সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo
চাঁদের বুড়ির চরকা-চিঠি ১৪২৪/০৪ঃ এসে গেল ইচ্ছামতীর শারদসম্ভার ২০১৭

শেষ আশ্বিনের রেশ নিয়ে অবশেষে এসে গেল ইচ্ছামতীর 'শারদসম্ভার ২০১৭' । এবার নানা কারণেই আমরা একটু দেরীতে এলাম। ইচ্ছামতীর 'শারদসম্ভার ২০১৭' কে যাঁরা সাজিয়ে তুলেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই পুজোর আগে আগে নানারকমের ব্যক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছিলেন। তাই আমাদের সব্বার পুজোর আগেভাগেই উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সেটা সম্ভব হয়নি।  কিন্তু পুজো শেষ হয়ে গেলেই কি সব পুজো পুজো ভাব একেবারেই হারিয়ে যায়? এই তো এখনও আকাশ কেমন ঝকঝকে নীল থাকছে, সেখানে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের দল, সূর্যের আলোর তেজ এখনও সেইরকমই জোরালো সোনালি, মাঝেমাঝে এক দু পশলা বৃষ্টিও হল...দেখে মনে হচ্ছে এই বুঝি দূরে কোথাও বেজে উঠবে ঢাক-এই উৎসবের আমেজের সঙ্গে তাল মিলিয়েই তাই একরাশ নতুন গল্প-কবিতা-নিবন্ধ-প্রবন্ধ নিয়ে হাজির ইচ্ছামতীর 'শারদসম্ভার ২০১৭'। এবছর ইচ্ছামতীর শারদসম্ভারে আমাদের পরিচিত, প্রিয় লেখকদের সঙ্গে হাজির অনেক নতুন লেখক- কবি। পাতায় পাতায় নানা স্বাদের ভালো ভালো লেখার সঙ্গে সবসময়ের মতই রয়েছে চোখজুড়ানো সব ছবি। তাই সব পাতা উল্টে পাল্টে না দেখলে মুশকিল !

চাঁদের বুড়ির চরকা-চিঠি ১৪২৪/০৪ঃ এসে গেল ইচ্ছামতীর শারদসম্ভার ২০১৭

প্রতি শারদীয়া উৎসবের মরসুমেই ইচ্ছামতীকে তোমার সামনে কিছু নতুনত্বে সঙ্গে হাজির করার চেষ্টা করি। সেরকমই এবারের নতুন সাজে ইচ্ছামতী পেল এক গোটা পাতা জোড়া প্রচ্ছদ; সঙ্গে লোগোর সামান্য রংবদল। এই সেপ্টেম্বরে ইচ্ছামতী নয় পেরিয়ে দশে পা দিয়েছে। এবং সেই কারণে ইচ্ছামতী আর চাঁদের বুড়ি - দুজনেই খুবই উত্তেজিত। সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে থাকা আমাদের নানা বয়সী বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-কান্নার চূনী পান্না ভাগ করে নিতে নিতে কত কত পথ আমরা পেরিয়ে এলাম, সেসব ভাবতে গেলে আমাদের খেই হারিয়ে যায়। একসঙ্গে পথ ধরে চলতে চলতে ইচ্ছামতী শুধুই মন ভালো করে দেওয়া গল্প কিংবা ছড়া পড়ে খুশি হয়নি। আমাদের আশেপাশে চলতে থাকা নানারকমের সামাজিক- অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক সমস্যাকেও সে নিজের মত করে বুঝতে চেষ্টা করেছে। আর সেই বোঝার চেষ্টাতেই এবার ইচ্ছামতী প্রশ্ন তুলেছিল, কেন আমাদের চারিদিকে ধর্ম , ভাষা, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি নিয়ে বড়দের মধ্যে এত কলহ-বিবাদ চলছে? কেন কেউ কেউ অন্যদেরকে বলে দিতে চাইছে তারা কে কী খাবে, কোথায় কখন যেতে পারে, কীভাবে ঈশ্বর উপাসনা করবে, কোন কাজ করতে পারে আর কোন কাজ করতে পারে না...তারা কি তোমার ক্লাসের সেই হিংসুটে , দুষ্টু বন্ধুগুলোর মত নাকি, যারা খালি অন্যদের সঙ্গে ঝগড়া করতে ভালোবাসে? দাদাগিরি (কিংবা দিদিগিরি) ফলায়? বড়দের তৈরি করা যেকোনো সমস্যার মতই, এই প্রশ্নের উত্তর ও খুব সহজে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমি ইচ্ছামতীকে জিজ্ঞাসা করলাম সে দুনিয়াটাকে কেমন ভাবে দেখতে চায়? বিশেষ করে যেকোনো উৎসবের সময়ে? তাতে ইচ্ছামতী আমাকে যে উত্তর দিল, সেই উত্তর শুনে আমাদের সবার মনে মত একটা ছবি এঁকে ফেলা হল। আর সেই ছবিটাই দেওয়া রইল এই লেখার শুরুতে- আমাদের তরফ থেকে তোমার জন্য আলাদা করে স্পেশ্যাল উপহার।

এই ছবিতে  স্বয়ং মা দুর্গা , যিনি কিনা অন্নপূর্ণাও, সবার জন্য লোভনীয় সব খাবার রান্না করতে বসেছেন। আর তাঁর কাজে সাহায্য করতে হাজির ফতিমা আপা, সঙ্গে মারিয়া আন্টিও আছেন।  এদিকে লক্ষ্মী সাজুগুজু করে গুরমিত আর অসুরের সঙ্গে সেলফি নিতে ব্যস্ত, তো অন্যদিকে শিব ছুটির সুযোগে একখানা ডি-এস-এল-আর বাগিয়ে শখের ফটোগ্রাফি করতে বেরিয়ে পড়েছেন। আর গণেশ যে সব লাড্ডু একাই খাবে বলে ঠিক করেছে, সে ফন্দীতে ব্যাগড়া দেবে বলে গুলতি তাক করেছে ইমরান। সরস্বতী যাতে ভালো করে ফিগার স্কেচিং করতে পারে, তার জন্য  হাফিজ চাচা নিজেই পাখপাখালিদের  স্থির রাখার দায়িত্ব নিয়েছেন। ওদিকে কার্তিক গেছে পিটারের সঙ্গে ক্যাম্পিং করতে আর এদিকে অতীশ ভাবছে একাই বিশ্বভ্রমণে বেরোবে। মোট কথা, আমাদের এই মনপসন্দ দুনিয়ায়, সব্বাই সবার সঙ্গে মিলে মিশে থাকছে, খেলছে, খাওয়া দাওয়া করছে, আনন্দ করছে, নিত্যনতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। এই দুনিয়ায় গোমড়ামুখো, দুষ্টু ক্লাস মনিটর গোছের চরিত্রদের কোনোও প্রয়োজন নেই।

ইচ্ছামতীর বন্ধুদের জন্য এই বিশেষ ছবিটি এঁকে দিয়েছেন ত্রিপর্ণা মাইতি। এছাড়াও এবারের পুজো স্পেশ্যালে রঙে-রেখায় ভরিয়ে তুলেছেন অনুভব সোম, পার্থ মুখার্জি, মঞ্জিমা মল্লিক, পিনাকী দত্ত, অঙ্কুশ চক্রবর্তী, তৃষিতা মিত্র, নভনীল দে, বৃষ্টি প্রামাণিক, ঈশিতা ছেত্রী এবং ঐন্দ্রিলা মুখার্জি । সঙ্গে লেখালিখির পাশাপাশি রং তুলি ধরেছেন রাখি পুরকায়স্থ ও মহাশ্বেতা রায়।ইচ্ছামতীর নতুন প্রচ্ছদ ছবিটি এঁকেছেন দাড়িদা। সম্পাদনার কাজে সাহায্য করেছেন ধূপছায়া মজুমদার এবং পৃথু হালদার। আর প্রতিবারের মতই চাঁদের বুড়ির সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চাঁদের বুড়ির সঙ্গে এই শারদসম্ভার সাজিয়ে তুলতে সাহায্য করেছেন বিষ্টু মিস্তিরি। এঁদের প্রত্যেকের জন্য ইচ্ছামতী আর  চাঁদের বুড়ির তরফ থেকে রইল অকুন্ঠ শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা।

এবারের মত এটুকুই। পড়তে শুরু কর তোমার মনের মত ওয়েব পত্রিকার নতুন লেখাগুলি। লেখা ও ছবি কেমন লাগল মেইল করে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিও আমাদের। ইচ্ছামতীতে প্রকাশিত সমস্ত নতুন লেখা যে তুমি আমাদের অ্যান্‌ড্রয়েড অ্যাপের মাধ্যমেও পড়তে পারবে সে তো জানোই। যদি আমাদের অ্যাপ এখনও তোমার অ্যান্‌ড্রয়েড চালিত স্মার্ট ডিভাইসে ইন্‌স্টল না করে থাকো, তাহলে এখনিই ডাউনলোড করে ফেল গুগ্‌ল্‌ প্লে স্টোর থেকে।

তোমার এবং তোমার পরিবারের জন্য রইল উৎসবের মরসুমের অনন্ত শুভেচ্ছা। আজ কালীপুজো এবং দীপাবলি।  অশিক্ষা- কুসংস্কার- ধর্মান্ধতা- জাতপাতের ভেদাভেদের অন্ধকার দূর  হয়ে তোমাদের সবার জীবন আলোকময় হোক, এই প্রার্থনা রইল।

চাঁদের বুড়ির চরকা-চিঠি ১৪২৪/০৪ঃ এসে গেল ইচ্ছামতীর শারদসম্ভার ২০১৭

 

১৯শে অক্টোবর, ২০১৭
১লা কার্তিক,১৪২৪
কালীপুজো ও দীপাবলি

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা