টিয়া আর রিয়া দুই বোন। ওরা একই ক্লাস, একই বিভাগ-ক। পুজো আসছে, কালকে গণেশ চতুর্থী। ওরা এবারে সব আয়োজন করবে কারণ ওরা এবারে ১০ বছর হয়েছে। সকাল হতে না হতেই ওরা উঠে সব আয়োজন , যা ওদের করার ছিল, করে নিলো। টিয়া রিয়াকে বলল ", একটা ছবি আঁকি, তারপর ওটাকে গণেশ ঠাকুরের ওপরে লাগিয়ে দেবো।" রিয়াও হ্যাঁ করল। ওরা ছবিটা এঁকে গণেশ ঠাকুরের ওপর লাগিয়ে দিলো। এরম করেই দুর্গা পুজো আসল। সপ্তমীতে তিতলি দিদি আসলো। তিতলি দিদির বয়স ১৫। তিতলি দিদি মানেই খুব মজা, খুব হুল্লোড়। রিয়ার জন্মদিন নবমিতে। আসলো রিয়ার জন্মদিন। খুব মজা। তিতলি দিদি রিয়াকে একটা বই আর কুর্তি দিলো। টিয়া ওকে একটা ঘড়ি আর গাউন দিলো। ওরা খুব মজা করলো। ওরা ফুচকা , বিরিয়ানি আইসক্রিম খেলো।
দশমির দিন তিতলি দিদি দেখলো যে সোনার ঘট নেই। সবাই কাঁদছে। সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। মূর্তি পড়ে আছে। কী করে হবে পুজো? তিতলি দিদি রিয়া আর টিয়াকে ডাকলো। বলল "আমি পাঁচ মিনিট আগেও দেখেছি ঘট ছিলো। তখন কেউ ছিলো না। আমি বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ঘুরে এসে দেখছি তার আগেই সবাই এসে গেছে। মনে হয় বেশি দূর কেউ নিয়ে যেতে পারেনি। চ, আমরা একটু এদিক ওদিক খুঁজি।" ওরা পেছনের জংগলে ঝোপে ঝাড়ে খুঁজলো। একটু পরেই রিয়া ওটাকে খুঁজে পেলো। ও ওদেরকে ডেকে দেখালো ঘট। তিতলি দিদি বলল "চ, দেখি তো, এখানে সব থেকে কাছের বাড়ি কোনটে?" টিয়া বলল "আমি জানি, আমি জানি- অভয় রায়…রায়া…রায়চৌধুরী। হ্যাঁ রায়চৌধুরী। কিন্তু ও একা থাকে বাড়িতে"। তিতলি দিদি বলল "তাহলে চ' ওর বাড়িতেই দেখি।"
তিতলি দিদি ওদেরকে শিখিয়ে দিলো কী কী করতে হবে। ওরা তাই তাই করলো। দরজার বেল বাজিয়ে একটু বাথরুমে যাবে বলল। অভয় রায়চৌধুরী ওদের ভেতরে ডাকলো। ওর নিজের ঘরে নিয়ে গেল। রিয়া বাইরের বাথরুম থেকে বেরোনর পর টিয়া গেলো। ওরা একটু বসতে চাইল। বলল টিয়ার পায়ে ব্যথা করছে। ও ওদের বসতে বলল। তারপর অভয় রায়চৌধুরী একটু বাথরুমে গেলো আর টেবিলের ওপর ওর ফোন বেজে উঠল। দু বার বেজেই থেমে গেল আর একটা মেসেজ এলো। সেখানে লেখা ছিলো "Good Job. তোমার জন্য এক লাখ টাকা আছে। গুঞ্জকুয়া"। ঠিক তখন অভয় এলো। তিতলি বলল-" না, এই দেখো। ঘট যে তুমি চুরি করেছো সেটার প্রমাণ।" অভয় কেঁদে উঠল "আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমার খুব টাকার প্রয়োজন ছিলো। বিশ্বাস কর। রিয়া বলল, "তুমি তো আমাদের বলতে পারতে, যাকগে, আমরা ঘট পেয়ে গেছি। তোমায় লাস্ট চান্স দিলাম। ঠিকাছে?" তারপর ওরা ঘট ফেরত দিল, বলল কুড়িয়ে পেয়েছে। আর সব কথা ভুলে গিয়ে প্রাণভরে আনন্দ করল।
লেখা ও ছবিঃ
মরমিয়া মুখোপাধ্যায়
চতুর্থ শ্রেণী
মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড একাডেমি