সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

এক গুলমোহর গাছের কোটরে দুই ভদ্র, শিক্ষিত  কাঠবেড়ালী থাকতো পাবলো আর পিকাসো।
একদিন তাদের গাছটা এক দুষ্টু কাঠুরে কেটে নিয়ে চলে গেলো।
পাবলো আর পিকাসো তো কখনো ঘরছাড়া হয়নি , জন্ম থেকেই ওখানে থাকতো। তাই তারা বাক্স গুছিয়ে যখন বাইরে বেরোলো তখন তো একেবারে অবাক।  একটাও গাছ নেই। সব কাঠুরেরা কেটে নিয়ে চলে গেছে। শুধু সামনে একটা পুরোনো দোকানের  মতো দেখা যাচ্ছে। ওই দোকান ছিল  ইসিডোরার কেকের দোকান।
সুন্দর ফুটফুটে মেয়ে ইসিডোরার জগতে আর কেউ ছিল না। তার ওপরে তার এক পা ছিল খোঁড়া আর এক চোখ ছিল কানা। ইসিডোরার দিদা মিরান্ডা খুব সুন্দর কেক বানাতো। সেই সময় খুব ভালো চলতো সেই দোকান। কিন্তু দিদা মারা যাওয়ার পর ইসিডোরার আর কেউ রইলো না। পাড়ার ছেলে মেয়েরা তাকে ভেঙ্গিয়ে মজা করে বলতো,

"ইসিডোরা ইসিডোরা,
এক পায়ে খোঁড়া
এক চোখে কানা
তার কেকগুলো পোড়া"
আসলে কেক গুলো ওভেন থেকে বের করতে যেতে যেতেই পুড়ে ছাই হয়ে যেত। ইসিডোরা তাই দেখে হাপুস হুপুস কাঁদতো।

ইসিডোরা কে কাঁদতে দেখে পাবলো  বললো ,
" আমরা দুজন জুটি পাবলো  পিকাসো
লক্ষ্মী মেয়ে ইসিডোরা একবার হাসো
গাছের কোটরটাতে ঘর ছিল খাসা
দুষ্টু কাঠুরে এসে ভেঙে দিলো বাসা "
ইসিডোরার ভারী মায়া হলো কাঠবেড়ালীদের দেখে। সে দিদার তৈরী করে রাখা বিস্কুট খেতে দিলো তাদের।

তারপর কাঠবেড়ালীদের থাকার জন্য কাঠের বাক্সে খড় বিছিয়ে তুলো দিয়ে বিছানা করে দিলো।
কাঠবেড়ালীরা  দেখলো ইসিডোরার খুব অভাব। ঘরে একটা পয়সা নেই। কেকেরও বিক্রি নেই। হঠাৎ একদিন তারা একটা পুরোনো আলমারীতে দিদার কেক তৈরির রেসিপি দেখতে পেলো। ইসিডোরা তো চোখে খুব ভালো দেখে না তাই কাঠবেড়ালীরা সেই রেসিপি পড়ে সুন্দর সুন্দর কেক মাফিন তৈরী করে ফেললো।
সেই কেক , মাফিনের এমন স্বাদ যে লোকের মুখে মুখে ইসিডোরার কেকের দোকানের কথা ছড়িয়ে পড়লো।
রাজামশাইয়ের কানেও সে কথা গেলো। রাজপুত্রের বিয়ের জন্য রাজামশাই বিশাল উৎসবের আয়োজন করেছিলেন।
তা ইসিডোরার দোকানে এসে রাজকর্মচারী বলে গেলো যে সাধারণ কেক নয়। রাজামশায়ের চায়  দু  মানুষ লম্বা বারোতলা কেক।
কাঠবেড়ালীরা একটা ফন্দি আঁটলো।
বললো - "তুমি কিচ্ছু চিন্তা কোরো না ইসিডোরা , আমরা দেখছি।"
 রাজার অনুষ্ঠানে বড় চার চাকা গাড়িতে সেই কেক পৌঁছে গেলো। চারদিকে মহা ধুমধাম। এদিকে এমন সুন্দর কেক দেখে তো রাজ্য সুদ্ধু লোক থ।
ওদিকে কী যেন শোরগোল। রাজপুত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে  দেওয়ার জন্য যত জন রাজা এসেছিলো সবাই একে একে ফিরে গেলো। কেউ বললো -" রাজপুত্র কানে কালা, কী জ্বালা।"
কেউ বললো ," রাজপুত্র বোবা , তওবা তওবা"
আসলে রাজপুত্র কানে শুনতো না , কথাও বলতে পারতো না। রাজা একথা কাউকে বলেননি। তখন কাঠবেড়ালীরা রাজার কাছে গিয়ে তাঁর কানে কানে ইসিডোরার কথা বললো। রাজা বললেন – “কই কোথায় সে , ডাকো তাকে।"
ইসিডোরার নাম ধরে ডাকতেই কেকের নিচের একটা ছোট্ট দরজা দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে বেরোলো সে।
রাজপুত্র তখন আঙুলের ভাষায় বললো যে ইসিডোরাকে খুব পছন্দ হয়েছে তার।
ইসিডোরারও রাজপুত্রকে খুব পছন্দ হলো।
তারপর আবার বাজনা বাজতে শুরু করলো , আতসবাজিতে চারিদিক রোশনাই হয়ে উঠলো। ইসিডোরা রাজপুত্রের সঙ্গে ওই রাজপ্রাসাদে থাকতে শুরু করলো।
কাঠবেড়ালীরা কেকের দোকানে কাজ করে, আর রাত্রি হলে রাজপ্রাসাদে ফিরে যায়
যেখানে রাজপুত্র আর ইসিডোরা আঙুলের ভাষায় কথা বলে।

 

ছবিঃ শাশ্বত ও সুশ্রুত

দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী বর্তমানে বেঙ্গালুরর বাসিন্দা। গবেষণা করছেন বৈদিক সাহিত্য নিয়ে। ভালোবাসেন কবিতা ও ছোটগল্প লিখতে , ছবি আঁকতে, যে কোনো সৃষ্টিশীল কাজে ডুবে থাকতে, আর ছোটদের সঙ্গে সময় কাটাতে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা