প্রিয় বন্ধু,
আজ প্রকাশিত হল ইচ্ছামতীর 'শারদসম্ভার ২০১৮'। গত মাসে দুর্গাপুজোর ঠিক আগে আগে, যখন 'শারদসম্ভার ২০১৮' সাজিয়ে তোলার কাজ পুরোদমে চলছে, ঠিক সেই সময়ে ইচ্ছামতী এবং আমি এমন কিছু বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিলাম যার ফলে বেশ কিছুদিন আমাদের সমস্ত কাজকর্ম পুরোপুরিভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সেইসব সমস্যাগুলিকে আপাতত আমরা নিয়ন্ত্রনের মধ্যে নিয়ে এসেছি, এবং একটু দেরিতে হলেও, তোমাদের সামনে হাজির করতে পেরেছি ইচ্ছামতীর এই বছরের শারদসম্ভার। আমাদের এই অসময়ে সঙ্গে থাকার জন্য, এবং আমাদের ওপর আস্থা বজায় রাখার জন্য আমাদের প্রত্যেক লেখক, শিল্পী ও পাঠক বন্ধুদের আরোও একবার ধন্যবাদ জানাই। আর এই অনিচ্ছাকৃত বিলম্বের জন্য আমাদের ছোট-বড় সব বন্ধুদের কাছে আবার ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
কিছুদিন আগেই ইচ্ছামতী দশ বছর পথ চলা সম্পূর্ণ করেছে। দশ বছর মানে আসলে তো অনেকটাই বড় হয়ে যাওয়া, তাই না? দশ বছরের তরতাজা মনের মধ্যে ঘুরে বেড়ায় জীবন ও দুনিয়া সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন, অনেক কৌতূহল। ইচ্ছামতীর দশ বছরের শারদসম্ভারে তাই এবারে নানা স্বাদের গল্প, কবিতা, ছড়া, রূপকথা, লোককথার সঙ্গে রইল অনেকগুলি আলাদা রকমের লেখা। বড়রা অনেক সময়েই সব রকমের বিষয়ে ছোটদের সঙ্গে সহজভাবে আলোচনা করতে চান না। কিন্তু আমরা জানি, ইচ্ছামতীর মত ইচ্ছামতীর বন্ধুদের মনেও সেইসব বিষয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায়। এই শারদসম্ভারে, আমরা চেষ্টা করলাম এইরকমই নানা বিষয়ে আলোচনা করতে, গল্পের মধ্যে দিয়ে, নাটকের মধ্যে দিয়ে। তাই অবশ্যই পড়ে দেখো আমাদের 'বিশেষ রচনা' আর 'নাটক' বিভাগ। আর ঘুরে এসো বিভিন্ন তথ্যনির্ভর লেখায় সাজানো প্রতিটা বিভাগে। এছাড়াও, এবারে আমাদের 'ইচ্ছেমতন' বিভাগ হয়ে উঠেছে একটু বেশিই রকমের জমজমাট। ইচ্ছামতীর সমবয়সী বন্ধুরা আমাদের পাঠিয়েছে দারুণ সুন্দর সব ছবি, গল্প এবং কবিতা। অবশ্যই উল্টেপালটে দেখো সব পাতাগুলি। আর কেমন লাগল,সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদের মতামত জানিও আমাদের কমেণ্টস্ সেকশনে এবং/ অথবা আমাদের ফেসবুক পাতায়, কিংবা সরাসরি আমাদের মেইল করে।
'শারদসম্ভার ২০১৮'-তে প্রকাশিত লেখাগুলির সঙ্গে দারুণ সুন্দর সব অলঙ্করণ এবং গ্রাফিক্স করেছেন শিল্পী ঘোষ,পার্থ মুখার্জি, পিনাকী দত্ত, অঙ্কুশ চক্রবর্তী, মঞ্জিমা মল্লিক, ঈশিতা ছেত্রী, তৃষিতা মিত্র, দেবিকা সারাওগি, প্রিয়াঙ্কা অগ্রওয়াল, শাশ্বত ও সুশ্রুত, অনুভব সোম এবং মহাশ্বেতা রায়। স্টক ফটোগ্রাফির যোগান দিয়েছেন কল্লোল লাহিড়ী এবং বিষ্টু মিস্তিরি। সম্পাদনার কাজে অক্লান্ত সহযোগিতা করেছেন ধূপছায়া মজুমদার এবং নিধু সর্দার; কন্টেন্ট প্রেজেন্টেশনে বিষ্টু মিস্তিরি। এঁদের প্রত্যেকের জন্য রইল আন্তরিক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা। এছাড়াই, 'পিক্সাবে' এবং 'অলফ্রিডাউনলোড'- এই দুটি ওয়েবসাইট বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য একাধিক ছবির যোগান দিয়েছে। এই দুই ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত অচেনা শিল্পীদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই। এছাড়াও, ইচ্ছামতীর 'শারদসম্ভার ২০১৮' কে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে বিভিন্নভাবে সাহায্য করার জন্য পৃথা রায়, অর্পিতা দাস, সাগরিকা ঘোষ ভৌমিক ,উদয়রাজ পিজে এবং তানিয়া বসুকে ধন্যবাদ জানাই।
সদ্য পেরিয়ে গেল ভারতের শিশু দিবস। ইচ্ছামতীর তরফ থেকে আমাদের সমস্ত বন্ধুদের জন্য রইল অনেক ভালোবাসা। আর রইল এই লেখার একেবারে ওপরে দেওয়া ছবিখানি। এই ছবিখানি খুব যত্নের সঙ্গে, ভালোবেসে আমাদের জন্য এঁকে দিয়েছেন অনুভব সোম। ছবিটা শারদসম্ভারের জন্য আঁকা হলেও, ওটার গায়ে পুজো পুজো গন্ধ লেগে থাকলেও, আসলে এই ছবিটা আমাদের জীবনের প্রতিটা দিনের জন্যেই প্রাসঙ্গিক। এই ছবিটা আজকের পৃথিবীতে আমাদের প্রত্যেকদিনের লড়াইয়ের গল্প বলে। বিভিন্ন রকমের দূষণ, যুদ্ধ, হিংসা, ঘৃণা, অন্যায়-অত্যাচার- এইসব অশুভ 'অসুর'দের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদেরকে প্রতিদিনই সতর্ক থাকতে হয়, সতর্ক থাকতে হবে। প্রকৃতির অন্যান্য প্রাণীদের সঙ্গে নিয়ে, তাদের ভালো থাকার জন্য, নিজেদের ভালো থাকার জন্য প্রতিদিন চালাতে হবে টাগ-অফ ওয়ার। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই রয়েছে মা দুর্গা আর তাঁর ছেলেমেয়েদের মত সাহস, শক্তি, বুদ্ধি, ধৈর্য্য, জ্ঞান, ও গুণ। আমাদের শুধু জানতে হবে সেসবের সঠিক ব্যবহার, তাহলেই আমরা হারাতে পারব সমস্ত রকমের অশুভ শক্তিকে, পৃথিবীকে করে তুলতে পারব আরোও বাসযোগ্য, আরোও সুন্দর।
ভালো থেকো।
ছবিঃ অনুভব সোম।