মুম্বই মহানগরীর লাগোয়া শহর থানে, যেমন কলকাতার লাগোয়া হাওড়া। সেই থানের এক উঁচু বাড়ির ন'তলার টঙে আমি বুড়ো ও আমার বুড়ি গিন্নি মিলে থাকি। বাড়িতে কাচ্চাবাচ্চা নেই, তাই হৈ-হট্টগোলও নেই, জীবনযাত্রা নিরুত্তাপ। ইদানীং অবশ্য এখানে এক 'খোকাবাবু'র আবির্ভাব বেশ টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল। সম্প্রতি অনেক রোমাঞ্চের পর তেনার 'প্রত্যাবর্তন' ঘটেছে, আমরাও একটু নিশ্চিন্তে আছি।
তিনি এক ক্ষুদ্র, নধর মেঠো ইঁদুরের বাচ্চা। নেংটি ইঁদুররা কখনও-সখনও গেরস্ত ঘরে আস্তানা গাড়েন। মেঠো ইঁদুররা থাকেন মাটিতে, গর্তে। ন'তলার নিশ্ছিদ্র ফ্ল্যাটে তাঁদের প্রজাতির সচরাচর আবির্ভাব হয় না। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু বেপরোয়া অভিযাত্রী পাইপ বা টিভির কেবল বেয়ে গৃহস্বামীর অসতর্কতার সুযোগে মুহূর্তে টুক করে ঢুকে পড়ে গা ঢাকা দেন। তারপর সাধারণতঃ রাতে চারপাশ অন্ধকার ও নিঃশব্দ হবার পর ইন্টারেস্টিং কিছু আছে কিনা দেখতে ও চাখতে বেরিয়ে পড়েন। আবার দিনের বেলা মানুষের সাড়া পেলে আসবাবপত্রের নিচে বা বাড়তি জিনিসপত্রের স্তুপের মধ্যে লুকিয়ে পরবর্তী সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন।
শেষ অবধি অবশ্য কোনও অসতর্ক মুহূর্তে তাঁরা ধরা পড়ে যান। তখন বাড়িতে হুলুস্থুল। আমরা যেমন তাঁকে দেখে ভীত, তিনিও আমাদের দেখে তাই। আমরা কেউ হয়তো লাঠি বা ঝাড়ু হাতে নিয়ে বীরত্ব দেখানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু মনে মনে ভাবছি তিনি কখন সুড়ুৎ করে পিটটান দিয়ে আমাদের রেহাই দেবেন। আর তিনি ভাবছেন – তুমি যদি ঐ যন্তরটা হাতে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকো তো আমি ভরসা করে দৌড় দিই কীভাবে? মনে হচ্ছে তুমি খুব একটা বীর নও, কিন্তু কে জানে কার মনে কী আছে? এভাবে কিছুক্ষণ ধৈর্যের পরীক্ষার পর তিনি আর উপায় না থাকলে হয়তো আমাদের কারও পায়ের ফাঁক দিয়ে চম্পট দিলেন। আমরাও লাফ দিয়ে সরে দাঁড়িয়ে "পালাল, পালাল, ধর, ধর" করতে করতে পথ ছেড়ে দিলাম।
তখনকার মতো স্বস্তি, কিন্তু দুশ্চিন্তা তো রয়েই গেল – কে জানে আবার কখন তাঁর আবির্ভাব হয়! তার ওপর আমাদের ফ্ল্যাট ভর্তি বইপত্তর, যার ওপর ওঁরা দাঁতের ধার প্র্যাকটিস করতে খুব ভালোবাসেন। সুতরাং বিল্ডিংয়ের সিকিউরিটির লোকেদের ধরে ঝোলাঝুলি, তাঁরা বা তাঁদের চেনাজানা কেউ যদি আমাদের এই বিপদের থেকে উদ্ধার করতে পারেন। সাধারণতঃ বুড়োবুড়ির প্রতি করুণায় তাঁদের কেউ লাঠি আর প্ল্যাস্টিক ব্যাগ নিয়ে হাজির হন। কয়েকদিনের চেষ্টায় তাঁরা হয়তো মুজরিমকে গ্রেফতার অথবা বাড়িচ্যূত করেন। আবার কখনও আমাদের অনাহূত অতিথি 'হোম-সিক' হয়ে পড়েন, তখন ফাঁক পেলে কেটে পড়েন। এই সুযোগটুকু দেবার জন্যে অবশ্য আমরা একটু ঝুঁকি নিয়েও নিশ্ছিদ্র ফ্ল্যাটের কোনও একটি জানালা সামান্য খুলে রাখি।
তা, আমাদের এই খোকাবাবুও ক'দিন আগে কোনও সুযোগে এসে ঢুকে পড়েছিলেন। রাতে রান্নাঘরে নানা সন্দেহজনক শব্দ শুনে আমরা অমন একটা আশঙ্কা কিছুদিন ধরেই করছিলাম। তবে ভূতের ভয়ের মতোই সেটা জোর করে মন থেকে সরিয়ে দেবার চেষ্টাও করছিলাম – নাঃ, বাসনটা নিশ্চয়ই হাওয়ায় পড়ে গেছে। ডাস্টবিনের রুটির টুকরোটা নিশ্চয়ই আরশোলায় চিবিয়েছে। দু-একদিন বোধহয় তার 'এক ঝলক'ও চোখে পড়েছিল। আমাদের কাজের মহিলা লতাবাঈয়ের খুব ইঁদুরে ভয়। একটা কালচেমতো ধুমসো টিকটিকি আমাদের ফ্ল্যাটের স্থায়ী বাসিন্দা। লতাবাঈ ঐ টিকটিকিটাকে দেখলেই দু'পা পিছিয়ে এসে "চুহা, চুহা" বলে আর্তনাদ ছাড়েন। তখন "না না, ছিপকলি, ছিপকলি" বলে তাঁকে আশ্বস্ত করে আবার কাজে ফিরিয়ে আনতে হয়। এক্ষেত্রে খোকাবাবুর সাইজ খুব ছোটো হওয়ায় আমরাও প্রথম ঝলকে তাঁকে দেখে 'ছিপকলি' বলেই আশ্বস্ত ছিলাম। কিন্তু শেষ অব্দি একদিন আমাদের সত্যের মুখোমুখি হতে হল। সন্ধেবেলা রান্নাঘরের আলো জ্বালতে দেখা গেল, প্ল্যাটফর্মে গ্যাসের পাশে বসে তিনি জুলজুল করে তাকিয়ে আছেন।
তারপর যথারীতি হুলুস্থুল – লাঠি আন, ধর, মার। এখানে বাড়তি মুস্কিল, এই খোকাবাবু নিতান্তই অলস। তাঁর গতিও বড়ই মন্থর। তাই আমরা যে তাঁকে ধরার বা মারার কোনও চেষ্টা না করে স্রেফ তাঁর কেটে পড়ার জন্য অপেক্ষা করছি, এটা এমনকি আমাদের নিজেদের কাছেও হাস্যকরভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। তাঁর মন্থরতা ও ছোটো সাইজের সুযোগ নিয়ে জুতোগোছের কিছু দিয়ে চটাস করে দেওয়াটা খুব কঠিন কাজ ছিল না। কিন্তু সে এক বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার হত।
এরপর মাঝে মাঝেই তাঁর 'গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স' হতে লাগল। আমরা পরস্পরকে লজ্জা পেতাম বলেই বোধহয় দেখাসাক্ষাতটা খুব ঘন ঘন হতো না। তবু কখনও রান্নাঘরের মেঝেতে, কখনও ঘরে যাবার প্যাসেজে, আবার কখনও কম্পিউটার টেবিলে তেনার সাথে মোলাকাত হতে লাগল। শেষোক্ত ঘটনার পর তিনি কোনও তার-ফার কেটে দেন কিনা এই আশঙ্কায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়লাম।
এবার বাইরের থেকে লোক ডেকে আনলাম – কিন্তু ছোটো সাইজের সুযোগ নিয়ে তিনি কোথায় যে গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন কে জানে! বার দুয়েক চেষ্টার পর খোকাবাবুকে খুঁজে না পেয়ে তাঁরা হাল ছেড়ে দিলেন। প্রতিবার অনুসন্ধান ব্যর্থ হবার পর যখনই ভাবতাম তিনি অবশেষে পিটটান দিয়েছেন, আবার হঠাৎ আবির্ভূত হয়ে তিনি আমাদের নিশ্চিন্তির গোড়ায় জল ঢেলে দিতেন।
নাঃ, এবার কিছু করতে হবে, অন্য একটা কিছু! বন্ধুবান্ধব পরামর্শ দিলেন ইঁদুর মারা বিষ ব্যবহার করতে। তাতে অনেক ফ্যাকড়া। একটু অসাবধান হলে বিপদ হতে পারে। তারপর বিষ খেয়ে তেনারা প্রায়ই আনাচে-কানাচে গিয়ে পঞ্চত্বপ্রাপ্ত হন। তখন গন্ধ ছড়ালে খোঁজ, খোঁজ – সব মিলিয়ে এক যাচ্ছেতাই কাণ্ড।
তাছাড়া চুপি চুপি বলে রাখি – ভেতরে ভেতরে আমি একটু বোষ্টুম ভাবাপন্ন আছি, জীবহত্যে ঠিক বরদাস্ত হয় না। আরশোলা, মশা মারতেই মন কেমন করে – আর ইনি তো একটি কচি ইঁদুর! এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আমি মানুষটা বেশ ভীতু। ইঁদুর, পাখি, চামচিকে আরও অনেক কিছুতেই ভয় পাই। তবে আমার মধ্যেও একটা ছোটোখাটো বীরপুরুষ লুকিয়ে আছে – তাই আমি পৃথিবীর অন্ততঃ অর্ধেক মানুষের ত্রাস আরশোলাকে ডরাই না। আমার গিন্নির খুব সাহস। কিন্তু বাড়িতে কোনও আরশোলা দেখা দিলে সে-ও "ই-ই-ই মারো, মারো" বলে আমার কাছে দৌড়ে আসে। আমি কিন্তু 'চটাস' না করে সাবধানে কাগজে ধরে তাঁকে 'বাড়িচ্যুত' করে দিই। "মারলে না?" গিন্নি জিগ্যেস করলে বলি, "ওদের কি মেরে শেষ করা যায়? ওরা ডাইনোসরের আগে থেকে আছে, অ্যাটম বোমাতেও মরে না।" গায়ে মশা বসলেও আমি প্রায়ই ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিই। এক্ষেত্রে আমার সাফাই, "লাখ লাখ মশা, ক'টা মারব? মধ্যের থেকে নিজের চাঁটি খেয়ে মরব। আর এমনিতেই তো ওদের আয়ু দিন সাতেক।"
অতএব বিষ বাতিল। শেষ অবধি গিন্নি তার এক সহকর্মীর কাছ থেকে এক ইঁদুর ধরা কল নিয়ে এল। তোমরা যারা দেখনি তাদের জন্য বলছি – এটা একটা কাঠের ছোটো, লম্বাটে বাক্স। এর সামনের দিকে থাকে একটা 'ট্র্যাপডোর', যার একদিকটা টেনে একটা আংটায় লাগিয়ে খাঁচাটা খুলে রাখা হয়। ঐ আংটাটার সাথে জোড়া তারের আরেক মাথা বাক্সের ভেতরে একটা হুকের সাথে জোড়া থাকে। হুকটার সঙ্গে লাগানো হয় খাবারের টুকরো। ইঁদুর বাবাজি এসে খাবারটা ধরে টানাটানি করলেই তারের টানে অন্যদিকের আংটা সরে গিয়ে দরজাটা আলগা হয়ে দড়াম করে পড়ে যায়। ব্যস, ইঁদুর বাবাজি বন্দি!
প্রথম রাতে আমরা একটা রুটির টুকরো হুকে আটকে ঘুমোতে গেলাম। পরদিন সকালে আশায় আশায় উঠে দেখি বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি, খাঁচা শূন্য। একটু তদন্ত করে বুঝলাম, রুটির টুকরোটার সাইড দিয়ে খুঁটে খুঁটে খাওয়া।. কে জানে, তবে হয়তো তিনি আসেননি, আরশোলাই খুঁটেছে। পরের রাতে এক টুকরো (পাও-ভাজির) 'পাও' আটকে শুতে গেলাম। কিন্তু পরদিন ভোরে আবার একই কেস, টুকরোটার আশেপাশে খুঁটে খাওয়ার চিহ্ন। উপরন্তু এবার খাঁচার মধ্যে ইঁদুরের বর্জ্য দেখে সন্দেহ রইল না, খোকাবাবুই এসেছিলেন।
"কেসটা কী? ব্যাটা খাবার খুঁটেও ধরা পড়ছে না কেন?"
আমি ম্লান হেসে বললাম, "তিনি লাইটওয়েট আর – হ্যাঁ, হুঁশিয়ার। তাই দরজার আংটা না নড়িয়েই কাজ সেরে চম্পট দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায় বললে,
খিদেয় চোঁ-চোঁ পেট, গন্ধ পেয়ে এসে
এই তো খোলা বাক্সে কিছু খাবার পেলাম শেষে।
(কিন্তু) মা বলেছে – মানুষগুলো ধূর্ত ভারি। তাই
(বরং) কুটকুটিয়ে ধার বরাবর সাবধানেতে খাই।"
সব বৃত্তান্ত শুনে গিন্নির কলিগ বললেন, ওরা মাংশাসী। তাই ওসব রুটি-ফুটিতে কাজ হবে না, নন-ভেজ কিছু রাখো। সেই অনুযায়ী পরদিন মুরগির একখান পেল্লায় হাড় রাখা হল হুকের ঠিক পেছনে, আশা এই যে খাস চিজ পেয়ে আনন্দে লম্ফঝম্ফ করতে গিয়ে তিনি ধরা দেবেন। কিন্তু কোথায় – দেখা গেল তিনি হাড়টা নিয়ে নিরাপদে চম্পট দিয়েছেন! নিশ্চয়ই নিরালা কোনও কোণে বসে নিশ্চিন্তে চিবুচ্ছেন!
"হবে না – কলটা ধেড়ে ইঁদুরের, বাচ্চাদের জন্য নয়।" গিন্নি সুচিন্তিত অভিমত দিলেন। আমি একটু ভেবে বললাম, "ঠিক আছে, আজকের দিনটা যাক। কাল-পরশু উইক-এন্ডে একটু ভেবে দেখি ওটাকে কীভাবে 'অ্যাডজাস্ট' করা যায়।" প্রসঙ্গক্রমে বলি, শালগ্রামের যেমন শোয়া আর বসা সমান, রিটায়ার্ড আমারও তেমন উইক-এন্ড আর উইক-ডে'র মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তবু ওভাবে বললে একটু ভাবগম্ভীর শোনায়।
"তুমি আবার কী করবে?" গিন্নি তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বললেন।
"ভুলে যেও না, এককালে আমিও ইঞ্জিনীয়ার ছিলাম।" গোঁফে তা দিয়ে বললাম।
সুতরাং সে রাতটা 'রেস্ট-ডে'। তবে কলটা প্রকাশ্যে রাখা যাবে না। শনিবার লতাবাঈ একটু সকাল সকাল আসেন, কলটা দেখলেই তিনি 'চুহা'র গন্ধ পেয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডুব দেবেন। তাই শূন্য খাঁচাটাকে দরজা খোলা অবস্থায় খাটের তলায় লুকিয়ে রাখা হল।
সেদিন রাতে ঘুমের ঘোরে 'খুট-খুটুস' গোছের একটা সন্দেহজনক আওয়াজ যেন কানে এসেছিল। ইঁদুরের স্বপ্ন দেখছি ভেবে সেটা অবশ্য মন থেকে উড়িয়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু পরদিন সকালে খাঁচার কাছে গিয়ে দেখি, দরজা বন্ধ। ভালো করে দেখে বুঝলাম, অবশেষে খোকাবাবু বন্দি হয়েছেন!
"তাজ্জব – অ্যাদ্দিন খাবারের টোপ ফেলে তাঁকে ধরা গেল না, আর আজ তিনি কীসের টানে এসে শূন্য খাঁচায় বন্দি হলেন?"
গিন্নির হাঁ করা মুখের দিকে চেয়ে আমি মৃদু হেসে উত্তর দিলাম, "তাঁর ভাষায় বলছি,
হাঁউ-মাউ-খাউ – খাবারের গন্ধ পাঁউ –
(কিন্তু) কোথায় গেল মাংস-রুটি, কোথায় গেল পাউ?
নেমন্তন্ন করে এনে শুধুই ধোঁকা দিলে?
লম্ফঝম্ফ করে তোমার কাঁপিয়ে দেব পিলে।
অর্থাৎ খাঁচায় এদিন কিছু না রাখা হলেও তাতে আগের দিনে রাখা খাবারের গন্ধটা ঠিক ছিল। তারই টানে এসে খোকাবাবু শূন্য খাঁচা দেখে খাবারের সন্ধানে তু্মুল আন্দোলন শুরু করে দিয়েছিলেন। তখনই ধাক্কা লেগে খাঁচার দরজা পড়ে গেছে।"
যাক, স্বস্তি! কিন্তু এবার শেষরক্ষা হয় কীভাবে? মানে, তেনাকে পাচার করি কেমনে? জ্যান্ত অবস্থায় 'হ্যান্ডল' করা সত্যি বলতে আমাদের সাহসে কুলোবে না – কে জানে, অভিমানভরে যদি কামড়ে দেন? আবার জীবহত্যেও মহাপাপ। সুতরাং গিন্নি ঝটিতে নিচে চলে গেলেন আর একটু পরে রাজেন নামে এক কিশোরকে নিয়ে হাজির হলেন। রাজেনবাবু রোজ ভোরে কমপ্লেক্সের বাসিন্দাদের গাড়ি ধুয়ে কিছু রোজগার করেন।
"এ আবার একটা ব্যাপার!" তিনি তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে খাঁচাটা তুলে নিলেন।
"রাজেন, মারবে না কিন্তু – স্রেফ কমপ্লেক্সের বাইরে ছেড়ে দিয়ে আসবে।" গিন্নির করুণ মিনতি।
"কোনও চিন্তা করো না আন্টি, তাই হবে।"
শেষ অবধি মাত্র দশ টাকায় রফা হল, বোধহয় সিনিয়র সিটিজেন কনসেশন ধরে। একটু পর রাজেনবাবু শূন্য খাঁচাটা ফিরিয়ে দেবার সময় বলে গেলেন, "দেওয়ালের ওপাশে ছেড়ে এসেছি। ব্যাটা কিছুক্ষণ কী করবে বুঝতে না পেরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। তারপর ধীরেসুস্থে হেঁটে চলে গেল।"
সুতরাং আমরা আবার নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারছি – অন্ততঃ এখনকার মতো। আর আশা করছি খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন অ্যাদ্দিনে সম্পূর্ণ হয়েছে – মেঠো ইঁদুর-পুলিশেরা নিশ্চয়ই তাঁকে মা-বাবার কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
ছবিঃমঞ্জিমা মল্লিক