ওরা বলে 'সাতোপদা', ভারি মিঠে নামটি,
চিলিকার পুব দিকে সাতপাড়া গ্রামটি।
পুরি থেকে দক্ষিণে, বিশ ক্রোশ রাস্তা,
ঘন্টা দুয়েক নেবে ও টি ডি সি বাসটা।
খোলামেলা পরিবেশ, ফুরফুরে হাওয়াতে
কেটে গেল কটা দিন ভরা পেট খাওয়াতে।
চিলিকার কালো জলে ভটভটি বিহারে
মাছেদের পাশে পাশে, কী যে সুখ, আহা রে!
যেই সব চিল কাক শহরেতে ঢিল খায়,
সেই সব পাখিরাই সুখে থাকে চিলকায়।
মুক্ত আকাশে ওড়ে, বসবার গাছ পায়,
যত খুশি দানা পানি, কখনও বা মাছ খায়।
হাজারো পাখির গান, সুর মাখা, খোলতায়,
বেনে-বৌ মুখ তুলে বট গাছে দোল খায়।
মাছরাঙা বসে থাকে ঝিল পারে, নিশ্চুপ,
পানকৌড়ির জোড়া ডুব মারে, ঝুপ ঝুপ।
চিলিকার স্থির জল বেলজিও আরশি,
ঘোরে ফেরে কত মাছ, শোল, রুই, পারশে,
ইলিশ, ভাঙড় কত, চিংড়ি ও কাঁকড়া,
জোগলি, মাগুর, কই, চাঁদা মাছ, ঝাঁকড়া।
চিলিকার শুশুকেরা হাসি-খুশি, মিশুকে,
খেলা দেখে মনে পড়ে ছাই মাখা শিশুকে,
অনায়াসে সাঁতরাবে, হেথা সেথা ঘুরবে,
ইরাবতী নদী থেকে এসেছিল পূর্বে।
পাখি দেখে, মাছ গুনে, ভেসে ভটভটিতে
সাত দিন কোথা থেকে কেটে গেল ঝটিতে;
আচমকা ছুটি শেষ, বেজে গেল ঘণ্টা,
বাড়ি ফিরি, চিলকায় রেখে এসে মনটা।
ছবিঃ মহাশ্বেতা রায়