সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
টিনুর অ্যাডভেঞ্চার

অভিমানে চোখে জল এল টিনুর। রুনাদি তাকে চিনতেই পারল না। সে যে সুটকেসে চড়ে, নিজের প্রাণ বাজী রেখে এতদূর পাড়ি দিল, নিজের ফ্যামিলির সঙ্গে মাইসোর, ঊটি ঘুরবে বলে, তার কোন দাম নেই। এরপর ও কি বলা যায় - মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ?

গোছগাছ করার জন্য সুটকেসের ডালাটা খুলেই চেঁচিয়ে উঠল রুনাদি, 'ও মা, সুটকেসের ভেতরে যে নেংটি ইঁদুর, তুমি কি এটাকে কলকাতা থেকে প্লেনে চড়িয়ে নিয়ে এসেছ, নাকি এই হোটেলেই ঢুকল? হোটেলটাও হয়েছে তেমনি, আর একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে না? গুচ্ছের টাকা নিচ্ছে, এটা নাকি রিসর্ট - এদিকে সার্ভিস এইরকম। ডাকছি ওদের ম্যানেজার কে'।

রুনাদির হম্বিতম্বি দেখে আরও ঘাবড়ে যায় টিনু। এই কী সেই রুনাদি! কলকাতায় থাকতে তো মুখ দিয়ে রা বেরুত না, শুধু কলেজ আর বাড়ি। মোটা মোটা বই মুখে দিনরাত পড়াশোনায় ডুবে থাকত। ব্যাঙ্গালোরে তিনমাস চাকরি করে এতটা বদল! সেও ঠিক আছে, বিদেশ-বিভূইঁ এ একা থাকতে হলে একটু চৌকস হওয়া ভাল। কিন্তু তাই বলে একেবারে নিজেদের লোক, মানে ইঁদুরকে ভুলে যাবে! কে যেন বলেছিল স্বধর্মে নিধনং নাকি...মানে কখনো নিজের ধর্ম থেকে বিচ্যুত হওয়া উচিৎ নয়। পণ্ডিতদের কথা শুনতে হয়, তাহলে আজ আর এমন দিন দেখতে হত না। রুনাদির অত মোটা মোটা বই – অমন সুখাদ্য ছেড়ে দেওয়াটা খুবই বোকামির কাজ হয়েছে। নিজের মনেই চুক চুক করে টিনু। যাদেরকে নিজের পরিবার মনে করে তার এই লোভ সম্বরণ কিংবা আত্মত্যাগও বলা যায়, তারা তো ফিরেও দেখছে না। এমনকী কাকিমা মানে রুনাদির মা – যার সঙ্গে দিনে পঞ্চাশবার দেখা হত রান্নাঘরে, অবলীলাক্রমে বলে দিল, 'না না, কলকাতা থেকে ইঁদুর আসবে কী করে, এখানেই একবার সুটকেস খুলেছিলাম, তখনই ঢুকেছে নিশ্চয়ই। তুই একটা ভাল রুম দিতে বল ওদের'।
 
কী আর করতে পারত টিনু? ফ্যাঁসফেঁসে আত্মবিশ্বাসহীন গলায় যদি বলত, 'আমি তোমাদেরই লোক, মানে...ইঁদুর', কে শুনত তার কথা?   
      
আজ দু'দিন হল কিচ্ছুটি খায় নি টিনু। মনটা একেবারে ভেঙে গেছে। শুধু ভেবেই চলেছে মানুষের স্বার্থপরতা আর অকৃতজ্ঞতার ইতিহাস। খাবেই বা কী? আজ সকালে একবার একটা গোল সাদা মত নরম চাকতি তে কামড় বসিয়েছিল – একেবারে বিস্বাদ। সঙ্গে একটা বাটিতে ঝোলের মতন কি একটা ছিল, মুখে দিয়ে দেখল – কী টক, কী টক! তখন থেকে গালে হাত দিয়ে বসেছিল টিনু। হাত মানে সামনের দিকের বাঁ পা'টা।   

আরে খাটের নীচে ওই কোণে ওটা কি? বেশ হৃষ্টপুষ্ট একটা ইঁদুর মনে হচ্ছে। দুজনেই আড়চোখে দুজনকে দেখে। মোটা ইঁদুরটা এবার এগিয়ে আসে। টিনু তো দুর্বল শরীরে আরও ভয় পেয়ে যায়, কাঁপতে থাকে। ভাবে প্রাণটা গেল বেঘোরে। কী কুক্ষণে কলকাতা ছেড়ে সুটকেসে চড়ে পাড়ি দিয়েছিল ব্যাঙ্গালোরে। হার্টফেল করার আগে আর একবার মোটার চোখের দিকে তাকায় টিনু। কিন্তু না, কোন হিংস্র ভাব তো দেখা যাচ্ছে না ওর চোখে, যেন কিছুটা কৌতূহল। এমনকি একটু খুঁটিয়ে দেখতে কিছুটা যেন বন্ধুত্বপূর্ণ হাবভাব বলে মনে হল টিনুর।

'উটা আইতা'? কাছে এসে প্রশ্ন করে ওটা।

টিনু চুপ করে থাকে। বোঝেও না, কি বলবে ভেবে পায় না। শেষে বলেই ফেলে, 'দাদা, আমি বাঁচতে চাই। আমার নিজের ফ্যামিলি আমাকে এখানে ফেলে রেখে চলে গেছে। এই বিদেশ-বিভূইঁ এ আমি এখন একা কী করব? আমাকে বাঁচাও দাদা'।

'অ বাঙালী! তাই ওরকম মিনমিন করছিস। শোন্, আমার নাম শ্রীনু। এ তল্লাটের দশটা হোটেলের ইঁদুরবাহিনী আমার আন্ডারে কাজ করে। আমি থাকতে কোন ভয় নেই...। আহা রে মুখটা তো শুকিয়ে আমসি হয়ে গেছে! ওই জন্যই তো জিজ্ঞেস করছিলাম কিছু খেয়েছিস কিনা... দাঁড়া, আমি এখুনি ব্যবস্থা করছি।'

শ্রীনু ঝড়ের গতিতে যায়, সুনামির গতিতে ফিরে আসে। সঙ্গে কিছুটা ভাত আর একটা মাছের টুকরো, একটা ছোট পলিথিন প্যাকেটে। বলে, 'নে। চটপট খেয়ে নে, তোর জন্য নিয়ে এলাম কিচেন থেকে। খাওয়ার পর তোকে রিসর্ট ঘুরিয়ে দেখাব'।  

দু'দিনের উপোষী পেটে টিনু গোগ্রাসে খেয়ে নেয় মাছ-ভাত। তারপর একটু ধাতস্থ হয়। শ্রীনুর দেখানো বালতি থেকে জলও খেয়ে নেয় একটু।

'এবার সব কিছু গুছিয়ে বল আমাকে। আমি দেখছি কি ব্যবস্থা করা যায়'।
 
রিসর্টের ভিতর নুড়ি বিছানো রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করে শ্রীনু। টিনু তার সংক্ষিপ্ত জীবনকাহিনী শোনায়। বলে, তাকে যেভাবেই হোক কলকাতায় ফিরে যেতে হবে, এখানে এই অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে মরবার কোন অভিলাষ নেই তার।

সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। যেভাবে এসেছিস, সেভাবেই তোকে কলকাতা ফেরৎ পাঠানোর বন্দোবস্ত করে দেব। অনেক বাঙালী ট্যুরিস্ট আসে এখানে, তাদেরই কারও সুটকেসে.....। কিন্তু ভাই, সুটকেসে আগে থাকতেই ফুটো করে রাখতে হবে। খুব রিস্ক নিয়ে এসেছিস তুই কলকাতা থেকে আসার সময়। যেকোনো সময় বাতাসের অভাবে তোর প্রাণ চলে যেতে পারত।

টিনু কী ভাষায় কৃতজ্ঞতা জানাবে, ভেবে পায় না। শেষে মুখ দিয়ে একটা কিচ্ কিচ্ আওয়াজ করে মনের ভাব প্রকাশ করে। শ্রীনু, টিনুর মনের ভাব বুঝতে পেরে বলে, 'ঠিক আছে, ঠিক আছে...'

