ত্রিপুরার মেয়ে দীপা কর্মকারের নাম এখন সবার মুখে মুখে। কারণটাও সবাই জানে। দীপা একজন 'আর্টিস্টিক জিমন্যাস্ট', এবং তিনি রিও ডি জেনেরোতে অনুষ্ঠিত হতে চলা আসন্ন ২০১৬ সামার অলিম্পিক-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন।শুধুমাত্র অলিম্পিকে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবেই দীপার নাম লেখা থাকবে না। রিও অলিম্পিকে দীপার যোগদানের ফলে, ভারত জিমন্যাস্টিক বিভাগে প্রতিনিধিত্ব করবেন প্রায় ৫২ বছর পরে।
দীপার সবথেকে জোরের জায়গা হল 'প্রোদুনোভা ভল্ট'। 'প্রোদুনোভা' বেশ কঠিন একটা ভল্ট, কারণ এই ভল্টে একটা 'হ্যান্ড স্প্রিং' এর পরে দুটো সমারসল্ট দিয়ে, তারপরে সোজা পায়ে দাঁড়াতে হয়। যেহেতু শরীর শূণ্যে দুইবার পাক খায়, তাই যখন জিমন্যাস্ট দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন, তখন তাঁর পা'দুটিকে আসলে শরীরের ওজনের দ্বিগুণ ওজনের ভার নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। ঠিক মত দাঁড়াতে না পারলে শিরদাঁড়ায় গুরুতর জখম হতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
'প্রোদুনোভা' ভল্ট নামটা কিভাবে এসেছে জান তো? - ১৯৯৯ সালে, রাশিয়ার জিমন্যাস্ট এলেনা প্রোদুনোভা (জন্ম ১৯৮০) প্রথম এই ধরনের ভল্ট অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে করে দেখান। তাঁর নামেই এই ভল্টের নাম রাখা হয় প্রোদুনোভা। এলেনা প্রোদুনোভা ছাড়া, আজ অবধি পৃথিবীতে মাত্র চার জন মহিলা সফলভাবে 'প্রোদুনোভা' ভল্ট করে দেখাতে পেরেছেন - ডমিনিকান রিপাবলিকের ইয়ামিলেট পেনা, মিশরের ফাদওয়া মাহমুদ, উজবেকিস্থানের ওকসানা চুসোভিতিনা এবং অবশ্যই ভারতের দীপা কর্মকার।
দেখ কেমন করে প্রোদুনোভা ভল্ট দেন দীপা কর্মকার
'প্রোদুনোভা' ভল্টের বিপজ্জনকতার ফলে, অনেকেই চেয়েছেন, মেয়েদের জন্য এই বিশেষ ভল্ট যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ছোট্টবেলা থেকে কঠোর পরিশ্রম করে চলা সাহসী মেয়ে দীপা মোটেও ভয় পাচ্ছেন না।এই মুহুর্তে আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকের আঙিনায় দীপার স্কোর এতই ভাল যে কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর সাথে সাথে তিনি নিজেও রিওতে সফল হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট আশায় আছেন।
রিও অলিম্পিক তো এসেই গেল- সামনের আগস্ট মাসে শুরু হবে। সেখানে সাফল্য লাভের জন্য দীপাকে ইচ্ছামতীর তরফ থেকে জানাই অফুরন্ত শুভেচ্ছা।
ছবিঃ ইন্টারন্যাশ্নাল জিমন্যাস্ট ম্যাগাজিন
ভিডিওঃ ইউটিউব