পুজো আসা মানে ইচ্ছামতীর কাছে একটা খুব ভাল সময়। কারণ ,পুজোর আগেভাগেই ইচ্ছামতীর জন্মদিন। আর জন্মদিন মানেই তো একবছর বড় হয়ে যাওয়া, আরেকটু অভিজ্ঞতা বাড়া, এই দুনিয়াটাকে আরেকটু বেশি জানতে শেখা, বুঝতে শেখা। তাই বড় হয়ে ওঠাটা সবার জন্য সবসময়েই আনন্দের। দেখতে দেখতে আট বছর পেরিয়ে গেল। ২০০৮ এর ২৭শে সেপ্টেম্বর, সে বছর মহালয়ার পুণ্যলগ্নে জন্ম নিয়েছিল যে ছোট্ট ওয়েব পত্রিকাটি, সে সব্বার ভালবাসায়, আদরে এতদিনে বেশ বড়সড় হয়ে উঠেছে। বছর বছর পাঠক বন্ধুর সংখ্যা বেড়েছে। লেখক এবং শিল্পী বন্ধুদের দলও বিরাট হয়ে উঠেছে। তাঁদের লেখায়-রেখায় ইচ্ছামতী শুরু করেছে নতুন নতুন বিভাগ। সব মিলিয়ে বড় হয়ে ওঠাটাকে বেশ উপভোগ করছে ইচ্ছামতী, চাঁদের বুড়ি আর ইচ্ছামতী পরিবারের সব সদস্য।
একটা কথা তো বুঝতেই পারছ - জন্মদিনের সাথে সাথে পুজোর ছুটি, তাই তোমার মত ইচ্ছামতীরও মনের মত উপহার চাই- একটু বেশি, একটু ভাল, একটু বেশি ভাল। ইচ্ছামতী এখন বড় হয়েছে, তাই সে আজকাল নিজে নিজে ঠিক করে তার কোন উপহারটা পেলে ভাল লাগবে- অনেকটা তোমারই মত। সেইরকমই এক আব্দার ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। সেই আব্দার অবশেষে পূর্ণ করতে পেরে চাঁদের বুড়িও বেজায় খুশি।তার কারণ, এর আগের বিশেষ উপহারগুলোর মতই, এই উপহারটাও চাঁদের বুড়ি শুধুই ইচ্ছামতীর জন্য আনে নি; এই উপহারটা আসলে ইচ্ছামতীর সাথে সাথে তার স-অ-মস্ত লেখক-শিল্পী-পাঠক বন্ধুদের জন্যেও। আমি নিশ্চিত, এবারের পুজোয় ইচ্ছামতী এবং চাঁদের বুড়ির তরফ থেকে পাওয়া এই উপহার তোমাকেও খুবই খুশি করবে।
ভাবছ উপহারটা ঠিক কী? উপহারটা হল, ইচ্ছামতীর একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যাণ্ড্রয়েড অ্যাপ্ ! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছ- ইচ্ছামতীর একেবারে নিজের একটি অ্যাপ্। এই অ্যাপ্টি গুগ্ল্ প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এই অ্যাপ্ দিয়ে তুমি ইচ্ছামতীর সমস্ত বিভাগের সব লেখাগুলিকে সহজ তালিকায় দেখতে পাবে। সাথে থাকছে প্রত্যেক লেখকের সব লেখার এবং শিল্পীদের কাজের আলাদা তালিকা। তোমার বাড়িতে ব্যবহার করা হয় এমন সমস্ত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ভিত্তিক স্মার্টফোনে এবং ট্যাব্-এ ডাউনলোড করে ইন্স্টল করা যাবে ইচ্ছামতী অ্যাপ্। আর তার পরে, তুমি চাইলেই যখন খুশি তখন পড়তে পারবে ইচ্ছামতী থেকে তোমার প্রিয় গল্প, ছড়া, ধারাবাহিক বা নানা বিষয়ের তথ্যমূলক নিবন্ধগুলি। এর পর থেকে, ইচ্ছামতীতে যত নতুন লেখা প্রকাশিত হবে, সেগুলির লিঙ্ক ও সরাসরি দেখতে পাওয়া যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে। অর্থাৎ, ইচ্ছামতীতে প্রকাশিত নিত্য নতুন লেখাগুলির খোঁজ রাখার জন্য আলাদা করে আর ওয়েবসাইট খুলে দেখার দরকারই নেই। তোমার নাগালের মধ্যে ইচ্ছামতী অ্যাপ্ থাকলেই হল।
আমাদের অ্যাপের ভেতরেই বিশদে লেখা রয়েছে এই অ্যাপের ব্যবহারপদ্ধতি বা হেল্প। আর রয়েছে তোমার পছন্দের লেখাটি, বা তোমার নিজের আঁকা ছবি বা লেখা গল্প বা ছড়া তোমার বন্ধুদের সাথে ইমেলে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে নেওয়ার সুবিধাও।
তাহলে আর দেরি করে লাভ নেই। এক্ষুনি চলে যাওয় গুগ্ল্ প্লে স্টোরে, সার্চ কর ইচ্ছামতী /Ichchhamoti লিখে , আর পেয়ে যাও আমাদের অ্যাপ্ ডাউনলোড করার লিঙ্ক।
আর হ্যাঁ, আরো দু'টো কথা। প্রথমটা হল, আমাদের একেকজনের কাছে একেকধরণের স্মার্টফোন বা ট্যাব্স্ আছে। প্রত্যেকটির কাজ করার ক্ষমতা, বা সাথে সংযুক্ত ইন্টারনেট কানেকশনের শক্তি আলাদা।ইচ্ছামতীর তরফ থেকে আমরা যদিও অ্যাপ্টিকে বেশ কয়েকরকমের ডিভাইসে পরীক্ষা করে দেখেছি, তবুও সব রকমের ডিভাইস এবং ইন্টারনেট কানেকশন- দিয়ে পরীক্ষা করা যে অসম্ভব সে তো বুঝতেই পারছ। তাই, তোমার নিজের যদি অ্যাপ্টি ব্যবহার করতে কোনরকম অসুবিধা হয়, তাহলে আমাদের অবশ্যই
দ্বিতীয়টা হল, গত আট বছর ধরে ইচ্ছামতী ওয়েবসাইটটি নানারকমের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে। ইচ্ছামতীতে প্রকাশিত নতুন নতুন লেখাগুলিকে পাঠকদের কাছে যাতে ভালভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে দিতে পারি, তাই বিভিন্ন সময়ে সাইটের কোডে টুকটাক পরিবর্তন করা হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে সেগুলির মধ্যে কয়েকটি কোড বাতিল বা পরিবর্তিত হয়েছে। আমরা পুরোপুরিভাবে চেষ্টা করেছি সেইসব পুরনো কোড পরিবর্তিত করে ফেলতে, যাতে অ্যাপে সমস্ত কিছু সঠিকভাবে দেখা এবং পড়া যেতে পারে। কিন্তু হাজারখানেকের-ও বেশি নানাধরণের কন্টেন্ট এর ওয়েবপেজগুলির কোন কোন পেজে এইধরণের পুরনো কোড পড়ে থাকার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়।তাই সবার কাছে অনুরোধ রইল, ইচ্ছামতী অ্যাপে কোন লেখা যদি সঠিক ভাবে দেখতে না পাও, আমাদের অবশ্যই
