
হ্যালির ধূমকেতু
ধূমকেতুরা আসে কোথা থেকে? এমন একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই 'ওর্ট-এর স্টোরেজ ক্লাউড তত্ব'(Oort's storage cloud theory)-এর প্রবর্তন। ওলন্দাজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী জন ওর্ট (Jan Oort) এই তত্বের প্রবর্তক। ১৯৫০ সালে দেওয়া তাঁর এই মতবাদ অনুসারে সৌরজগতের বাইরে এক বিস্তীর্ণ অতি হিমশীতল অঞ্চল আছে। এখানেই ধূমকেতুর এক বিশাল ভান্ডার গড়ে উঠেছে। সৌরজগৎ সৃষ্টির পর ধূমকেতুগুলি গ্রহমন্ডল ছাড়িয়ে এই হিমশীতল অঞ্চলে এসে ভিড় জমায়। আর তারই ফলে তৈরি হয় 'ওর্ট মেঘপুঞ্জ'।

বিজ্ঞানী জন ওর্ট
বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে অন্য আর এক ভাবেও ওর্ট মেঘের সৃষ্টি হতে পারে। সৌরজগতের সৃষ্টির পর থেকে অনেকবারই কোনো না কোনো নীহারিকা কাছাকাছি এসেছে।সেই সময় সূর্যের আকর্ষণে নীহারিকা থেকে ছোট ছোট জমাট বাঁধা অংশ ছিটকে বেরিয়ে এসে আটকা পড়েছে সৌরজগতের সীমান্তের বাইরে। এর ফলেও সৃষ্টি হতে পারে 'ওর্ট মেঘপুঞ্জ'। বিজ্ঞানী ওর্ট-এর মতে এই মেঘপুঞ্জে অন্তত দশ হাজার কোটি ধূমকেতু জমা আছে। এত ধূমকেতু এক জায়গায় থাকলেও এদের মোট ভর পৃথিবীর ভরের থেকেও কম। এখনও পর্যন্ত এই ওর্ট মেঘপুঞ্জকেই ধূমকেতুর দেশ বলে ধরে নেওয়া হয়। অতিশীতল এই অঞ্চলে কঠিন বরফ হয়ে ধূমকেতুগুলি গা ঘেষাঘেষি করে রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা ওর্ট মেঘপুঞ্জ সৌরজগতের চারদিক ঘিরে রয়েছে। এই মেঘপুঞ্জের পাশ দিয়ে কোনো বড় নক্ষত্র চলে যাবার সময় তার আকর্ষণে ধূমকেতুগুলি আন্দোলিত হতে থাকে। এই আন্দোলনের ফলে কখনো কখনো মেঘপুঞ্জের একেবারে ধারে থাকা ধূমকেতুগুলির মধ্য থেকে কেউ কেউ ছিটকে বাইরে বেরিয়ে আসে। এদের মধ্য থেকে যখন কোনো ধূমকেতু সৌরমণ্ডলে প্রবেশ করে তখনই শুরু হয় তার পথ চলা।
ছবিঃ উইকিপিডিয়া