
গত ফেব্রুয়ারী, মাধ্যমিক শেষ হওয়ার পর পরই আমি আমার পরিবারসহ যাত্রা করি সাংসের গ্রাম নামক একটি অখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রে। জনবহুল শহর জীবন থেকে বহুদূরে অবস্থিত এই জায়গাটি শান্তিপ্রিয় মানুষদের জন্য স্বর্গরাজ্য বলা যেতে পারে। সাংসের গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি অত্যন্ত খাড়া ও রুক্ষ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হলেও সামনে পাহাড়ের অপরূপ সুন্দর রূপ দেখে শরীরের সমস্ত ক্লান্তি এক নিমেষে দূর হয়ে যাবেই। আমরা যখন সেখানকার একমাত্র হোমস্টে - কে কে হোমস্টেতে পৌঁছই, আমাদের স্বাগত জানায় ওই হোমস্টের মালিকের দুই ছোট্ট যমজ মেয়ে - কাদম্বরী আর কাব্য। তাদের সাথে লেজ নাড়াতে নাড়াতে আমাদের আমন্ত্রণ জানায় ‘সিম্বা’ নামক একটি জার্মান শেফার্ড। সাংসেরে দ্রষ্টব্য স্থান খুব একটা নেই। থাকার মধ্যে আছে ‘জলসা’ বাংলো নামক একটি ব্রিটিশ বাংলো। কাছেপিঠে অন্যান্য গ্রামের মধ্যে আছে ইচ্ছেগাঁও, রামধুরা ইত্যাদি। দিনের আলোয় হোমস্টেতে বসে রোদ পোহানোর বাহানায় প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ও পাহাড়ের মৌন মাহাত্ম্য উপভোগ করতে করতে সন্ধে নেমে আসলেই অনুভব করা যাবে জানা প্রকৃতির মধ্যে এক অজানা রহস্যময়তা যাতে উৎসাহ জোগাবে শিয়ালের শিহরণ জাগানো ডাক। এভাবেই পাহাড়ের কোলে প্রকৃতি ও নিজের সাথে কথোপকথনে কেটে যাবে গোটা দিন।
মাধ্যমিকের তুমুল উৎকণ্ঠা ও ক্লান্তির পর এইরকম শান্ত ও মনোরম জায়গায় এসে আমি সত্যি সজীব ও সতেজ হয়ে উঠেছিলাম।এখানকার মানুষদের সারল্যও আমাকে মুগ্ধ করেছিল।ছোট্ট মায়াঘেরা সুন্দরী সাংসের গ্রাম আমার মনের মণিকোঠায় চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
ছবি ও লেখাঃ শ্রীরূপা সরকার
একাদশ শ্রেণী,
সেন্ট জন্স ডায়োসেশান গার্লস এইচ এস স্কুল, কলকাতা,
শ্রীরূপা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।বই পড়তে (বিশেষ করে গোয়েন্দা গল্প), লিখতে, আঁকতে এবং গান শুনতে ভালবাসে। প্রিয় লেখিকা লীলা মজুমদার।