পরোপকার
শ্যাওড়া গাছের ব্রহ্মদত্যির গায়ে বড্ড ব্যথা,
নানা দেশের ভূত বদ্যি ভীড় করেছে সেথা।
"গাছের শেকড় ভাল্লাগে না, অন্য কিছু নেই?"
রেগে ওঠেন ব্রহ্মদত্যি, "এমবিবিএস কই?"
হুমদো ভূত ছুটে মরে, এমবিবিএস খোঁজে
অবশেষে না পেয়ে নিজেই সেজে বসে।
এমবিবিএস হুমদো ভূত স্টেথো নিয়ে হাঁটে,
ব্রহ্মদত্যি টের পায় না, শুয়ে থাকে খাটে।
বলে হুমদো স্বর উঁচিয়ে, "কি হয়েছে আপনার?
দশটা দিলাম পেইনকিলার, আসবো পরে আবার।"
ওষুধ খেয়ে ব্রহ্মদত্যির গায়ের ব্যথা সারে,
মনে মনে দারুণ খুশি হয় সে হুমদোর 'পরে।
দুদিন পরে ব্রহ্মদত্যি আবার করে চিৎকার,
"ওরে হুমদো কোথায় গেল তোর আনা সেই ডাক্তার?
আবার হল গায়ে ব্যথা , এ কেমন চিকিৎসে?
ধরে আন তো কানটা টেনে, চড়িয়ে দি কষে!"
হুমদো পালায় লেজ গুটিয়ে নিমগাছের ওই ডালে,
কেটে পড়াই ভাল এবার, নইলে চাঁটি গালে!!
নীনা ঘোষদস্তিদার
খড়্গ্পুর
- বিস্তারিত
- লিখেছেন নীনা ঘোষদস্তিদার
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
মা
নেইকো ঘর , নেইকো বাড়ি ;
রাস্তাঘাটেই চাপাই হাঁড়ি ।
পাশ দিয়ে যায় , কত গাড়ি ;
এদিক ওদিক এলোপাথাড়ি ।
“ ও মা ও যে দৌড়ে গেল ---
ধর না ছুটে , কী যে হল !! ’’
“ এই নাও গো , তোমার ছেলে ’’
ছোট্ট শিশু , মায়ের কোলে ।
এমনি করেই দিন কেটে যায় ,
আজ তো গেল , কাল যে কি হয় ।
ভাববো এমন সময় কোথায় ?
ভিক্ষা করেই , দিন কেটে যায় ।
পশ্চিমেতে সুয্যি ডোবে ,
ক্লান্ত পাখি , বাসায় ফেরে ।
রাস্তাঘাটে জ্বললো আলো ,
মেঘ করেছে , বড্ড কালো ।
টিপটিপটিপ বৃষ্টি পড়ে ,
মনটা আমার গুমরে মরে ।
খানিক বাদেই উঠলো যে ঝড় ,
কী যে করি , হায় ঈশ্বর !!
কোথায় যাব বসে ভাবি ,
জলের ফোঁটা , কাঁদছি আমি ।
চারদিকেতে জল থইথই ,
নতুন বাসা কোথায় বানাই !
রাতটা গেল না ঘুমিয়ে ,
বসে আছি মুখ শুকিয়ে ।
কখন জানি বৃষ্টি থামে ,
ভোরের আলো পূবের পাটে ।
আরেকটা দিন , আবার লড়াই ;
ভিজে কাপড় উঠে দাঁড়াই ।
মা যে আমি , ভরসা ওদের ;
ওই দেখা যায় ঝলক রোদের ।।
মধুমিতা প্রামাণিক
গিরীশ পার্ক , কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মধুমিতা প্রামাণিক
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
তিনে তখন বনগাঁ লোকাল
ইস্টিশনে আসছে গাড়ি , সব দিয়েছে ছুট;
উঠতে হবে ঠেলেঠুলে , ভীড়ে ঠাসা ধুত!
কেউ বা আবার ভেবেছিল , আসবে গাড়ি দু’য়ে;
ধড়ফড়িয়ে ছুট লাগাল , মাইকে বলা শুনে।
ওভারব্রীজটা পড়েই আছে , নিজের মতো একা;
রিস্ক নিয়ে সব যাচ্ছে হেঁটে , লাইন দেখে ফাঁকা!
হাঁটছে সবাই এর-ওর দেখে , নেইকো মনে ভয়;
সময়খানা অনেক দামী , জীবনখানা নয়!
কানে গুঁজেই চলছে হেঁটে , শুনছে বোধহয় গান-
আনমনা হয়ে সবার পিছে , একটা সবুজ প্রাণ।
তিনে তখন বনগাঁ লোকাল , ছুটছে ভীষণ জোরে;
আপনমনে হাঁটছে বুবুন , হাঁটছে নিজের ঘোরে।
টের বুঝি সে পেল এবার , চারদিকে শোরগোল-
ঘাড় ঘুরিয়ে বনগাঁ লোকাল ! বাজছে মায়ের ফোন।
ট্রেনটা থেমে !! স্বপ্ন , না কি সত্যি আছি বেঁচে!
ভীষণ জোরে ব্রেক কষেছে , চালক তাকে দেখে।
অঝোরধারায় কাঁদছে বুবুন , নতুন জীবন যেন;
“এমন ভুল আর কোনদিনও , করব না কক্ষণও।’’
মধুমিতা প্রামাণিক
গিরীশ পার্ক , কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মধুমিতা প্রামাণিক
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
পুজো এলেই ...
পুজো এলেই আমার চোখে বাড়ির গলি
সারাটা দিন কাজে ব্যস্ত মায়ের মুখ
সাদা-কালো-আঁধার-আলো শহরতলি
ঢাকের বোলে গভীর সুখে নাচছে বুক
পুজো এলেই আমার দুচোখ জুড়ে নদী
শিউলি উঠান,তুলসীতলা,কাশের বন
অমলকাকা, বুয়াপিসি,বুরানদিদি
চেনা মুখের সহজ হাসি সবুজ মন
পুজো এলেই আমার চোখে পাড়ার দোকান
শিবমন্দির,বটতলা, জয়জগন্নাথ
পুজো এলেই আমার বুকে আনন্দ গান
মায়ের হাতে ঘি মাখানো গরম ভাত
পুজো এলেই আমার চোখে বাড়ির গলি
পড়ার টেবিল, খেলার পুতুল,আমার ঘর
পুজো এলেই আগমনী গানের কলি
বাবার গলা,"আসবি তো মা এই বছর?"
লেখা ও ছবিঃ
দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী
ব্যাঙ্গালোর, কর্ণাটক
- বিস্তারিত
- লিখেছেন দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
কেউ নেই
গায়ে জামা নেই
পায়ে চটি নেই
তেল নেই তোর চুলেতে,
কেউ আগে নেই
কেউ পিছে নেই
কেউ নেই তিন কুলেতে।
এসে বলে তাই
দুটো খেতে চাই
তবু দিই তোরে তাড়িয়ে,
কেউ কাছে এসে
তোরে ভালবেসে
দি নাতো হাত বাড়িয়ে।
লেখাঃ
তরুণ কুমার সরখেল
আমডিহা,পুরুলিয়া
ছবিঃ
অবি সরকার
আমডিহা,পুরুলিয়া
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তরুণ কুমার সরখেল
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা