সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

কি গো কেমন আছ তুমি?আর বোলো না, পরিস্থিতির চাপে পড়ে তোমাকে যে একটা ইয়া লম্বা গল্প বলতে বসেছি, তা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। হূঁশ এল চাঁদের বুড়ির তাগিদে। কিছু মনে করো নি আশা করি তুমি! সত্যিটাই বললাম।


শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর

ইতিহাসও এমনই দুটি ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়ে সত্য আর পরিস্থিতি।যেমন সিপাহী বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ার কারনগুলো এক্কেবারেই পরিস্থি্তিগত।হ্যাঁ তবে সেই পরিস্থিতিগুলো শুধু অনেকদিন ধরে তৈরী হওয়া।সাধারণ মানুষ ছাড়াও সামন্ত,নৃপতি, জমিদার ও তালুকদারদের স্বার্থও বৃটিশ শাসনের দ্বারা ক্ষুন্ন হয়েছিল।তারাও তাই এই বিদ্রোহের সামিল হয়েছিলেন বহুক্ষেত্রে ।অদ্ভুতভাবে কিন্তু সব জায়গায় বিদ্রোহীরা নিজেদের মত যে রকম করেই হোক না কেন, নিজেদের মধ্যেই পরামর্শ করেই তাদের কার্যক্রম ঠিক করত । দিল্লী দখলের পর বিদ্রোহের প্রতিনিধিরা বাহাদুর শাহের কাছে গিয়ে প্রস্তাব দিল নেতৃত্ব গ্রহনের,তাই বাহাদুর শাহ যে ক্ষমতা পেলেন তার পুরোটাই ছিল বিদ্রোহের সংগঠক নেতৃত্বের মত অনুসারে।নিজের কোন কৃতিত্ব সেখানে ছিলো না ।তেমন করেই পাওয়া গিয়েছিল নানা সাহেবকে ।তিনি ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত। কানপুরের বিদ্রোহী সিপাহীরা তাঁকে তাদের দলে যোগদানের প্রস্তাব দেন। আর তিনি তাতে সম্মতও হন। তার ওপর সময়ের কাঁটায় ১৮৫৭ সাল ছিল পলাশির যুদ্ধের একশ বছর পূর্তি।বৃটিশ শাসনকে সেই উপলক্ষে এই সময়ে উপড়ে ফেলে দেওয়ার একটআ অদম্য আ্কর্ষণ ও মানুষের মধ্যে কাজ করেছিল।


ঝাঁসীর দুর্গ

ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ এর নাম নিশ্চয়ই তোমরা শুনেছ,মধ্য ভারতে একটি ছোটো শহর এখন ঝাঁসি। শহরের প্রতিটি কোনে এখন লুকিয়ে আছে ইতিহাসের গল্প গাথা যার কেন্দ্রীয় ভূমিকায় এক নেহাতই নাবালিকা রানী লক্ষীবাঈ, রাজপরিবারের পুরুষের অভাবে তিনিই ধরেন অস্ত্র ইংরেজদের বিরুদ্ধে। শেষে অসম লড়াইয়ে হেরে গিয়ে নিজের সন্তানকে পিঠে নিয়েই ঘোড়ায় চেপে কেল্লার ওপর থেকে ঝাঁপ দেন তিনি ।বশ্যতা স্বীকারের বদলে তিনি এই পথকেই বেছে নেন।কোনদিন যদি ঝাঁসি বেড়াতে যাও,তবে দেখবে ঝাঁসির কেল্লার ছাদে বসানো পতাকার পাশে সূর্যাস্ত কেমন করে ইতিহাসের স্মৃতির শিহরণ জাগিয়ে তোলে।


কথিত আছে রানী লক্ষ্মীবাঈ নিজের শিশুপুত্রকে সাথে নিয়ে ঘোড়া বাদলের পিঠে চড়ে কেল্লার এই জায়গা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন

তাঁতিয়া টোপি, রানী লক্ষীবাঈ, বিহারের কুমার সিংহ আরো বিদ্রোহী সংগ্রামীরা রণক্ষেত্রে প্রথম বৃটিশের হাতে মৃত্যুবরণ করেন। নানা সাহেব যুদ্ধে বিপর্যয়ের পর আত্মগোপণ করেন। বিদ্রোহীদের অভিযান পরিচালনার কোনো ত্রুটি ছিল না জান! কিন্ত,শেষ পর্যন্ত সব জায়গাতেই বিদ্রোহীদের হেরে যাওয়ার কারণ হল উপযুক্ত শৃঙ্খলা আর সুসংবদ্ধ সামরিক নেতৃত্বের অভাব।

জানলে বা শুনলে আশ্চর্য হবে,সেই পলাশীর যুদ্ধের মত এবারেও বৃটিশরা ভারতীয়-দেরই ব্যবহার করে আবারও একবার এই বিরাট অভ্যুত্থানকে দমন করে তাদের শাসন কায়েম রাখে।সে গল্প না হয় এর পরের পর্বেই শুনো। এখন তো আর ইচ্ছামতীর পাতায় স্বাধীনতার গল্প শোনার জন্যে আগের মতন অনেকদিন অপক্ষা করতে হয় না, যে আগে কি হয়েছিল ভুলে যাবে, তাই না-- !


ছবিঃউইকিপিডিয়া

আর্য চ্যাটার্জি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বেশ কয়েকবছর বিভিন্ন ইংরেজি পত্র-পত্রিকায় নানা বিষয়ে লেখালিখি করেন। বর্তমানে পারিবারিক ঐতিহ্যের টানে একটি সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। হাওড়া সালকিয়ার বাসিন্দা আর্য নিয়মিত গান বাজনার চর্চা করেন; নিজের ইচ্ছায় একাধিক তাল যন্ত্র বাজানো রপ্ত করেছেন তিনি। নিজের শখের কিছু লেখা আর ইচ্ছামতী-তে লেখা ছাড়া এখন আর কোনো পত্র-পত্রিকার সঙ্গে আপাততঃ যুক্ত নন। শখের লেখা ব্লগে লেখেন। বেশিরভাগই বড়দের জন্য কবিতা।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা