বলে ধোপায়,‘নাপিত হায়!
আরে,বড় নোংরা তুই,
দাড়ি কামাস,চুল ছাঁটাস,
মন কয় তোরে না ছুঁই !’
‘ময়লা জলে,সাবান গুলে,
তুই চুল দাড়ি ঘাঁটিস,
লোক ঠকিয়ে,মুখ বকিয়ে,
খাবার ফন্দি আঁটিস !’
‘রঙ চং এঁটে,দোকান পাটে,
লিখে রাখিস,সেলুন,
নামের ঘটায়,তকমা আঁটায়,
বাকী ফুটুস বেলুন !’
‘কোথাও দেখি,নাম তার সে কি--
মেনস পার্লার!
সে নাপিতখানা,সবার তা জানা,
আসল হাল তার !’
‘কি দিস ছাঁট!কি করিস কাট?
কি করিস বাজিমাত?
ইটে বসাস,লোক হাসাস--
কি ইতালিয়ান ছাঁট?’
‘তুই কেন বল,করিস নকল?
দিস উত্তম কাট!
শারুখ কাট?দিয়ে বাটি ছাট,
নিজেকে ভাবিস স্মার্ট?’
‘কি তোর মূল্য,কিসের তুল্য!
সমাজে কি তার দাম?
অতি সামান্য,সব অমান্য,
করে তোর বদনাম।’
নাপিত বলে,‘কি হবে জ্বলে?
তুই কি করিস বল?
অন্যকে বলিস,এ কেমন নালিশ!
এতে কি পাবি ফল?’
‘কাপড় সে এতো,ময়লা যে কত !
জড়ো করিস এনে,
অশুদ্ধ জল,ছিটে লাগা মল,
নোংরা ডিপো জেনে !’
‘তোদেরও কাছে,দোকান আছে,
বাব্বাঃ,নাম তার লন্ড্রি!
এও ফুঁস ঠাঁই,থেকেও তো নাই!
শুধু কামাবার ফন্দি !’
‘সব কিছু ফাঁকা,উপরেতে ঢাকা,
আনতে উটকো ফিলিং,
ধোপার দোকান,শুধু বাড়াতে মান,
সে হোল ড্রাই ক্লিনিং !’
‘তোরাও কষিস,সাবান ঘষিস,
কাপড় দিস আছাড়,
সেই এক মতে,সেই এক পথে—
তুইও তো এক লাচার !’
‘না হলে আমি,সমাজের কমি,
হতো যে নিশ্চয়,
চুল হতো বড়,দাড়ি ঘোরতর,
হত বিভীষিকাময়।’
‘জটাজুট দেহ,চিনত না কেহ,
জঙ্গলে হতো বাস,
কেউ হত রাক্ষস,কেউ খোক্কস,
হতো যে সর্বনাশ !’
‘তাই জানিস মোর,সেই সাথে তোর,
আছে প্রয়োজন,
চিকনাই গাল,চাই পোশাকি চাল,
সদা সর্বক্ষণ।’
‘শোন বলি তাই,বলাবলি নাই,
যার যার কর কাজ,
নিজের ধার্য,নিজের কার্য,
কিসের এতে লাজ?’
তাপসকিরণ রায়
জবলপুর, মধ্যপ্রদেশ