টিনুর অ্যাডভেঞ্চার

স্যুইমিং পুলের ধারে একটা ডেক চেয়ারে তড়াক করে লাফিয়ে ওঠে শ্রীনু। টিনুকেও ডেকে নেয় পাশে। চিৎ হয়ে প্রায় আধশোয়া অবস্থায়, পেছনের পা দুটোকে সামনে ছড়িয়ে দেয় শ্রীনু। বলে, 'দ্যাখ, এইভাবে রিল্যাক্স করতে হয়'।

'শ্রীনুদা, রিল্যাক্সটা কি জিনিস?'
'আরে, আরাম, আরাম। এইভাবে আরাম করতে হয়। বড় বড় মানুষরা সব এইভাবে আরাম করে। চুপচাপ শুয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।'
'কই, আমার তো তেমন কিছু আরাম হচ্ছে না, এরকম অদ্ভুত ভাবে শুয়ে থাকাতে...'
'হবে, হবে। আস্তে আস্তে দেখবি ভাল লাগছে। তবে চেয়ারগুলো একটু বড় বানিয়েছে ওরা...। সে যাকগে, ওই দ্যাখ ...ওইগুলো হল গেস্টরুম। দেশ বিদেশের সব ট্যুরিস্টরা থাকে ওখানে। সামনে এটা স্যুইমিং পুল। সকাল সন্ধ্যে প্রচুর মানুষ সাঁতার কাটে ওখানে। এখন দুপুর বলে ফাঁকা। ওইদিকে কিচেন আর ডাইনিং হল। সামনেটায় রিসেপশান আর লবি। গেট দিয়ে ঢুকেই, ওই জায়গাটা হল গাড়ি রাখার পার্কিং। আর ওইদিকে বাগান আর ফোয়ারা। ভাল লাগছে না? কত বড় রিসর্ট! '

'হ্যাঁ ভাল'। সংক্ষেপে জবাব দেয় টিনু। তার মন পড়ে আছে কলকাতার দু কামরার ছোট ফ্ল্যাটে। প্রসঙ্গ পাল্টে টিনু জিজ্ঞেস করে, 'শ্রীনুদা, তুমি এত ভাল বাংলা কী করে শিখলে?'

'শুধু কী বাংলা, আমি কতগুলো ভাষা জানি, তুই তো হয়ত তাদের নামও শুনিস নি। কন্নড় হল এখানকার ভাষা। সেটা ছাড়া আমি তেলুগু, তামিল, মালায়ালাম, হিন্দি আর ইংরেজি মোটামুটি বুঝতে পারি।'
'কী করে শিখলে এত ভাষা?'
'সব জায়গা থেকে ট্যুরিস্ট আসে এখানে। তাদের কথা শুনে শুনেই সব শিখে যাই আমি। এগুলো তো গেল আমাদের দেশীয় ভাষা। বললে বিশ্বাস করবি না, আমি কিন্তু জাপানীটাও মোটামুটি জানি।'
'তুমি বলছ কি শ্রীনুদা?'
'আরে, এটাই তো বাড়ির ইঁদুর আর হোটেলের ইঁদুরের তফাৎ। জগতটাকে তো চিনলি না। ঘরকুনো হয়েই রইলি চিরটাকাল'। গর্বে শ্রীনুর বুকটা ফুলে ওঠে, কত ইঞ্চি বলা মুশকিল!

টিনু চুপ করে থাকে। প্রথম অ্যাডভেঞ্চারেই যা শিক্ষা হয়েছে তার! টিনুকে চুপ থাকতে দেখে, শ্রীনুকে শেষ পর্যন্ত নিজের বিদ্যে জাহির করতেই হয়। বলে, 'আচ্ছা শোন্ তবে, জাপানী ভাষা কেমন হয়...যখনই শুনবি মসমস, খসখস, নাকাতানি, তাকাহাসি, হাসিখুশি...বুঝবি ওটা জাপানী ভাষা। যাক গে, হাসিখুশি কথাটা বোধ হয় বাংলা, না রে?'
'মসমস, খসখসও তো বাংলা মনে হচ্ছে।'
'না না ওগুলো পিওর জাপানী। তোকে খাঁটি জাপানী সাহেবের মুখ থেকে শোনাবো ঐ সব কথা, তখন বুঝবি এই শর্মা কি জিনিস!'

সেই সুযোগও এসে যায় কয়েকদিনের মধ্যেই। শ্রীনু এসে খবর দেয় এক জাপানী সাহেব এসেছে হোটেলে। মুখ দেখেই শ্রীনু আন্দাজ করেছিল, এ সাহেব নির্ঘাত জাপানী। তারপর মুখ থেকে একটা বাক্য বেরোতেই একেবারে নিশ্চিত হল।

শ্রীনু আর টিনু আধো অন্ধকার করিডোর দিয়ে হেঁটে চুপি চুপি ঢুকে যায় জাপানী সাহেবের রুমে। রাত প্রায় বারোটা। সাহেবের বিছানায় একটা লম্বা কাগজের রোল। টেবিলে ল্যাপটপ। সাহেব এত রাতে কাকে ফোন করছে, '......হাই, হাই,...মসমস...ওয়াকানা দিসগা...আনও...তয়োতা ইন্দিয়া......'।

শ্রীনু চোখ টেপে টিনুর দিকে তাকিয়ে। ভাবখানা এই – কেমন, বলেছিলাম কিনা। এখন দ্যা্‌খ, আমার জাপানী অভিজ্ঞতা। শ্রীনু আরও রহস্য ফাঁস করে। আগেও দেখেছে এইরকম জাপানী সাহেবদের। একেবারে কাজপাগল সব। রাতে হোটেলে ফেরার পরেও ওই সব লম্বা কাগজগুলো নিয়ে বসে, ফ্যাক্টরির নকশা বোধ হয়। আর ল্যাপটপে কী সব আঁকিবুঁকি করে। এখান থেকে কিছু দুরেই বিড়দি বলে একটা জায়গায় টয়োটা কোম্পানির গাড়ি তৈরির ফ্যাক্টরি আছে। ওখানে কাজের জন্যই আসে সব জাপানী সাহেবরা।

'শ্রীনুদা চল না একবার আমরাও টয়োটা ফ্যাক্টরি ঘুরে আসি। দেখব কেমন করে গাড়ি তৈরি হয়'। দ্বিতীয় অ্যাডভেঞ্চারের সম্ভাবনায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে টিনু। মিশন কলকাতা ভুলে যায় কিছুক্ষণের জন্য।
'নারে সে কী করে হবে। ফ্যাক্টরিতে অনেক লোকজন থাকবে নিশ্চয়ই। একবার ধরা পড়লে আর বেঁচে ফিরতে হবে না। খুব রিস্কি হয়ে যাবে ব্যাপারটা।'
'না, না যেতেই হবে। ও শ্রীনুদা, আমি ফ্যাক্টরি দেখব। আমি কখনো ফ্যাক্টরি দেখিনি। তোমাকে যেতেই হবে। তোমার কোন কথা শুনব না। যেতেই হবে...যেতেই হবে...যেতেই হবে,' রীতিমতো বায়না করতে থাকে টিনু।

ও! এই বাচ্চা ইঁদুর ছানাটাকে নিয়ে তো ভারি মুশকিলে পড়া গেল। এ তো কোন কথাই শুনতে চায় না। শ্রীনু একবার শেষ চেষ্টা করে ওকে নিবৃত্ত করার। বলে, 'ঠিক আছে বল, কী করে যাবি ফ্যাক্টরিতে আর ফিরেই বা আসবি কী করে?'
'কেন, ওই ল্যাপটপ ব্যাগের ভেতরে চড়ে। দুদিকে দুটো ফুটো করে - একদিকে তুমি, একদিকে আমি। তোমার মুখেই তো শোনা এইরকম টেকনিক।  '                         
শ্রীনু হাল ছেড়ে দেয়। একেই বলে গুরুমারা বিদ্যে।

পরদিন সকালে ওয়াকানা সাহেবের ল্যাপটপ ব্যাগে চড়ে দুই ইঁদুর রওনা হয় টয়োটা ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে। কাঁধে ল্যাপটপ ব্যাগ, একহাতে ড্রয়িঙের তাড়া, অন্যহাতে লাঞ্চের বাক্স নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে গাড়িতে উঠতে উঠতে ওয়াকানা সাহেব খেয়াল ও করলেন না কখন তার ল্যাপটপ ব্যাগ ফুটো হয়ে গেছে আর সেই ব্যাগে চড়ে দুই মক্কেল চলেছে ফ্যাক্টরি ভ্রমণে।    
       
ফ্যাক্টরি দেখে তাক লেগে গেল দুই ইঁদুরের! বিশাল বড় শেড। কত লোক কাজ করছে, সবার একইরকম পোশাক। উপরে নীচে সব লম্বা লম্বা চওড়া পাতের মত লাইন, সে লাইন নিজেরাই চলছে। তারই উপর গাড়ির অংশ একদিক থেকে অন্যদিকে যাচ্ছে। সবই আধ খ্যাঁচড়া গাড়ি। কোথাও কোথাও লোকেদের হাতে এক রকমের যন্ত্র, তা থেকে আগুনের ফুলকি ছুটছে মাঝে মাঝে। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে দুই ইঁদুর।এ জিনিস বোঝার সাধ্যি ভগবান তাদের দেন নি। প্রার্থনা কিংবা অভিযোগ জানায় ভগবানের কাছে – মগজ দিয়েছ শুধু, ঘিলুখানি ভুলে গেছ দিতে।

ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল। ওয়াকানা সাহেবের সঙ্গেই ফেরা। তাঁর তো আবার রাত বারোটা না বাজলে ফেরার সময় হয় না। পরের দিন আবার ঠিক সকাল সাতটায় ফ্যাক্টরিতে। রাতে শোবার আগে শ্রীনু বলল, 'শোন কাল সকাল সকাল উঠতে হবে, কাজ আছে কিন্তু'।

আবার সকালে ওঠা! শ্রীনুদাও কি ওয়াকানা সাহেবের শিডিউল ফলো করছে নাকি? যাই হোক, কাজ বলছে যখন, নিশ্চয়ই মজাদার কিছু হবে।

সকাল সাড়ে ছ'টা। ওদের কাজ শেষ। ওয়াকানা সাহেব বাথরুম থেকে চান সেরে বেরিয়ে এসেছেন। তোয়ালে পরা, খালি গা। জাঙ্গিয়াটা হাতে নিয়েই লাফিয়ে উঠলেন, জায়গায় জায়গায় ফুটো। গজগজ করতে করতে খালি গায়েই ওয়াকানা সাহেব ছুটলেন নীচে রিসেপসনে। রিসেপসনিস্ট ছেলেটি নাইট ডিউটি সেরে ফেরার তোড়জোড় করছিল। ওয়াকানা সাহেব দুহাতে জাঙ্গিয়াটা তুলে ধরলেন ছেলেটার সামনে। চীৎকার করে জাঙ্গিয়াটা দোলাতে দোলাতে বলতে লাগলেন, 'হোয়াত ইস দিস...র‍্যাতস রানিং...... র‍্যাতস কাতিং......নো স্লিপিং......'

অট্টহাস্যে ফেটে পড়ল টিনু আর শ্রীনু! হাসি আর থামতেই চায় না। ওয়াকানা সাহেবের ওই মুখ আর চীৎকার!

কলকাতা ক্যান্সেল। টিনু ঠিক করেছে, ইডলি বড়া খেয়েই কাটিয়ে দেবে বাকি জীবনটা! তাছাড়া শ্রীনুদা তো বলেছে, অনেক রকম ভাতও পাওয়া যায় এখানে – লেমন ভাত, টম্যাটো ভাত, পুলিহরা, সম্বর ভাত, বিসিবেলা ভাত।         

ছবিঃ তৃষিতা মিত্র 

জন্ম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাঁকরা গ্রামে। লেখালেখির শুরু স্কুল জীবনে, মূলত মায়ের উৎসাহেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক। বর্তমানে চাকুরীসূত্রে হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা