কুং-ফু প্যান্ডা ২
এবারের ছবির খবরে আমাদের পছন্দের ছবি হল 'কুং-ফু প্যান্ডা ২'। এই ছবি হল ২০০৮ সালে তৈরি অ্যানিমেশন ছবি 'কুং-ফু প্যান্ডা'র দ্বিতীয় পর্ব। তুমি কি কুং-ফু প্যান্ডা দেখেছ? যদি না দেখেও থাক, তাহলেও 'কুং-ফু প্যান্ডা ২' দেখতে কোন অসুবিধা নেই। প্যারামাউন্ট পিকচার্সের নিবেদনে ড্রিমওয়ার্ক্স অ্যানিমেশনের তৈরি এই ছবিতে আছে একেবারে এক আনকোরা গল্প।
গংমেন নগরী
প্রাচীণ চীনদেশে, গংমেন নগরী শাসন করত ময়ূরবংশ। সেই রাজত্বে সবাই খুব আনন্দে ছিল কারণ ময়ূরেরা ঝলমলে আতশবাজী তৈরি করেছিল। কিন্তু ময়ূররাজার ছেলে, শেন, বুঝতে পেরেছিল যে এই আতশবাজীর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অস্ত্র তৈরি করে সারা দেশে শাসন করা যায়। সে একদিন শুনতে পেল রাজার ভবিষ্যতবক্তা ছাগল রাজাকে বলছে যে "সাদা-কালো এক যুদ্ধবাজ" শেন কে একদিন পরাজিত করবে। এই কথা শুনে শেন নিজের সাঙ্গোপাঙ্গোদের দিয়ে প্যান্ডাদের একটা পুরো গ্রাম ধ্বংস করে দিল। তার বাবা মা এই ঘটনায় খুব দুঃখ পেয়ে শেনকে গংমেন নগরী থেকে নির্বাসিত করলেন। শেন এই বলে চলে গেল যে সে প্রতিশোধ নিতে একদিন ফিরে আসবে।
ময়ূর রাজা ও রানী
তিরিশ বছর পরে, পো নামের প্যান্ডা হয়ে উঠেছে কুংফু মাস্টার এবং ড্রাগন ওয়ারিয়র খেতাব পেয়েছে। সে তার পাঁচজন কুংফু বিশেষজ্ঞ সংগীকে নিয়ে শান্তির উপত্যকাকে রক্ষা করে চলে। একদিন একদল নেকড়ে ডাকাতদের থেকে একটা গ্রামকে রক্ষা করতে গিয়ে সে তাদের নেতার বর্মে একটা চিহ্ন দেখে চমকে যায়। তার নিজের মা'কে মনে পড়ে। তার অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে নেকড়েগুলো পালায়। পো বাড়ি ফিরে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে সে কোথা থেকে এসেছিল।
পো আর তার পালক পিতা
তার বাবা বলেন তিনি তাকে খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর রেস্তোঁরার জন্য আসা মূলোর বাক্সে। যেহেতু কেউ তার খোঁজে আসেনি, তাই তিনি তাকে নিজের ছেলে বলে পালন করতে শুরু করেন।
এর পরে, পো এর শিক্ষক শিফু খবর পান যে সুদূর গংমেন শহরে শেন ফিরে এসেছে; সে তার আগ্নেয়াস্ত্র কামান দিয়ে শহরের রক্ষাকর্তাদের একজনকে মেরেও ফেলেছে। গংমেন শহরকে শেনের অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে পো এবং তার পাঁচ বন্ধু যাত্রা করে।
শেন
সেখানে গিয়ে কি হল? পো আর তার সংগীরা কি পরাজিত করতে পারল দুষ্ট শেন কে? আর পো কি খুঁজে পেল তার নিজের আসল পরিচয়? সেটা জানতে হলে দেখে ফেলতে হবে 'কুং ফু প্যান্ডা ২'। অসাধারণ থ্রি-ডি অ্যানিমেশন আর বিভিন্ন চরিত্রে বিখ্যাত অভিনেতাদের স্বরক্ষেপণ এই ছবির এক বিশেষ পাওনা। খুব শিগ্গির এই ছবির ডিভিডি কিনতে পাওয়া যাবে। তখন কিনে দেখতে ভুলো না কিন্তু।
পো এবং তার সঙ্গী টাইগ্রেস
মহাশ্বেতা রায়
পাটুলি, কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন মহাশ্বেতা রায়
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
আঁকিবুকি
আঁকিবুকি পাতায় রয়েছে ইচ্ছামতীর বন্ধুদের আঁকা ছবি। তুমিও কি আঁকিবুকির পাতায় তোমার আঁকা ছবি দেখতে চাও? তাহলে তোমাড় আঁকা ছবি ইমেল করে পাঠিয়ে দাও ইচ্ছামতীর মেইল ঠিকানায়।
অহনা পাল
ষষ্ঠ শ্রেণী, শ্যামনগর বালিকা বিদ্যালয়, শ্যামনগর, উত্তর চব্বিশ পরগনা
অমিতৌজা ঐশী বসু
দ্বিতীয় শ্রেণী,
ফার্মিংটন উড্স্ ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালরিয়েট এলিমেন্টারি স্কুল, কেরি, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র
অর্কদীপ পাল
দ্বিতীয় শ্রেনী, সেন্ট অগাস্টিন স্কুল, শ্যামনগর, উত্তর চব্বিশ পরগনা
চিন্ময়ী ভট্টাচার্যি
প্রথম শ্রেণী, অর্কলন স্কুল, উলানবাতার, মঙ্গোলিয়া
মধুরিমা গোস্বামী
সপ্তম শ্রেণী, দ্য ভবানীপুর গুজরাতি এডুকেশন সোসাইটি স্কুল, কলকাতা
নীলাগ্নি দাস
দ্বিতীয় শ্রেণী, আর্মি পাবলিক স্কুল, গুয়াহাটি
শুভম গোস্বামী
তৃতীয় শ্রেণী, দ্য ভবানীপুর গুজরাতি এডুকেশন সোসাইটি স্কুল, কলকাতা
স্বাগতাশ্রী মুখোপাধ্যায়
নার্সারি ওয়ান, গার্ডেন হাই স্কুল, কলকাতা
সুদীপা কুজুর
চতুর্থ শ্রেণী, বি.ডি. মেমোরিয়াল স্কুল, কলকাতা
- বিস্তারিত
- লিখেছেন সৃজন বিভাগ
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
কলেরা গবেষণায় দুই বাঙালির অবদান
কলেরা এক জীবনঘাতী রোগ। দূষিত জল আর খাবারের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু আমাদের শরীরে ঢোকে এবং অন্ত্রে গিয়ে বংশবৃদ্ধি করে। জীবাণুকোষে এক ধরণের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয় যার প্রভাবে অন্ত্রের দেওয়াল থেকে প্রচুর পরিমাণ জল নিঃসৃত হয়। বিপুল পরিমাণ চাল ধোয়া জলের মত মল রোগীর শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। মলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কিছু আয়ন-ও (সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড) বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে ঘন ঘন বমি হতে থাকে। রোগী ক্রমশই অবসন্ন ও আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। শরীরে অতি তীব্র জলাভাব দেখা দেয়। রক্তের তারল্য কমতে থাকে। একটা সময় আসে যখন এত ঘন হয়ে যাওয়া রক্তকে পাম্প করে সারা শরীরের ছড়িয়ে দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে আমাদের হৃদযন্ত্রের পক্ষে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়। রোগীর মলের সঙ্গে রোগ জীবাণুও বাইরে বেরিয়ে আসে এবং জলের মাধ্যমে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কলেরা মহামারীর আকারে দেখা দেয়। ইতিহাসে, সাহিত্যে কলেরা মহামারীর অনেক বিবরণ পাওয়া যায়। ২০১০ সালে প্রকাশিত এক পরিসংখ্যার অনুসারে প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হন এবং লক্ষাধিক মানুষ এই রোগে মারা যান।
কলেরার আর এক নাম বিসূচিকা রোগ। আবার ওলাউঠা নামেও এই রোগ পরিচিত। (ওলাঃ মল, উঠাঃ বমি)। এই রোগের প্রকোপ সেই সব জায়গাতেই দেখা যায় যেখানে জীবাণুমুক্ত পানীয় হল পাওয়া যায়না এবং স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার নেই। এদেশে মানুষের মনে কলেরার বিভীষিকাময় প্রভাব ওলাইচণ্ডী, ওলাবিবি এইসব লৌকিক দেবীদের জন্ম দিয়েছে।
জার্মান বিজ্ঞানী রবার্ট কখ্ কলেরা রোগের জীবাণু আবিষ্কার করেন। কিন্তু এই জীবাণু , যে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে সেটা ঠিক কিভাবে কাজ করে বহুদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের তা জানা ছিল না। অনেকেই বিশ্বাস করতেন জীবাণু কোষের অভ্যন্তরেই থাকে এই বিষাক্ত পদার্থ। জীবাণুর মাধ্যমেই তা রক্তের সঙ্গে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তা ছাড়া অন্ত্রের দেওয়ালে সে আস্তরণ থাকে তারও ক্ষতি হয় এই বিষাক্ত পদার্থের প্রভাবে। কিন্তু প্রাণীদেহে কলেরার জীবাণু ইঞ্জেকশন করে ঢুকিয়ে কেউই গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এই রোগ সৃষ্টি করতে পারেন নি।
