প্রতি বছর মহালয়ার দিন ভোর চারটের সময় আমরা রেডিওতে কলকাতার আকাশবাণী থেকে প্রচারিত যে মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানটি শুনতে পাই, সেই অনুষ্ঠানের ভাষা এবং শ্লোক যিনি পাঠ করেছেন তিনি আমাদের সবার পরিচিত। তিনি হলেন কিংবদন্তি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।
এসো সংক্ষিপ্তভাবে তোমার সাথে ওঁর পরিচয় করিয়ে দিই।
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ মহাশয়ের জন্ম হয়েছিল ১৯০৫ সালের ৪ঠা অগাস্ট উত্তর কলকাতার মাতুতালয়ে। তাঁর পিতা কালীকৃষ্ণ ভদ্র ছিলেন বহুভাষাবিদ। তিনি ১৪টি ভাষা জানতেন। তাঁর মাতা ছিলেন সরলাবালা দেবী। আর তাঁর একমাত্র ভাই ছিলেন ভূপেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ মহাশয় ১৯২৬ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯২৮ সালে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন।
মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠান করা ছাড়াও তিনি একাধিক ধ্রুপদী কাহিনিকে বেতার নাট্যের রূপ দেন। তিনি ঔপন্যাসিক বিমল মিত্রের সাহেব বিবি গোলামের মতো বিখ্যাত উপন্যাসকে মঞ্চায়িত করেছেন। তাছাড়াও অনেক বিখ্যাত গল্প, উপন্যাসকেই তিনি নাট্যরূপে মঞ্চায়িত করেছেন।
আমরা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে মূলত চিনি মহালয়ের দিনের ওনার কন্ঠে। মহালয়ার অনুষ্ঠানটি এতটাই জনপ্রিয় যে ১৯৭৬ সালে আকাশবাণী কর্তৃপক্ষ ওনার পরিবর্তে সেই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা উত্তম কুমারকে অন্য একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলে জনসাধারণ সেটা মেনে নেননি। আকাশবাণী কর্তৃপক্ষকে সেই অনুষ্ঠান বদল করে তখন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র মহিষাসুরমর্দিনী সম্প্রচার করতে হয়েছিল।
২০০৬ সালে সারেগামা ইন্ডিয়া লিমিটেডের তরফে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ মহাশয়ের মেয়ে সুজাতা ভদ্রকে তার পিতার এই মহান কীর্তির সম্মান হিসেবে ৫০,৯১৭টাকা দেওয়া হয়েছে।
ওনার ছদ্মনাম ছিল বিরুপাক্ষ। ১৯৯১ সালের ৩রা নভেম্বর উনি পরলোক গমন করেন।
বিষয়ের সূত্রঃ ইন্টারনেট
গ্রাফিক্সঃ মহাশ্বেতা রায়