খেলাঘরখেলাঘর

হাতি শিকার


গরুমারা অভয়ারণ্যে একটা দাঁতাল হাতি হঠাত করেই পাগল হয়ে গেছে। দুলছুট হয়ে সেই হাতি এখন লাটাগুড়িতে তান্ডব চালাচ্ছে। বাড়ি ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সাধারণ গরিব মানুষের। অনেক গুলো দোকানও তছনছ করে দিয়েছে সেই পাগলা হাতিটা। বন দপ্তরের লোকেরা এখন হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে হাতিটাকে। টিভির পর্দায় এখন লোকাল চ্যানেলের নিউজ রিডারের মুখ। বহুদিন পর শান্তশিষ্ট শহরে এক জবর খবর পাওয়া গেছে। তাই চোখ মুখ বড় করে হাতির সংবাদটা যতটা পারা যায় চমকে দেবার মতো করে পরিবেশন করছেন ভদ্রলোক।

টিভিতে নিউজ চ্যানেলের সংবাদটা দেখছিল ক্লাস এইটের মিকি। দশটা বেজেছে,  বাবা চলে গেছেন অফিসে। মা আর দুখিদাদা রান্না ঘরে, জোর মাংস রান্নার গন্ধ বেরোচ্ছে সেখান থেকে। একটু আগেই একবাটি মাংস চেখে এসেছে মিকি। সামার ভ্যাকেশন চলছে স্কুলে। একগাদা অংক করতে দিয়েছেন প্রাইভেট টিউটর, সেইসব গাদা গুচ্ছের হোম ওয়ার্ক সময়ে শেষ করা নিয়ে বড় ভাবনায় আছে মিকি। এমনিতেই অংকে সে অষ্টরম্ভা। তারমধ্যে টেনশানে থাকলে মিকির ক্ষিদে বেড়ে যায়। একবাটি মাংস এইমাত্র খেয়েও একটু যেন খিদে খিদে পাচ্ছে মিকির।

সিঁড়িঘরে বসে আরও একবাটি মাংস তারিয়ে তারিয়ে খেতে খেতেই  মাথায় আইডিয়াটা এসেছে মিকির। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করেছে কিকুকে। মিকির ক্লাসমেট কিকু আবার অংকে জিনিয়াস। কিকু হাসতে হাসতে বললো, কী রে অংক পারছিস না বুঝি?

ফিসফিস করে মিকি বললো, রাখ তোর অংক। একটা জোর খবর শুনলাম এইমাত্র। লাটাগুড়িতে একটা পাগলা হাতি বেরিয়েছে। ঋজুদা আর রুদ্রর শিকারের গপপো পড়ে খুব এডভেঞ্চার এডভেঞ্চার করছিলো না কদিন ধরে? ভগবান সুযোগ করে দিয়েছেন এবার। বল যাবি হাতিশিকারে?
আকাশ থেকে পড়েছে কিকু, বলিস কি?  কোথায়?
মিকি নিচু গলায় বললো, কেন লাটাগুড়ি।
কিকু ভোম্বলের মতো থমকে থেকে বলেই ফেললো, কী দিয়ে শিকার করবি হাতি?
মিকি চাপা গলায় বললো,  কেন? জন্মদিনে বাবার দেওয়া এয়ার গানটা দিয়ে।
এয়ার গান দিয়ে হাতি শিকার? কিকু অবাক হয়ে বললো খেপেছিস নাকি? ওই অতবড় হাতির কাছে  তোর এয়ারগানের গুলি  তো নস্যি।
ভ্যাট বোকা, মিকি আশ্বাস দিলো কিকুকে, তুই ভুলে যাচ্ছিস যে হাতির সব চাইতে দুর্বল জায়গা হল ওর ক্ষুদে ক্ষুদে চোখ জোড়া।
তো? কিকু এখনো ধাঁধায় রয়েছে যেন।
মিকি একটু বিজ্ঞের মতো হাসলো। আমার হাতের টিপতো তুই জানিসই। মেলায় যে বন্দুকের দোকান গুলো থাকে, সেখানে বেলুন ফাটাই দেখিস না। একটাও মিস হয় বল?