এ ব্যাপারে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করলেন ডাঃ শম্ভুনাথ দে। হুগলি জেলার গড়বাটিতে এক দরিদ্র পরিবারে তাঁর জন্ম হয় ১৯১৫ সালে। ব্যক্তিগত স্কলারশিপ আর কিছু ব্যক্তির আর্থিক সহায়তায় তিনি কলকাতা মেডিকাল কলেজ থেকে ১৯৩৯ সালে ডাক্তারি পাশ করেন। এরপর লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ হসপিটাল মেডিকাল স্কুলে গবেষণা করে পি এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করেন। দেশে ফিরে তিনি কলকাতা মেডিকাল কলেজের প্যাথলজি ও ব্যাক্টিরিয়লজি বিভাগে যোগ দেন এবং কলেরা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। কলেরা সম্বন্ধে বিজ্ঞানী সমাজে সেইসময়ে প্রচলিত ধ্যান-ধারণায় তাঁর আস্থা ছিল না। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন কলেরা রোগের জীবাণু অন্ত্রের আস্তরণের কোন ক্ষতি করে না। জীবাণু কোষের বাইরে এসে এই জীবাণুনিঃসৃত বিষাক্ত পদার্থ অন্ত্রের মধ্যেই কাজ করে। এই ধারণা প্রমাণ করার জন্য তিনি একটি খরগোশের ক্ষুদ্রান্ত্রের কিছুটা অংশ ওপর নীচে সুতো দিয়ে বেঁধে, মাঝে ইঞ্জেকশন করে কলেরার জীবাণু ঢুকিয়ে দিলেন। পরদিন দেখা গেল ক্ষুদ্রান্ত্রের ওই অংশ চাল ধোয়া জলের মত তরল পদার্থে (কলেরা রোগীর মলের মত দেখতে) ভরে গেছে। এর পর তিনি গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে কলেরা জীবাণুর বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে কোষ নিঃসৃত তরল পদার্থ খরগোশের ক্ষুদ্রান্ত্রে ঢুকিয়ে একই ফল পেলেন। প্রমাণিত হল কলেরার জীবাণু যে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে তা এক ধরণের exotoxin(exo:outside) এবং enterotoxin(enteron:intestine বা অন্ত্র)
খরগোশের ক্ষুদ্রান্ত্রের অংশবিশেষ বেঁধে (rabbit ilieal loop) তাঁর পরীক্ষা পদ্ধতি জীবাণু বিজ্ঞানের গবেষণায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি নিজেও এই পদ্ধতির সাহায্যে প্রমাণ করেন আমাদের অন্ত্রে Escherichia coli নামে সে নিরীহ জীবাণু বাস করে তারই এক জাতভাই এক বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে। ঐ জীবাণু এখন Enterotoxigenic E coli নামে পরিচিত।
ডাঃ দিলীপ মহলানবিশ
কলেরা গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন আর এক বাঙালি বিজ্ঞানী। তিনি হলেন ডাঃ দিলীপ মহলানবিশ (জন্ম ১৯৩৪ সাল)। কলেরা রোগীকে বাঁচাতে শিরা দিয়ে স্যালাইন (সোডিয়াম ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণ) ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। রক্তে সোডিয়াম ও ক্লোরাইড আয়নের মাত্রা বাড়ে, রক্তের তারল্য বৃদ্ধি পায়। হৃদযন্ত্র সহজেই তা পাম্প করে শরীরে ছড়িয়ে দিতে পারে। রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। ঠিক সময়মত স্যালাইন দিনে না পারলেই রোগী মারা যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় উদবাস্তু শিবিরে ব্যাপক হারে কলেরা দেখা দেয়। কলকাতা থেকে ডাক্তারী পাশ করে এবং ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় শিশু-চিকিতসায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ডঃ মহলানবিশ তখন কলকাতার জন হপকিন্স ইউনিভারসিটি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে এ গবেষণারত। বনগাঁ হাসপাতালে কলেরার মোকাবিলায় তাঁর ডাক পড়ল। সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন স্যালাইনের সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়। অনেক রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। নিজের গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি রোগীদের জলে নুন আর চিনি দিয়ে মিশিয়ে খাওয়াতে লাগলেন। এই পদ্ধতির নাম Oral Redydration Therapy বা