নিঝুম রাতের কবিতা
শুনশান রাতে কারা আসে ওই
বলে ফিসফাস কথা
চুপচাপ শোনে ঝিলিক ঝিনুক
ঠাকুমার কথকতা।
টুপটাপ ঝরে রুপোলি শিশির
থলকমলের ডালে
কারা যেন এসে পড়ে ঝুপঝাপ
অচিনপুরের খালে।
হনহন করে হাঁটে
কারা দূরে ফরাসডাঙ্গার মাঠে
কারা জঙ্গলে চুকচুক করে
জ্যোত্স্নার জল চাটে।
কারা দুপা তুলে নাচে ধেইধেই
কারা খুকখুক কাসে
কারা আসমানে গুনগুন গায়
কারা ফিকফিক হাসে।
থমথম রাতে কারা টুংটাং
তোলে পিয়ানোতে তান
কারা মিটিমিটি আকাশে তাকিয়ে
নেয় শিউলির ঘ্রাণ।
ঝিলিক এবং ঝিনুকের চোখ
ঘুমে করে ঢুলুঢুলু
দূরে একাএকা বোকাসোকা নদী
বয়ে চলে কুলুকুলু।
কাকুর বাগানে ফোটে ধবধবে
রজনীগন্ধা সাদা
ঘামে জবজবে ঠাম্মির কোলে
ঝিলু ঝিনু ঘুমে কাদা।
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তন্ময় দাশ
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
অঙ্কের ভূত
অঙ্কের ক্লাস মানে সর্ষের ফুল
মাথা ঘোরে বন্ বন্ খাড়া হয় চুল।
দুই চোখে দেখা দেয় লাল-নীল তারা
মাথা ফুঁড়ে বের হয় ক্যাকটাসের চারা।
পেট করে গুড় গুড় অঙ্কের নামে,
মতিরাম ক্লাসে বসে, ভয়ে শুধু ঘামে।
স্যার বলে ওরে মতি, ভয় পাস মিছে
অঙ্কটা বাঘ? নাকি টিকটিকি বিছে?
এইভাবে ভয় পেলে চমকাবে পিলে,
অঙ্কের ভুত এসে সবক'টা মিলে-
ঘাড়ে চেপে বসে যাবে, নামবে না নীচে,
তাই বলি শুধু শুধু ভয় পাস মিছে।
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তরুণ কুমার সরখেল
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
পাঠশালার ছবি
লালপাতা আর নাককাটা গাছ দিয়ে
পাঠশালাটার তিন দিক হল ঘেরা,
বর্ষার জল স্যাত-স্যতে হওয়া মাটি -
খুঁড়ে ফেলি সব ছোট ছোট বালকেরা
আনকোরা হাতে হরগৌরির গাছ
মাটিতে বসাই বেড়াটার কাছে কাছে,
নামতার ফাঁকে চোখ আছে সকলেরই
গরু-টরু এসে খেয়ে যায় গাছ পাছে।
আলো হাওয়া মেখে হরগৌরির গাছ
ঢাকা পড়ে গেল রঙ মাখা ফুলে ফুলে,
তারি লোভে কত প্রজাপতি দল বেঁধে
ভিড় করে এলো আমাদের স্কুলে।
মনে হয় যেন এই সেদিনের কথা
এখনো ফুলের গন্ধটা পাই নাকে,
ফেলে আসা সেই পাঠশালাটার ছবি
খুঁজে পাই আমি হাজারো কাজের ফাঁকে।
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তরুণ কুমার সরখেল
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
ধোপা আর নাপিত
বলে ধোপায়,‘নাপিত হায়!
আরে,বড় নোংরা তুই,
দাড়ি কামাস,চুল ছাঁটাস,
মন কয় তোরে না ছুঁই !’
‘ময়লা জলে,সাবান গুলে,
তুই চুল দাড়ি ঘাঁটিস,
লোক ঠকিয়ে,মুখ বকিয়ে,
খাবার ফন্দি আঁটিস !’
‘রঙ চং এঁটে,দোকান পাটে,
লিখে রাখিস,সেলুন,
নামের ঘটায়,তকমা আঁটায়,
বাকী ফুটুস বেলুন !’
‘কোথাও দেখি,নাম তার সে কি--
মেনস পার্লার!
সে নাপিতখানা,সবার তা জানা,
আসল হাল তার !’
‘কি দিস ছাঁট!কি করিস কাট?
কি করিস বাজিমাত?
ইটে বসাস,লোক হাসাস--
কি ইতালিয়ান ছাঁট?’
‘তুই কেন বল,করিস নকল?
দিস উত্তম কাট!
শারুখ কাট?দিয়ে বাটি ছাট,
নিজেকে ভাবিস স্মার্ট?’
‘কি তোর মূল্য,কিসের তুল্য!
সমাজে কি তার দাম?
অতি সামান্য,সব অমান্য,
করে তোর বদনাম।’
নাপিত বলে,‘কি হবে জ্বলে?
তুই কি করিস বল?
অন্যকে বলিস,এ কেমন নালিশ!
এতে কি পাবি ফল?’
‘কাপড় সে এতো,ময়লা যে কত !
জড়ো করিস এনে,
অশুদ্ধ জল,ছিটে লাগা মল,
নোংরা ডিপো জেনে !’
‘তোদেরও কাছে,দোকান আছে,
বাব্বাঃ,নাম তার লন্ড্রি!
এও ফুঁস ঠাঁই,থেকেও তো নাই!
শুধু কামাবার ফন্দি !’
‘সব কিছু ফাঁকা,উপরেতে ঢাকা,
আনতে উটকো ফিলিং,
ধোপার দোকান,শুধু বাড়াতে মান,
সে হোল ড্রাই ক্লিনিং !’
‘তোরাও কষিস,সাবান ঘষিস,
কাপড় দিস আছাড়,
সেই এক মতে,সেই এক পথে—
তুইও তো এক লাচার !’
‘না হলে আমি,সমাজের কমি,
হতো যে নিশ্চয়,
চুল হতো বড়,দাড়ি ঘোরতর,
হত বিভীষিকাময়।’
‘জটাজুট দেহ,চিনত না কেহ,
জঙ্গলে হতো বাস,
কেউ হত রাক্ষস,কেউ খোক্কস,
হতো যে সর্বনাশ !’
‘তাই জানিস মোর,সেই সাথে তোর,
আছে প্রয়োজন,
চিকনাই গাল,চাই পোশাকি চাল,
সদা সর্বক্ষণ।’
‘শোন বলি তাই,বলাবলি নাই,
যার যার কর কাজ,
নিজের ধার্য,নিজের কার্য,
কিসের এতে লাজ?’
তাপসকিরণ রায়
জবলপুর, মধ্যপ্রদেশ
- বিস্তারিত
- লিখেছেন তাপস কিরণ রায়
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা
চাউমিন
কপকপ চাউমিন,
খেয়ে চলে রাতদিন!
ডালভাত দিলে পরে,
থালাবাটি ছুঁড়ে মারে।
করেছ কি রান্না,
এঁচোড়ের ডালনা?
ফুলকপি পাতা বাঁটা?
মিছে কেন এত খাটা!
দই ভাত মাখিয়ে,
দাও যদি এগিয়ে;
কটমট চোখেতে,
কী ভীষণ রোষেতে;
সপ্তমে তুলে স্বর,
কেঁদে ভাসে ঝরঝর!
বুক করে দুরুদুরু,
এই বুঝি হল শুরু;
সেই এক বায়না,
আর কিছু খায় না!
নিঃঝুম মাঝরাত,
বেশ ছিল শুয়ে কাত;
স্বপ্নেতে এল বুঝি,
চাউমিন এক ঝুড়ি;
ঘুম গেল পালিয়ে,
খিদে পেট চাগিয়ে;
নেইকোনো নিস্তার,
চাউমিন চাই তার।
হাউমাউ কান্না,
ধরেছে সে বায়না;
যত বলো যত সাধো,
ক্ষীর-পুলি দাও যতো;
নিমকি কি চিড়ে ভাঁজা,
বাদশাহী খাজা গজা;
কিছু মুখে দেবে নাকো,
কোনো কথা শোনে নাকো।
বুককাঁপা চীৎকার,
চাউমিন চাই তার!!!!
মধুমিতা প্রামাণিক
গিরীশ পার্ক , কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মধুমিতা প্রামাণিক
- ক্যাটfগরি: ছড়া-কবিতা