সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
PlantWave: গাছ যখন গান বাজায়

নমস্কার বন্ধুরা। আমি গেছোদিদি। আমার ভাইকে হয়ত তোমরা চেনো, সে যেখানে খুশি যেতে পারে। আর আমি? আমি যখন খুশি যেতে পারি। আজ আমি গেছি প্রায় একশ বছর পিছিয়ে, কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজের বেকার ল্যাবের লাল ঘরে। অবিশ্যি হপ্তাখানেক আগেও গিছলুম, সঙ্গে নিয়ে গিছলুম আধুনিক যুগের দু’টি যন্ত্র — একটা মুঠোফোন, যাকে ইংরিজি ভাষায় স্মার্টফোন বলে; আর একটা ট্রাঞ্জিস্টর সাইজের বাক্স, বাক্সের গায়ে রোমান হরফে লেখা PlantWave। ও হ্যাঁ, তার সঙ্গে কয়েকটা স্পীকারও দিয়ে এসেছি, যাতে জেসি গাছের গান শুনতে পান। চিন্তা নেই, কাজ হয়ে গেলে এ’কালের জিনিসগুলো ফেরত নিয়ে আসব, সময়রেখা (টাইমলাইন) দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ও হ্যাঁ, জেসির পরিচয়টা দিয়ে রাখি। জেসি, J.C., জগদীশ চন্দ্র। বোস। নাম তো সুনা হি হোগা।
গেছোদিদি রূপে প্রেসিডেন্সি কলেজে ঢুকলে মুশকিল। তাই মানুষের রূপ ধরেই চলেছি। বেশ মজার ব্যাপার।


আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু

বেকার ল্যাবের সিঁড়ি ভেঙে উঠে বাঁদিকে লম্বা ল্যাবঘর, তার একপাশে লাল ঘর, বা রেড রুম। রেড রুমে গোটা তিনেক টেবিল, কয়েকটা কাঠের চেয়ার, দু'দেয়ালে দু'টো ব্ল্যাকবোর্ড। একটা টেবিলে টবে একটা গাছ, তার দু'টো পাতায় দু'টো ইলেক্ট্রোড লাগানো। তারের অপর মুখ লাগানো PlantWave লেখা বাক্সর সঙ্গে। পাশেই মুঠোফোন, তাতে লাগানো স্পীকার, স্পীকারের মধ্য দিয়ে অদ্ভুত সুন্দর সঙ্গীত ভেসে আসছে। অপার্থিব গান যেন।
গানটা শুনছেন এক প্রৌঢ় ভদ্রলোক। আমার পায়ের শব্দে ঘুরে তাকিয়ে জেসি স্মিত হেসে উঠে দাঁড়ালেন।
“আসুন…এস। ভবিষ্যতে কী হবে জানতে কে না চায়। আমিও চাইতাম। সে স্বপ্ন যে এভাবে তুমি পূরণ করবে…আমি অভিভূত। দেখি, তোমার প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারি কিনা।”
ব্ল্যাকবোর্ডে গিয়ে ঝটপট ইলেক্ট্রোড লাগানো গাছটার কয়েকটা ডায়াগ্রাম এঁকে ফেললেন জেসি। ক্যামেরা নিয়ে যাইনি, তাই জেসির আঁকা ডায়াগ্রামের ছবি তুলে দেখাতে পারব না। তবে অনেকটা এইরকমঃ

“গাছের দু'টি পাতায় দু'টি ইলেট্রোড লাগানো। এই দু'টি দিয়ে...ইলেক্ট্রোড কাকে বলে জানো তো?”
ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বললাম। এইভাবে হ্যাঁ বলাটা আয়ত্ত করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
“বেশ। তো এই ইলেট্রোড দু'টির কাজ হল গাছের মধ্যে অতি হাল্কা বৈদ্যুতিক কারেন্ট পাঠানো।”
“তাতে গাছের কোন ক্ষতি...?” গলায় যথেষ্ট পরিমাণ সংশয় এনে জিজ্ঞেস করলাম।
“না না, খুবই কম ভোল্টেজ। গাছের কোনও ক্ষতির সম্ভাবনাই নেই,” আশ্বাস দিয়ে বললেন প্রৌঢ়।
“আচ্ছা। এই কারেন্ট পাঠিয়ে কী হয়?”
“আগে বুঝতে হবে কারেন্টটা পাস করছে কীভাবে। গাছের মধ্যে তো আর ধাতব তার নেই, যে বিদ্যুৎ যাতায়াত করবে।”
“তাহলে? কাঠের মধ্যে দিয়েও তো...”
“বলছি। তার আগে এদিকে এস।”
হাতের চকটা পাশের একটা টেবিলে রেখে জেসি অন্যদিকের একটা টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলেন।
“এইটা একটা ব্যাটারি, এর থেকে বিদ্যুৎ তৈরি হয়। আর এ'টা জল। এতে আমি কয়েক চামচ নুন মেশালাম। এবার এতে আমি ব্যাটারির সঙ্গে যুক্ত দু'টি তারের মুখ ডোবালাম। বাল্বটা জ্বলে উঠল কিনা?”
দেখলাম সত্যিই তাই। তারের দু'টো মুখের মধ্যে সরাসরি সংযোগ নেই, তাও একটা তারের সঙ্গে লাগানো বাল্বটা অল্প হলেও জ্বলে উঠছে। অর্থাৎ...
“...কারেন্টটা জলের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে, তাই তো? ”
ফের ঘাড় বেঁকিয়ে হ্যাঁ বললাম। যতবার প্র্যাক্টিস করব তত সহজে হবে।
“এখানেও একই ব্যাপার,” গাছটার দিকে দেখিয়ে বললেন জেসি। “এই দু'টো ইলেট্রোড ঠিক ওই ব্যাটারির তারদু'টোর মত। বিদ্যুৎ যাওয়ার জন্য পুরো সার্কিট এরাই তৈরি করছে—ব্যাটারি, তার, ইলেক্ট্রোড, গাছ, ইলেক্ট্রোড, তার, ব্যাটারি।”
“আর গাছের মধ্যে যে জল আছে...”
“...সেটার মধ্য দিয়েই কারেন্টটা যাচ্ছে। গাছের মধ্যে জল থাকে নিশ্চয়ই জানো?”
ফের ঘাড় বেঁকালাম। একটা খটকা লাগছিল। “আপনার টেবিলের জলটার মধ্যে নুন দিয়েছেন বলছিলেন...”
জেসির মুখে হাসি ফুটল। “ভেরি গুড। হ্যাঁ, নুন না থাকলে বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারবে না। একদম শুদ্ধ জল, ধর আমরা ল্যাবে যে ডিস্টিল্ড ওয়াটার ব্যবহার করি, তার মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ যেতে পারবে না। কেননা তার মধ্যে কোন ion নেই। নুন দিলে ion তৈরি হবে, সেই ion দিয়েই বিদ্যুৎ চলাচল করবে।”


সঙ্গীত তখনও চলছিল। ওঠানাম আছে, বাড়াকমা আছে, শুনে মনেই হতে পারে মানুষে বাজাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম। “আচ্ছা প্রফেসর — থুড়ি, জেসি, গাছের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল করে তো বুঝলুম। কিন্তু তাহলে এই সঙ্গীত তৈরি হচ্ছে কীভাবে?”
জেসি স্মিত হাসলেন। “জেসি বলে ডাকার জন্য ধন্যবাদ। চলবে, প্রফেসর বড্ড ফর্মাল।”
ফের ঘাড়ের এক্সার্সাইজ হল। একটু হাসার চেষ্টাও করলাম।
“গুড কোয়েশ্চেন,” জেসি ব্ল্যাকবোর্ডে ফিরে গিয়ে বললেন, “মাটিতে জল থাকে, তাতে প্রচুর মিনারেল লবণ ইত্যাদি মিশে থাকে, দ্রবীভূত হয়ে। গাছ শিকড় দিয়ে এই মিনারেল মিশ্রিত জল টেনে নেয়, তারপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এই নোনা জল জাইলেম টিস্যুর মধ্য দিয়ে নিজের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চালিত করে। অনেকটা যেভাবে আমাদের শরীরে রক্তচলাচল করে, যদিও গাছের মধ্যে হৃদয়ের মত পাম্পিং স্টেশন নেই।”
বলে উনি নিজের নাড়ি দেখতে শুরু করলেন। “মিনিটে বাহাত্তর। গড়। নিয়মিত। গাছে সেরকম নিয়মিতভাবে জল চলাচল হয় না। এইজন্যই এই সঙ্গীত।”
“মানে আপনি বলতে চাইছেন গাছের যে অংশটুকু দু'টো ইলেক্ট্রোডের মধ্যে আছে, সেখান দিয়ে কতটা জল চলাচল করছে, সেইটার ওপর সঙ্গীত নির্ভর করছে?”
“আলবাত। সালোকসংশ্লেষ চলছে, অতএব জলও চলাচল করবে, আর তাই বিদ্যুতের পরিমাণও পাল্টাবে।”
সরে দাঁড়ালাম। রেড রুমে জানলা নেই, বাইরের আলো আসার একমাত্র পথ ল্যাবঘরের মানুষসমান জানলাগুলো। সেই আলো আটকালে সালোকসংশ্লেষ হবে না ভাল করে।

