সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

আজ, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ইচ্ছামতীর দশ বছরের জন্মদিন।

হ্যাঁ, দশ বছর পূর্ণ করল তোমার, আমার, সবার পছন্দের বন্ধু -ইচ্ছামতী।

নয় পাতার একটা ছোট্ট ওয়েব পত্রিকা থেকে পঁচিশেরও বেশি বিভাগে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করা এক বড়সড় ওয়েবসাইটে পরিণত হয়েছে ইচ্ছামতী। কয়েক বছর পরে পরেই প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, সাজ বদল, বিন্যাস বদল, নিজস্ব অ্যাণ্ড্রয়েড অ্যাপ - গত দশ বছরে ইচ্ছামতী আর চাঁদের বুড়ি ডিজিটাল দুনিয়ায় কম অ্যাডভেঞ্চার করল না কিন্তু ! আর আমাদের সঙ্গে এই রঙিন সফরে একে একে যুক্ত হয়েছেন দেশ-বিদেশের লেখক বন্ধুরা, শিল্পী বন্ধুরা ধরেছেন রঙ-তুলি-পেন্সিল,ফটোগ্রাফার বন্ধুরা হাজির করেছেন ফটোগ্রাফির ঝাঁপি। সেজে উঠেছে, বেড়ে উঠেছে, তোমার সঙ্গে গল্প করতে করতে, গল্প বলতে বলতে, গল্প শুনতে শুনতে দশটা বছর পথ চলেছে ইচ্ছামতী।

আজকের দিনটা শুধু ইচ্ছামতীর জন্য নয়, আজকের দিনটা চাঁদের বুড়ির জন্যেও খুবই আনন্দের এবং গুরুত্বপূর্ণ দিন। দশ বছর আগে, যখন ইচ্ছামতীর প্রথম সংখ্যা সাজিয়ে তুলছিলাম আমি আর কল্লোল, তখন আমাদের কোনও ধারণাই ছিল না, আগামি দিন গুলি কেমন হতে পারে , বা দশ বছর পরে আমরা কী করতে বা ভাবতে পারি।

দশ বছর আগে সবে সবে আমরা সরাসরি ওয়েবপেজে সহজে বাংলা লিখতে পারতে শুরু করেছিলাম। ওয়েব প্রযুক্তির এই ধাপটি ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলা ভাষার প্রবেশ এবং বিস্তার নিঃসন্দেহে অনেক সহজ করে দিয়েছিল।

তবুও, আজ থেকে দশ বছর আগে, ওয়েব পত্রিকা বিষয়টি সম্পর্কে পাঠকদের ধারনা তুলনামূলক অনেক কম ছিল। ইন্টারনেটের সুব্যবহার সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারনা ছিল না। আর আজকের দিনের মত ইন্টারনেট সংযোগও এত সহজলভ্য ছিল না। প্রত্যেকের হাতের মুঠোয় স্মার্টফোনও ছিল না। দশ বছর আগে ইন্টারনেট প্রযুক্তি আজকের মত দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে ওঠেনি।

আর তাই, শুরুর কয়েক বছরে আমাদের অনেক প্রশ্ন, অনেক সমালোচনা, অনেক নিরাশাবাদী বক্তব্যের সামনে পড়তে হয়েছে। 'ছোটদের জন্য ওয়েব পত্রিকা' - ক’জন পড়ে, কারা পড়ে, অনলাইন হয়ে আর কে-ই বা গল্প -কবিতা পড়বে , মুদ্রিত পত্রিকা করছি না কেন – এইরকম নানা ধরনের প্রশ্ন এবং মন্তব্য আমাদের মাঝে মাঝেই হতাশ করে দিয়েছে বইকী। তার ওপরে সেই পত্রিকা আবার পুরোটাই বিনামূল্যে পড়তে পারা যায়, অর্থাৎ আমাদের কোনও আয় নেই, তবুও আমরা সেই পত্রিকার পেছনে বছরের পর বছর এত সময় এবং পরিশ্রম দিচ্ছি কেন – এই অংক মেলাতে না পেরে আমাদের যাঁরা বেজায় হিসেবি বন্ধু, তাঁরা সবাই ব্যাজার মুখে ফিরে গেছেন।

কিন্তু তার ফাঁকে ফাঁকেই যখন দূর দেশের কোনও এক অচেনা পাঠক মেইলে লিখে জানিয়েছেন – ইচ্ছামতী তাঁকে তাঁর ছোটবেলা ফিরিয়ে দিয়েছে, কিংবা, কোনও ছোট্ট বন্ধু ছবি এঁকে পাঠিয়েছে, কিংবা কোনও অভিভাবক জানিয়েছেন তিনি তাঁর মেয়েকে ইচ্ছামতী থেকে গল্প পড়ে শোনান, তখনই আবার সব মন খারাপ ভুলে দ্বিগুণ উৎসাহে ফিরে এসেছি খোলা ল্যাপটপের সামনে, খুলে বসেছি আঁকার খাতা।

এই ভাবে, দশ বছরে, ইচ্ছামতী আর চাঁদের বুড়ি প্রতিদিন এক সঙ্গে শিখেছে- কীভাবে সব ধরনের বাধা বিপত্তি কাটিয়ে, সব রকমের নিরাশা বা হতাশার কথাকে পেছনে ফেলে, এক পা এক পা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। চলার পথে কীভাবে নতুন নতুন বন্ধু তৈরি করতে হয়। দুনিয়ার সব গল্প, সব ঘটনার থেকে মনের রসদ যোগাড় করতে হয়। দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে আছে ভালোর কথা, আলোর কথা - সেইসব কথা বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়।

আজ, ইচ্ছামতীর দশ বছরে, এই বিশ্বের দশ দিকে ছড়িয়ে থাকা আমাদের প্রত্যেক বন্ধুকে ধন্যবাদ ও ভালোবাসা জানাই। হ্যাঁ, তোমার কলমের জোরে, তোমার তুলির টানে, তোমার সুচিন্তিত মতামতে, তোমার ভালোবাসায় ভরে আছে ইচ্ছামতী। ইচ্ছামতী আর চাঁদের বুড়ির ইচ্ছেগুলোর সঙ্গে মিলে মিশে গেছে তোমার ইচ্ছেগুলো, আর ক্রমশঃ বেড়ে উঠেছে ইচ্ছামতী আর আমাদের ইচ্ছামতী পরিবার

তোমার কাছে একটা অনুরোধ -পেরিয়ে আসা দিনগুলিতে, যদি কোনও কারণে ইচ্ছামতী আর চাঁদের বুড়ির ওপরে তোমার অভিমান হয়ে থাকে, সেই অভিমান আজকের আনন্দের দিনে ভুলে যাও। গত কয়েক বছরে ইচ্ছামতী আর আমি চলার পথে বিভিন্ন সময়ে নানা বাধাবিপত্তির সামনে পড়েছি। সেইসব কাটিয়ে উঠতে উঠতে তাই অনেক জরুরী এবং প্রয়োজনীয় কাজ সময়মত করতে পারিনি। সেই সমস্ত অনিচ্ছাকৃত ত্রুটিগুলির জন্য তোমার কাছে মার্জনা চাইছি।

আমরা আরও অনেক পথ হাঁটতে চাই, অনেক আকাশে উড়তে চাই, অনেক সাগরে ভাসতে চাই। নতুন দুনিয়া দেখতে চাই, নতুন বন্ধু বানাতে চাই, নতুন গল্প বলতে চাই, নতুন গল্প শুনতে চাই, নতুন ছবি আঁকতে চাই। আমাদের সঙ্গে তুমিও থাকবে তো?

 

২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮,
১০ই আশ্বিন, ১৪২৫

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা