আজ আমি একটা গল্প বলব। গল্পটা যাদের নিয়ে, তাদের খবরদার বোলো না কিন্তু। তারা যদি জানতে পারে যে আমি ওদের এই গল্পটা জানি, তবে কিন্তু খুব অস্বস্তিতে পড়বে৷
সেদিন ছিল বোনের জন্মদিন। সকালবেলা কেক কাটার পর আমি আর বোন উপহারগুলো খুলতে শুরু করলাম। অনেক গল্পের বই ছিল। আমরা খুবই খুশি হলাম। ছোটকাকার আর কিছুক্ষণ পরেই অফিস, তার মধ্যে সে কোথা থেকে কতগুলো বেলুন এনে বোনকে দিল। বোন সেগুলোকে পড়ার টেবিলে বেঁধে দিয়ে একটা বেলুন হাতে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। ছোটকাকার বাস চলে আসায় সেও চলে গেল। মাকে দেখলাম রান্নাঘরে পিসির সাথে রান্না করছে। একটা রুই মাছ ভাজা হচ্ছে, বাবা সেটা কিনে দিয়ে অফিস চলে গেছে। আমি বারান্দায় বসেছি গিয়ে। দেখলাম, আমার বিড়াল গুল্লু, কুকুর ভেলু ও বাগানের একটা পাখি কী যেন বক-বক করছে। একটা শামুক এসে পড়ায় সেও আলোচনায় যোগ দিল। ওদের কথা না শুনতে পেলেও বেশ বুঝতে পারছিলাম ওরা খুবই উত্তেজিত। তারপরে দেখলাম ওরা হঠাৎ কোথায় যেন মিলিয়ে গেল।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল, কোন পাত্তা নেই। হঠাৎ দেখি আকাশে একটা এরোপ্লেন উড়ছে। দূরবীনটা হাতে নিয়ে প্লেনটার দিকে তাক করতে দেখলাম গুল্লু, ভেলু, শামুক, আর পাখি তাতে চেপে আকাশে উড়ছে। আমরা চোখ তো কপালে!
মা আর পিসি ভাতঘুম দিচ্ছিল৷ ওরা ওঠার আগেই গুল্লুরা 'সুঁইই' করে উড়ে চলে এলো। গুল্লু তো এসেই আমার গায়ে গা ঘষতে লাগলো, আর ভান করল যেন কিছুই হয়নি; ভেলু পাড়ার বাকি কুকুরদের ভোউয়ে ভোউ মেলাল। শামুকটা আমার চটির পিছনে লুকিয়ে পড়ল, আর পাখিটা জানালা দিয়ে উড়ে পালাল।
বিকেলের চা করতে করতে হঠাৎই মায়ের চোখ পড়ল সব্জীর ঝুড়িতে রাখা বেগুনটার উপর। ব্যাস। তারপর মা বলল,"ভালই হয়েছে, আজ জুনির জন্মদিনে মুড়ির সাথে একটা করে বেগুনীও ভাজা হোক।"
গুল্লু ও ভেলু দেখলাম ভালই চেটেপুটে বেগুনী খেল! কেউই জানতে পারল না ওরা সারা দিন কোথায় ছিল, আর ওরাও জানতে পারল না যে আমি ওদেরকে নিজের চোখে আকাশে উড়তে দেখেছি।
গল্প লিখেছেঃ
প্রবাহনীল দাস
ষষ্ঠ শ্রেণি, একমে একাডেমী, কালনা, পূর্ব বর্ধমান
গ্রাফিকঃ মিতিল