জেসি ব্ল্যাকবোর্ড ছেড়ে ইলেক্ট্রোড লাগানো গাছের সামনে এসে দাঁড়ালেন। ফের সেই আগের ডায়াগ্রামটাই দেখালেন। আমি তোমাদের সেই আগের ছবিটাই দেখাই বরং। আর হ্যাঁ, বলে রাখা ভাল, এই যে ছবিগুলো দেখাচ্ছি, এগুলো কিন্তু আমার আঁকা নয়, PlantWave-এর স্রষ্টাদের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া। তোমরাও সেখানে গিয়ে ছবিগুলো দেখে আসতে পারো, লিঙ্ক লেখার শেষে পাবে।

“এই ইলেক্ট্রোড বেয়ে বিদ্যুৎ যাচ্ছে এই PlantWave লেখা বাক্সটায়। সেখানে কারেন্টের ওঠানামা মেপে গ্রাফ আঁকা হচ্ছে, সেই গ্রাফ মেনে শব্দ তৈরি হচ্ছে...”
হাত তুললাম। “কীভাবে?” জেসি ডায়াগ্রামটা একটু পাল্টালেন। আমিও ছবি পাল্টাই।

“গ্রাফ থেকে তৈরি হচ্ছে ওয়েভফর্ম, তরঙ্গরূপ। সেখান থেকে কম্পাঙ্ক হিসাব করা কঠিন নয়। আর সঙ্গীত আসলে কী? শব্দ, ধ্বনি, তরঙ্গ। ধ্বনির কম্পাঙ্ক বাড়িয়ে কমিয়েই সঙ্গীত সৃষ্টি হয়। PlantWave যন্ত্রটা সে ওয়েভফর্ম সৃষ্টি করেছে সেটা যাচ্ছে এই অন্য যন্ত্রটার মধ্যে…এই চলমান দূরভাষ যন্ত্রের মধ্যে।”

“স্মার্টফোন,” ফিসফিস করে বললাম। জেসি বোধহয় শুনতে পেলেন না। বললেন, “এই চলভাষ যন্ত্রের মধ্যে সেই ওয়েভফর্ম এবং সেই কম্পাঙ্ক মেনেই তৈরি হচ্ছে এই PlantWave সঙ্গীত। আমরা শুনছি, উপভোগ করছি।”

এই বলে জেসি ব্ল্যাকবোর্ড মুছে একটা নতুন ডায়াগ্রাম আঁকলেন। আমি PlantWave ওয়েব সাইট থেকে নেওয়া ছবিটা দিচ্ছি।

ডায়াগ্রামটার দিকে তাকিয়ে পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার হল। কিন্তু তার সঙ্গে কিছু প্রশ্নও মাথায় এল। জিজ্ঞেস করলাম, “এর মানে কী হল? গাছই সঙ্গীত সৃষ্টি করছে? গাছের এত বুদ্ধি? হ্যাঁ, গাছের প্রাণ আছে সেটা আপনি নিশ্চয়ই প্রমাণ করেছেন,” বলে আমি তৃতীয় টেবিলে রাখা যন্ত্রটার দিকে তাকালাম। ক্রেস্কোগ্রাফ।


