আমাদের বাড়ির মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গাটি হল আমার বাড়ির ছাদ । আমি দুপুরের আহারের পর ছাদে আসি এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত গল্পের বই পড়ি । ছাদ থেকে সূর্যাস্ত দেখতে আমার ভীষণ ভাল লাগে । ঐ সময় পড়ন্ত সূর্যের আলো আকাশের গায়ে যে সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে সেটা দেখতে আমার খুব ভাল লাগে । সন্ধ্যার সময় ও রাতের বেলা আকাশ দেখতে আমার খুব ভাল লাগে । সূর্যাস্ত দেখে আমি নীচে চলে আসি । ছাদে আমি খেলা করি, ছবি আঁকি, ঘুরে বেড়াই, গান গাই । মাঝেমাঝে ছোট ছোট গাছ (হলুদ, আদা, কুমড়ো, ছোট ছোট নিম গাছের চারা ও ফুলের গাছ ) লাগাই । আমাদের বাড়ির চারদিকেই একতলা ও দোতলা অনেকগুলো বাড়ি ও ফ্ল্যাট আছে । আমাদের বাড়ির ঠিক পাশের বাড়িতে শ্রেষ্ঠা নামে আমার এক বন্ধু আছে । আগে আমি ছাদ থেকে ওর সাথে খেলা করতাম, আর অনেক গল্প করতাম । আমাদের বাড়ির উল্টোদিকের ফ্ল্যাটে একটা দাদা আছে । ওই দাদাটা (চিকু দাদা) প্রায় রোজ রাতে গান প্রাকটিস করে । আমরা সবাই শুনতে পাই । আর ওই ফ্ল্যাটের উপরের তলায় জ্যেঠু ও জ্যেঠিমা আছে, ওনারা আমার লেখা নিয়মিত পড়েন আর চকলেট খাওয়ান । আমাদের বাড়িতে অনেক গাছ আছে , যেমন - আম, নারকেল, নিম, কারিপাতা ও আরও অনেক ছোট ছোট গাছ । নিম গাছটাতে মৌটুসি, টুনটুনি, বুলবুলি, চড়াই, শালিক, ঘুঘু ও ছাতারে ইত্যাদি অনেক রকমের পাখি আসে । নারকেল গাছটায় একটা কাঠঠোকরা পাখি মাঝেমাঝে ঠক ঠক করে । আমগাছে মৌটুসি, টুনটুনি, শালিক, ছাতারে ও মাঝেমাঝে ঘুঘু পাখি আসে । কারিপাতা গাছে একটা কোকিল আসে, সে পাকা কারিফল খায় এবং খুব সকালে জোরে জোরে ডাকে । সেই সময় আমার দাদা ঘুমিয়ে থাকে । তাই সেই ডাক শুনে দাদা খুব রেগে যায় আর পাখিটার সাথে ঝগড়া করে । আমি তা দেখে খুব হাসি । পরে আমি পাখিটাকে উড়িয়ে দিই । আমাদের বাড়িতে আমার আর একটি প্রিয় জায়গা হল দোতলায় বসার ঘরের জানলা । ওই জানলাটায় বসেও আমি গল্পের বই পড়ি, খেলি অনেক সময় কাটাই । আমাদের বাড়ির কয়েকটা বাড়ি পরে অদিতি নামে আমার আর এক বন্ধু আছে । এখন আমি রোজ বিকেলে ওর সাথে খেলা করতে যাই । ওর বাড়িতে আমরা ছাদেই খেলা করি । অদিতি শুক্র - রবি দাদুর বাড়ি যায়, তাই এখন আমি শুক্র - রবি এই তিনদিন ছাদে যাই । তাই এখন আমি রোজ বিকেলে আমার বাড়ির ছাদে যাই না । তবে সকালের দিকে বা দিনের মধ্যে যখনই সময় পাই তখনই আমি ছাদে আসি । আর মাঝেমাঝে রাতের বেলা আকাশে বড় চাঁদ আর চাঁদের আলো দেখতে বাবার সাথে অবশ্যই ছাদে যাই । চাঁদ আর চাঁদের আলো দেখতে আমার খুব ভাল লাগে ।
লেখা আর ছবিঃ
শ্রীমেধা চক্রবর্তী
পঞ্চম শ্রেণি, হোলি চাইল্ড স্কুল, কলকাতা
এই লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে ইচ্ছেমতন বিভাগের 'মনের জানলা ' লেখালিখির খেলার অংশ হিসাবে।