চ্যাপলিনের গান
পায়ের চেয়ে লম্বা জুতো
হাতে ছড়ির মুন্ডু বাঁকা
বড্ড ঢোলা পাতলুনটি তার,
পকেটে নেই কিস্যু টাকা।
টলটলে সেই চোখের ভেতর
দুখ্যু হাসি যায় খেলে
প্রজাপতি গোঁপের ফাঁকে
মস্ত মানুষ যায় মিলে।
তোমার আমার মনের কথা,
আর যা আছে মগজে
সাদা কালো ছবি দিয়ে
প্রকাশ করেন সহজে।
ভবঘুরে দেখতে হলেও
মন বড় তার সরল সাদা
অন্ধ মেয়ের ফুলের তোড়ায়
ভালোবাসায় পড়লো বাঁধা।
আর এক ছবি 'মর্ডান টাইমস'
কারখানাতে কাজ করে
সকাল বিকেল ইস্ক্রুগুলো
প্যাঁচ কষে সব ঠিক করে
নিজের মাথার প্যাঁচখানা তার
কখন ঢিলে হয়ে গেল
কারখানাতে আগুন দিয়ে
কয়েদখানাতেই গেল।
'কিড' ছবিতে ছোট্ট ছেলের
গভীর স্নেহে ধরেন হাত
দুষ্টু যত লোকগুলোকে
বুদ্ধি-জোরে করেন মাত।
এসব দেখে রেগেমেগে,
সত্যিকারের দুষ্টুলোক
নিন্দে করেন 'দেশদ্রোহী,
দেশের বাহির করা হোক'।
ফিরে গেলেন সেই দেশেতে
জন্মেছিলেন যেই খানে
ছবি করা বন্ধ করেন
যন্ত্রনায়, অভিমানে।
ভক্ত যত জগত জোড়া
হাজির হোলো তারপাশে
তীব্র প্রতিবাদের জোরে
মত পালটায় অবশেষে।
তিনি বলেন,'এবার তবে,
ছবি হবে অন্যতর
দেখবো আমি শয়তানেরা
ভালোর চেয়ে হয় কি বড়ো?'
'মঁসিয়ে ভের্দু' ' লাইমলাইট',
ফিরে এলেন স্বমহিমায়
বিশ্বজগত প্রনাম ঠোকে
চিত্র নির্দেশকের পায়ে।
অন্যরকম গল্প দিয়ে,
এবার তবে করবো শেষ-
একটি মানুষ দুঃখী বড়ো
মুখটি তাহার মলিন বেশ
ডাক্তারকে বলেন এসে,
'আমার কেন পায়না হাসি?
মনে কেন আনন্দ নেই?
এই পৃথিবী শুকনো, বাসি।'
ডাক্তারতো চিন্তা করেন,
বলেন অনেক হাসির কথা
তবুও যে তার পায়না হাসি
মনে কি তার এতোই ব্যাথা।
অনেক ভেবে পথ বাতলান,
'দেখুন ছবি চ্যাপলিনের
হাসি পাবেই, দুঃখ যাবেই
এমনি মজা সব সিনের।
মন খারাপের সেরা দাওয়াই
আপনাকে এই যা দিলাম।'
লোকটি বলে করুণ হেসে,
'চ্যাপলিন আমারই নাম।'
শঙ্খ
সুমন চট্টোপাধ্যায়ের ফেলুদার গান এর সুরে বাঁধা।
- বিস্তারিত
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
তোমার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে চোখ ফিরিয়ে একবার জানলা দিয়ে বাইরে দেখো ।কি দেখছ? দেখবে বাইরে নীল আকাশ, সোনালি রোদ, সাদা মেঘ, মাঝে মাঝে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি; মাঠ , ময়দান, গাছপালা সব সবুজে সবুজ ; তোমার ব্যালকনির টবের পাতাবাহার গাছটা পর্যন্ত ঝকঝক করছে। ছুটির দিনে যদি বেড়াতে যাও শহরের বাইরে, দেখতে পাবে খেতে ফসল বেড়ে উঠছে। আর কিছুদিন পরেই চাষীভাইদের ঘরে উঠবে সেই সবুজ - সোনালি ফসল। এই হল শরত্কাল। ,উত্সবের সময়। দুর্গাপুজো, ঈদ, কালীপুজো, দেওয়ালি, দসেরা, নবরাত্রি - আর কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে নানারকমের উত্সবের পালা ।আর এই আনন্দের দিনে যদি পড়তে পাওয়া যায় একটা আনকোরা নতুন ওয়েব ম্যাগাজিন, তাহলে ভাল হয় না?- সেইজন্যই এল ইচ্ছামতী ।ছোটদের জন্য বাংলা ওয়েব ম্যাগাজিন। অবশ্য শুধু ছোটরা নয়, যারা দেখতে বড়, কিন্তু মনে মনে ছোট, তাদের জন্যেও এই ওয়েব ম্যাগাজিন।
ইচ্ছামতীর এই প্রথম সংখ্যা আয়তনে ছোট। একে কিন্তু বড় করে তুলতে হবে। ইচ্ছামতী খালি পড়লে চলবেনা। তোমার লেখা গল্প, আঁকা ছবি দিয়ে ভরিয়ে তুলতে হবে ইচ্ছামতীর পাতাগুলো। তবেই না তোমার সাথে সাথে তোমার মনের মত করে বেড়ে উঠবে ইচ্ছামতী। কি করে ইচ্ছামতীকে সাজিয়ে তুলবে তা জানতে হলে চোখ রাখো লেখালিখি বিভাগে ।
এই সংখ্যায় আছে একটা খেয়াল -খুশীর কবিতা; আছে একটা ছোট্ট মেয়ের উপস্থিত বুদ্ধির গল্প ; আছে হারিয়ে যাওয়া দিনের গল্প। আছে আমাদের প্রিয় এক কবির ছোটবেলার কথা ; যিনি আমাদের মনের সব ভাবনা আগে থেকেই বুঝে যান, আছে সেই প্রিয় লেখিকা লীলা মজুমদার এর কথাও । টিভিতে নিশ্চয় দেখ, বা বড়রা আলোচনা করেন - কোথাও বন্যা হচ্ছে, কোথাও বা ফাটছে ভয়ানক বোমা, মানুষ আহত হচ্ছে । ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কত কষ্ট হচ্ছে। এইরকমই অন্য রকম জীবন যার, সেই ছোট্ট ছেলে তাহানের খোঁজ পাবে এখানে; কিন্তু এইসব দুঃখ কষ্ট কে তো পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতেই হবে। তাই তো যিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন সব দুঃখের মাঝখানে হাসতে, আছে সেই চার্লি চ্যাপলিনের কথাও;
তোমাদের কেমন লাগল ইচ্ছামতী জানিও কিন্তু। আমার ঝাঁপি খুলে বসে থাকব তোমাদের চিঠিপত্রের আশায়। 'চিঠি পাঠাও' বিভাগে পাবে আমার ই-মেল ঠিকানা।
এই ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে Unicode font ব্যবহার করে। এই ওয়েবসাইট সবথেকে ভাল দেখা যাবে Firefox Browser এ। Firefox Browser কি করে ডাউনলোড করবে, তার বিবরণ ডানদিকের কলামে দেওয়া আছে।Internet Explorer 6 & 7 browser দুটি একটি অক্ষর ঠিক করে দেখাতে পারছে না। তাই আমরা "উত্সব", "হঠাত্" এই সব শব্দে 'খন্ড ত' এর বদলে 'ত -এ হসন্ত' ব্যবহার করেছি। না হলে দেখতে খারাপ লাগছে। যাঁরা সব খুব গম্ভীর চশমাআঁটা পড়ুয়া, ভুল বানান দেখলেই রেগে যান, তাঁরা নিশ্চয় আমাদের ওপর এই কারণে রেগে যাবেন না।
ভাল থেকো সবাই।
চাঁদের বুড়ি
ভাবছ চাঁদের বুড়ি কে? ইচ্ছামতী তো ছোট, তাই তার দেখা শোনা করে চাঁদের বুড়ি । ইচ্ছামতীর সম্বন্ধে তোমার সব মতামত, চিঠি, লেখা,ছবি পাঠিয়ে দাও চাঁদের বুড়ির কাছে।
- বিস্তারিত
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত
তাহান
তোমরা এর মধ্যে কেউ কি নতুন ছবি (ফিল্ম) দেখেছো? হলে গিয়ে কিম্বা বাড়িতে বসে ডিভিডিতে? আমি কিছু দিন আগে একটা হিন্দি ছবি দেখলাম তাহান (Tahaan)। পরিচালক সন্তোষ শিবন। আমার ছবিটা দেখে বেশ ভালো লাগলো।
তাহান কাশ্মীরে থাকে। তার বাড়িতে আছে মা, দাদু আর দিদি জোয়া। এছাড়াও আছে তাহানের সব সময়ের সঙ্গী বীরবল নামের এক গাধা । যাকে তাহান কখোনো চোখ ছাড়া করে না। সবাই অপেক্ষা করে থাকে তাহানের বাবা কবে বাড়ি ফিরবে। তাঁর খবর অনেক দিন পাওয়া যায় না। মা মিলিটারি ব্যারাকে...মর্গে...খোঁজ নিয়ে ফেরেন। বাবকে তবু পাওয়া যায় না। তাহান বীরবলকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু একদিন দাদুও মারা যায়। দেনার দায়ে বীরবলকে পর্যন্ত বিক্রি করে দেয় মা। সঙ্গীহারা হয় তাহান। কিভাবে বীরবলকে উদ্ধার করবে সে? আদৌ কি করতে পারবে তাহান? এক টানটান উত্তেজনার মধ্যে বসে থাকি আমরা। না, যদি ভেবে থাকো সব গল্পটা আমি বলে দেবো...তাহলে ভুল। ছবিটা মিস কোরো না, দেখে নাও তাড়াতাড়ি।
আমি কোনো দিন কাশ্মীরে যাই নি। কাশ্মীরকে চিনেছি বই পড়ে...ছবি দেখে...টেলিভিশনের খবরে। এই প্রথম কাশ্মীরকে চিনলাম তাহানের চোখ দিয়ে। যে কাশ্মীরকে সহজে দেখা যায় না কোথাও। এ কোন কাশ্মীরকে দেখলাম আমরা? কি দেখে তাহান গোটা ছবিটা জুড়ে? তাহান দেখে গ্রামের পর গ্রাম মানুষ নেই। যেখানে মানুষ আছে তারা বেশিরভাগই মহিলা, বৃদ্ধ, আর শিশুরা। রাত বিরেতে মিলিটারি বুটের ভারী আওয়াজ। গুলির শব্দ। তাহানকে প্রশ্ন করা হয় এই নদী, জল, পাহাড় কে সৃষ্টি করলো? তাহান উত্তর দিতে পারে না । সবার কাছে জিজ্ঞেস করে। কেউ কি বলতে পারে?
ছবিটা দেখে যখন হল থেকে বেরিয়ে আসছি বাইরে তখন ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছে। তাহানের পোষ্টার ভিজে জবজবে। মন কেমন করলো তাহানের জন্য। তাহানের মতো আরও সবার জন্য, যারা বড় হয়ে উঠছে অনেক কষ্ট করে। অনেক কিছুকে মেনে নিয়ে...যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। যে গোটা কয়েক লোক ছবিটা দেখছিলো তারা সবাই বলাবলি করতে থাকলো তাহানের ভূমিকায় পূরব ভান্ডারীর অপরূপ অভিনয়ের কথা। ধন্যবাদ সন্তোষ শিবন, একটা ভালো ছবি আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
ছবিপোকা
[ ফটো গুলি নেওয়া হয়েছে www.tahaanthefilm.com এর ডাউনলোড বিভাগ থেকে ]
তুমি কি এর মধ্যে কোন নতুন ছবি দেখেছ ? তোমার কেমন লেগেছে সেই ছবিটা ? আমাদের লিখে জানাও । তাহান দেখা হলে কেমন লাগল জানাতে ভুলনা কিন্তু।
- বিস্তারিত
সত্যি আর স্বপ্নের লুকোচুরি
" এতই যদি খারাপ লাগে ইস্কুলে যাও কেন? বড়রা যখন এতই অবুঝ তখন তাদের কথা মেনে নাও কেন?"
"ঘোতন কোথায় ?" বলে সেই যে একটা গপ্পো তিনি লিখেছেন, সেই গপ্পোতে সেই যে সেই অদ্ভুত লোকটা ঘোতনের মনের কথা দিব্বি বলে দিয়েছিল - সেই গপ্পোটা কি পড়েছ ? আর এই গপ্পোটা আর এমন আর অনেক গপ্পো যিনি লিখেছেন, চেন তাঁকে? এমন করে যে মনের কথা কেমন করে টের পেতেন তিনি ! তিনি তো নিজে ছিলেন বয়সে অনেক বড়,কিন্তু তাঁর লেখা পড়লে মনে হবে আরে এ যে আমি লিখেছি !
যখন পিসির "খোকা আসছে বলে খেলনা হচ্ছে, মিষ্টি তৈরী হচ্ছে, আমাদের আর কেউ চায়না" ভেবে কান্না পায় আর বনে চলে যেতে ইচ্ছা করে, তা সে যতই সবাই হিংসুটে বলুক না কেন -- ভাগ্যিস তখন তাঁর লেখা 'মাকু' পড়েছিলাম ! - তাই তো জানতে পারলাম যে আমার একার ই নয়, সোনা আর টিয়া বলে আমারি মতন ছোট দুজন মেয়ের এরকম মনে হয়; আর তারা তো সত্যি সত্যি চলে গেল কালিয়ার বনে, যেখান থেকে কেউ ফেরেনা আর সেখানে দেখা পেয়ে গেল মাকুর। মাকু কিন্তু আসলে মানুষ নয়; ঘড়িওয়ালা বানিয়েছে তাকে। কিন্ত হাসি কান্নার কল না দিলে কেমন করে সে বিয়ে করবে পরীদের রানী কে?
আর 'হলদে পাখির পালক' এর কথা নাই বা বললাম। সেখানে দুমকার কত আশ্চর্য গপ্পের কথা রয়েছে। রয়েছে ভুলো কুকুরের বাচ্চা ছেলে হয়ে যাওয়ার কথা। এই গপ্পে ঝগড়ু বলে "সত্যি যে কোথায় শেষ হয় আর স্বপ্ন যে কোথায় শুরু হয় বলা মুশকিল।" আবার "জাদুকর" গপ্পোটাও বা কম কিসে ? যেখানে জাদুকর জগাইদাকে বেড়াল বানিয়ে দিল ? কিন্তু আবার মানুষ করে দেওয়ার সময় আসল বেড়াল নাকি বেড়াল হয়ে যাওয়া জগাইদা, কাকে যে মানুষ করে দিল সেটাও তো কেমন যেন গুলিয়ে গেল !!
আরো যে কত কত মনের কথা তিনি লিখে গেছেন... যেমন " ডায়েরি" গপ্পোটার শুরু তে - "মিথ্যা কথা বলা যে এমন কিছু অন্যায় এ আমি বিশ্বাস করিনা, এমনকি মাঝে মাঝে মিথ্যা কথা বলার দরকার হয় । আমি তো প্রায়ই মিথ্যা কথা বলি। আরো কত কী করি !...বড়দের কথা আমার ঢের ঢের জানা আছে। তারা নিজেরাই যথেষ্ট দোষ করে; আবার আমাদের বলতে আসে । ওসব চালাকি আমার কাছে চলবেনা ।"
তিনি জন্মেছিলেন ১৯০৮ সালে । লেখালেখির পাশাপাশি আরো অনেক কাজ করেছেন। যেমন পড়িয়েছেন দার্জিলিং এর মহারানী গার্লস স্কুল এ, শান্তিনিকেতনে আর আশুতোষ কলেজে। "আকাশবানী" মানে রেডিও তে শিশু ও নারী বিভাগের সহ প্রযোজক হিসাবে চাকরি করেছেন; আর করেছেন 'সন্দেশ' সম্পাদনা; খাবার সন্দেশ নয় কিন্তু ! এ হল সেই 'সন্দেশ' পত্রিকা যেখানে ১৯২২ সালে মানে ১৪ বছর বয়সে তাঁর লেখা প্রথম ছাপার অক্ষরে বেরোয়। তখন সম্পাদক ছিলেন তাঁর বড়দা সুকুমার রায়। তাঁর সেই প্রথম ছাপা গপ্পের নাম "লক্ষী ছেলে" । সেই যে শুরু...তারপর থেকে ২০০৭ সালে আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে অবধি বড়দের জন্য একটু একটু লিখলেও, বেশীটাই লিখেছেন ছোটদের জন্য। তাতেই ছিল তাঁর আনন্দ। কেন? কারন তিনি, লীলা মজুমদার, মনে করতেন -
"ছোটরা বই পড়ে বেঁচে থাকার জন্য।আনন্দের জন্য। এর বেশি কারণ দিয়ে কি দরকার ?
মৌপিয়া মুখোপাধ্যায়
- বিস্তারিত
- ক্যাটfগরি: নিয়মিত