সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প


সদ্য শেষ হল ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। পুরো একমাস জুড়ে নাওয়া-খাওয়া ভুলে বিশ্বের সব দেশ থেকে ফুটবলপ্রেমীরা খেলা দেখেছেন, আনন্দে মেতেছেন, দুঃখে কেঁদেছেন। প্রতিবারের মতই, এবারে বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠে, শুধুমাত্র বল দিয়ে দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা ছাড়াও ঘটেছে এমন কিছু ঘটনা, তৈরি হয়েছে এমন কিছু মূহুর্ত, যেগুলি বার বার ফিরে দেখতে ইচ্ছে করে। যে মূহুর্তের ছবিগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রতিদিনের সবরকমের লড়াই,জয়-পরাজয়ের মধ্যে সব থেকে জরুরী হল মানুষ হিসেবে অন্য মানুষকে ভালোবাসা, দুনিয়ার সব মানুষের স্বাধীন ভাবে, আনন্দে বেঁচে থাকার জন্য লড়াইকে সম্মান জানানো। তেমনই কিছু মনে রাখার মত মূহুর্তকে অ্যালবামে সাজিয়ে রাখলাম, ফিরে ফিরে দেখার জন্য।



কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
মায়ের সঙ্গে আশরাফ হাকিমি

এই প্রথমবার মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশে ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হলো। এছাড়া এই প্রথমবার বিশ্বকাপ শীতকালে অনুষ্ঠিত হলো, গ্রীষ্মের সময় কাতারে অত্যধিক গরম থাকে বলে। কাতার যদি আরবের প্রথম কোনও দেশ হয়ে থাকে যে বিশ্বকাপ আয়োজন করলো, ঠিক তেমনই মরক্কো আরব এবং আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল। আর সেই খুশির জোয়ার মাঠ ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যালারি, আফ্রিকা এবং আরব দেশগুলোতে। স্পেনকে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে হারানোর পর মরক্কোর রাইট উইং ব্যাক আশরাফ হাকিমি গ্যালারিতে বসে থাকা তাঁর মাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খান। হাকিমির জীবনে তাঁর মা-বাবার কত বড় ভূমিকা তা যেন একটা মুহূর্তেই পরিষ্কার হয়ে যায়। হাকিমির মা লোকের বাড়ি বাড়ি পরিষ্কার করে, হাকিমির বাবা রাস্তায় ফেরি করে জিনিসপত্র বিক্রি করে ছেলেদের বড় করেছিলেন।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
মাকে নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা বাউফাল

কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে হারানোর পর মরক্কোর খেলোয়াড় সোফিয়ান বাউফাল মাকে মাঠে নিয়ে এসে মায়ের সঙ্গে নাচেন। বাউফালের মাও ভীষণ কষ্ট করে তাঁর পরিবারকে টিকিয়ে রেখেছিলেন, বাউফালকে বড় করেছিলেন। তাই দলের সাফল্য, নিজের সাফল্যের পর মাকে জড়িয়ে চুমু খাওয়া, মাকে সঙ্গে করে নিয়ে নাচ যেন দেখিয়ে দেয় ফুটবল শুধু একটা নিছক খেলা নয়, আরো অনেক অনেক বেশি কিছু।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
প্রতিবাদী জার্মান দল

কাতার একটি মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের দেশ, এখানে সমকামিতা অপরাধ। আর অন্যদিকে সারা পৃথিবীতে সমকামিতাকে সহজভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ নানারকম কাজ, প্রোমোশন করে থাকে। তেমনই একটি হলো রামধনু রঙের আর্মব্যান্ড পরা, যা ফুটবল বা যেকোনো খেলার অধিনায়কের হাতে পরা থাকে। কিন্তু কাতারে সমকামিতা নিষিদ্ধ হওয়ার দরুণ এই রামধনু রঙের আর্মব্যান্ড পরাও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এরপরও বিভিন্ন দেশ যেমন ইংল্যান্ড, জার্মানি, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম কাতারের নেওয়া এই সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে আর্মব্যান্ড পরবে জানায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে দেখে ফিফা আসরে নামে এবং কড়া হয়ে বলে যদি "ওয়ান লাভ" রামধনু আর্মব্যান্ড পরে দলকে নামতে দেখা যায়, তাহলে ফুটবলাররা ভয়ানক শাস্তির মুখে পড়বে। আর এই শুনে এই দেশগুলোর ফুটবল সংস্থা পিছিয়ে আসে। তারা ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড পরবে না জানিয়ে দেয়। কিন্তু যখনই মানুষের প্রতিবাদ করার সময়, ভালোবাসার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে তখন মানুষ ঠিক উপায় খুঁজে বের করে নিয়েছে। ফিফার এই চোখরাঙানি, শাসানির প্রতিবাদে জার্মানির দল তাদের প্রথম ম্যাচে খেলতে নামার আগে মুখে হাত দিয়ে দলের ছবি তোলে, যা আসলে বোঝায় যে ফিফা তাদের কন্ঠস্বর রোধ করতে চাইছে।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
দেশের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ইরানের সমর্থকেরা

