আজ ইচ্ছামতীর বারো বছরের জন্মদিন। আজ ইচ্ছামতী বারো বছর পূর্ণ করল। আজকের এই আনন্দের দিনে, সেই প্রথম দিন থেকে পাশে থাকা ইচ্ছামতীর সমস্ত লেখক-শিল্পী-সহযোগী-পাঠক বন্ধুদের জানাই অকুন্ঠ ধন্যবাদ। আর ইচ্ছামতীর ছোট ছোট বন্ধুদের জানাই ভালোবাসা। তোমরা সবাই সঙ্গে আছ, তাই ইচ্ছামতীও এক পা -দু পা করে চলে এত বড় হয়ে গেল। বারো পেরিয়ে তেরোয় পা মানে তো রীতিমত বড় হয়ে যাওয়া, তাই না? ইচ্ছামতী যদি স্কুলে যেত, তাহলে কোন ক্লাসে পড়ত এখন?
স্কুল আর ক্লাসের কথা যখন এলই... এতদিনে নিশ্চয় তুমি অনলাইন ক্লাস আর অনলাইন পরীক্ষা দেওয়াতে অভ্যস্ত হয়ে গেছ। বদলে গেছে আমাদের প্রতিদিনের জীবন।বাড়িতে বসেই সকালবেলায় স্কুলের রোল-কলে সাড়া দিতে হয়, ক্লাস করতে হয়, হোমওয়ার্ক জমা দিতে হয়। তবে এই সমস্ত নিয়মে অংশগ্রহণ করতে পারে একমাত্র তারাই, যাদের বাড়িতে সর্বদা ব্রডব্যান্ড সংযোগ আছে, আছে ব্যবহার করার মত স্মার্টফোন বা কম্পিউটার। যাদের বাড়িতে এমন সুবিধা নেই, তারা কিন্তু বাকিদের সঙ্গে পড়াশোনায় তাল মেলাতে পারছে না। পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিদিন এমন কত কত ছাত্র-ছাত্রীদের খবর পাচ্ছি আমরা। এই অতিমারি আমাদের মধ্যে তৈরি করছে 'ডিজিটাল ডিভাইড' বা 'ডিজিটাল বিভেদ'। আমরা যারা সহজে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছি, অনলাইনে কাজ বা পড়াশোনা করতে পারছি — আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সংখ্যা কিন্তু আসলে খুব কম।আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু এই সুযোগ পাচ্ছেন না। তাই আমাদের পাওয়া এই বিশেষ সুযোগ আমরা কীভাবে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারি, খারাপ ভাবে ব্যবহার না করে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি, সেটাও আমাদের ভাবতে হবে।
তোমার কি এমন কোনো বন্ধু আছে, যে অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারছে না? আমরা এখন যে আবহের মধ্যে রয়েছি— আগের মত স্কুলে গিয়ে ক্লাস করা, টিফিনের সময়ে হুটোপুটি করে খেলা, বন্ধুদের সঙ্গে আড়ি-ভাব—সবই বন্ধ থাকবে আরও বেশ কিছুদিন। তাই এই পিছিয়ে পড়া বন্ধুদের কথা যেন ভুলে যেওনা। পারলে তাদের স্কুলের পড়া বুঝতে সাহায্য করো, তাদের সঙ্গে তোমার অনলাইন ক্লাস নিয়ে গল্প করো। করোনাভাইরাস আমাদের 'ফিজিক্যাল ডিস্ট্যান্সিং' বা শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখতে বাধ্য করছে, কিন্তু মনের দূরত্ব তো বাড়াতে বাধ্য করেনি, তাই না?
লকডাউনে বাধ্য হয়ে বন্দী থাকতে থাকতে যাতে একঘেয়ে না লাগে, এমন ভাবনা থেকে ইচ্ছামতীর কচিকাঁচা বন্ধুদের জন্য আমরা গত কয়েকমাস ধরে খেলছি একটা মজার খেলা - 'সূত্র ধরে গল্প লেখো' । প্রতিমাসে আমরা কয়েকটা করে ছবি সূত্র হিসাবে বন্ধুদের সামনে দিয়ে দিই। আর বন্ধুরা নিজেদের পছন্দমত সূত্র বেছে নিয়ে আমাদের লিখে পাঠাচ্ছে দারুণ মিষ্টি, মজার, ভালো ভালো গল্প। গত কয়েক মাসে আমাদের অনেক নতুন বন্ধুও হয়ে গেছে। তুমিও কি যোগ দিয়েছ আমাদের এই খেলায়? এখনও যোগ না দিয়ে থাকলে আগামি মাসগুলিতে নজর রাখতে ভুলো না ইচ্ছামতীর দিকে। আর গত কয়েক মাসে বন্ধুদের লেখা গল্পগুলি পড়ে দেখতে পারো 'ইচ্ছেমতন' বিভাগে।
ইচ্ছামতীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই মাসে আমরা নিয়ে এলাম একটা নতুন লেখার খেলা। এই নতুন লেখালিখির খেলাতে যোগ দিতে পারবে শুধু ছোটরাই। আমাদের পোস্টার বিভাগে দেখে নাও এই খেলার নিয়ম।
সবাইকে নিয়ে, সবার সঙ্গে ভালো থেকো।
ছবিঃমিতিল