কিকু নিরুত্তর। মিকি অভয় দেওয়ার মতো করে বললো ভাবিস না। রেঞ্জের মধ্যে যাওয়াটারই শুধু অপেক্ষা। একবার পেলেই ঢ্যা ঢ্যা করে গুলির বৃষ্টি ব্যস। চোখ দিয়ে মগজে ঢুকে যাবে গুলি আর সঙ্গে সঙ্গে মরে যাবে হাতিটা, সিম্পল।

কিকু চুপ। মিকি বললো, হাতি-শিকার পর্বটা ঠিকঠাক নামিয়ে দিতে পারলে লাটাগুড়ির গরিব লোকজনদের যেমন উপকার হবে, আমরাও কি মাইলেজ পাবো একবার ভাব কিকু। চাই কি ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে একটা পুরষ্কারও জুটে যেতে পারে আমাদের।

বাড়িতে বলবি না? কিকু ভয়ে বললো।
ওরে রামছাগল বাড়িতে বললে কি আর বাবা-মা যেতে দেবেন নাকি কখনও! মিকি বললো, সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরোবো। লাটাগুড়ি এখান থেকে জোর এক ঘন্টার মামলা। যাওয়া আসা ধরলে আড়াই তিন ঘন্টা । অপারেশান শেষ করে সন্ধ্যেবেলার মধ্যেই বাড়ি ঢুকে যাবো। নো টেনশান।

কাল দুপুরে করালী স্যারের কাছে অংকের টিউশান, সেটা বলতে যাচ্ছিলো কিকু। কিন্তু বন্ধুকে থামিয়ে দিয়ে মিকি বললো,  তাহলে ওই কথাই রইলো। কাল আমরা সকাল ন'টায় বেরোচ্ছি বাড়ি থেকে। আর হ্যাঁ বাড়ি থেকে বেরোবার আগে পেট ভরে ভালো করে খেয়ে নিস, আমিও খেয়ে নেবো। পরে রাস্তায় কিছু জোটে কি না জোটে!

পরদিন বাবাও বেরিয়েছেন অফিসে , কাঁধে এয়ারগান ঝুলিয়ে মিকি সন্তর্পনে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়েছে। পুজোর সময় কেনা জিন্‌স্‌টা পড়েছে মিকি। গায়ে সেনাবাহিনীর মতো একটা জলপাই রঙের শার্ট। পা টিপে টিপে গলির মুখটায় গিয়ে হাঁফ ছেড়েছে সে। বেরোবার সময় মাকে বলেছে কিকুর বাড়ি অংক প্র্যাকটিস করতে যাচ্ছি। কিকুও একই কথা বলেছে বাড়িতে। মাটির একটা ভাঁড়ে টাকা জমাচ্ছিলো মিকি একবছর ধরে। সেটা ভেঙে বেশ কিছু টাকা পাওয়া গেছে। সে টাকা দিয়ে পকেট ভর্তি করে বেরিয়ে পড়েছে দু' বন্ধুতে।

সাধারণ একটা টি শার্ট আর প্যান্টের কিকু দাঁড়িয়ে ছিলো বাস স্ট্যান্ডে। মিকিকে দেখে বললো, তোর ড্রেসটা তো জব্বর হয়েছে।

মিকি বিজ্ঞের মতো বললো, জলপাই রঙের ড্রেস পরার অনেক অ্যাডভান্টেজ আছে। হাতিটাকে আমি দেখবো কিন্তু সবুজ গাছপালার ব্যাকগ্রাউন্ডে সে আমাকে খুঁজে পাবে না।
ঠোঁট কামড়েছে মিকি, ইস, একটা ভুল হয়ে গেলো। তুইও যদি আর্মি টাইপ কোনো ড্রেস পরে আসতিস! যাক গে,ছেড়ে দে। মিকি গম্ভীর গলায় বললো, পরের বার আর এই ভুলটা করিস না।
কিকু  তারিফের গলায় বললো, নাঃ মানতেই হবে তোর ঘটে বুদ্ধি আছে কিছু!
বাসে ওঠার সময় মিকি বললো যদিও বাড়ি থেকে ভরপেট খেয়ে বেরিয়েছি, তবুও চল কোথাও কিছু খেয়ে নিই। পথে আবার কি জোটে কে জানে!

বাস স্ট্যান্ডের পাশেই একটা বিরাট মিষ্টির দোকান। সেই দোকানে খান দশেক পুরি দিয়ে সবজি আর বড় বড় চারটে রসোগোল্লা খেয়ে নিলো মিকি আর কিকু। কাঁধে এয়ার গান দেখে অনেকে  চোখ ফিরিয়ে তাকাচ্ছিলো দুজনের দিকে। মুখ টিপে হাসছে সব। অপমানিত কিকু পেটে চিমটি কেটেছে মিকির। বিরক্তির গলায় মিকি বললো, ছাড় তো। বড় বড় কাজে বেরোলে এরকম সিলি ব্যাপারে একদম ধ্যান দিবি না। যখন ফিরবো হাতি মেরে, তখন দেখবি এই লোক গুলোই আমাদের অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি করছে।

