একটা ছড়া এমন হোক
যার দু’পায়ে জড়ানো থাকে ছুটি কেবল ছুটি
কুমিরডাঙা চু কিৎ কিৎ কিম্বা ফড়িং ধরে
উড়িয়ে দেওয়ার খেলা ছাড়া থাকবে না কিচ্ছুটি ।
তার সঙ্গে পাখপাখালি থাকলে খুশি কে না !
আর তা ছাড়া থাকতে পারে নানান রঙের ঘুড়ি;
কিন্তু দেখো কাটাকুটির ঝামেলা চলবে না,
সে হওয়া চাই দূর আকাশে মজার ওড়াউড়ি ।
সেই ছড়াটা তেমনভাবে যেতেই পারে গড়া,
যার ভিতরে চাই না কোনও কঠিন কিছু মানে
তাইতে যদি ফাঁক থেকে যায় কিছু
সে-ফাঁকটুকু ভরিয়ে দেব মনকেমনের গানে ।
সেই ছড়াটা কাঁধের ব্যাগে ঝুলিয়ে শহর-গ্রামে
ঘুরব সবাই, বলব হেঁকে, “ছড়া চাই গো ছড়া ?”
নিশ্চিত যে আসবে ছুটে অনেক ছেলেমেয়ে
বলবে, “দেখি কেমন ছড়া, দাম বুঝি খুব চড়া ?”
বলব হেসে, “ইচ্ছে হলে এমনি নিতে পারো,
ছুটির ছড়ার দাম কিছু হয় নাকি !
কিন্তু নিলে আমার দলে আসতে হবে তোমায়
বই-খাতা সব ঘরে ফেলে, পড়ায় দিয়ে ফাঁকি”।
তেমন ছড়া লিখলে যদি আমার হাতে দাও
সবাই মিলে সেই ছড়াটা ভালমতন শিখে
গড়িয়ে নেব প্রতিপদের চাঁদ দিয়ে এক নাও
ছড়ার জন্য ছই বানাব না-তোলা ফুল দিয়ে,
কুড়িয়ে পাওয়া রাজহংসের পালক দিয়ে পাল
বানিয়ে ছড়া বিদায় দেব নদীতে ভাসিয়ে ।
ভাবছ, ‘এমন ছড়া কেন পেয়েও দেব ফেলে ?’
কী আর করা ? মা বলবে, “শেষ হয়েছে ছুটি
বই-খাতা সব নামিয়ে আনো এবার,
রাখবে মনে ঐ ছড়তে হাজারো ভুল-ত্রুটি” ।
তাই তো তাকে ভাসিয়ে দেব, এ-ঘাট সে-ঘাট ঘুরে
খুশির ছড়া দুঃখী হয়ে যাক না অনেক দূরে !
একদিন ঠিক পৌঁছে যাবে একটা এমন দেশে,
যে-দেশ তাকে আপন করে রাখবে ভালবেসে ।
তেমনতরো দেশ যদি পায়, পেরিয়ে তেপান্তর
নতুন করে করবে শুরু দেদার হুটোপুটি
আমরা তখন মনখারাপের সঙ্গী হয়ে ফের
বন্দী হওয়ার জন্য ঘরে ফিরব গুটিগুটি ।
পুনশ্চতে বলছি শোনো, লিখবে যা এরপরে
সেই ছড়া হোক মিচকে-পাজি কিন্তু নজরকাড়া
ধরণধারণ দেখে যেন সব্বার মা-মাসি
তার সঙ্গে খেলার জন্য একপায়ে হয় খাড়া ।
ছবিঃ অনন্যা দত্ত দাস