ফেলুবাবুর বাড়ির ব্যাপার স্যাপার আলাদা রকমের। সে সব কথা বিশদে বলতে গেলে একটা গোটা উপন্যাসই লিখে ফেলতে হয় ! নামে ফেলু হলে কি হবে ফেলুবাবু এমনিতে ভারি গন্যমান্য মানুষ । কুসুমপুরের মত ছোট্ট মফস্বল শহরে তিনি একমাত্র কলেজের প্রফেসর। তাও আবার অঙ্কের মত এক কঠিন বিষয়ের। পাড়ায় সেইজন্য তার নামডাক প্রতিপত্তি কিছু কম নয়। আশেপাশে কারোর কোন বিষয়ে কিছু পরামর্শ দরকার হলেই তারা এসে ভিড় জমান ফেলুবাবুর দুয়ারে । মেয়ের জন্য পছন্দ করা পাত্র সত্যিই সবদিক দিয়ে ভাল পাত্র হবে কিনা, কিম্বা ছেলে যে নতুন চাকরীর পরীক্ষাটা দেবে বলে ঠিক করেছে সেটা দেওয়া কতখানি যুক্তিযুক্ত হবে , এসব পরামর্শ দিতে ফেলুবাবুর জুড়ি নেই । লোকজন পরীক্ষা করেও দেখেছে এসব ক্ষেত্রে ফেলুবাবুর পরামর্শ শতকরা নব্বই ভাগ ফলে যায়। ফেলুবাবু আসলে অত্যন্ত জ্ঞানপিপাসু মানুষ , বিবিধ বিষয়ে জ্ঞান বিনিময়ই তার সবচাইতে পছন্দের কাজ। এমনিতেও তিনি বেশ সহজ সরল অমায়িক আর অতিথিপরায়ন স্বভাবের। লোকজনকে পরামর্শ দেন বলে নিজেকে খুব একটা কেউকেটা কেউ বলেও মনে করেন না। তবে ফেলুবাবুর চেয়েও আরো বেশি আন্তরিক স্বভাবের মানুষ হলেন ফেলুগিন্নি। বাড়িতে যেই আসুক তাকে চা বিস্কুট তো খাওয়াবেনই , অনেক সময়ই অতিথির কপালে লুচি মাংস বা বাড়িতে বানানো বিরিয়ানিও জুটে যায় । ফলে ফেলুবাবুর বৈঠকখানায় কখনও লোকের কমতি হয় না। ফেলুবাবুর দুই ছেলেমেয়ে অবশ্য বাবা মার এত বদান্যতায় সবসময় যে খুব আনন্দিত হয় তা নয়। তাড়াহুড়ো করে পড়াশোনা শেষ করে টাব্লু হয়ত বসবার ঘরে এসে এক্টু টিভি খুলে নিজের মত ইন্ডিয়া পাকিস্তান ম্যাচ তা দেখতে বসেছে ওমনি পাশের পাড়ার অবিনাশ বাবু চলে এলেন তার বাবার সন্ধানে। এমন উঁচু স্বরে তাদের আলাপ আলোচনা চলতে থাকে যে টাব্লুর খেলা দেখা মাথায় ওঠে । তারপর আবার মার আদেশে যেতে হয় পাড়ার দোকানে , চা পাতা বাড়ন্ত। অতিথিদের সবার আগে তো চা দিয়েই আপ্যায়ন করতে হবে। ফেলুবাবুর মেয়ে টিংকার আবার আরেক জ্বালা। নতুন লোক বাড়িতে এলেই ফেলুবাবু আর ফেলুগিন্নি তাকে ডেকে পাঠান। টিংকা যে ভাল গিটার বাজাতে পারে আর অতিথি এলেই যে টিংকা গিটার বাজিয়ে শোনাবে এটা যেন স্বতঃসিদ্ধ। বাবা মার এই প্রতিদিনের অতিথি পরায়নতায় টিংকা আর টাব্লুর জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত দাঁড়িয়ে আছে তাদের বাবার জ্ঞানপিপাসু মনটি । শুধু জ্ঞান দান করেই তিনি ক্ষান্ত হন না , নতুন মানুষদের কাছ থেকে নতুন নতুন বিষয়ে নানা রকম জ্ঞান আহরন করে তিনি নিজের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করতে ভীষণ পছন্দ করেন । আর এ নিয়ে টিংকা আর টাব্লুও মাঝে মাঝে বেশ বিপদে পড়ে যায়। নতুন কিছু জেনেই ফেলুবাবু তা প্রথম প্রয়োগ করেন তার ছেলে আর মেয়ের ওপরে। তারা সে বিষয়ে কতখানি জানে তা নিয়ে প্রথমেই একটা প্রশ্নোত্তর পর্বের ব্যবস্থা করেন তিনি। এরপর চলে তাদের সে বিষয়ে আরও কী কী জানার আছে সে বিষয়ে একটি নাতিদীর্ঘ জ্ঞানদান পর্ব। দুয়ে মিলিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর টাব্লু আর টিঙ্কার অবস্থা যে তথৈবচ হয়ে পরে সে আর বলাই বাহুল্য। উপরন্তু এই নতুন বিষয়টি যদি কোন প্র্যাকটিকাল বেসড বিষয় হয় তাহলে আরেকটি দিন সে বিষয়ে একটি প্র্যাকটিকাল ক্লাসের জন্য নির্ধারিত থাকে। এ বিষয়ে ফেলুবাবু বেশ নিষ্ঠুর গোছের মানুষ । বহুবার এমনও হয়েছে যে টিঙ্কা আর টাব্লুকে নিজেদের স্কুলের অনলাইন ক্লাস আর টিউশন ছেড়েও ফেলুবাবুর এই প্র্যাকটিকাল ক্লাসে যোগ দিতে হয়েছে । পাঠ্য পুস্তকের বাইরের বিদ্যা যে ছাত্রদের জন্য ভীষণ জরুরী এ নিয়েও তার একটি ছোটোখাটো বক্তৃতাতামালা তৈরি থাকে । সুখের বিষয় সেটি ততটা দীর্ঘ নয়।
এহেন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লো যখন একদিন ফেলুবাবু তার পাশের পাড়ার নন্দী বাবুর কাছ থেকে অনলাইনে বেচাকেনার ব্যপারে কিছু তথ্য সংগ্রহ করলেন। যেকোনো কারনেই হোক ফেলুবাবু অনলাইন জিনিসপত্র কেনাতে খুব একটা ভরসা করেন না। ফেলুবাবুর বাড়ির সামনেই বসে রোজের বাজার , দু পা হেঁটে সদর বাজারে পৌঁছলে হাতি থেকে আলপিন সবই কিনতে পাওয়া যায় । সেখানে চপ কাটলেট মোগলাই থেকে গরম বিরিয়ানি সব দোকানই বিবিধ রকমের সুগন্ধ বিতরণ করে দাঁড়িয়ে আছে । বাইরের খাবার খুব একটা ছেলেপিলেদের খেতে অ্যালাউ করেন না ফেলুবাবু , যদিবা ছেলে মেয়ে খুব বায়না ধরে নিজেই বেরিয়ে মোড়ের দোকান থেকে কিছু ভাজাভুজি কিনে নিয়ে তিনি বাড়ি চলে আসেন। ছেলেমেয়ের অনেক অনুরোধেও সুইগি , জোম্যাটো এসবকে বাড়ির চৌকাঠ মাড়াতে দেননি তিনি এখনও । ভার্চুয়াল কোনো ব্যপারেই তার বিশেষ ভরসা নেই , তিনি ভীষণ ভাবেই জাগতিক পৃথিবীর বাসিন্দা। ওঁর বক্তব্য অনুযায়ী অনলাইন জিনিস গছানোর সাইটগুলি লোক ঠকানোর নতুন নতুন ফন্দী । আজ কমদামে জিনিস দিয়ে মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করছে , কালই কোনও বড় রকমের গচ্চার রাস্তা তৈরি করে দিয়ে যাবে । যাইহোক অন্যান্য আরো সব ব্যপারের মত এ ব্যপারেও বাবার মতামত পরিবর্তন করতে পারেনি টিঙ্কা টাব্লু । এহেন ফেলুবাবু যখন খবর পেলেন যে অনলাইনে জিনিসপত্র শুধু কেনা নয় , বেচাও যায় , তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি ব্যপারটা নিয়ে আরও জানতে আগ্রহী হলেন। বিভিন্ন সুত্র থেকে তিনি ও এল এক্স , কুইকার এইসব সাইট সম্পর্কে অবহিত হলেন । তার নিজের তথ্য ভান্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ হওয়ার পর তিনি ছেলে মেয়েকে ডেকে পাঠালেন । শুরু হল প্রশ্নোত্তর পর্ব। টিঙ্কা টাব্লুর সঙ্গে সে পর্বও শেষ হওয়ার পর এসে হাজির হল সেই বহু পরীক্ষিত প্র্যাকটিকাল ক্লাসের সময় । অনেক চিন্তা ভাবনার পর ঠিক হল তাদের বাড়িরই কোন জিনিস যা বহুকাল ব্যবহার হয় না এমন কিছু দিয়েই এক্সপেরিমেন্টটি করা যাক। পরীক্ষা সফল হয়ে যদি জিনিসটির সঠিক ক্রেতা জুটেও যায় তাহলে ফেলুবাবু জিনিসটি বিক্রিই করে দেবেন , এমনিতেই বহুকাল বাড়িতে থাকা এবং অদরকারী , এরকম জিনিস যদি এভাবে পার করে দেওয়া যায় ত মন্দ কি !! এতদিনে ফেলুবাবুর মনে হল অনলাইন পদ্ধতিটি বেশ কাজের । ফেলুবাবুর এহেন চমকপ্রদ পরিবর্তনে ফেলুগিন্নি এবং ছেলেমেয়েরা বেশ চমকে গেলেও বিশেষ কোন মন্তব্য কেউ করলেন না ।
নানা জিনিস পর্যবেক্ষণের পর ফেলুবাবুর নজর পড়লো তার বাড়ির মিউজিক সিস্টেমটির ওপর । জিনিসটি শখ করে ফেলুবাবু বছর দশেক আগে বেশ ভাল দামেই কিনেছিলেন। সিস্টেমটির বৈশিষ্ট্য হল সেটির সাথের দামী হোম থিয়েটার স্পিকারগুলি , চালালে বেশ একটা সিনেমা হলের এফেক্ট তৈরি হয় চারদিকে। প্রথম দিকে কিছুদিন বেশ উৎসাহ নিয়ে সেটা চালানো হয়েছিল, বাড়ির এমনকি পাড়ারও দু চারজন এসে পড়তেন তাদের বাড়ি সিনেমা শো বা খেলা দেখতে। তারপর যা হয় , ছেলেমেয়েদের পড়ার চাপ বাড়ল , গিন্নিও অতো জোরে জোরে সিনেমা সিরিয়াল দেখা পছন্দ করলেন না, ফেলুবাবু অতিথি আপ্যায়ন আর জ্ঞান আহরনে এত ব্যস্ত হয়ে পড়লেন যে স্পিকারটি দিন দিন অদরকারীর তালিকায় চলে গেল। দশ বছরের পুরনো জিনিস , বেশ দামী ,যখন কিনেছিলেন এর দাম ছিল সত্তর হাজার টাকা , ফেলুবাবু ভেবেচিন্তে অঙ্ক কষে এর এখনকার দাম ধার্য করলেন পঁচিশ হাজার টাকা । এই মর্মে বিজ্ঞাপন তৈরি হল। ফেলুবাবু একটি শুভদিন দেখে টিঙ্কা ও টাব্লুর সহযোগিতায় বিভিন্ন অবস্থান থেকে ( কেননা বেচাকেনার সাইটে গিয়ে তিনি এই অবস্থানের ব্যপারটা ভাল করে লক্ষ্য করেছিলেন ) জিনিসটি্র ছবি তুলে জয় মা বলে ‘ও এল এক্স'-এ দিয়ে দিলেন । বেশীক্ষণ অপেক্ষাও করতে হল না । আধঘন্টা পর থেকেই দু চারটে করে মেসেজ আসতে শুরু করল । এত মানুষ যে অনলাইন জিনিস কেনাবেচার জন্য বসে থাকেন তা ফেলুবাবুর কল্পনার অতীত ছিল । দু চারজন সরাসরি ফোন করে বসলো ফেলুবাবুকে । তারা সবাই জিনিসটি দেখতে এবং কিনতে আগ্রহী কিন্তু দামের ব্যপারে তারা নেগোসিয়েশনে বিশ্বাসী । ফেলুবাবু ছেলের কাছ থেকে জানলেন এই অনলাইন কেনাবেচায় নেগোশিয়েশন শব্দটি খুবই জরুরি একটা শব্দ। বাড়ি গাড়ি থেকে শুরু করে বাটি চামচ অবধি কেনাবেচাতে মানুষ নেগোশিয়েশন চায় । এই কাজটি নেট স্যাভি মানুষদের খুবই পছন্দের কাজ , নেগোশিয়েট করা । বলা বাহুল্য এই নতুন জ্ঞানটি লাভ করে ফেলুবাবু খুবই উৎসাহ সহকারে নেগোশিয়েশন নামক খেলাটিতে অবতীর্ণ হলেন । ও হরি ! দু পা এগিয়েই তিনি বুঝলেন এ হল কলকাতার গড়িয়াহাট মার্কেটে দরদামের খেলা । অবলীলায় লোকজন তাঁর সত্তর হাজারের সিস্টেমটিকে পাঁচ-ছয়-আট-দশ হাজারের বিনিময়ে কালকেই এসে নিয়ে যাবে বলে জানাচ্ছে। অনেক চেষ্টাতেও ফেলুবাবু কোনও রকম নেগোশিয়েশনেই এই দশহাজার টাকার গণ্ডিটা পেরিয়ে উঠতে পারলেনে না । বরং তাঁর যুক্তির উত্তরে সম্ভাব্য ক্রেতারাও যুক্তি দিতে থাকল যে দশ বছরের পুরনো এই সিস্টেমটির জন্য এর বেশি দাম আর তার জুটবেনা কেননা এইভাবে সিনেমা বা খেলা দেখার অভ্যাস আধুনিক মানুষের ক্রমশ কমছে । ব্যস্ত জীবনে এখন বেশিরভাগ মানুষই কাজ করতে করতে কানে হেডসেট লাগিয়ে খেলা দেখা বা কাজের ফাঁকে সিনেমা দেখার কাজটি সেরে নেয় । বাড়ির লোকেরই পরস্পরের সাথে দিনের পর দিন ভাল করে দেখা হয়না , একসাথে বসে খেলা দেখা তো স্বপ্ন কল্পনা ! এইসব জ্ঞান লাভ করে ফেলুবাবু যারপরনাই বিস্মিত এবং অভিভূত হয়ে পড়লেন। তিনি এখনও কলেজ থেকে ফিরে গিন্নির হাতের মুড়িমাখা খেতে খেতে টিঙ্কা টাব্লুর সাথে সারাদিনের গল্প করেন, ওদের গল্পও শোনেন, গিন্নিও কাজের লোকের অনুপস্থিতি থেকে শুরু করে পাশের বাড়ির নতুন ভাড়াটেদের কীর্তিকাহিনীর পুঙ্খানুপুঙ্খও খবরাখবর তাকে জানান । এরপর তো বাইরের লোকেরা আছেই। ফেলুবাবুর বলা এবং শোনা কখনই শেষ হয়না । ফলে ফেলুবাবুর কাছে এইসব নতুন তথ্য খুবই বিস্ময় উদ্রেককারী ।
তা যাই হোক । টানা এক সপ্তাহ ধরে ফেলুবাবুর এই নেগোশিয়েশন পর্ব চলতে থাকল। বহু নতুন নতুন তথ্য এবং অভিজ্ঞতায় ফেলুবাবুর ঝুলি ভরে গেল, কিন্তু বিক্রির ব্যপারটির কোন সুরাহা হল না। সপ্তাহ খানেক বাদে একদিন কলেজ থেকে ফিরে তিনি গিন্নিকে বড় করে মুড়ি মাখতে বললেন । তাতে আচারের তেল ও চানাচুর পড়লো । টিঙ্কা টাব্লুকে পড়া থেকে ডেকে এনে বড় মুড়ির পাত্রটিকে মাঝখানে রেখে চারপাশ ঘিরে বসলেন তারা। সবার সারাদিনের কথাবার্তা শেষ হওয়ার পর ফেলুবাবু প্রস্তাব রাখলেন আজ হোম থিয়েটারটি চালিয়ে সবাই মিলে বসে একটি সিনেমা দেখা হোক । বাবার এহেন প্রস্তাবও কোন প্র্যাকটিকাল ক্লাসের অন্তর্ভুক্ত কিনা সে ভেবে টিঙ্কা টাব্লু বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লো । ফেলুবাবু সিনেমা চালালেন । প্রায় বছরখানেক পর তারা পুরো পরিবার মিলে পুরো আড়াই ঘন্টা একটি হাসির সিনেমা আদ্যন্ত উপভোগ করলেন। সিনেমাটির শেষে ফেলুবাবু জানালেন যে হোম থিয়েটার বেচবার জন্য দেওয়া বিজ্ঞাপনটি তিনি 'ও এল এক্স' থেকে তুলে নিয়েছেন। প্রথমত নেগোশিয়েশনের নামে দরাদরির পদ্ধতিটি তাঁর একটুও পছন্দ হয়নি, দ্বিতীয়ত এই ভয়ানক গতির যুগে যদি এই মিউজিক সিস্টেমটি তাঁদের পরিবারকে একটু একসাথে সময় কাটাতে সাহায্য করে তাহলে সেটা আখেরে তাদেরই লাভ । অন্তত মাসে একবার তো তাঁরা একসাথে বসে সিনেমা বা খেলা দেখতে পারেন । কে বলতে পারে এরপর টাব্লু বা টিঙ্কার জীবনও ওইরকম ছুটতে থাকা মানুষজনের মত হয়ে যাবে কিনা যারা কিনা বাড়ির লোকের সাথেই দেখা করবার সময় পায় না এক বাড়িতে থেকেও ।
বলা বাহুল্য , ফেলুবাবুর এই নতুন জ্ঞানলাভ পর্বটি বাড়ির লোকের সকলেরই খুব পছন্দ হল ।
শিল্পীঃ শিল্পী ঘোষ