ক্রেস্কোগ্রাফ

যন্ত্রটা এখনও আছে। এখানে নয়, বোস ইন্সটিটিউটে। চাইলে গিয়ে দেখে আসতে পারো। কীভাবে কাজ করে জানতে চাইলে সময় দিতে হবে, জেসির সঙ্গে আরেকটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে জেনে নেব।


“কিন্তু গাছ সঙ্গীত সৃষ্টি করতে পারে এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?” জিজ্ঞেস করলুম।
হেসে ফেললেন জেসি। “না, সেটা বোধহয় পারে না। দেখ, এখানে একটা ছোট্ট চালাকি আছে। বিদ্যুতের মাত্রায় তারতম্য ঘটছে কেননা গাছের মধ্য দিয়ে মিনারেল মিশ্রিত জলের চলাচলের পরিমাণ পাল্টাচ্ছে। এই পরিমাণের রকমফেরের বিভিন্ন কারণ হতে পারে। ধর, আমি যদি গাছের পাতাদু'টো এইভাবে দু'হাতে চেপে ধরি...এই দেখ, এতক্ষণ বেশ ঢিমে তালে চলছিল, এখন সঙ্গীতের তাল লয় দ্রুততর হল। আবার যদি ছেড়ে দি...এই যে...একটু অপেক্ষা কর, দেখবে ফের সেই ঢিমে তালে ফিরে গেছে। এর মধ্যে গূঢ় অর্থ খোঁজা নিরর্থক—গাছের পারিপার্শিক বা ভিতরের অবস্থা পাল্টালে জল চলাচলের পরিমাণ এবং গতি পাল্টাবে, সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের পরিমাণ পাল্টাবে...”
“এবং তাতে সঙ্গীতও পাল্টাবে। বুঝেছি।”


PlantWave লেখা বাক্সটার গায়ে হাত বুলিয়ে জেসি বললেন, “সুন্দর আবিষ্কার। গাছের জৈবিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে মানুষের বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনী শক্তি, দুই-ইয়ে মিলে এক অসামান্য মিলন ঘটেছে এখানে। এবং কত সহজে প্রমাণ করে দেওয়া যায় যে গাছেরও প্রাণ আছে, তাই না?” বলে উনি একবার ক্রেস্কোগ্রাফটার দিকে তাকালেন।
“যোগ্য উত্তরসূরি,” আমি বললাম। “শুরুটা আপনিই করেছেন, জগদীশ চন্দ্র বসু। পাওনিয়ার আপনিই।”


স্মিত হাসলেন জেসি।


আধুনিক কালে ফেরত এলাম। সোজা পৌঁছে গেলাম মার্কিনমুলুকে Zero-Waste Record Label ডেটা গার্ডেন (Data Garden) আপিসে। একটা টেবিলে যন্ত্রপাতি সমেত দাঁড়িয়ে ডেটা গার্ডেনের কর্ণধার জো পাতিতুচ্চি (Joe Patitucci) । PlantWave বাক্সটা ফেরত দিয়ে বললাম, জগদীশ্চন্দ্র বোস ওঁদের কাজে খুব খুশি। পাতিতুচ্চিও ভীষণ খুশি হয়ে গেলেন। আশা করি তোমরাও PlantWave-এর ব্যাপারস্যাপার জেনে খুশি হয়েছে। এই বিষয়ে আরও জানতে চাইলে সোজা ওদের ওয়েবসাইটে চলে যাও, https://www.plantwave.com/, আর ডেটা গার্ডেন ব্যাপারটা কী, এবং ওরা কেন জিরো-ওয়েস্ট, সেটা বুঝতে গেলে https://www.datagarden.org/ ঘুরে এস টুক করে।

সোঘো যাঁর সিক্রেট আইডেন্টিটি তিনি পদার্থবিদ্যার লোক। থিওরেটিকাল ফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করেটরে এখন ইংরিজি ও বাংলায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি করেন। জীবনে প্রচুর টেনিদা, জটায়ু , টিনটিন , অ্যাস্টেরিক্স পড়ার সুবাদে সিরিয়াস থাকার ও লেখার প্রাণপণ চেষ্টা করেও প্রবলভাবেই ব্যর্থ হন।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা