সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

ইন্টারস্টেলার সিনেমায় দেখানো কম্পিউটার সাহায্যে নির্মিত কৃষ্ণগহ্বরের কৃত্রিম ছবি

নমস্কার বন্ধুরা। আমি গেছোদিদি। আমার ভাইকে হয়ত তোমরা চেনো, সে যেখানে খুশি যেতে পারে। আর আমি? আমি যখন খুশি যেতে পারি। আজ পিছিয়ে গেছি বছর পাঁচেকের একটু বেশি, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে। এসেছি TEDx অডিটোরিয়ামে, বক্তৃতা বা talk দেবেন বিজ্ঞানী কেটি বাউম্যান। বাউম্যান এখন পিএইচডি করছেন, পরের বছর ডক্টরেট পাবেন, আর ২০২০ সালে পাবেন মার্কিনমুলুকের Caltech-এ প্রফেসর পদ। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের ছবি কীভাবে তোলা যায় সেটাই উনি বোঝাচ্ছেন ওনার টকে। টক শুরু হল ক্রিস্টোফার নোলানের “ইন্টারস্টেলার” সিনেমার একটা ছবি দিয়ে।

কৃষ্ণগহ্বরের ছবি, কিন্তু কৃত্রিম, কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে তৈরি করা। সত্যিকারের ছবি এখনও, অর্থাৎ ২০১৬ সালে, মনুষ্যজাতির হাতে নেই। মহাকাশের বিভিন্ন নক্ষত্র-নেবুলা-গ্যালাক্সির ছবি আমরা দেখেছি, হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ৩০ বছর সার্ভিস দিয়ে প্রচুর সুন্দর ছবি উপহার দিয়েছে মনুষ্যজাতিকে। কৃষ্ণগহ্বরের আশেপাশে মাধ্যাকর্ষণশক্তি এতটাই প্রবল যে আলোও এর টান ছেড়ে পালাতে পারে না। তাই কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলাও অনেক বেশি কঠিন, অনেকটা অমাবস্যা রাতে ফ্ল্যাশ ছাড়াই কালো বেড়ালের ছবি তোলার চেষ্টা করার মতন। বাউম্যানের বয়স বেশি নয়, তিরিশের কোঠা পেরোননি এখনও, একটু নার্ভাস লাগছে, এতবড় অডিয়েন্সের সামনে এই প্রথম উনি টক দিচ্ছেন। টেড টক ইউটিউবে ওঠে, সমস্ত পৃথিবীর লোক দেখে। নার্ভাস হওয়ারই কথা। কিন্তু টকের বিষয়বস্তু সলিড, এবং উনি বোঝাচ্ছেনও অত্যন্ত সুন্দরভাবে। কয়েক বছরের মধ্যেই সত্যিকারের কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলা যাবে, পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত টেলিস্কোপের তথ্য জুড়ে জুড়ে গড়ে উঠবে ব্ল্যাকহোলের অকৃত্রিম ছবি।

টক শেষ। সবাই হাততালি দিচ্ছে, বাউম্যান একটু হেসে স্টেজ ছেড়ে যাচ্ছেন। চলো ওনার পেছন পেছন যাওয়া যাক, যেতে যেতে এগিয়ে যাওয়া যাক আড়াই বছর, ১০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে। জ্যোতির্বিজ্ঞান মহলে সাড়া পড়ে গেছে, পৃথিবীর প্রথম কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলা গেছে। ২০১৬ সালে দেওয়া কথা রেখেছেন ডঃ বাউম্যান, ছবিটাও অত্যন্ত সুন্দর উঠেছে।


ইভেন্ট হরাইজন স্পেস টেলিস্কোপ কোল্যাবরেশনের তোলা M87 গ্যালাক্সির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কৃষ্ণগহ্বরের ছবি

হ্যাঁ, খুব স্পষ্ট যে তা নয়, কিন্তু কৃষ্ণগহ্বরটা রয়েছে যে পৃথিবী থেকে সাড়ে পাঁচ কোটি আলোকবর্ষ দূরে, একদম ভিন্ন একটা গ্যালাক্সির কেন্দ্রস্থলে। পৃথিবী থেকে দেখলে কত বড় মনে হবে? ডঃ বাউম্যানের ভাষায়, চাঁদের মাটিতে একটা কমলালেবু পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখার চেষ্টা করলে যতটা বড় মনে হবে, অনেকটা ততটা। ও হ্যাঁ, কমলালেবুটা আবার কালো রঙের। বুঝতেই পারছ বন্ধুগণ, কাজটা কত কঠিন। সেই কাজই করে দেখিয়েছেন ডঃ বাউম্যান ও তাঁর সহকর্মীরা।
কৃষ্ণগহ্বরের এই ছবিটা সারা পৃথিবীতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। আর এই পরের ছবিটা বাউম্যানকে দিয়েছে খ্যাতি। কম্পিউটার স্ক্রীনে দেখা যাচ্ছে ব্ল্যাকহোলের ছবিটা, প্রচুর কম্পিউটারের কারুকার্য করে তৈরি করা এই ছবি। কৃত্রিম নয়, আসল। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে রাখা টেলিস্কোপ থেকে তথ্য নিয়ে সেগুলো জিগস পাজলের মত জুড়ে জুড়ে বানানো এই ছবি। এটা ছবিটির জন্মমুহূর্ত, আর পাশে আনন্দে আত্মহারা ছবিটির অন্যতম সৃষ্টিকর্তা।


ডঃ কেটি বাউম্যান, সামনের কম্পিউটার স্ক্রীনে কৃষ্ণগহ্বরের ছবিটি ভেসে উঠেছে

“অন্যতম কেন? কেটি বাউম্যান কি একাই এই কাজ করেননি?”
অবশ্যই না। এত জটিল কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে গেলে বড় রিসার্চ টীম লাগে, কখনও কখনও অনেকগুলো টীম লাগে। ডঃ বাউম্যান এরকমই একটি গবেষকদলের অন্যতম সদস্যা।
“সেকি? তাহলে কেটিকে নিয়েই বা মাতামাতি কেন? সারা বিশ্বের খবরে আজ, ১০ এপ্রিল ২০১৯, কেটির নাম ও ছবি ছড়িয়ে গেছে। কই, আর কারুর নাম তো উঠছে না। দলের বাকি পুরুষ সদস্যদের নাম কই? কেটি মহিলা বলেই কি ওর এত নাম-যশ-খ্যাতি-প্রতিপত্তি?”
বন্ধুগণ, বুঝতেই পারছ “…” চিহ্নের মধ্যে বক্তব্যগুলো আমার নয়, ইন্টারনেট বা অন্তর্জালে পাওয়া বিভিন্ন বক্তব্যের সারাংশ। এর উত্তর আছে অবশ্যই, কিন্তু তার আগে চল যাই ১৯৫১ সালে, লন্ডনের কিংস কলেজে, রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের ল্যাবে।

ডিএনএ অণুর গঠন ঠিক কীরকম, সেই নিয়েই জোর কদমে গবেষণা চলছে কিংস কলেজে। জন র‍্যান্ডালের ল্যাবে কাজ করছেন একদিকে রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন, অন্যদিকে মরিস উইল্কিন্স। ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিন ও তাঁর ছাত্র রেমন্ড গসলিং মিলে এক্স-রে বা রঞ্জনরশ্মি ব্যবহার করে ডিএনএ-গঠন বোঝার চেষ্টা করছেন। কাজটা শ্রমসাপেক্ষ, এবং কঠিনও বটে। ডিএনএ অণুর আয়তন এতই ছোট যে এমনি মাইক্রোস্কোপ দিয়ে ছবি তোলাই যাবে না, লাগবে এক্স-রে, এবং তাও সরাসরি ছবি উঠবে না, একটু কায়দা করে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ছবি তুলতে হবে, তারপর সেই ছবি ধরে প্রচুর খাতাকলমে আঁক কষে মডেল বানিয়ে তবেই উদঘাটিত হবে ডিএনএ-র সঠিক আকার।


(বাঁদিকে) ডঃ রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের আবিষ্কৃত পদ্ধতি ব্যবহার করে রেমন্ড গসলিঙের তোলা ডিএনএ অণুর ছবি Photo 51; (ডানদিকে) আধুনিক বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে কম্পিউটারের সাহায্যে তৈরি করা ডিএনএ অণুর গঠনমূলক মডেল।

১৯৫২ সালের মে মাসে ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিনের আবিষ্কৃত পদ্ধতি ব্যবহার করেই গসলিং তুললেন ফোটো ৫১ (Photo 51)। সরাসরি ছবি নয়, রঞ্জনরশ্মি অপবর্তন অথবা এক্স-রে ডিফ্র্যাকশন পদ্ধতি ব্যবহার করে তোলা এই ছবি। ছবি তোলার পর শুরু হল আঁক কষা। এর মধ্যে ডঃ উইল্কিন্স আর প্রফেসর র‍্যান্ডালের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিনকে সরে যেতে হবে বার্কবেক কলেজে। ১৯৫৩ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাভেনডিশ ল্যাব থেকে কিংস কলেজে এলেন জেমস ওয়াটসন। উদ্দেশ্য মরিস উইল্কিন্সের সঙ্গে ডিএনএ নিয়ে আলোচনা। ডঃ উইল্কিন্স ওনার অফিসে ছিলেন না তখন, তাই ডঃ ওয়াটসন চলে গেলেন ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিনের অফিসে, গিয়ে বলে ফেললেন ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিন নিজেরই গবেষণালব্ধ তথ্য ব্যাখ্যা করতে জানেন না। এতে স্বভাবতই চটে উঠলেন ফ্র্যাঙ্কলিন, বেগতিক দেখে পেছোতে গিয়ে ওয়াটসন গিয়ে পড়লেন উইল্কিন্সের ঘাড়ে, উইল্কিন্স ওয়াটসন বুঝিয়েসুঝিয়ে নিজের অফিসে নিয়ে গিয়ে ফোটো ৫১ দেখালেন, সেই ছবি ওয়াটসন ফেরত নিয়ে গেলেন ক্যাভেন্ডিশে, ২৫ এপ্রিল ১৯৫৩ সালে নেচার (Nature) পত্রিকায় ফ্রান্সিস ক্রিক ও জেমস ওয়াটসনের নামে ডিএনএ-র মৌলিক গঠন নিয়ে পেপার প্রকাশিত হল, ১৯৬২ সালে এর জন্য নোবেল প্রাইজ পেলেন ক্রিক, ওয়াটসন, এবং উইল্কিন্স।


ডঃ রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন, কেমিস্ট, এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফার, ডিএনএ অণুর গঠন আবিষ্কারে এঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

না, রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন নোবেল পেলেন না। ১৯৫৮ সালে ওভারিয়ান ক্যান্সারে মারা গিছলেন তিনি। বেঁচে থাকলেও খুব সম্ভবত পেতেন না নোবেল। আহা, তীরে এসে তরী ভিড়িয়েছেন তো ক্রিক ও ওয়াটসনই, আর যোগ্য সাহায্য করেছেন উইল্কিন্স। নদীর মাঝদড়িয়ায় কে নৌকার হাল ধরে বসে ছিল, বৈঠাও বা কে চালিয়ে নৌকাকে ঠিকঠাক তীরের কাছে নিয়ে এসেছে, সেটা আর কে দেখছে? ঠিক আছে, মহিলা তো, কীই বা আর অবদান, আসল কাজ পুরুষেই ইত্যাদি।

ডঃ বাউম্যান ও তাঁর সহকর্মীদের কাজ ছিল অনেক দূরের একটা বস্তুর ছবি তুলে সেটাকে কম্পিউটারে ফেলে ঠিকঠাক অ্যাল্গরিদ্ম বা সমাধানপদ্ধতি বের করে আসল ছবিটা বের করা। এই সমাধানপদ্ধতি বেরিয়েছিল মূলত ডঃ বাউম্যানের মস্তিষ্ক থেকে। ঠিক তেমনই, ঠিক কীভাবে রঞ্জনরশ্মির অপবর্তন ব্যবহার করে ডিএনএ-র ঠিকঠাক ছবি উঠবে, সেই সমাধানপদ্ধতিও বেরিয়েছিল ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিনের মস্তিষ্ক থেকেই। অতএব ব্ল্যাক হোল-এর ছবির (অন্যতম) জননী কেটি বাউম্যান, আর ডিএনএ-র ছবির জননী রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন, এটা আমি, গেছোদিদি, নিঃসন্দেহে বলতে পারি।

বিজ্ঞান গবেষণা সহজ নয়। কাল্পনিক বিজ্ঞানীরা অনেকসময় অত্যন্ত কম খাটুনিতেই অসাধ্য সাধন করে ফেলেন — সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট চরিত্র অত্যন্ত মেধাবী প্রফেসর শঙ্কু যেমন গিরিডি শহরে ওনার ল্যাবে বসেই তৈরি করে ফেলেন অসম্ভব অসম্ভব কিছু যন্ত্র, আবিষ্কার করে ফেলেন অসাধারণ বৈজ্ঞানিক সূত্র। গল্প পড়ে মনে হতেই পারে, বিজ্ঞান জিনিসটা সহজ, একটা শাদা ল্যাব কোট পরে কিছু কাঁচের বীকারে বুনসেন বার্নারের রঙিন পানীয় ফোটালেই কেল্লা ফতে। আদপে ব্যাপারটা একদমই তা না। বাস্তব জগতে বিজ্ঞান গবেষণায় মেধা নিশ্চয়ই লাগে, কিন্তু তার সঙ্গে লাগে কঠিন অধ্যবসায়, শ্রম, এবং সময়। ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিন এবং তাঁর সহকর্মীরা ডিএনএ-র আণবিক গঠন একদিনে বের করে ফেলেননি, সময় লেগেছে ২ বছরেরও বেশি। ডিএনএ-র যে ছবিটা গসলিং তুলেছেন তার নাম দেওয়া হয়েছে ফোটো ৫১; এর কারণ এর আগেও গসলিং ৫০টি ছবি তুলেছন, এবং পরেও অনেক তুলেছেন। এই সমস্ত ছবি ডঃ ফ্র্যাঙ্কলিন এবং সহকর্মীরা বিশ্লেষণ করেছেন, পরীক্ষা করেছেন, এবং প্রচুর গাণিতিক হিসাবনিকাশ করেছেন। করার পরেই ডিএনএ-র আসল আণবিক গঠন বোঝা গিয়েছে। ঠিক তেমনই, পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তোলা M87 গ্যালাক্সির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কৃষ্ণগহ্বরের ছবিগুলো জিগস পাজলের মত জুড়েছেন ডঃ বাউম্যান এবং সহকর্মীরা, এর জন্য কম্পিউটারে বিশেষ গণনাপদ্ধতি বা অ্যাল্গরিদ্ম তৈরি করতে হয়েছে, এবং বিশ্লেষণ করতে হয়েছে প্রচুর প্রচুর বৈজ্ঞানিক তথ্য। ঠিক কত তথ্য বিশ্লেষণ করে শেষ ছবিটি তৈরি হয়েছে বোঝা যাবে পরের ছবিটি দেখলে।


এতগুলো কম্পিউটার হার্ড ডিস্ক ভর্তি তথ্য বিশ্লেষণ করে তবেই তৈরি করা গেছে কৃষ্ণগহ্বরের ছবিটি

আজকাল কম্পিউটারের সঙ্গে আমরা সকলেই মোটামুটি পরিচিত, কম্পিউটারের ভেতরে সমগ্র তথ্য যে হার্ড ডিস্কে পোরা থাকে সেটাও কমবেশি প্রত্যেকেই জানি। কৃষ্ণগহ্বরের ছবিটি তৈরি করতে বিশ্লেষণ করতে হয়েছে ওপরের ছবিতে দেখানো অতগুলো হার্ড ডিস্ক ভর্তি তথ্য।

আজ ৮ই মার্চ। ১৮৫৭ সাল। নিউ ইয়র্কে শহরের কিছু কাপড়ের কারখানার বাইরে হরতাল শুরু হল। মিছিলও হবে। হরতাল করছেন কিছু প্রতিবাদী নারী। এঁরা কাপড়ের কারখানারই শ্রমিক, দৈনিক ১৪-১৫ ঘন্টা হাড়ভাঙা খাটুনি খেটেও রোজগার যৎসামান্য, আর স্বাস্থ্যবিধির তো কোনও ব্যাপারই নেই। হরতাল শুরু হল, মিছিলও, পুলিশ এসে লাঠি চালাল। হরতাল ভেঙে গেল। কিন্তু দিনটা রয়ে গেল লোকের মনে। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে শ্রমজীবী মহিলাদের সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন মহিলা ডেলিগেট মিলে ঠিক করেন যে ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস নামে পালিত হবে।

রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন ও কেটি বাউম্যান বিজ্ঞানের শ্রমিক। শ্রমজীবী নারী, বিদূষী, বিজ্ঞানী। ওঁরা একা নন। অনেকে আছেন ওঁদেরই মতন। মার্গারেট হ্যামিল্টন, হার্ভার্ড কম্পিউটার্স (উইলিয়ামিনা ফ্লেমিং, অ্যানি জাম্প ক্যানন, হেনরিয়েটা লীভিট ইত্যাদি), ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, মারিয়াম মির্জাখানি, হেডি লামার, জসলিন বেল বার্নেল, মারি স্কোদোওস্কা কুরি, হাইপেশিয়া, অসীমা চ্যাটার্জি, ইন্দ্রাণী বোস। এঁদের নিয়ে আজ নয়, পরে একদিন বলব। শুধু আমি, গেছোদিদি, এদের করি সেলাম।

সোঘো যাঁর সিক্রেট আইডেন্টিটি তিনি পদার্থবিদ্যার লোক। থিওরেটিকাল ফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করেটরে এখন ইংরিজি ও বাংলায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি করেন। জীবনে প্রচুর টেনিদা, জটায়ু , টিনটিন , অ্যাস্টেরিক্স পড়ার সুবাদে সিরিয়াস থাকার ও লেখার প্রাণপণ চেষ্টা করেও প্রবলভাবেই ব্যর্থ হন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা