ছোট্ট ইচ্ছা ওর বাবা আর মায়ের সাথে ঘুরতে গোয়া গেছে। "বাবা, আমরা আজকে কোথায় কোথায় ঘুরতে যাব?",ইচ্ছা জিজ্ঞাসা করল। বাবা ইচ্ছাকে বলল, তুমিতো কখনও সমুদ্র দেখনি তাই আজ দেখবে।" বীচে গিয়ে দারুণ মজা করল ওরা, ঢেউ এর সঙ্গে খেলা, বালির পাহাড় কতকিছু। ইচ্ছা আনন্দে শুধু লাফিয়েই চলছে। আকাশে লাল রঙের ঘুড়ি উড়ছে একটা, কী সুন্দর দেখাচ্ছে!
পরদিন সকালে ওরা দুধসাগর জলপ্রপাত দেখতে গেল। ইচ্ছা দারুণ খুশি। এত সুন্দর জলপ্রপাত ও কোনোদিন দেখিনি। ওদিকে মা আর বাবা পিকনিকের বন্দোবস্ত করছিল। আর ইচ্ছা এদিক সেদিক ঘুরছে। মাঝেমাঝে ওর ড্রইং বুকে ছবি আঁকছে প্রকৃতির। হঠাৎ একটা খুব আস্তে আস্তে কান্নার আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠল ও। কে কাঁদছে ?একটা টিয়াপাখি মনে হচ্ছে ওকেই ডাকছে।
তারপর পাখিটার পেছন পেছন যেতে শুরু করল ও, চারদিক ফাঁকা, কোথাও কেউ নেই। হঠাৎ দেখে ওই বড় পাথরটার পেছন দিকে একটা মিষ্টি মেয়ে ! আরে ! মেয়ে কোথায়, এতো মৎসকন্যা!!
লাফিয়ে উঠল ইচ্ছা। ও চুপিচুপি এগিয়ে গেল ওর দিকে। তারপর দেখল ওমা! ওর তো ডানাও আছে দুটো! একটা ডানাতে কেটে গেছে আর ওর খুব ব্যাথা লাগছে!
খুব কষ্ট হল ইচ্ছার। দেখল পাশে গাঁদা ফুলের অনেকগুলো গাছ। হঠাৎ ওর মনে পড়ল যে কেটে গেলে তখন গাঁদা ফুলের পাতা লাগিয়ে দিলে ঠিক হলে যায়। ও শিগগির ক'টা পাতা নিয়ে ওর সামনে গেল, তারপর সেই পাতা ঘষে দিল মেয়েটির ডানায়। মেয়েটির মুখে হাসি ফুটল। তারপর মেয়েটি ওকে একটা সুন্দর মুক্তোর মালা দিল, বলল যখন খুব দুঃখ হবে তখন এটা গলায় পরে চোখ বন্ধ করবে, আর তুমি খুব ভালো ভালো স্বপ্ন দেখতে পারবে।
হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে গেল সে।
ইচ্ছাকে ওর মা ডাকল, ও দৌড়ে চলে গেল, মাকে বলল, দেখো মা, আমি কী পেয়েছি!!
মা বলল, নোংরা জিনিসে হাত দিও না কিন্তু।
ইচ্ছা চুপ করে তাড়াতাড়ি ওর পকেটে ঢুকিয়ে দিল মালাটা।
গল্প লিখেছে ও ছবি এঁকেছেঃ মাধুর্য মিত্র
চতুর্থ শ্রেণি,
মাউন্ট লিটেরা জি স্কুল, বহরমপুর