এদিকে এই নতুন উপহারটাকে মনের মত করে সাজিয়ে তোলার কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমাদের নিয়মিত শারদীয় উপহার , আমাদের 'পুজোস্পেশ্যাল' -এর ডালিও সেজে উঠছে ধীরে ধীরে। তবে ইচ্ছামতী অ্যাপ্কে ঠিকঠাক ভাবে তোমার সামনে উপস্থিত করার জন্য আমাদের যেহেতু অনেকটা সময় দিতে হয়েছে, তাই এবারে পুজোস্পেশ্যালের কাজ একটুখানি ধীরে চলছে। তাই এবছর আরেকবার, আগামি কয়েকদিন ধরে পুজোস্পেশ্যালের বিভিন্ন লেখাগুলি একটু একটু করে প্রকাশিত হবে। ভাবছ ঠাকুর দেখার ফাঁকে ফাঁকে আবার আলাদা করে কম্প্যুটার চালিয়ে ইচ্ছামতীর নতুন প্রকাশগুলির দিকে নজর কখন দেবে? আরে বাপু, সে সমস্যার সমাধান তো ইচ্ছামতী নিজেই করে দিয়েছে এবার ! নতুন লেখা প্রকাশিত হলেই তো সেটা দেখা যাবে ইচ্ছামতীর অ্যাপে - যেটা কিনা সবসময়েই থাকছে তোমার সাথে, তোমার নিজের বা পরিবারের বড়দের ব্যবহার করা ট্যাবে বা স্মার্টফোনে। তাই চাইলে পাড়ার মন্ডপের এক কোনায় বসেও একা কিংবা বন্ধুদের সাথে পড়ে ফেলতে পার ইচ্ছামতীর নতুন নতুন লেখাগুলি।
এবারের পুজোস্পেশ্যালে ইচ্ছামতীর তিন ছোট্ট বন্ধু লিখে পাঠিয়েছে গল্প আর ছড়া; আর এক বন্ধু আমাদের শিখিয়েছে নিজেই নিজের পড়াশোনাটাকে কিভাবে মজার করে তোলা যায়। তাই সবার আগে তাদের লেখাগুলিকেই সাজিয়ে দিলাম পড়ার জন্য। এই লেখাগুলি পড়তে পাওয়া যাবে 'ইচ্ছেমতন' বিভাগে। আর মাত্র তিন দিন আগে,.২৮শে সেপ্টেম্বর, আমরা পেরিয়ে এসেছি বাংলা শিশুসাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ যোগীন্দ্রনাথ সরকারের দেড়শোতম জন্মদিন। আজ থেকে একশো বছরেরও বেশি আগে তিনি এবং তাঁর মত আরো কিছু উৎসাহী গুণীজন তাঁদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে যে পথের দিশা দেখিয়েছিলেন আমাদের, সেই পথেই তো হাঁটছে ইচ্ছামতী , এবং ইচ্ছামতীর মত শিশুকিশোরদের জন্য ভালবাসা দিয়ে গড়ে ওঠা অন্যান্য ওয়েব এবং ছাপা পত্রিকা। এই পুজোস্পেশ্যালে যোগীন্দ্রনাথ সরকারকে নিয়ে রইল একটি নিবন্ধ। আর শুরু হল বাংলা শিশুসাহিত্যের ধারাবাহিক ইতিহাসের ওপর আলোকপাত করে 'দুই শতকের রূপকথা' । অন্য সমস্ত গল্প-কবিতা পড়ার সাথে এই তথ্যনির্ভর লেখাগুলিকে অবশ্যই পড়।
আজ এখানেই চরকা থামাই। শারদোৎসবের দিন গুলিতে, খুব ভাল থাক তুমি, তোমার কাছের -দূরের বন্ধুরা, তোমার পরিবারের সবাই। ভাল থাকুক নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, সাদা কাশ; ভাল থাকুক কৈলাশ, ভাল থাকুক গঙ্গা; ভাল থাকুক শিউলি, অপরাজিতা, পদ্ম, দোপাটি; ভাল থাকুক ময়ূর, সিংহ, রাঁজহাস, ইঁদুর, প্যাঁচা; ভাল থাকুক কলাবৌ আর নীলকন্ঠ পাখি; ভাল থাকুক দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, মহিষাসুর, মহেশ্বর।
ভাল থাকুক সবাই, সব্বাই।
ছবিঃ অনুভব সোম, মঞ্জিমা মল্লিক এবং ইচ্ছামতী পরিবার