অনেক কাল আগে আমাদের দেশে জনশ্রুতি নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি খুব উদার ছিলেন, আর প্রজাদের নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। রাজ্যের খরচ চালাতে গেলে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা বা কর সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু রাজা জনশ্রুতি কখনও অসহায়, গরীব প্রজাদের কাছ থেকে জোর করে খাজনা আদায় করতেন না। সূর্য যেমন তার তাপ দিয়ে পৃথিবী থেকে জলকণা শুষে নিয়ে আকাশের মেঘ তৈরি করে আর মেঘ থেকে বৃষ্টি করে সেই জল আবার পৃথিবীর বুকে ফিরিয়ে দেয়, রাজাও তেমন প্রজাদের কাছ থেকে কর নিয়ে তা দিয়ে অনেক ভালো কাজ করতেন, যেমন, তিনি রাজ্যে সব জায়গায় পুকুর ও জলের কুয়ো কাটিয়ে প্রজাদের জলকষ্ট দূর করতেন। অনেক কাল আগে হোটেল ছিল না, তাই রাজ্যের বাইরে থেকে আসা অতিথিদের থাকবার ব্যবস্থা করার জন্য রাজারা অতিথিশালা, ক্লান্ত পথিকের বিশ্রামের জন্য পান্থশালা এইসব নির্মাণ করতেন। জনশ্রুতিও অনেক অতিথিশালা তৈরি করিয়েছিলেন, তিনি ব্রাহ্মণ ও সাধুদের দান করতেন, রাজ্যে অনেক গাছ লাগাতেন, দীনদুঃখীর সেবা করতেন। এইসব সৎ কর্ম করার ফলে তাঁর খুব নামযশ হয়েছিল। লোকে বলত, “রাজা জনশ্রুতির মতো রাজা আর হয় না!”
প্রজাদের সুখসুবিধার কথা জানতে, তাদের অবস্থা নিজের চোখে দেখতে রাজা প্রায়ই রথে চেপে, ছদ্মবেশে নগর ভ্রমণে বের হতেন। এরকমই একদিন রাজা জনশ্রুতি নগর-ভ্রমণে বেরিয়েছেন, সঙ্গে রথের সারথী ছাড়া আর কেউ নেই। সব দেখেশুনে সন্তুষ্ট হলেন রাজা। দেখলেন, তাঁর রাজ্যে প্রজারা সুখেই আছে। তিনি রথ রাজপ্রাসাদের দিকে ফেরানোর জন্য সারথীকে আদেশ করলেন। তখন সন্ধ্যা হয় হয়। আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা। দুটি সাদা বক ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে দিগন্তে। তিনি শুনতে পেলেন, উড়তে উড়তে পাখি দুটো নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। আমরা রূপকথার গল্পে, পুরাণের গল্পে অনেকসময় যে দেখি, পশুপাখিরা মানুষের ভাষায় কথা বলছে, তার মানে হল, ওরা ওদের ভাষাতেই কথা বলে, কিন্তু কোন কোনও মানুষ তপস্যার বলে তাদের ভাষার অর্থ বুঝবার শক্তি লাভ করে। জ্যোতির্বিদ্যা, জাদুবিদ্যা ও অন্যান্য রহস্যবিদ্যার মতো এও এক বিশেষ বিদ্যা। রাজা শুনলেন, মেয়ে পাখি জিজ্ঞাসা করছে, “এই লোকটা কে গো?” ছেলে পাখি তাকে ধমক দিয়ে বলল, “তুমি জানো না! এই তো রাজা জনশ্রুতি! দেখতে পাচ্ছ না, এর চোখমুখ কেমন দিব্য কান্তিতে ঝলমল করছে! এঁর মহৎ কীর্তির খ্যাতি স্বর্গকেও ছাপিয়ে গিয়েছে!” তখন মেয়ে পাখিটা বলল, “রাজার মহিমা অনেক বড় হতে পারে, কিন্তু ব্রহ্মজ্ঞানী রৈক্যর কাছে তা ধুলোর সমান!”
রাজা এতই শুদ্ধ মনের মানুষ ছিলেন যে, তিনি বুঝতে পারলেন, এই পাখিরা সাধারণ পাখি নয়। এঁরা নিশ্চয় কোন ছদ্মবেশী দেবতা। তাঁরই চোখ খুলে দেওয়ার জন্য এমন ভাবে তাঁর সামনে দিয়ে উড়ে গিয়েছে যাতে করে তাদের কথা রাজা শুনতে পান। এর নিশ্চয় কোন বিশেষ অর্থ আছে। রাজার খুব কৌতূহল হল, “কে এই রৈক্য? কী তাঁর ব্রহ্মজ্ঞানের মহিমা? আমাকে জানতেই হবে! তাঁকে খুঁজে বের করে আমি তাঁর কাছ থেকে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করব।”
এই সমস্ত মনে মনে চিন্তা করে তিনি সারথীকে আদেশ দিলেন, “যেখান থেকে পারো, রৈক্যকে খুঁজে বের করো।”
রাজার আদেশ পেয়ে সারথী সারাদিন ধরে নগরের নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করল, কিন্তু রৈক্য নামের কাউকে খুঁজে পেল না। বিফল হয়ে পরদিন রাজার কাছে ফিরে সব জানালো। সব শুনে অনেক ভেবেচিন্তে জনশ্রুতি বললেন, “ব্রহ্মজ্ঞানী পুরুষ অত্যন্ত জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলেন। তুমি বরং নির্জন কোনও স্থানে, যেমন-নদীতীরে বা জঙ্গলের মধ্যে কোন পোড়ো মন্দিরে খুঁজে দেখো, যদি তাঁর দেখা পাও!” রাজার কথামতো নগরের জন কোলাহল থেকে দূরে নিরিবিলি জায়গাগুলোতে খোঁজ করে রৈক্য নামে এক ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেল। সারথী এসে সংবাদ দিল, “মহারাজ, রৈক্য নামে এক ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া গেছে, সে এক রথের সারথী। নগরের এক জনহীন প্রান্তে তার রথের নিচে শুয়ে আছে, আমাদের সঙ্গে সে কথাই বলল না!” জনশ্রুতি বললেন, “ঠিক আছে, আমি নিজেই যাব তাঁর সঙ্গে দেখা করতে।” ব্রহ্মজ্ঞানী রৈক্য মুনিকে সম্মান জানাতে তিনি তাঁর জন্য অনেক দামী দামী উপহার, মণিমাণিক্য নিলেন। এছাড়াও আগেকার দিনে গরু, ঘোড়া, হাতী, দাসদাসী প্রভৃতি দান করার প্রথা ছিল। গরুকে সম্পদ বলে মানা হতো। চাষবাসের কাজে গরু খুব প্রয়োজনে লাগত, গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার চালানো যায়, তাই ব্রাহ্মণকে গরু দান করবার প্রথা ছিল। ঘোড়া গাড়ি টানত, তাই ঘোড়া দেওয়া এখনকার দিনে গাড়ি উপহার দেওয়ার সমান। অনেক কাল আগে কোনরকম আধুনিক মেশিন ছিল না। সব কাজ মানুষ নিজে হাতেই করত। তাই কাজকর্মের জন্য দাসদাসীর প্রয়োজন হতো। এসমস্ত কথা মাথায় রেখেই রাজা রৈক্যর জন্য উপহার নিয়ে চললেন তাঁর কাছ থেকে ব্রহ্মজ্ঞানের উপদেশ পাওয়ার আশায়।
সেখানে পৌঁছে দেখলেন একটা অপরিচ্ছন্ন লোক বসে আছে, মাথার চুল উস্কোখুস্কো, সর্বাঙ্গে খোস-পাঁচরা থেকে পুঁজ রক্ত ঝরছে আর লোকটি নির্বিকার ভাবে বসে গা চুলকাচ্ছে। শ্রীরামকৃষ্ণ দেব বলতেন, ব্রহ্মজ্ঞানী ব্যক্তিরা জগতের কোন ধন সম্পদের আকাংক্ষা করেন না। মানুষ তাঁদের অসাধারণ দৈবী শক্তির কথা জানতে পেরে যদি এসে বিরক্ত করে, তাই তাঁরা লোকের চোখে ধুলো দিতে নানারকম ছলের আশ্রয় নেন। কেউ বালকের মতো হাবভাব দেখান, কেউ জড়বৎ নিশ্চল হয়ে বসে থাকেন, কেউ বা পিশাচের মতো ঘৃণ্য আচরণ করেন, কেউ আবার ঠিক পাগলের মতো ব্যবহার করেন। লোকে ভয় পেয়ে তাঁদের থেকে দূরে সরে থাকেন। রাজা যদি সাধারণ মানুষ হতেন, তবে রৈক্যর ঐ অবস্থা দেখে ঘৃণা করে চলে যেতেন। কিন্তু জনশ্রুতি তো পুণ্যবান। তাই তিনি রৈক্যর উপরের চেহারা দেখে ভুল বুঝলেন না। অতি নম্র ভাবে রৈক্যকে বললেন, “দয়া করে এই উপহারগুলো আপনি স্বীকার করুন আর আমাকে উপদেশ দিয়ে ধন্য করুন!” রৈক্য বললেন, “দূর হয়ে যা শূদ্র!” যারা একেবারে লেখাপড়া জানত না, সমাজের সবচেয়ে নিচু শ্রেণির মানুষ, তাদের শূদ্র বলা হতো। রৈক্য রাজাকে তাচ্ছিল্য করে ‘তুই’ সম্বোধন করলেন ও শূদ্র বললেন।
তাতেও রাজা দমে গেলেন না। রৈক্য রাজার উপহার গ্রহণ করা তো দূরের কথা, তাঁকে অপমান করেছেন। এত ধন-সম্পদ, দাসদাসী দেখে সে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে, ইনি কোন বড় মানুষ হবেন। অথচ তাতেও তার কোনও ভয় নেই। এতে রাজা অপমানিত হলেন না, উলটে রৈক্যর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেল। তিনি ইচ্ছা করলে রৈক্যকে এক্ষুণি শূলে চড়াতে পারেন, তাঁর মুণ্ডচ্ছেদের আদেশ দিতে পারেন, কিন্তু এই লোকটার মৃত্যুভয় পর্যন্ত নেই! কী এমন শক্তি সে পেয়েছে, যার বলে রাজরোষকেও ভয় করে না? তিনি ভাবলেন, সেই শক্তির সন্ধান পেতেই হবে!
প্রাসাদে ফিরে গিয়ে তিনি সমস্ত রাত চিন্তা করলেন, তারপর একমাত্র মেয়েকে ডাকলেন পরামর্শ করবার জন্য। রাজকন্যা যেমন সুন্দরী, তেমনই বুদ্ধিমতী। সে বলল, “বাবা, তুমি আমাকে দান কর। তাহলে তা নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার সমান হবে। কারণ কন্যা হল আত্মজা। কন্যাদান মানে এক অর্থে আত্মদান। আত্মদান না করে আত্মবিদ্যা বা ব্রহ্মবিদ্যা লাভ করা যায় না!” রাজা বললেন, “ঠিক! একদম ঠিক বলেছিস তুই মা! অহঙ্কার শূন্য হয়ে আরও বিনীত হয়ে শিষ্যের মতো তাঁর চরণে আত্মসমর্পণ করতে হবে, তবেই তাঁর করুণা হবে!”
পরদিন, রাজা তাঁর মেয়েকে নিয়ে, আরও বেশী ধন-সম্পদ ও দাসদাসী নিয়ে এবং আগের চেয়ে আরও বেশী বিনীত হয়ে রৈক্যকে গিয়ে অনুরোধ করলেন, “আত্মস্বরূপ আমার কন্যাকে আপনি গ্রহণ করুন, এইসমস্ত ধনসম্পত্তি গ্রহণ করুন, অনেক কাল আপনি কঠোর তপস্বী জীবন যাপন করেছেন। আমি আপনাকে পাঁচটি গ্রাম দান করব, আপনি আমার কন্যাকে বিবাহ করে সৎ গৃহী জীবনে প্রবেশ করুন। আমাকে কৃপা করে সেই ধন দান করুন, যা আপনাকে এমন মহিমান্বিত করে তুলেছে!”
রৈক্য দেখলেন, রাজা খেয়ালের বশে নয়, সত্যিকারের অন্তরের প্রেরণায় ব্রহ্মজ্ঞান প্রার্থী হয়ে এসেছেন, তাঁর মন গললো। তাঁর তপস্যা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এবার তিনি সংসার ধর্ম পালন করবেন মনস্থ করলেন এবং তাঁর লব্ধ জ্ঞান রাজাকে দিলে প্রজাদের আরও কল্যাণ হবে বলে বুঝতে পারলেন।
রৈক্য বললেন, “তাই হবে। আসুন রাজন্, আমি আপনাকে উপদেশ করব ‘সম্বর্গ বিদ্যা’। এ হল পরম পুরুষের জ্ঞান। এই বিদ্যার সার আপনাকে বলছি, মন দিয়ে শুনুন ও ধারণা করুন। দেখুন, এই মহাবিশ্বে যা কিছু বস্তু আছে, সেসব কিছুকে একটি মাত্র মূল উপাদানে ভেঙে ফেলা যায়। তা হল কণা। যেমন ধরুন, বায়ু। এই বায়ু এমন এক উপাদান, যা আমাদের বাইরে সর্বত্র পরিব্যাপ্ত হয়ে রয়েছে মহাকাশ বা শূন্য রূপে। আবার এই বায়ু আমাদের শরীরের ভিতরেও রয়েছে প্রাণবায়ু রূপে। আমরা ঐ প্রাণের শক্তিতেই প্রাণধারণ করে আছি, বেঁচে আছি। বায়ু না থাকলে, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকত না। আবার দেখুন, এই যে সূর্যের আলো, তারও পৃথিবীর বুকে পৌঁছাতে একটি মাধ্যম প্রয়োজন। বায়ু সেই মাধ্যম। বায়ুমণ্ডল সূর্যকিরণে উত্তপ্ত হয়। সেই উত্তাপ থেকে গাছপালা, শস্য জন্মায়। তারা খাদ্য তৈরি করে। সেই খাদ্য আমরা গ্রহণ করি। খাদ্য থেকে বেঁচে থাকার বা প্রাণের শক্তি পাই। তাহলে আরেক অর্থে খাদ্য বা অন্ন হল প্রাণ। তাহলে জগতের এই দুই মূল উপাদান দাঁড়ালো, (১) বায়ু—যা আছে বাইরে, (২) প্রাণ—যা আছে আমাদের ভিতরে। এই দুটিই পরম সত্তার দুটি দিক, যেমন একটি মুদ্রার দুই পিঠ। সেই পরম সত্তা হলেন ব্রহ্ম। সংক্ষেপে এই হল ‘সম্বর্গ বিদ্যা’। এটা আরও ভালো করে রাজাকে বোঝানোর জন্য রৈক্য একটি গল্প বললেন।
একসময় শৌনক ও কক্ষসেনী নামে দুজন ঋষি খেতে বসেছেন। এই সময় একজন অহঙ্কারী ছাত্র তাঁদের কাছ থেকে ব্রহ্মজ্ঞান পাওয়ার আশায় উপস্থিত হলেন এবং খাবার খেতে চাইলেন। কিন্তু ঋষিরা তখন ভোজন আরম্ভ করেছেন বলে তাঁদের খাওয়া সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত ছাত্রটিকে অপেক্ষা করতে বললেন। ছাত্রটি অহঙ্কারী ছিল। তার রাগ হল। সে বলল, “আমার অন্তরের ব্রহ্মকে আপনারা অসম্মান করলেন!” তখন ঋষিরা বললেন, “ব্রহ্ম কি কেবল তোমার অন্তরেই আছেন? তিনি সকলের অন্তরেই রয়েছেন। আমরা এখন আহার ত্যাগ করলে আমাদের অন্তরের ব্রহ্মও যে অসম্মানিত হবেন! ব্রহ্ম সমস্ত পদার্থের এমনকি সকল দেবতাদেরও উৎপত্তির কারণ, তিনিই সর্বস্ব ভোগ করেন, তাঁর মহিমা কেউ অতিক্রম করতে পারে না!” তখন সেই ছাত্রের অহঙ্কার চূর্ণ হল। ঋষিরাও ভালোবেসে তাকে খাওয়ালেন।
আমাদের পৃথিবীর বাইরের যেসমস্ত বস্তু, যেমন সূর্য, চাঁদ, তারা—এইসব বস্তুকে বলা হয় আধিদৈবিক, আমাদের দেহের বাইরের যে ভৌত (প্রাকৃতিক) পরিবেশ, যেমন-বাতাস, জল ইত্যাদিকে বলা হয় আধিভৌতিক এবং আমাদের ভিতরের যা কিছু, প্রাণ, মন, ইন্দ্রিয় প্রভৃতিকে বলা হয় আধ্যাত্মিক বস্তু। সেইসমস্তই একমাত্র একটি সত্তা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। সেই সত্তা হলেন পরম সত্তা বা ব্রহ্ম। আর জীব, অর্থাৎ আমরা সেই ব্রহ্মই—‘জীবো ব্রহ্মৈব, না পরঃ’। এই জ্ঞান যখন মর্মে মর্মে উপলব্ধি হয়, মানুষ সমস্ত কামনাবাসনা এমনকি মৃত্যুভয়ও জয় করে।
আমাদের দেশ ভারতবর্ষে যুগ যুগ ধরে মুনিঋষিরা এই ব্রহ্মবিদ্যার চর্চা করেছেন। তাঁদের গুরুকুল ছিল। কেউ শিষ্যদের ‘সম্বর্গ বিদ্যা’, কেউ বা ‘দহর-বিদ্যা’, এমনি নানাভাবে ব্রহ্মবিদ্যা উপদেশ করতেন। শিষ্য পরম্পরায় এই জ্ঞান বহু প্রজন্ম ধরে বাহিত হতো। কালে সেসবের চর্চা হারিয়ে গেল। কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ বলে গেছেন, ভারতবর্ষ আবার আধ্যাত্মিক শক্তিতেই জাগ্রত হবে। প্রাচীন কালের মহাজ্ঞানী রৈক্য, যাগ্যবল্ক্য, বিশ্বামিত্র প্রভৃতি ঋষিদের মতো জ্ঞানী মানুষ, জনশ্রুতি, জনক প্রমুখের মতো রাজা, নচিকেতা সত্যবানের মতো সাহসী, সত্যবাদী ও বীর ছেলেরা ও গার্গী, মৈত্রেয়ী, কাত্যায়নী, লীলাবতীর মতো গুণবতী মেয়েরা আবার ভারতের প্রাচীন গৌরব ফিরিয়ে আনবে।
কাহিনির উৎস- ছান্দোগ্য উপনিষদ; চতুর্থ অধ্যায়; প্রথম-তৃতীয় বল্লী।
ছবিঃ পার্থ মুখার্জি