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
মাহসা আমিনিকে মনে রেখে

কাতারে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার ঠিক দুই মাস আগে হিজাব ঠিক করে না পরার জন্য ইরানে ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়, আর সেখানেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। সারা ইরানে সরকারের নীতি পুলিশের ভয়ে বদ্ধ থাকা মানুষদের মধ্যে স্ফুলিঙ্গ জ্বলে ওঠে, তীব্র প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। ইরানের ফুটবলাররা এই বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার সময় স্বৈরাচারী শাসকদের বিরোধিতা করে জাতীয় সংগীত গাইতে অস্বীকার করেন। কোনও দেশের ফুটবলাররা এই প্রথম এরকম করেছিল। নীরব থেকেও এই তীব্র প্রতিবাদ সঞ্চারিত হয় ইরানের সমর্থকদের মধ্যেও, তাঁরাও হিজাব না পরে, নিজেদের ইচ্ছেমতো পোশাক পরে, মাহসা আমিনির নামে ইরানের জার্সি পরে গ্যালারিতে তাঁদের দলকে সমর্থন জানাতে আসেন।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
জাপানের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মরক্কোর ফ্যানরাও স্টেডিয়াম পরিষ্কার করলো

মরোক্কো গ্রুপ স্টেজের কোনও ম্যাচ হারেনি, প্রথম স্থান অধিকার করে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছায় তারা। উল্টে তারা কানাডা এবং বেলজিয়ামকে হারায়। এত ভালো দল বেলজিয়ামকে হারানোর পর সারা পৃথিবীতেই মরক্কোর মানুষরা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। কিন্তু বেলজিয়ামে মরক্কোর সমর্থক এবং বেলজিয়ামের সমর্থকদের মধ্যে লড়াই হয়, পরিস্থিতি এতই খারাপ হয়ে যায় পুলিশকে নামতে হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে মরক্কোর সমর্থকদের উপর অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে, কিন্তু বেলজিয়ামের সরকার বলে ওরা কোনও সমর্থক নয়, ওরা গাড়ি ভেঙে, জ্বালিয়ে দিয়ে দাঙ্গাই করতে চাইছিল। বাকি মরক্কোর মানুষরা শান্তিপূর্ণভাবেই এই জয় উদযাপন করেছে।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
জাপানের পরিচ্ছন্ন সমর্থকেরা

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আসলেই আমাদের মনে এক স্বর্গীয়, পবিত্র অনুভূতি এনে দেয়। জাপানের সমর্থকরা প্রতি ম্যাচের পর স্টেডিয়াম পরিষ্কার করে যেন সেই বার্তাই দিয়ে যায়। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পর ২০২২ বিশ্বকাপেও জাপানের সমর্থকরা প্রতি ম্যাচের পর স্টেডিয়াম সম্পূর্ণ পরিষ্কার করলো। জাপান দলের ফুটবলাররাও ড্রেসিংরুম, মাঠের পাশের বেঞ্চ সবটা পরিষ্কার করে রাখলো। এই পরিচ্ছন্নতাকে আসলে ওরা নিজেদের কর্তব্য হিসাবে মেনে চলে। তাই ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন ম্যাচের পর স্টেডিয়াম দেখলেই বোঝা যায় যে, জাপানের মানুষরা নিজেদের কর্তব্যে বরাবরই অবিচল।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
রেফারি যখন বাধ্য হন আবৌবকরকে লাল কার্ড দেখাতে, তখন আদর ও করে দেন

ফুটবলের অনেক নিয়মের মধ্যে একটি নিয়ম হলো, কোনও ফুটবলার যদি ম্যাচে একটি হলুদ কার্ড দেখে থাকে, তাহলে তাকে আরেকটি হলুদ কার্ড দেখালে, দুটো হলুদ কার্ড মিলে একটি লাল কার্ড হয়, এবং তাকে তখনই মাঠ ছাড়তে হয়। পাঁচবারের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলকে বরাবরই অন্যতম সেরা দল হিসাবে ধরা হয়। গ্রুপ স্টেজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের সঙ্গে ক্যামেরুনের ম্যাচ ছিল। ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার অবৌবকর ম্যাচের ৮১ মিনিটে ফাউল করায় একটি হলুদ কার্ড দেখেন। সারা ম্যাচে ব্রাজিল অনেক চেষ্টা করেও একটা গোল দিতে পারলো না, কিন্তু ম্যাচে যখন নব্বই মিনিট পার হয়ে ইনজুরি টাইম চলছে ঠিক তখন ৯২' এর মাথায় ক্যামেরুনের অবৌবকর একটি গোল করেন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে একটা গোল করার মানে প্রায় জিতেই যাওয়া। বিপক্ষ দলের কাছে ম্যাচে ফেরার আর সময় থাকে না। ক্যামেরুন প্রথমবার, আফ্রিকার কোনও দেশ প্রথমবার ব্রাজিলকে হারানোর সুযোগ পাওয়ায় উৎসাহে, আনন্দে অবৌবকর নিজের জার্সি খুলে স্মরণীয় মুহূর্তটি সেলিব্রেট করে। পুরো ক্যামেরুন দল যোগ দেয় ওর সঙ্গে। তবে ফুটবলে জার্সি খুললেই একটি হলুদ কার্ড দেখানোর নিয়ম। রেফারি তাই অবৌবকরকে ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটি দেখান। ফলে লাল কার্ড দেখাতে হয়। একটি পুরো দেশের কাছে এই গোল, এই জয় একটা ভীষণ বড় মুহূর্ত ছিল। তাই ঐসময়ে গোলদাতাকেই শুধু জার্সি খোলার জন্য লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করতে আমেরিকার রেফারি ইসমাইল এলফাথের খুব খারাপই লাগছিল। সেই মুহূর্তে তিনি অবৌবকরকে জড়িয়ে ধরেন। অবৌবকরও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সাদরে আলিঙ্গন গ্রহণ করেন।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
নেইমারকে সান্ত্বনা দিল ছোট্ট ক্রোয়েশিয় সমর্থক

ব্রাজিল এবারে ভীষণ সাড়া জাগিয়ে খেলতে এসেছিল। বিভিন্ন ডাটা অ্যানালিস্টরা নানাভাবে বিচার করে ব্রাজিলই যে জিতবে সেই প্রেডিকশনও করে। বেটিংয়ের দুনিয়ায় ব্রাজিলই সবার সেরা বাজি হয় বিশ্বকাপ জেতার। কিন্তু সবকিছুর পরেও খেলাটা যখন মাঠে হয়, তখন সব হিসাবই পাল্টে যেতে পারে। আর তাই হলো ব্রাজিলের সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে। ক্রোয়েশিয়া পেনাল্টি শুটআউটে ব্রাজিলকে হারিয়ে দেয়। পুরো ব্রাজিলের দলের কাছেই এই হার ছিল অবিশ্বাস্য। ব্রাজিলের সব খেলোয়াড় খুব ভেঙে পড়েছিল। নেইমারও খুব কাঁদছিল। ঠিক ঐ সময়ই দেখা যায় ক্রোয়েশিয়ার একটি বাচ্চা ছেলে নেইমারের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে। প্রথমে তাকে অন্যরা বাধা দিলেও পরে নেইমার নিজেই তার কাছে আসতে চায়। দেখা যায় বাচ্চা ছেলেটি নেইমারকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। একটি বাচ্চা ছেলের মনে অন্যের কষ্ট উপলব্ধি করার ক্ষমতা দেখে বিশ্বের সবাইও ছবিটিকে বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ছবি হিসাবে শেয়ার করতে থাকে। পরে জানা যায় ছেলেটি আসলে ক্রোয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচের ছেলে।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
মেসির সঙ্গে সেলফি নিতে ব্যস্ত অস্ট্রেলিয় খেলোয়াড়েরা

লিওনেল মেসির জনপ্রিয়তা কোনও সীমানা মানে না। সাতটি মহাদেশের প্রতিটি পাড়ায় হয়তো তাঁর কট্টর ফ্যানদের খোঁজ পাওয়া যাবে। কিন্তু শুধু সাধারণ মানুষই নয়, অজস্র ফুটবলার, ফুটবল বিশেষজ্ঞ, কোচও মেসির ফ্যান। তারা মেসির সঙ্গে বা মেসির বিপক্ষে খেলতে পারলে নিজেদের ভাগ্যবান মনে করে। বিশ্বকাপের প্রি কোয়ার্টার ফাইনালের পর দেখা যায় অস্ট্রেলিয়া হেরে গেলেও অস্ট্রেলিয়ার প্লেয়াররা মেসির সঙ্গে ছবি তোলার জন্য আর্জেন্টিনার ড্রেসিং রুমের দিকে আসে, অপেক্ষা করে এবং পরে ছবি তুলে নিজেরাই ভীষণ খুশি হয়ে যায়।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
হৃদযন্ত্রের সমস্যার জন্য খেলতে পারেন নি সার্জিও আগুয়েরো, কিন্তু বিশ্বকাপের উত্তেজনায় মেতে থেকেছেন

আর্জেন্টিনার বিখ্যাত স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো আজ থেকে এক বছর আগে নিজের হৃদযন্ত্রের সমস্যার জন্য মাত্র ৩৩ বছর বয়সে খেলা ছেড়ে দেন, নাহলে তিনি হয়তো আজ আর্জেন্টিনা টিমে থাকতেন, হোটেলে মেসির রুমমেট হিসাবে থাকতেন। বিশ্বকাপের ঠিক কিছুদিন আগে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার জিওভানি ল সেলসো চোট এবং অস্ত্রোপচারের জন্য বিশ্বকাপ দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এরকমভাবেই চোট বা ফিটনেস না থাকার জন্য আরো কিছু প্লেয়ার বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল থেকে বাদ পড়ে যান। তবে সত্যিই কি তারা বাদ পড়েছেন বা সম্পূর্ণ সরে গেছেন? না। আগুয়েরো বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকেই আর্জেন্টিনা টিমের সঙ্গে থাকছেন। জিওভানি অস্ত্রোপচার সেরে দলের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, আরো কিছু প্লেয়ার নিকো, করিয়া এরাও টিমের সঙ্গে থাকবেন ফাইনালে। এই দল কাউকে বাদ দেয় না, খেলতে পারবে না জেনেও এই প্লেয়াররা দলের সঙ্গে জুড়ে থাকেন কোনও না কোনওভাবে, এতটাই ভালোবাসা আর্জেন্টিনা দলের মধ্যে। আর এই একতাই, ভালোবাসাই আর্জেন্টিনা টিমের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
জিওভানি ল সেলসো, যিনি দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার, তিনি চোটের কারণে এই বিশ্বকাপ খেলতে পারেনি। কিন্তু দল তাঁকেও ভুলে যায়নি। টিমে না থাকলেও অপারেশনের পরে দলের সঙ্গে থাকার অনুভূতি, বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখার অনুভূতি থেকে বাদ যাননি তিনি।


কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
ফাইনাল ম্যাচ শেষে এম্‌বাপেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ফরাসী প্রধানমন্ত্রী এবং আর্জেনটিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ


কাতারের অ্যালবাম - মানুষের গল্প
খেলায় হার-জিত যাই হোক, একে অপরের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা বজায় থাকুক সবসময়

হয়তো আমরা সবাই যারা ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ফাইনাল বা ১৯৫৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখিনি তাদের কাছে এই ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনাল সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থেকে যাবে। বিশ্বকাপের ফাইনালে, শেষ ম্যাচে দুটো দলের এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই আর দেখা যায়নি গত ৩৬ বছরে। দুই দলই তিনটে করে গোল করায় খেলা টাইব্রেকারে যায় এবং সেখানে আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের অনবদ্য সেভের ফলে আর্জেন্টিনা তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জেতে। লিওনেল মেসি নিজের ফুটবলের সব চাওয়া মিটিয়ে নিতে পারেন। এরকম হাই ভোল্টেজ ম্যাচের পর অবশ্যই পরাজিত দলের সদস্যদের মনখারাপ হয়, তেমনই এই ফাইনালের পর মেসিকে দেখা যায় এমবাপেকে সান্ত্বনা দিতে, যে তিনটি গোল করেও ফ্রান্সকে জেতাতে পারেনি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রনকেও দেখা যায় আর্জেন্টিনর গোলকিপারের সঙ্গে বসে এমবাপে তথা দলের বাকিদের সান্ত্বনা দিতে। ফুটবল যেন এভাবেই জিতে যায়, একে অপরের অনুভূতির কথা অনুভব করার মাধ্যমে। একদিন যে পরাজিত, সে আবার জিতবে পরে, এই বিশ্বাসে এগিয়ে যায় ফুটবলার, দল, জীবন। যেমন বারবার ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েও মেসি শেষ অবধি বিশ্বকাপ জিতলো, সেরকম আমরাও যেন জিতে যাই।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা