চোখে রোদ পড়ল আর ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘর ভরতি আলো।
সকাল সকাল আমাদের আলো মাসির মতই ঘরটাকে এক বালতি আলো ঢেলে হড়বড় করে সাফ করছে সূর্য মামা।
একটু পরে ক্লাস শুরু হবে।
রান্না ঘরে এখন জাইলোফোন বাজছে। হা হা। তিনটে অভেনে এক সাথে ফুটছে কত রান্না। হা হা । কাল জিরে, সাদা জিরে অং স্বাহা।
বারান্দার গাছ গুলো দেখতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ একটা জিনিস দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। টী টেবিল- এর একটা বিশাল ছায়া ডাইনিং রুম এর মাটিতে পড়েছে। কী বিরাট ছায়া।
দেখলাম ছায়াটার মধ্যে একটা আদ্ভুত সুন্দর ছবি।
টেবিল ভরতি আমার বই আর খাতা। মাঝখানে রিমোট স্ট্যান্ড।
মনে হচ্ছিল একটা বিশাল দুর্গ দাঁড়িয়ে আছে অন্ধকারে। আর মাঝখানে দারিয়ে একটা ছায়ার রাজা। একা ।
কী মনে হল আমার ; ছবি তুলে রাখলাম ।
কত রাজা যে জন্মেছে এই পৃথিবীতে, জানি না। এখন তো ওরা আর কেউ নেই।
মা পড়ে শোনায়, ওদের গল্প।
যুদ্ধের গল্প, দুর্গের গল্প, রাজা রানী রাজপুত্র, মন্ত্রি, হাতি, ঘোড়া।
কিছুই আর নেই।
বইতে ছবি দেখি।
ঘুরতে যাই যেখানে রাজার বাড়ি ছিল।
এইবার ধীরে ধীরে আলো সরে যাচ্ছে।
সূর্য ও আরও অনেক ওপরে উঠে যাচ্ছে।
আমার ছায়ার রাজাও কোথায় হারিয়ে গেল।
মনে হল সত্যি তো আসল রাজাও তো ওই ছায়ার রাজার মতই। কত একা।
হাতি ঘোড়া মন্ত্রি নিয়ে সাঙ্ঘাতিক যুদ্ধ করে একদিন কোথায় হারিয়ে গেলো।
শুধু রেখে গেল রাজার বিরাট বাড়িটা।
আমরা যখন ওদের গল্প পড়ি বইতে , ওই সকাল বেলার ছায়ার রাজার মত জেগে ওঠে ইতিহাসের আসল রাজারা।
আমাদের সবার মনে।
লেখা ও ছবিঃ
অর্হণ খাঁ,
প্রথম শ্রেণি,
সমেরভিল স্কুল, গ্রেটার নয়দা
(অর্হণ-এর মুখেমুখে বলা গল্পটি লিখে পাঠিয়েছেন মা শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী। )