লাটাগুড়িগামী বাসে উঠেছে দু'জন। কন্ডাক্টর একটু কৌতুহলী চোখে তাকাচ্ছিলো দুজনের দিকে। সেদিকে থোড়াই কেয়ার মিকি আর কিকুর। গম্ভীর মুখে টিকিটের টাকা দিয়ে দিয়েছে লোকটার হাতে। এক চিলতে সাইজের দুটো টিকিট বুক পকেটে গুঁজে মিকি বললো, আমাদের এডভেঞ্চারের কথা কারো কাছে ফাঁস করে বসিস না যেন। প্রেসের লোকজন আজকাল খুব সেয়ানা।  টের পেয়ে গেলে আমাদের পেছনে ডাকটিকিটের মতন সেঁটে যাবে ঠিক। কেস পুরো কেঁচে যাবে।

বাসের পিছন দিকে পাশাপাশি বসেছে মিকি আর কিকু। তিস্তা ব্রিজ আসতেই ময়নাগুড়ি  আসতেই খিদে পেয়ে গেলো জোর। ভাগ্যিস সঙ্গে করে কিছু কলা এনেছিলো, চারটে করে মালভোগ কলা আর গোটা আষ্টেক লেডিকেনি খেয়ে নিয়ছে দুজন। বাসটা মৌলানী হয়ে লাটাগুড়ি এসে গেলো কিছুক্ষণের মধ্যেই। কাঁধে এয়ার গান, নেমেছে মিকি। পেছন পেছন কিকু। পথ চলতি লোকেরা ফিরে ফিরে দেখছে  দুজনকে।

বাজারের মধ্যেই একটা বিরাট বড় মিষ্টির দোকান। সেখানে কাচের ওপাশে বিরাট বিরাট সব মিষ্টি। কাজু বরফি, প্যাঁড়া, ছানার জিলিপি, কালোজাম থেকে শুরু করে মোতিচূড়ের লাড্ডু পর্যন্ত সাজিয়ে রেখেছে ব্যাটাচ্ছেলে দোকানদার। জিভে জল না আসবার কোনো কারণ নেই। তবে এই দোকানের স্পেশালিটি হলো চমচম। এক একটা চমচম যেন এক একটা থান ইঁট। দোকানদার হেসে বললো এগুলো ফ্যামিলি সাইজ চমচম। বাড়ির সবাই মিলে যেমন একটা বড় কেক খায় , এই মিষ্টিও তেমনি সবাই মিলে শেয়ার করে খেতে হয়।
মিকি বললো, এখন বেরোবো জঙ্গলের দিকে। তারপর হাতি শিকার করে কখন ফিরি না ফিরি। খিদে পেয়ে যেতে পারে। তার চাইতে এখনই একটা একটা করে খেয়ে নিই চমচম। ওদিকটায় রসমালাই বানাচ্ছে, গন্ধ ছেড়েছে জোর। সেটাও একবাটি মেরে দিই চল। ছানার পোলাওটাও মিস করে ঠিক হবে না। আর সব শেষে একটা করে কাজু বরফি।

বুঝলি কিকু, মিকি একটুক্ষণ চিন্তা করে বললো, এখন এর বেশি খাওয়াটা ঠিক হবে না। বেশি খেয়ে ফেললে বিপদের সময় ব্রেন স্লো রেটে কাজ করবে। রিঅ্যাকশন টাইম বেড়ে যাবে। সেই রিস্ক নেওয়াটা ঠিক হবে না।

অত টাকা সঙ্গে আছে তো? কিকু ভয়ে বললো, সব টাকা খেয়েই উড়িয়ে দিবি, ফেরার ভাড়া থাকবে তো রে?

কিকুর মাথায় একটা আলতো করে চাঁটি মেরে মিকি বললো, থাকবে রে বাবা থাকবে, ঘাবড়াসনা। অত না ভেবে এইবেলা খেয়ে নে। তবে একটা কাজ করলে হয় দুটো করে এই মেগা সাইজের চমচম সঙ্গে করে নিয়ে যাই, পরে জঙ্গলের মধ্যে কি জোটে না জোটে!

হাতে চমচমের বিরাট প্যাকেট দুলিয়ে বেরিয়েছে দুই বন্ধু। লাটাগুড়ি বাজার থেকে একটা রিক্সা ধরে কিছুটা গিয়ে নেওড়া মোড়। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে সামনেই জঙ্গল। কাঁধে এয়ার গান নিয়ে পথ হাঁটছে মিকি। পেছন পেছন কিকু। পান-সিগারেটের দোকানে আড্ডা মারছিলো কিছু লোক । একজন জিজ্ঞেস করলো এদিকে কোথায় যাচ্ছ তোমরা?
নিরীহ মুখে মিকি বললো, পাখি শিকার করতে।
লোকটা দাঁত বের করে হাসলো, এদিকে তো ঘন জঙ্গল। এদিকটায় যেয়ো না। একটা পাগলা হাতি বেরিয়েছে এদিকে। খুব সাবধান।

কাউকে কিছু না বলে গুটিগুটি দুই বন্ধু এগিয়েছে জঙ্গলের দিকে। একটু বাদেই ঘন জঙ্গল শুরু হয়ে গেলো। যতদূর চোখ যায়, তার পুরোটা জুড়ে মোটাসোটা সব শাল গাছ একপায়ে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরও কিসব অচেনা গাছ যেন সবুজ রঙের মশারি টাঙিয়ে দিয়েছে জঙ্গলের মধ্যে। গাছ গুলোর এত ঘন পাতা যে ওপর দিকে তাকালে আকাশ দেখা যায় না শত চেষ্টা করলেও। কি একটা অচেনা পাখি ডাকছে ঝুমঝুম শব্দ করে। পিলে যেন চমকে যায়! দিনের বেলাতেই সেই ছমছমে জঙ্গলে যেন অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে।

নির্ভীক মিকি কিকুকে অভয় দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। কিকু ঘাবড়েছে জোর। তার বুকের ভেতর দ্রিদিম দ্রিদিম শব্দ করে ঢাক বাজছে। পেটের মধ্যে একটা কচ্ছপ যেন লাফাচ্ছে থপথপ করে। পিলে-ফিলে যেন বেরিয়ে আসবে পেট ফেটে। কিছুটা পথ গিয়ে কিকু চিতকার করে বললো, মিকি ওই দেখ, ওই বড় শালগাছটার আড়ালে ওটা কি! কালো মতো উঁকি মারছে-ওটাই সেই পাগলা দাঁতাল হাতিটা না!

হাতি শিকার


মিকি কিছু বলতে যাচ্ছিলো, এমন সময় গাছপালা নড়িয়ে হুড়মুড় করে সামনে চলে এসেছে  একটা বিরাট বড় কালো রঙের হাতি। পাহাড়ের মতো তার আকার। তার শুঁড়টাই যেন দশটা মানুষের সমান লম্বা। ধবধবে সাদা তার দাঁত। পা তো নয় যেন গাব্দা গোব্দা রণ পা। খুদে খুদে চোখ হাতিটার। জুলজুল করে সে এখন তাকিয়ে আছে মিকি আর কিকুর দিকেই।

কিকু ঘাবড়েছে জোর। গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বেরোচ্ছে না। তবুও কোনোমতে চিতকার করলো, মিকি টিপ কর, টিপ কর হাতির চোখে।

কোনো উত্তর আসছে না মিকির দিক থেকে। ঘাড় ঘুরিয়েছে কিকু। মিকি মাটিতে উবু হয়ে বসে চমচম খাচ্ছে দুর্ভিক্ষের দেশের লোকের মতো করে। বেকুবের মতো বন্ধুর দিকে তাকিয়ে আছে কিকু। মিকি অস্ফুটে বললো, খেয়ে নে কিকু, খেয়ে নে। পরে আর জোটে কি না জোটে!

হাতিটা অবাক হয়ে দেখছিলো দুজনকে। সাক্ষাত মৃত্যুকে সামনে দেখেও যারা প্রান বঁচিয়ে পালাবার আগে শেষ খাওয়াটুকু খেয়ে নেবার কথা ভাবে, এমন দুই পেটুককে দেখে তাজ্জব হয়ে গেছে হাতিটা। এমন অসম্ভব কান্ড জীবনে ঘটতে দেখেনি সে। কিছুক্ষণ বোকা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। তারপর ধীরে ধীরে চলে গেল হাতিটা। তখনও মিকি আর কিকু চমচম খেয়ে চলেছে কোনো দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে।

জলপাইগুড়ির বাসিন্দা মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের স্কুলে পড়ার সময় থেকেই লেখালিখিতে হাতেখড়ি। পেশায় সরকারি চাকুরে মৃগাঙ্ক নিয়মিত বিভিন্ন প্রতিষ্টিত এবং স্বল্প পরিচিত কাগুজে পত্রিকায় এবং ওয়েব ম্যাগাজিনে বড়দের এবং ছোটদের জন্য গল্প এবং ভ্রমণকাহিনী লেখেন। লেখালিখির পাশাপাশি সুযোগ পেলেই ক্রিকেট ব্যাট হাতে মাঠে নেমে পড়েন মৃগাঙ্ক।