ORT. উদরাময় রোগে ভাতের মাড়, নারকোলের জল এসবের উপযোগিতার কথা এর আগে অনেকেই বলেছিলেন। গ্লুকোজের উপস্থিতিতে সোডিয়াম ও ক্লোরাইড আয়ন খাদ্যনালী থেকে শোষিত হয়ে রক্তে মেশে - এই তথ্য জানিয়েছিলেন পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু শিরার ভেতর দিয়ে স্যালাইন দেওয়ার বহুল প্রচলিত পদ্ধতি বর্জন করে রোগীকে সরাসরি নুন চিনি মেশানো জল খাওয়ানোর ঝুঁকি কেউই নিতে পারেন নি। সঙ্কট মুহূর্তে দিশেহারা না হয়ে ডাঃ মহলানবিশ সেই কাজটাই করে ফেললেন সাহসের সঙ্গে। অবিশ্বাস্য ফল পাওয়া গেল। মৃত্যুর হার নেমে এল শতকরা কুড়ি- ত্রিশ ভাগ থেকে শতকরা তিন ভাগে। এরপরে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগ দিয়ে এই পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিলেন সারা পৃথিবীতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাঁর এই কীর্তিকে miracle cure for an old scourge আখ্যা দিল। বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যান্সেট (The Lancet) ORTকে potentially the most important medical advance of the 20th century বলে ঘোষণা করল। সারা পৃথিবীতে এখন ORT বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। সহকর্মী গবেষকদের সঙ্গে নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন ডাঃ মহলানবিশ।
অতি সামান্য জিনিষ নিয়ে গবেষণা করে যে কত বড় বৈজ্ঞানিক কীর্তি স্থাপন করা যায় তার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন ডাঃ শম্ভুনাথ দে এবং ডাঃ দিলীপ মহলানবিশ। কিন্তু শিক্ষিত বাঙালিদের মধ্যে ক'জন এঁদের কথা জানে? কথায় বলে গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না।
একটা জিনিষ তোমরা মনে রেখ। যদি কোন কারণে পেট খারাপ হয়, ঘন ঘন টয়লেটে যেতে হয়,প্রতিবার টয়লেট থেকে ফিরে নুন চিনি মেশানো জল খাওয়া অবশ্যই দরকার। নুন বা চিনি খাওয়ার ব্যাপারে যাঁদের বিধি নিষধ আছে তাঁদের উচিত এ ব্যাপারে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নেওয়া তাঁরা ঐ পরিস্থিতিতে কি করবেন। মোট কথা শরীরে জলের অভাব কিছুতেই হতে দেওয়া চলবে না।
ডঃ মাধব চট্টোপাধ্যায়
সেন্টার ফর সেল্যুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি
হায়দ্রাবাদ, অন্ধ্র প্রদেশ
ছবিঃ
বিভিন্ন ওয়েবসাইট
- বিস্তারিত
- লিখেছেন ডঃ মাধব চট্টোপাধ্যায়
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
শুঁয়োপোকার কথা
তোমার বাবা-মা এর সাথে তোমার মিল কোথায় জান ? বাইরের চেহারায়, এ ছাড়া আর কিসে হবে! তাঁদের যেমন দুটো হাত, দুটো পা, মুখ, নাক, চোখ, কান- --তোমারও ঠিক তেমনই আছে।
একটা বিড়ালছানা বা একটা কুকুরছানারও তাই। ওরা ওদের মা-বাবার মত দেখতে। কিন্তু কিছু কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে কিন্তু বাচ্চাদের সঙ্গে মা-বাবার চেহারার কোনও মিল নেই!
বলতে পারবে এমন কোনও প্রাণীর নাম ?এমন প্রাণীদের মধ্যে নাম করতে পারা যায়, এই যেমন ধর, প্রজাপতি বা মথ। ডিম ফুটে বেরোন বাচ্চা, ('লার্ভা') একেবারেই প্রজাপতি বা মথের মত নয়। এদের নিয়ে দু'চার কথা বলি ।(কেবল যে প্রজাপতি বা মথইএমন প্রাণী, তা কিন্তু নয়। মশা, মাছি বা আরও কিছু কিছু পোকা-মাকড়ও এই শ্রেণীভুক্ত)।
প্রজাপতি বা মথেরা ডিম পাড়ে গাছের পাতায়, সাধারণত পাতার নীচের দিকে। ডিমের গায়ে আঠার মত একটা কিছু থাকে যা ডিমগুলোকে পাতার সাথে আটকে রাখে। কয়েক সপ্তাহ পরে ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হয়, সে কিন্তু মোটেই প্রজাপতি বা মথের মত নয়! তবে ?
সেটা একটা এমন জিনিষ যা আমরা অহরহই দেখতে পাই। সেটা আসলে একটা শুঁয়োপোকা -- মথ বা প্রজাপতির 'শূককীট' বা' লার্ভা'।এদের কেউ কেউ নিরীহ গোছের, কেউ কেউ আবার ভয়ংকর। দেখলেই গা শির শির করে! শত্রুর হাত থেকে বাঁচবার জন্য এদের গায়ে থাকে অসংখ্য শুঁয়ো, আক্রান্ত হলে যা এরা শত্রুর গায়ে বিঁধিয়ে দেয়। (সঠিকভাবে বলতে গেলে ওরা নিজেরা বিঁধিয়ে দিতে পারে না, ওদের ধরতে গেলে আপনা থেকেই বিঁধে যায়)। সেই জন্য এদের নাম শুঁয়োপোকা। কি, কোনও দিন শুঁয়োর কাঁটা গায়ে বিঁধেছে কি ? কেমন জ্বালা!
শুঁয়োপোকা
কারও শুঁয়ো থাকে না, তারা আবার নানা রঙের হয়। এই রং গুলো আবার এমনি এমনিই হয় না, এ সবও ঐ আত্মরক্ষার ব্যাপার। রং গুলো ভারি বিষাক্ত হয়। পতঙ্গভুক পাখিরা ভয়ে শুঁয়োপোকা ধরে খায় না !
সবুজ রঙ্গের শুঁয়োহীন একরকমের পোকা দেখা যায় লেবু বা গন্ধরাজ জাতিয় ফুলগাছে। সবুজ হওয়ার কারণে পাখী বা ঐ জাতীয় শত্রুরা সবুজ পাতার সাথে শুঁয়োদের গুলিয়ে ফেলে! শত্রুর আক্রমনের হাত থেকে ওরা বেঁচে যায়। তা বলে আবার ভেবে বস না যে সবাই সবুজ হবে!
শুঁয়োপোকা গুলোর ভীষন খিদে, সারা দিন কোন কাজ নেই কেবল খাওয়া ছাড়া। ওরা সাধারণত সব রকমের পাতা খায়, তবে কারও কারও আবার একটু বাছবিচারও আছে! আমাদের বাগানে লিলি ফুল গাছে এক রকমের পোকা দেখেছি যাদের গায়ের রং গাঢ় বেগুনির ওপর হলুদ হলুদ দাগ, ভারি সুন্দর দেখতে। সুন্দর হলে কি হবে, ভীষন হাভাতে! কয়েকজন মিলে আট দশটা ( আনারস পাতার মত) লম্বা পাতাওয়ালা একটা গাছকে একদিনেই শেষ করে দিতে ওস্তাদ! পাতা শেষ হয়ে গেলে এমনকি মাটির নীচে থাকা পেঁয়াজের মত (যাকে 'বাল্ব' বলে) অংশটা পর্য্যন্ত খেয়ে সাফ করে দেয়! এদের অন্য কোন গাছের পাতা খেতে দেখিনি।
এরকম বাছবিচার করে তুঁত ( Mulberry)গাছের পাতা খায় আর এক রকমের পোকা। এদের কথা একটু পরে বলছি।
ক'দিন খুবসে খাওয়া দাওয়া করে শরীরটা মজবুত করে--এটা করতে হয়, কেন না বেশ কিছুদিন আর খাওয়া চলবে না কিনা-- ওরা একটা নিশ্চিন্ত জায়গা খোঁজে, যেখানে কেউ কোন ভাবে যাতে উত্তক্ত না করতে পারে!
তেমন জায়গা হতে পারে কোন গাছের পাতার নীচে বা কোন স্যাঁতসেঁতে ঘরের দেওয়ালের কোণে। তেমন একটা মনোমত জায়গা পেলে ওরা স্থির হয়ে নিজেদের চারপাশে একটা খোলস তৈরী করে ফেলে, আর তার মধ্যে আশ্রয় নেয়। এই অবস্থাকে বলে 'পিউপা' বা 'মূককীট' অবস্থা। এই অবস্থায় খোলসের মধ্যেই গড়ে ওঠে আস্ত একটা প্রজাপতি অথবা মথ। গঠন সম্পূর্ণ হলে খোলস কেটে প্রজাপতি বেরিয়ে আসে। প্রজাপতিরা যত রংচং-এ হয়, মথেরা অতটা হয় না।
এদের কটা পাখনা বল দেখি! একখুনি বলবে যে, এ আর এমন কথা কি, দু'খানাই ত হবে, নাকি!কিন্তু এটা সঠিক হল না। প্রতি দিকে দু'খানা করে মোট চারখানা পাখনা থাকে এদের, ফলে উড়বার সময় ওদের খুব সুন্দর দেখায়। অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখলে দেখা যায় ওদের পাখনায় রয়েছে অজস্র ছোট্ট ছোট্ট রঙ্গিন আঁশ যার জন্য ওদের রং অত সুন্দর।
তুমি একটা পরীক্ষা করে দেখতে পার, যা থেকে নিজেই জানতে পারবে ওপরে লেখা ব্যাপারগুলো। টিনের ঢাকনাওয়ালা কাচের তৈরী একটা খালি জেলির শিশি যোগাড় করে ফেলো রান্নাঘর থেকে, এর পর পেরেক ঠুকে ঠুকে ঐ ঢাকনায় কয়েকটা ছিদ্র করে ফেলো। এবার কায়দা করে পাতায় বসা একটা শুঁয়োপোকা ধরে ঐ শিশির মধ্যে রেখে তার মধ্যে কিছু টাটকা পাতা (যে গাছের পাতা খাচ্ছিল ) ফেলে দাও। এবার শিশির মুখটা বন্ধ করে দাও। এর পর লক্ষ্য কর ঐ পোকাটা কি করছে! কি আর করবে, খালি ঘুরবে আর পাতা খেতে থাকবে। পাতা ফুরিয়ে গেলে সাবধানে ঢাকনা খুলে আরও কিছু পাতা দিয়ে দেবে।
ঢাকনায় ছিদ্র করতে বললাম কেন বলতে পার ? শিশির মধ্যে বাতাস ঢুকবার জন্য। না হলে পোকাটা দম বন্ধ হয়ে মারা পড়বে ত!
ওপরে যা যা লিখেছি সব তোমার চোখের সামনে ঘটতে দেখতে পাবে! যেদিন প্রজাপতি দেখা যাবে, সেদিন ঢাকনা খুললেই সেটা দিব্যি ফুর ফুর করে উড়ে যাবে।
বাছবিচার করে তুঁত গাছের পাতা খাওয়া যে শুঁয়ো- পোকার কথা একটু আগে বলেছিলাম, সেটা এখন বলি।সিল্কের সুতো, যা দিয়ে সিল্কের শাড়ী বা জামা তৈরী হয়, তা তৈরী করে ঐ তুঁতপাতা খেকো শুঁয়ো পোকা!
এরকম আরও কয়েকপ্রকার পোকা আছে যারা অন্য রকমের গাছের পাতা খায়, তারা অন্য রকম সুতো তৈরী করে। সেই সব সুতো দিয়ে তৈরী হয় তসর, এন্ডি, মুগা--- এই সব কাপড়। দেখেছো এসব ?
যাকগে, আমরা সিল্ক তৈরী করা পোকা নিয়ে কথা বলছিলাম, সেই কথা বলি।
সিল্ক-মথ থেকে সিল্কের সুতো তৈরী করা আমাদের দেশে একটা ব্যাবসায় বিশেষ। ব্যাবসায়িক ভিত্তিতেই এই মথের চাষ করা হয়। মথেরা ডিম পাড়ে প্রায় শ'পাঁচেকের মত আর ১০-১২ দিন পর ডিম ফুটে লার্ভা বা পোকা বেরিয়ে পড়ে। বেরিয়েই শুরু করে খাই খাই। ওদের সামনে তখন প্রচুর তুঁত গাছের টাটকা পাতা দেওয়া হয়। গোগ্রাসে সেই পাতা গিলে ১৮-২০ দিনের মধ্যেই পূর্ণবয়স্ক পোকায় রূপান্তরিত হয়।
তুঁতগাছ
তখন এই পোকার রং ধুসর বা ক্রীম, আর এরা প্রায় তিন সাড়ে তিন ইঞ্চির মত দীর্ঘ হয়। পোকাদের মুখের ঠিক নীচে একটা ছিদ্রপথে বের হয় একরকম লালা। এই লালা জমেই তৈরী হয় সিল্ক। কি করে ? সেটা বলি।
সিল্কমথের লার্ভা
ক'দিন খাওয়া-দাওয়া করে পোকাগুলো পূর্ণবয়স্ক হয়ে গেলে ওরা মূককীট অবস্থায় যাবার জন্য প্রস্তুত হয়। তখন মুখের নীচের ছিদ্রপথে লালা বের করে সরু সরু লালার সুতো দিয়ে এরা নিজেকে ক্রমে ক্রমে জড়িয়ে ফেলে। হাওয়ায় শুকিয়ে লালার সুতো শক্ত সুতোয় পরিণত হয়।
এতে যে জিনিষটা তৈরী হয় তাকে বলা হয় 'রেশমের গুটি'। এই গুটি ডিম্বাকৃতির। তবে ডিমের মত অত বড় নয়।প্রায় ৮০০/ ৯০০ গজ বা তারও বেশী দীর্ঘ সুতো জড়ানো থাকে ঐটুকু জায়গার মধ্যে। তাহলে বুঝছ তো, কেমন সরু ঐ সুতো!
এই গুটির মধ্যে থাকে শূককীট থেকে রূপান্তরিত হয় মূককীট। মূককীট আবার ক্রমশঃ পরিবর্তিত হয়ে শেষ পর্যন্ত সিল্ক মথে পরিণত হয়। এই মথ গুটি কেটে বাইরে বেরিয়ে আসে।
মথকে গুটি কেটে বাইরে বেরিয়ে আসার সুযোগ করে দিলে গোটা গুটির সুতোই নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা, সুতো কেটে বেরোলে সুতোও টুকরো টুকরো হয়ে যাবে কিনা !
তাই গুটি পরিণত হলেই সেগুলিকে গরম জলে সেদ্ধ করা হয়।এর ফলে ভেতরের মূককীট গুলি মরে যায়। এটা মোটেই ভাল কাজ নয়, কিন্তু কি আর করা যাবে, সিল্ক বা রেশম উতপাদন করতে গেলে এই ভাবেই করতে হয়।
সিল্কমথের চাষ এক গুরুত্বপূর্ন ব্যবসা
প্রয়োজনে অত সরু সুতোকে মোটা করার দরকার হলে আরও কয়েকটা সুতোকে একত্রে পাকিয়ে নিলেই হল। আর সেই সুতো দিয়ে তৈরী হয় পছন্দ মত কাপড়। কাপড়কে আবার রং ও করা যায় মনোমত।
সিল্কের সুতো দিয়ে শাড়ি বোনা হচ্ছে
কি মনে হচ্ছে ? শুঁয়োপোকা নিয়ে পরীক্ষাটা করে দেখবে নাকি ? তবে সাবধানে কোরো কিন্তু! হাতে শুঁয়া লেগে গেলে ভারি মুশকিল !
সন্তোষ কুমার রায়
কোদালিয়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
ছবিঃ
উইকিপিডিয়া
- বিস্তারিত
- লিখেছেন সন্তোষ কুমার রায়
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
বাংলা ছবির নতুন পরিচালকেরা
(আগের সংখ্যার পর)
এই যে আমরা 'পথের পাঁচালী'র কথা এত গর্ব করে বলি, আমরা কি ভেবে দেখেছি , 'পথের পাঁচালী'র গল্প বলার সময়ে সত্যজিত রায় কোন চরিত্রের চোখ দিয়ে জীবনকে দেখেছিলেন? না, হরিহর, সর্বজয়া বা ইন্দির ঠাকরুনের চোখ দিয়ে নয়। এই দেখা এত নির্মল, এত সবুজ, এত শোকতাপহীন যে অপুর মত নিষ্পাপ বালক ছাড়া কেউই তা দেখতে পারে না ! এইজন্যই ছবিতে দিদি দুর্গার মৃত্যু ও ঠাকুমার মত ইন্দির ঠাকরুনের মৃত্যু আমাদের মনে কোন স্থায়ী মেঘ জমায় না। একটু পরেই জীবন বয়ে চলে; রোদ্দুর ওঠে।
এরকমভাবেই তৈরি হয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের ছবি 'বাড়ি থেকে পালিয়ে' । ছোটদের নিয়ে এত ভাল সিনেমা বাংলায় খুব কমই হয়েছে। কি সুন্দরই না ছিল কচি হাতের ছবিতে ভর্তি খালেদ চৌধুরির করা ছবির ক্রেডিট টাইটেল। এক ছোট ছেলে কাঞ্চন- সে বাড়ি থেকে পালিয়ে রূপকথার টানে তার স্বপ্নের দেশ 'এল ডোরাডো' খুঁজতে কলকাতায় আসে। তার চোখে দেখা কলকাতা কিন্তু খুব মনোরম নয়। তখন অনেক গরিব মানুষের ভীড় কলকাতায়। নানারকম বাস্তুহারা মানুষ দেশবিভাগের ফলে কলকাতার রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। মানুষের পড়ার মত কাপড় নেই, খাওয়ার মত খাদ্য নেই । কাঞ্চন দেখে কত উঁচু বাড়ি! পরিচালক ক্যামেরাকে খুব নিচু থেকে ব্যবহার করায় বাড়িগুলি যত উঁচু তার থেকেও বেশি উঁচু দেখায়। কাঞ্চন তো গ্রামের ছেলে, সে আসলে এত উঁচু বাড়ি কখনো দেখেনি। কাঞ্চনেরই মত আরেকটি ছোট মেয়ে- সে অবশ্য এই শহরের বড়লোকের মেয়ে- অবাক হয়ে যায় যে বড়রা এত অবুঝ কেন। তার মনে হয় -
তেলের শিশি ভাংল বলে
খুকুর 'পরে রাগ কর
তোমরা যে সব ধেড়ে খোকা
ভারত ভেঙে ভাগ কর
তার বেলা?
বাড়ি থেকে পালিয়ে
ঋত্বিক ঘটক অবশ্য ছোটদের ছবির ছাড়াও বড়দের জন্যউনেক ছবি করেছেন, আর তার জন্যই তাঁর এত নাম ডাক। তিনি জীবনে কোন বড় পুরষ্কার পাননি। কিন্তু বাঙালি সমঝদার দর্শক তাঁকে চিরদিন শ্রদ্ধা করবে। তিনি সেই যুগের সাধারণ মানুষের জীবনের কথা বলতেন, আর তার সাথে জুড়ে দিতেন রামায়ণ-মহাভারত-উপনিষদ-পুরাণের নানা গল্প। কেন দিতেন? কেননা তিনি মনে করতেন যে সময়ের দুঃসহ চাপে যেন আমরা অতীতের স্মৃতি না ভুলে যাই।
ঋত্বিক ঘটকের তৈরি 'অযান্ত্রিক', 'সুবর্ণরেখা', 'মেঘে ঢাকা তারা' আর 'তিতাস একটি নদীর নাম'- এইরকমের ছবি। তাঁর ছবিতে অনেক সময়েই শেষ মূহুর্তে একটি বালক বা শিশু থাকে; সে আমাদের জানায় যে ভবিষ্যত অন্যরকম হবে।
এই ভাবেই সামান্য মাঝিমাল্লার গল্প বলতে পেরেছিলেন রাজেন তরফদার তাঁর 'গঙ্গা' ছবিতে। এর আগে বাংলা সিনেমায় আমরা গরিব মানুষ দেখলেও এইভাবে দেখিনি। এই প্রথম আমরা দেখলাম যে যারা নৌকা বায়, মাছ ধরে, তাদের বেঁচে থাকা দুঃখময় হলেও সুন্দর। আমরা যেন নতুন করে চিনলাম এই সব মানুষদের।
এই দলেই একটু পরে যোগ দিলেন মৃণাল সেন। তাঁর প্রথম ছবি 'রাতভোর' তেমন ভাল হয়নি। কিন্তু '২২শে শ্রাবণ' নামে ছবিটি মানুষের মনে খুব রেখাপাত করল। ২২শে শ্রাবণ আমাদের জাতীয় শোকের দিন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুতিথি। কিন্তু এই ছবিতে মৃণাল সেন রবীন্দ্রনাথের কথা বলেননি। এই ছবি একজন ফেরিওয়ালা ও তার স্ত্রীর জীবনের গল্প।
এই মৃণাল সেন ও পরের দিকে ছোটদের জন্য রবীন্দ্রনাথের ইচ্ছাপূরণ গল্পটিকে নিয়ে ছবি বানিয়েছিলেন। কিন্তু লোকে তাঁকে বড়দের ছবির জন্যই মনে রাখবে। তাঁর ছবির মধ্যে নামকরা ছবিগুলি হল 'আকাশকুসুম', 'ইন্টারভিউ', 'একদিন-প্রতিদিন'। হিন্দীতে তাঁর করা 'ভুবন সোম' ছবিটি আমাদের নতুন করে হিন্দী ছবি সম্পর্কে ভাবতে শিখিয়েছিল।
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়
অধ্যাপক
চলচ্চিত্রবিদ্যা বিভাগ
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
- বিস্তারিত
- লিখেছেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত