীবনী জানতে হলে আগে মাটিকে চিনতে হবে। মাটির সঙ্গে (বা ওপরে) বসে দু'দণ্ড কতা কইতে হবে। তবেই না ঠিকঠাক আলাপ-পরিচয়!
এই গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনা-সিন্ধু-হোয়াংহো ইত্যাদি নদীগুলোর পাশে যে মাটি জমে, যাকে ভূগোলের বইতে পলিমাটি বলে, সেই পলিমাটি হল ধান-গম/চাল-আটা/ভাত-রুটির জন্য একেবারে বেস্টেস্ট বেস্টো বেস্টাফিরিক। ইংরিজিভাষায় একে অ্যালুভিয়াম বা অ্যালুভিয়াল সয়েল বলে। সম্ভবত আলু ভালো হয় বলে বলা হয়, বলতে পারবুনি। নদীর স্রোতের সঙ্গে এই পলিমাটি চলতে থাকে, নদীতে বান ডাকলে এরা নদীপাশে ছড়িয়ে যায়। ওইজন্যই তো নদীর দুই পাশের অঞ্চলগুলিকে ইংরিজিতে ফ্লাডপ্লেইন বলে, বাংলায় প্লাবনভূমি। কোন মাটির জমি কত উর্বর, তার যদি কোন কম্পিটিশন হত, তাহলে পলিমাটির এইসব নদীপাশগুলো নির্ঘাত ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড তিনটে প্রাইজই পেত।
পাললিক সমভূমি
কিন্তু এই যে পলিমাটি, সে অ্যাত্ত অ্যাত্ত পেরাইজ পাচ্চে ক্যান? কী আছে পলিমাটির মধ্যে যে সে এত উর্বর?
আমাদের বাঁচার জন্য কী কী দরকার? হাওয়া, কেননা অক্সিজেন না হলে ক্যাঁক। জল, কেননা হাইড্রোজেন ডাইঅক্সাইড না হলে গ্যাঁক। আর অবশ্যই খাদ্য, কেননা গরমকালে ফুচকা না হলে একেবারে খ্যাঁক।
গাছ বলে কি মানুষ নয়? গাছেরও প্রাণ আছে। জগদীশ বসু ক্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করে প্রমাণ করেছিলেন যে গাছের প্রাণ আছে। অতএব গাছেরও মরুৎ, অপ ও খাদ্য লাগবে বৈকি। তেজও লাগে, যেটা আমাদের লাগে না। তেজ পায় রোদ্দুর থেকে। নীচের শিকড় থেকে টেনে নেয় জল ও খনিজ পদার্থ, পাতার গায়ে ফুটো (যাকে ইংরিজিতে স্টোমাটা বলে) দিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে পায় অক্সিজেন। তারপর নিজের রান্না নিজেই করে নেয়। একে বলে সালোকসংশ্লেষ। ইংরিজিতে ফোটোসিন্থেসিস। স+ আলোক+সংশ্লেষ। আলো ব্যবহার করে যা তৈরী করা হচ্ছে।
সালোকসংশ্লেষ
অর্থাৎ গাছ জল ও খাদ্য পায় মাটি থেকেই। খাদ্য বলছি বটে, আসলে খনিজগুলো হল রান্নার আগের খাদ্যের উপকরণ। খনিজ পদার্থ বলতে কার্বন ও নাইট্রোজেন তো আছেই, আরোও আছে ফসফরাস পটাশিয়াম ক্যালশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম সালফার ইত্যাদি প্রাণের জন্য একান্ত জরুরি কিছু উপকরণ। মাটিহাটে গিয়ে শিকড় দিয়ে গাছেরা এই সব জল ও খনিজ পদার্থ বাজার করে বসে বসে। আর শুধু ওই পাতার ফুটো কেন, শিকড়েরও একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা থাকলে ভাল। তাই এমন মাটিতেই গাছ ভাল জন্মায় যার কাছে খাদ্যের উপকরণ বা কাঁচামাল আছে, যেখানে প্রচুর পরিমাণে জল জমে থাকতে পারে (কিন্তু আবার খুব বেশিও নয়), আর যেখানে একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা থাকে।
পলিমাটি অত ফার্স্ট সেকেন্ড হয় তার কারণ পলিমাটিতে এই সবই পাওয়া যায়। খুবই টপ কোয়ালিটিতে। আর এই টপ কোয়ালিটির পলিমাটি পাওয়া যায় ভারত উপমহাদেশে ও চীনে। তাইজন্যই তো সারা পৃথিবীতে যত লোক আছে তার তিন ভাগের এক ভাগ এই দুই এলাকায় পাওয়া যায়।
পলিমাটি তৈরী হয় কীভাবে? শুরুটা হয় লাভা থেকে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হলে সেখান থেকে ভসভস করে লাভা বেরোয়, সেই লাভা অনেকটা গাঙের পলিমাটির মতই আগ্নেয়গিরির পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে যায়, পরে ঠান্ডা হয়ে শক্ত পাথরের আস্তরণ গঠন করে। ক্ষিতিপিসি আরামকেদারায় জাঁকিয়ে বসেছেন, হাতে খবরের কাগজ। তাকে ঠেলা মারতে মাঠে নামে অপবাবু, মরুৎমিয়াঁ, ও মিস তেজ। সূর্যের তাপে সেই শক্ত পাথরেও চুলের মত ফাটল ধরে, সেই চুলফাটলের মধ্যে জল অনায়াসে ঢুকে পড়ে ভেতর থেকে ট্রোজান ঘোড়ার মত ফাটল বাড়ায়, শেষে গ্রীক সৈন্যর ট্রয় শহরে ঢোকার মত হাওয়া এসে সেই ফাটল আরও বড় করে তোলে। যত সময় যায়, এইসব ফাটল বড় হয়ে হয়ে একে অপরের সঙ্গে মিলেজুলে পাথরের আস্তরণটা ভেঙে চুরমার করে দেয়, ব্যাসাল্ট ও গ্র্যানাইট পাথরের সমতলভূমি প্রথমে আলাদা আলাদা বিশাল বিশাল পাথরের চাঁই, তারপর আরও ভাঙন ধরার পর ছোট ছোট পাথরের টুকরোয় পরিণত হয়। এইভাবে ইরোশন বা ভূমিক্ষয় হতেই থাকে, পাথরের চাঁই (boulder) ভেঙে নুড়িপাথর ও কাঁকর (pebbles, gravel), তা ভেঙে বালি (sand), তারপর পলি (silt) ও সবশেষে কাদা (clay)।
আগে বলেছিলাম পলি মানে অ্যালুভিয়াম। ভুল বলেছিলাম। আসলে তখন আলুর খিদে পেয়ে গিছল, আলুভাজা হচ্ছিল, তাই...ইয়ে...
অ্যালুভিয়াম বেশিটাই পলি ও কাদা, কিন্তু তাতে বালি ও কাঁকরও মিশে থাকতে পারে। একে ধোয়াট মাটিও বলে। চাষের জন্য বেস্টফদিবেস্ট হল আসলে দোআঁশ মাটি (loam)। এই মাটিতে বালির পরিমাণ ৪০%, পলির পরিমাণ ৪০% ও কাদার পরিমাণ ২০%।
কার কী নাম, কে কীভাবে কার কাকাভাইপো এসব তো অনেক হল। ঠিকুজিকুষ্ঠি নামধাম সবই জানলাম। গপ্প শেষ, নটেগাছ মুড়াফাই।
রোয়েট রোয়েট। গপ্প শেষ নয়। পিকচার অভী ভী বাকি হ্যায়।
ক্ষিতিপিসির ক্ষয়ক্ষতি করে বালি/পলি/কাদা/দোআঁশ বানানোর ব্যাপারে পুরো ক্রেডিটটাই অপবাবু, মরুৎমিয়াঁ ও মিস তেজ নিয়ে গেলেন। বেচারা গাছেদের জন্য এক টুকরো শিঙাড়ার ভাঙা টুকরোও থাকল না। খুবই খুবই খুবই অভালো ব্যাপার।
অদ্ভুত শোনাচ্ছে? এই এতক্ষণ ধরে বকবক করে আসছি কিনা গাছেরাই মাটি পেলে প্রাণ পায় গানটান গায়, আর এদিকে এখন বলছি কিনা না, মাটিও নাকি গাছেরাই তৈরী করে? আমার মাথাটা একেবারে গনগনাগন হয়ে গেছে।
গেছে কী? গেছোদিদিকে জিজ্ঞেস করে দেখি তো। গেছোদিদি কে জানেন তো? গেছোদাদার দিদি। তাতাবাবুর হযবরল-তে সেই যে গেছোদাদা ছিল, তার এক দিদিও আছে। সে গেছোদিদি। গেছোদাদা যেমন গুপিবাঘার মত "যেখান খুশি যাইতে পারি" গাইতে গাইতে ডায়মন্ডহারবার-রাণাঘাট-তিব্বত করে বেড়ান, গেছোদিদিও তেমন "ডক্টরহুটার্ডিস" ইত্যাদি গাইতে গাইতে প্রস্তরযুগ-রোমানসভ্যতা-১৯৮৩বিশ্বকাপফাইনাল করে বেড়ান। গেছোদাদা স্থানযাত্রী, গেছোদিদি কালযাত্রী।
এই পাথর ভেঙে গুঁড়িয়ে পলিটলি হতেও প্রচুর সময় লাগে। তাই এর আদি সময়ে যেতে হলে গেছোদিদিই ভরসা। ও গেছোদিদি, বলি, পলি কোথে, আসে শুনি? (পায়েপড়ি বাঘমামার সুরে গাইলে দিব্যি লাগবে)
গেছোদিদি : ওরে বোকা, তুই লিখেছিস নাকি ওই অপ-মরুৎ-তেজ এরা একা মিলে ক্ষিতিকে পেটাই করে পলি করে ছাড়ে?
সোঘো : তা বলেছি বটে। কেন, ভুল নাকি?
গেছোদিদি : ওরে উল্লুক, গাছেদের কথা সপাটে ভুলে গেছিস?
সোঘো : যাব্বাবা, ভুলব কেন? গাছেরাই তো মাটি পেয়ে প্রাণে বাঁচে।
গেছোদিদি : ওরে হাঁদা, গাছেরাও যে মাটি তৈরী করে, সেটা জানিস না?
সোঘো : বল কী গো? তাহলে কি মাটি গাছ, গাছ মাটি?
গেছোদিদি : আচ্ছা বল দিকি, এই যে এত পলিমাটি দোআঁশ মাটি বলে লাফাচ্ছিস, এই মাটি কত পুরনো?
সোঘো : কত আর হবে? কয়েক লাখ বছরটছর হবে।
গেছোদিদি : হুম। আর পৃথিবী কত পুরনো?
সোঘো : ওরেবাবা, সে তো অনেক অনেক পুরনো। ৪৫০ কোটি বছর।
গেছোদিদি : তবে? তুই যে বললি এই পলিমাটি মাত্র কয়েকলাখ বছরের পুরনো, তাহলে তার আগে বলতে চাইছিস মাটি ছিল না? গাছপালাও ছিল না?
সোঘো : না না তা বলছি না, মানে, পলিমাটি তো বারংবার তৈরী হতেই থাকে, তাই না? হাজার দশ-বারো বছর আগে আইসএজে হিমবাহরা এসে প্রচুর মাটিফাটি ঝাঁট দিয়ে চলে গিছল। তার পরে ফের হয়েছে। হতেই থাকে।
গেছোদিদি : হুম। কিন্তু একদম প্রথমে কবে কোথায় কীভাবে এই পলিমাটি হয়েছিল জানিস?
সোঘো : না গো গেছোদিদি। তুমিই বল না, আমরা শুনি।
গেছোদিদি (মাইকটা হাতে নিয়ে) : বেশ, বলি, শোন তোরা।
(গেছোদিদির গলায়)
সোঘোটা ঠিকই বলেছে। পলিমাটি এবং মাটি ইন জেনারেল তৈরী হতেই থাকে, কিন্তু সে কোটি কোটি বছর ধরে যে ভূপৃষ্ঠে থেকে যায় তা কিন্তু নয়। নদী-হিমবাহ-হাওয়া ইত্যাদির ঠেলায় শেষমেশ তাদের জায়গা হয় সমুদ্রের তলায়। তারপর আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদির মধ্য দিয়ে সে আবার বহু বহু বছর পরে পাথররূপে, তারপর ফের মাটিরূপে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে।
এই কালচক্র প্রথম কবে শুরু হয়েছিল? গাছেদেরও কি এতে কোনও ভূমিকা ছিল? ছিল বৈকি।
ক্যাসেটটেপ রিওয়াইন্ড করার মত সময়কে রিওয়াইন্ড করে ফিরে যাওয়া যাক এক অতিপ্রাচীনকালে। ভূতাত্বিকদের ভাষায় একে বলে পেলিওজোয়িক মহাযুগ (Paleozoic Era)। পেলিও (paleo) মানে প্রাচীন, জোয় (zoe) মানে জীবন। পৃথিবীতে প্রাণ জন্ম নেয় প্রায় ৩৫০ কোটি বছর আগে। প্রথম প্রথম প্রাণ বলতে হয় এককোষী ব্যাক্টেরিয়া গোছের, বা বহুকোষী শ্যাওলা বা অ্যালজি গোছের। প্রায় ৩০০ কোটি বছর ধরে প্রাণ বলতে এরাই ছিল। তারপর, মোটামুটি ৫৫ কোটি বছর আগে, এই পেলিওজোয়িক মহাযুগের শুরুর দিকে ক্যামব্রিয়ান যুগে (Cambrian Period) প্রাণের প্রাচুর্য হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করে।
মহাযুগ (era) আর যুগ (period) গুলিয়ে ফেলিস না। মহাযুগ অনেক বেশি লম্বা হয়, তাকে ভাগভাগ করে অনেকগুলো যুগ হয়। পেলিওজোয়িক মহাযুগের ছ'টা ভাগ --- ক্যামব্রিয়ান তো আগেই বলেছি, এর পর অর্ডোভিচিয়ান (Ordovician), সাইলিউরিয়ান (Silurian), ডেভোনিয়ান (Devonian), কার্বোনিফেরাস (Carboniferous), ও পার্মিয়ান (Permian)।
ঘাবড়াস না। অনেকগুলো খটমট নাম বলে ফেললুম। মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লেখার ব্যাপার যখন নেই, তখন সার্কিটের ভাষায় "টেনশন নহী লেনে কা মামু"।
এতগুলো নাম বললামই যখন তখন আরো তিন-চারটে বললেও ক্ষতি নেই। গ্যারান্টি দিচ্ছি, এগুলো অনেক বেশি চেনা শোনাবে।
পেলিওজোয়িক মহাযুগ ৫৫ কোটি বছর আগে থেকে শুরু হয়ে ৩০ কোটি বছর ধরে চলেছে। তার পর শুরু হয়েছে মেসোজোয়িক মহাযুগ (Mesozoic Era)। মেসো মানে বাংলায় যেমন মাসির বর, গ্রীকভাষায় তেমন মেসো মানে মধ্য বা মধ্যবর্তী। অর্থাৎ মধ্যবর্তী মহাযুগ বললে নম্বর না কাটাই উচিত। এই মেসোমশাইকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়। কী কী? লিষ্টি করি। নাম ও কতদিন ছিল সেটাও বলছি।
১) ট্রায়াসিক (Triassic) : ২৫ কোটি থেকে ২০ কোটি বছর অাগে অবধি।
২) জুরাসিক (Jurassic) : ২০ কোটি থেকে ১৪.৫ কোটি বছর অাগে অবধি।
৩) ক্রিটেশিয়াস (Cretaceous) : ১৪.৫ কোটি থেকে...
হেহে, এটা তোরা সবাই জানিস। ক্রিটেশিয়াস যুগ (ও তার সঙ্গে মেসোজোয়িক মহাযুগ) শেষ হয়েছে ৬.৫ কোটি বছর আগে। আর তার সঙ্গে ডাইনোসরদেরও যুগে ইতিটান পড়েছে।
তবে কি, আজ ডাইনোসরদের আলোচনা একেবারেই নয়। ক্রিখটন-স্পীলবার্গের দিব্যি।
(সোঘো : গেছোদিদি, ওটা ক্রিখটন নয় ক্রাইটন Crichton হবে...)
(গেছোদিদি : তুই চুপ কর তো, সেদিনকার ছেলে সব জেনে বসে আছিস, চুপচাপ বসে শোন)
(সোঘো : আচ্ছা আচ্ছা আমি স্পিকটিনট তুমি বল)
এই ছবিটা ভারী মজার। পিরামিডের আকারে পৃথিবীর কালরেখা। বাঁদিকে ফসিল, ডানদিকে মহাযুগ যুগ ইত্যাদি। পৃথিবীর জন্ম ৪৬০ কোটি বছর আগে। একদম প্রথম সুপারমহাযুগ হল আরকিয়ান, তারপর প্রোটেরোজয়িক, প্রথম প্রাণের জন্ম। এরপর পেলিওজয়িক মহাযুগ (নীল), ৫৪ কোটি বছর আগে থেকে শুরু। এর ছয় ভাগ : ক্যাম্ব্রিয়ান, অর্ডোভিচিয়ান, সাইলিউরিয়ান, ডেভোনিয়ান, কার্বোনিফেরাস ও পার্মিয়ান যুগ। কার্বোনিফেরাসের আবার দুটি ভাগ আছে, মিসিসিপিয়ান ও পেন্সিলভেনিয়ান। এরপরের মহাযুগ মেসোজয়িক (সবুজ), শুরু ২৫ কোটি বছর আগে থেকে। এর তিন যুগ : ট্রায়াসিক, জুরাসিক, ও ক্রিটেশিয়াস। শেষ ৬৫.৫ কোটি বছর আগে। এরপর এখনকার মহাযুগ, সেনোজয়িক (লাল-হলুদ)। এর মধ্যে পেলিওসিন, ইওসিন, অলিগোসিন, মিওসিন, প্লিওসিন, প্লিস্টোসিন, ও হলোসিন। আমরা এখন হলোসিনে বাস করছি। এর শুরু ১০০০০ বছর আগে থেকে।
(পুনরায় গেছোদিদি)
হ্যাঁ, তো কী যেন বলছিলাম। মাটি! ইয়েস! মাটি কবে এল তার জন্য আমাদের ডাইনো যুগ মহাযুগ পেরিয়ে ফের পিছিয়ে গিয়ে অর্ডোভিচিয়ান যুগে ফেরত যেতে হবে। তার মানে একেবারে ৪৮.৫ কোটি বছর আগে। সমুদ্রে তখন প্রাণ থিকথিক করছে। প্রথম মাছেরা হয় এসে গেছে নয়তো আসার চেষ্টা চালাচ্ছে। স্থলে অতটাও প্রাণ ছড়ায়নি, বেশিটাই সমুদ্রতট বা নদীপাশে আছে। গাছ বলে তখন কিছুই নেই, থাকার মধ্যে আছে সবুজ শ্যাওলা। পাতা-শেকড়-কান্ডওয়ালা গাছ তখনও জন্মায়নি।
ব্রায়োফাইট
এমন সময়ে, ৪৭-৪৬ কোটি বছর আগে, পাতাগাছ প্রথম দেখা দিল। পাতা (বা পাতা-পাতা টাইপের জিনিস) ছিল বটে, কিন্তু এদের কান্ড বা গুঁড়িও ছিল না, আর ছিল না শেকড়। তা সত্ত্বেও এই ব্রায়োফাইট (Bryophyte) গোছের গাছগুলি কিন্তু দিব্যি স্থলে কার্পেট বিছিয়ে বেঁচেবর্তে জীবনযাপন করলটরল। ৪৪ কোটি বছর আগে অর্ডোভিচিয়ান যুগ শেষ হয়ে সাইলিউরিয়ান যুগ শুরু হল, ব্রায়োফাইটদের রাজত্ব বজায় থাকল। ৪৩ কোটি বছর আগে প্রথম শেকড়যুক্ত গাছের দেখা পেল পৃথিবী। মুকুট তাদের মাথায় চলে গেল বটে, কিন্তু ব্রায়োফাইটরা বেঁচেই রইল। এখনও আছে। লিভারওয়ার্ট (liverwort), হর্নওয়ার্ট (hornwort), ও মস (moss) শ্রেণীর গাছপালাই হল এই ব্রাওফাইট।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ব্রায়োফাইটরা না এলে বোধহয় শেকড়গাছেদেরই আসা হত না।
