জসীম উদ্দীন
মেঘলা দিনে ঘরের মেঝেয় নকশি কাঁথা মেলিয়া ধরিয়া মা সেলাই করিতেছেন আর গুনগুন করিয়া গান গাহিতেছেন।….দরজায় দাঁড়াইয়া এক ফকির আতশি পাথরের মালা গলায় পরিয়া ইউসুফ জুলেখার পুঁথি সুর করিয়া গাহিতেছে।…আমাদের উঠানে বারো মাসে বারো ফসল আসিয়া রঙের আর শব্দের বিচিত্র খেলা খেলিত।…আমার পিতাকে আমরা বাজান বলিয়া ডাকিতাম। আমাদের পড়াশুনায় অবহেলা দেখিলে তিনি বলিতেন, আজকালকার ছেলেরা তেমন পড়াশুনা করে না।…বাজান ছিলেন শিক্ষক।…বাজান আমাকে বকাঝকা করিলেও মারধর করিতেন না। আমাদের ভালো খাইতে দিতে পারেন না এই চিন্তায় তিনি হয়তো মনে মনে ক্ষতবিক্ষত হইতেন। হাট হইতে যেদিন বাজান ইলিশ মাছ কিনিয়া আনিতেন, সেদিন আমাদের বাড়িতে আনন্দের উত্সব পড়িয়া যাইত। এ-বাড়ির ও বাড়ির মেয়েরা মাছটি নাড়িয়া চাড়িয়া তাহার দাম জিজ্ঞাসা করিয়া যাইত। আমার তখন খুব গর্ব বোধ হইত। আমরা মাকে ঘিরিয়া বসিয়া মাছ কোটা হইতে রান্না শেষ পর্যন্ত দেখিতাম। রান্না যখন হয়-হয় তখন সরার ঢাকনি হইতে যে সুবাস বাহির হইত, তাহাতে জিহ্বায় পানি আসিত। আমি, আমার পিতা আর ভাইরা সকলে মিলিয়া খাইতে বসিতাম। মা সামনে ভাতের থালা দিয়া তরকারি বাড়িতে বসিতেন। সেই সময়টুকু যুগান্তর বলিয়া মনে হইত।
পড়ে পাওয়া বিভাগে আমরা আমাদের পছন্দের লেখক বা মনিষীদের লেখা থেকে বা তাঁদের জীবনের কিছু টুকরো তুলে ধরব। তোমার পছন্দের লেখক কে? তুমি কি তাঁর ছোটবেলা সম্বন্ধে কোন গল্প জানো ? জানলে লিখে পাঠাও আমাদের। আমরা সবাই মিলে সেই লেখা পড়ব । আচ্ছা এবার বলতো জসীম উদ্দীন কে ছিলেন ? তাঁর কোন লেখা এর আগে কি তুমি পড়েছ? তাঁর সম্বন্ধে কি আরো জানতে চাও? তাহলে লিখে জানাও আমাদের। কিংবা তোমার বাবা মাকেও জিজ্ঞাসা করতে পারো । আর খুব ভালো হয় যদি তুমি নিজেই লিখে ফেল জসীম উদ্দীন কে নিয়ে । দশ থেকে কুড়িটা বাক্যের মধ্যে। তোমার লেখা প্রকাশিত হবে ইচ্ছামতীর আগামী সংখ্যায় । কি পারবে তো? তোমার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম আমরা ।