শীতের ভোরবেলা। হাল্কা কুয়াশা ছিল সেদিন। বড়ো রাস্তার উপর যানবাহন আসাযাওয়া খুবই কম। আর লোকজন, সে তো প্রায় দেখাই যায় নি । মরশুমি পাখির ঝাঁক, মাথার-উপর নীল-আকাশ জুড়ে বিশাল লম্বা লাইন করে, উড়ে যায়, উত্তর পূর্ব দিকের জলা-জায়গা গুলিতে । ফি বছর তারা আসে, সুদূর সাইবেরিয়া থেকে ।
খবর-কাগজ-ওয়ালা কারিয়া-ভাই, তার রং-উঠে-যাওয়া মোপেডটার স্টার্ট চালু রেখেই, একটি-পা মাটিতে নামিয়ে রেখে দাঁড়িয়েছিল; বিনিগুড়ি কলোনির সি-গেটের ঠিক সামনেই। একসাথে তিনটে খবর-কাগজ, থলি থেকে বের করে, দুই-হাত দিয়ে গোল করে রোল করতে করতে, সে চোখে মুখে ভয়ের ছাপ নিয়ে চৌকিদার মুলতানি-ভাই কে জিজ্ঞাসা করে, "মুলতানি-ভাই, কেয়্যা তেন্দুয়া সাচ্চি মে দেখা গয়া ইধর?"
চৌকিদার মুলতানি-ভাই তখন সি-গেটেই ডিউটিতে। গেটের একপাশে, অ্যাসবেস্টস, টিন আর কাঠের তৈরি ছোট গুমটির ভেতর থেকে, ছোট্ট জানালা দিয়ে মাথা বের করে মুলতানি-ভাই, কারিয়া-ভাই কে উত্তরে বলে, "ও হো হো, কারিয়া-ভাই, তুম-কো পাতা নেহি হৈ ? ও বন্দর-কা জো লাইট-হাউস, উসকে চৌকিদার হৈ ন, উসনে সবসে পহলে দেখা থা।" তারপর হাত তুলে ইশারা করে সে আরও বলে, "ও উধর জো চুনা-পাথথর কা পাহাড় জৈসা উঁচা ঢের পড়া হৈ ন, উসকে বিলকুল পাস-সে ও দূর পিপড় অউর বরগদ কে পেড়োঁ কে কাতার হৈ ন, উসকে পিছে সে দরিয়া কিনারে কি তরফ জো জংগল হৈ, উধর যা রহা থা। আরে কারিয়া-ভাই ও তো বহুত বড়ী লেপার্ড হৈ, মালুম হৈ, পাসওয়ালা বস্তি মে এক বছড়াকো তো কাল রাত কো হি মার দিয়া, ধ্যান রাখনা ভাই..."
অবাক লাগলেও ঘটনাটি কিন্তু সত্যি-সত্যিই ২০১৫ সালের। পশ্চিম ভারতের সুদূর সোরঠ অঞ্চল, আরব সাগর কিনারে, শহর থেকে মোটামুটি সাত কিলোমিটার দূরে, একটি রাসায়নিক কারখানার কলোনি আর আশপাশের বস্তি গুলিতে মানুষ-জন সেই সময় লেপার্ডের ভয়ে একরকম ত্রস্ত ও আতঙ্কিত। এরা কেউই অবশ্য জিম করবেট সাহেবের গল্পের চরিত্র গুলির মত মোটেও নয়। তবুও কোথাও যেন মানুষের আদিম, অকৃত্রিম, সহজাত প্রবৃত্তির ব্যাপার গুলো, সব মানুষেরই, সব সময়েই, যেন একই রকম ভাবে হয়ে থাকে। এই কলোনিতে জাতীয় সড়কের দুই-দিক-জুড়ে কারখানা আর তার সাথে যুক্ত ছোট-বড় সব দোকান-পাট,পাকা-রাস্তা, ঝুপড়ি-ঘরের-সমূহ; কোম্পানির তৈরি চার-চারটি কলোনি যার মধ্যে ক্লাব, হাসপাতাল, পোস্টঅফিস, ব্যাঙ্ক, ইংলিশ মিডিয়ম স্কুল, আটা-চাক্কী, দুধের জন্য ডেয়ারি, শপিং-কম্পপ্লেক্স মোটামুটি সবকিছুই আছে।
পরের দিন সকালেই, স্কুল-গেটের সামনেই, অন্য একজন চৌকিদার, নাম সাজিদ-ভাই, স্কুলের অধ্যক্ষ মিস্টার সুলেমান কে বলে, "সাহেব পাতা হৈ, পিছে-কি জংগলমে শাওজ আ গয়া হৈ।" তখন সবেমাত্র তিনি গাড়ির দরজা খুলে বেরোবেন। সাজিদ-ভাই আরও বলে, "ধ্যান রাখনা সাহেব, আপ রাত-কো একেলা বাহার বিলকুল মত নিকল-না..." মুচকি হেসে সুলেমান-স্যর বলেন, "আরে না না, সাজিদ-ভাই ও শাওজ নেহিঁ হৈ, ও তো তেন্দুয়া হৈ, শাওজ মানে তো বাঘ হুয়া না, ইয়ানে টাইগার, হাঁ ইয়ে সচ হৈ, বহুত সাল পহলে সাসন-গীর জংগল, অউর আস-পাসমে, বাঘ-ভী থা, পর আভি নেহি হৈ, ইয়ে তো দিপড়া হৈ, ইয়ানে তেন্দুয়া, ইংলিশ-মে ইসে বোলতে হৈ লেপার্ড।" তিনি তারপর সাজিদ-ভাই কে বুঝিয়ে বলেন যে, সব রকমের জংলী বিড়ালের মধ্যে লেপার্ড সবথেকে বেশী সাবধানী, হামেশা জনপদ আর মানুষ-জনের থেকে নিজেকে দূরে রাখে,গা ঢাকা দিয়ে থাকে, আর খুব তাড়াতাড়ি সরে পড়ে, মানুষের চোখের আড়ালে, কিন্তু কক্ষনো এক জায়গায় বেশী দিন থাকেনা। তিনি সাজিদ-ভাই কে আরও বলেন যে যেমন করে লেপার্ডটি পিছনের জংগলে এসে গেছিল ঠিক তেমনি করেই আবার চলেও যাবে।
লোকের মুখে মুখে খবর ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। খবর পেয়েই বন-বিভাগের দুজন কর্মচারী আর এক জন অফিসার এসে যায় বিনিগুড়িতে। কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় কলোনির ভি আই পি গেস্ট-হাউসে। তারা তাদের লোকজনকে দিয়ে এক বিরাট আকারের খাঁচা আনিয়ে তার মধ্যে বেঁধে রাখে একটি ছাগল। কিন্তু সে রাত্রে লেপার্ডটি কলোনি থেকে দূরের এক বস্তির কাছাকাছি একটি বাছুর শিকার করে নিয়ে ফিরে যায় সমুদ্র তীর ঘেঁষা জংগলে। ছাগল রয়ে যায় অক্ষত, তাদের রাখা খাঁচার মধ্যে। ভোর হওয়ার অনেক আগেই গঙ্গারাম নামের আর এক চৌকিদার দূর থেকে দেখে আসে 'খালি-পিঁজরা' আর তার ভেতরের বাঁধা ছাগলটিকে।
মুখে মুখে সেই কথা ঠিক সেদিন দুপুরেই পৌঁছে যায় কোম্পানির সিকিউরিটি বিভাগের অফিসে। সেই বিভাগের হেড, দক্ষিণ-ভারতীয় মিস্টার-চেল্লাদুরাই, গঙ্গারামকে ডেকে পাঠিয়ে সাবধান করে বলেন, "তুমও-কো জাস্তি হুঁশিয়ারি নেই দিগানেকা। লিস্সন, ও ফরেস্ট-ডিপার্ট-ওয়ালা হামও-কো বোলকে গয়া হৈ, রাত-কো হামেশা কম-অ-সে-কম তিন সিকিউরিটি কা আদমি এক সাথ-অ চলনে কা হৈ, একেলা কভি নেহিঁ নিকল-নেকা, সমঝ-অ মেঁ আয়া ন?"
সেসময় প্রতিদিন সূর্যাস্তের সাথে সাথেই বিনিগুড়ি কলোনি-গুলির মধ্যে সব এক্কেবারে সুনসান। কোন বাচ্চাকেই ঘরের বাইরে, রাস্তায় বা খোলা জায়গা গুলিতে মোটেও দেখা যেত না। বি-কলোনিতে যারা সব থাকতো তাদের প্রায় সকলেরই ছেলেমেয়েরা স্কুলকলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশবিদেশের বিভিন্ন জায়গায়, হয় কর্মরত, নয়তো বা বিয়ে হয়ে গেছিল, মাঝেমধ্যে মা-বাবার সাথে দেখা করতে আসত তারা । ছুটিতে কর্মস্থান অথবা শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজেদের-বাড়িতে বেড়াতে আসার মতই।
সেসময়, চৌকিদারদের হয় সব থেকে বেশি আতংক। কারণ, তাদেরকে তো রাত্রেও বেরোতে হত। যে সব কোয়াটার-গুলিতে তালা থাকতো সেগুলির সদর দরজা এবং পিছনের দরজা, দুটিরই উপর সাদা-কাগজ লেই-আঠা দিয়ে লাগিয়ে, তার উপর প্রতি ঘণ্টায় একবার করে আশপাশ সব ঠিক-ঠাক আছে কিনা দেখে পর, 'ও কে' লিখে, দস্তখত করে আসতে হত। তাদের সুপারভাইজার-সাহেব তাদেরকে বলে দিয়েছিল একা-একা ঘোরাফেরা না করতে, সার্চ-লাইট, লাঠি ও হুইস্ল্ অবশ্যই রাখতে।
সরকারী বন-বিভাগের লোকদের থাকা-খাওয়ার খুব ভালো ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় কোম্পানির ভি-আই-পি গেস্ট-হাউসে। সকাল দুপুর সন্ধ্যে তিন-বেলা নানারকম খাবার-দাবার, আর রাত্রে এ সি ঘরে আরামে ঘুম । ওদিকে লেপার্ড নিরিবিলি লোকজন–থেকে–সম্পূর্ণ-আলাদা সাগর তীরের সেই জঙ্গলের মধ্যে নিশ্চিন্তে সারা দিন, সন্ধ্যে, এমনকি রাত্রির প্রথম কয়েকটা প্রহর পর্যন্ত, বেশ আরামে কাটাত আর তারপর দক্ষিণ দিক দিয়ে বা উত্তর দিক দিয়ে বস্তিগুলির পাশ দিয়ে, চুনাপাথরের টিলা গুলির পাশ দিয়ে গিয়ে রাস্তার কুকুর, শুয়োর অথবা গবাদি কোন পশু মেরে সহজেই খাবার যোগাড় করে নিত। এছাড়াও সেই জঙ্গলেই ছিল পাল-পাল ময়ূর-ময়ূরী আর ছিল শজারু, শিয়াল, খরগোশ, নেউল, খেঁকশিয়াল ইত্যাদি সব জীবজন্তু। শহর, লোকজন, আধুনিক-ঐশ্বর্য এসব থেকে এক্কেবারে বিচ্ছিন্ন সাগর তীরের সেই এক-ফালি জঙ্গল-খানি ভারি প্রিয় আশ্রয় হয়ে উঠেছিল সেই লেপার্ড আর তার দুই শাবকের। এককথায় আগন্তুক বন্যপ্রাণীরা আর মেহমান বন্যপ্রাণী-সংরক্ষকরা বহাল তবিয়তেই দিন কাটাতে থাকে বিনিগুড়ি কলোনির আতিথেয়তায়।
নির্মলা, বিনিগুড়ি কলোনির স্কুলের এক শিক্ষিকা। তার স্বামী উদয়, আগের রাত্রে কারখানার নাইট-শিফটের ডিউটিতে গেছিল । সকালে নির্মলা তার বাচ্চাকে তৈরি করে এবং নিজে তৈরি হয়ে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তাদের কোয়াটার সি-কলোনির এক্কেবারে দক্ষিণ প্রান্তে। পিছনেই মস্ত পাহাড় প্রমাণ চুনা-পাথরের টিলা। ওদিকে উদয় কোন জরুরী কাজের জন্য কারখানায় ব্যস্ত । বউ আর বাচ্চাকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সে আসতে পারছিল না। সকাল তখন সাড়ে-ছটা। নির্মলা সাহস করে তার বাচ্চা-ছেলেকে সাথে নিয়ে বের হতে পারে না। আগের দিনই সে তার বাবার সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। তার বাবা কয়লা খনি অঞ্চলে কাজ করেছিলেন একসময়। বাবা তাকে জানিয়েছিল তাঁবুতে ঘুমিয়ে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে থেকে ছোট-ছোট বাচ্চাদেরকে লেপার্ডের তুলে নিয়ে যাওয়ার গল্প। বাচ্চার গলা চেপে ধরে লেপার্ড এমন নিঃশব্দে তুলে নিয়ে যেতে পারে যে পাশে শুয়ে থাকা অন্যরা টেরই পায় না। এসব শুনে তার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যায় ।
অনেক সময় তার বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে নির্মলাকে একাই থাকতে হত কোয়াটারে। এই কথা বলতে-বলতে সে প্রায় কেঁদেই ফেলেছিল, সি-গেটের এক চৌকিদারের সামনে। সেই চৌকিদারই তাদের দুজনকে এগিয়ে দেয় স্কুল গেটের কাছাকাছি।
বন-বিভাগের লোকেরা, এক অফিসার আর দুজন কর্মচারী, তারা বিনিগুড়ি কলোনির উত্তর দিকের জঙ্গলের কাছে লেপার্ডের আসা-যাওয়ার চিহ্ন, মানে পায়ের-ছাপ, দেখতে পায়। তাদের অভিজ্ঞতায় তারা একটি জায়গা ঠিক করে নিয়ে সেই বিরাট খাঁচা আর তার ভেতরে ছাগল বেঁধে তৈরি রাখে। কিন্তু সেই রাত্রেও লেপার্ড খাঁচার আশেপাশেও আসেনি। বিনিগুড়ির অনেকেই তখন বলেছিল, "ইয়ে তো বহুত চতুর তেন্দুয়া, দেখা ফরেস্ট ওয়ালে কো কৈসা বুদ্ধু বানায়া!"
অবশেষে, কয়েকদিন পরের এক রাত্রে, বন-বিভাগের লোকেরা খোঁজ পায় লেপার্ডের আসা যাওয়ার সঠিক রাস্তা । পরের দিন সন্ধ্যে হওয়ার সাথে সাথেই, তাদের কাজকর্ম শুরু হয়ে যায় । খুব সাবধানে তারা সেই বিরাট খাঁচা-টিকে ঠিক লেপার্ডের আসা যাওয়ার রাস্তার পাশেই গাছপালার আড়ালে রেখে দেয়, তার ভেতরে ছাগল-টিকে বেঁধেই সে-রাত্রে তারা ক্ষান্ত হয় নি, ছাগলের আওয়াজ যাতে প্রতি মিনিটে মিনিটে বাজতে থাকে, সেই রকম একটি অডিও-প্লেয়ারও তারা লুকিয়ে রাখে খাঁচাটির খুব কাছাকাছি । ব্যস, আর যায় কোথায়, গভীর-রাত্রে, ছাগলের আওয়াজ শুনে, গাছপালার ফাঁক দিয়ে সেই মস্ত বড় লেপার্ড খাবারের আশায় ঢুকে পড়ে আর ঠিক তখনই সেই বিরাট খাঁচার মধ্যে আটকা পড়ে সে। এতদিন পর বন-বিভাগের লোকজনের পরিশ্রম সার্থক হয়। এছাড়াও, খাঁচার খুব কাছেই, অন্য আর একটি জংলী ঝোপঝাড়ের মধ্যে, তারা দেখতে পায় লেপার্ডের একটি বাচ্চাকেও। ভোর হওয়ার অনেক আগেই বন-বিভাগের লোকেরা তড়িঘড়ি খবর পাঠিয়েছিল তাদের রেঞ্জ-অফিসে। তারা তাদের সরকারী যানবাহন সেই রাত্রের মধ্যেই আনিয়ে নেয়। আর আশেপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার অনেক আগেই, তাড়াতাড়ি খাঁচা সমেত লেপার্ড আর তার বাচ্চাকে পৌঁছে দেয় তাদের ঠিকানায়।
সকাল হওয়ার সাথে সাথেই জঙ্গলের আগুনের মতই এ খবর ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। বিনিগুড়ি স্কুলের অধ্যক্ষ মিস্টার-সুলেমান কে চৌকিদার মুলতানি-ভাই জানায়, "সাহেব আপকো পাতা হৈ, পিছলে রাত, ও তেন্দুয়াকো ফরেস্ট-ওয়ালা পকড় লিয়া হৈ। পিঞ্জরে মে বন্ধ উস্ তেন্দুয়াকা ফোটো ভি দিখায়েঙ্গে আপকো। আপনা গঙ্গারাম হৈ ন, ওহি জো আপনা কলোনি মে সাপ ভি পকড় লেতা হৈ, উসনে বহুত আচ্ছা ফোটা খিঁচা হৈ, উসকা আপনা মোবাইল মেঁ। হম আপকো দিখায়েঙ্গে।"
মুখে মুখে লেপার্ডের ধরা-পড়ার খবর ঠিক পৌঁছে যায় কোম্পানির বিভিন্ন বিভাগে । সিকিউরিটি বিভাগের হেড, দক্ষিণ-ভারতীয় মিস্টার-চেল্লাদুরাই, আবার গঙ্গারামকে ডেকে পাঠান অফিসে। ভয়ে ভয়ে গঙ্গারাম আসে চেল্লাদুরাই সাহেবের অফিসে । ভয়ে তার হাত-পা কাঁপতে থাকে। মনে মনে ভাবে, "সাহেব আবার বুঝি খুব বকুনি দেবেন, চাকরিটা না গেলে হয়..." অফিসে ঢুকতেই চেল্লাদুরাই-সাহেব মুচকি হেসে তাকে বলেন, "ভাই গঙ্গারাম, তুম-অ তো-ও আজ-অ-কাল সেলেব্রিটি হো গয়া হৈ, দিখাও হম-অ কো-ভি, ওহ লেপার্ড-কা ফোটো..."
চৌকিদার গঙ্গারাম, সে তো তার মোবাইলে লেপার্ডের ছবি ঠিকই তুলেছিল, কিন্তু তার মোবাইল-সেটে ব্লু-টুথ ছিল না । সেই জন্য আর অন্য কেউ নিজের নিজের মোবাইলে সেই দুর্লভ 'খাঁচাতে-বন্ধ লেপার্ডের ছবি' ট্র্যান্সফার করতে পারেনি । সুতরাং সেসময়, কিছুদিনের জন্য হলেও, বিখ্যাত হয়ে ওঠে চৌকিদার, 'সাপ-ধরা-গঙ্গারাম' । তখন সে সত্যি-সত্যিই হয়ে ওঠে এক 'সেলেব্রিটি' । শোনা যায়, বিনিগুড়ি কলোনির আরও অনেকেই হয় ডেকে এনেছিল নয়ত গেছিল তার কাছে, বিশেষ করে তার মোবাইলে তোলা সেই লেপার্ডের ছবি দেখবার ইচ্ছে নিয়ে ।
ছবিঃ পিনাকী দত্ত