মাটিতে ফিরে আসি। সোঘো আগেই বলেছে, সূর্য-হাওয়া-জলের ঠেলায় পাথর ভেঙে পলিমাটি তৈরী হয়। ব্যাক্টেরিয়ারা সালোকসংশ্লেষ করার সময় অ্যাসিড তৈরী করে, সেই অ্যাসিডের রাসায়নিক ক্রিয়া এই পলিমাটি তৈরীতে সাহায্য করে। এতকিছু করেও, ৪৬ কোটি বছর আগে, মানে যখন ব্রায়োফাইটরা সবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, নদীপাশে প্লাবনভূমিতে বালিকাঁকড়ের তুলনায় পলি ও কাদার পরিমাণ হাস্যকর : মাত্র ১%। এর দশ কোটি বছরের মধ্যে দেখা গেল, হঠাৎ করে পলি+কাদা এখন ২৬% হয়ে গেছে।
শেকড়ওয়ালা গাছ
এই দশ কোটির সাত কোটি বছর শেকড়যুক্ত গাছেরা রাজত্ব করেছে। সোঘো বলেছে শেকড় দিয়ে গাছ জল ও খনিজ শুষে নিয়ে ওপরে পাতায় পাঠায়। এর সঙ্গে, ঠিক ব্যাক্টেরিয়াদের মত, অ্যাসিডও তৈরী করে। এই অ্যাসিডের প্রকোপে যে পাথর থেকে মাটি হয় তো বলেইছি।
কিন্তু শুধু মাটি বানালেই তো হবে নে। মরুৎমিয়াঁ আর অপবাবু তো সারাক্ষণই চালু আছেন, মাটি তৈরী হল কি ধাঁইধপাধপ নদীতে সমুদ্রে নিয়ে ফেললে। এরকম করলে গাছ বাঁচবে ক্যামনে?
কেন? শেকড় দিয়ে। শেকড় যে শুধু জল-খনিজ শোষে বা অ্যাসিড বানিয়ে মাটি বানায় তা নয়, শক্ত করে সেই মাটি ধরে রাখতেও সে অতি সক্ষম। তাইজন্যই তো মাটি জমিতেই থেকে যায়, ধুয়ে বা উড়ে যায় না।
এইজন্যই গাছ কাটতে নেই, বুঝলে? তাহলে সব মাটি উড়েটুড়ে ধুয়েথুয়ে পালিয়ে যাবে, আর ধান-গম-আটা-চাল-রুটি-ভাতও হবে না।
কিন্তু, একটা প্রশ্ন। শেকড়ওয়ালা গাছেরও তো মাটি লাগে। সেই প্রথম মাটি কোত্থেকে এল?
কেন? ওই যে, তিন কোটি বছরের হিসাবটা ভুলে গেলি? যে তিন কোটি বছর ব্রায়োফাইটরা ঠিক শেকড়ওয়ালা গাছের মতই মাটি তৈরীও করেছে, আবার তা ধুয়ে উড়ে যেতেও দেয়নি। শেকড় থাকলে হয়ত আরোও ভালোভাবে করা যেত ব্যাপারটা, কিন্তু তা বলে তারাও প্রাণপণে মাটি আঁকড়ে বসে ছিল, ছাড়েনি।
তাই আজ আমরা বিরিয়ানী-খিচুড়ি-লুচি-পরোটা খেতে পাচ্ছি।
এইজন্যই বলি, গাছেদের ভালবাস, সম্মান দে। পৃথিবীটা ওদেরই তৈরী। অন্তত এই আর্থ ডে-তে সেটা যদি মনে রাখতে পারিস, তাহলে এই বুড়ি গেছোদিদিটার এট্টু ভাল লাগে।
গ্রাফিক্সঃ মহাশ্বেতা রায়