খেলাঘরখেলাঘর

সুড়সুড়িও ভীষণ অতি

ছোট্ট নাটক -
'সুড়সুড়িও ভীষণ অতি'
দেয়াল ও টিকটিকি।
চরিত্র, মাত্র দুটি।

দেয়াল:
পিঠে কেন লাগে সুড়সুড়ি ?
বলে ফেল তাড়াতাড়ি !

টিকটিকি:
ছুটছি যে তোমার পিঠে চড়ে ।
পোকা মাকড়ের নাগাল আমি
পাই নইলে কি করে ?
থাকলে তোমার আপত্তি,
থামতে হয় এক্ষুনি ।

দেয়াল:
থামবি কেন ? ছোট না আরও ।
আরাম লাগে, বড়ো ভালো !
নইলে তো সেই দাঁড়িয়ে থাকা ।
ছাদটা মাথায় ধরে রাখা ।
পিঠের ব্যথা দিচ্ছে চারা,
শরীরটাও - ম্যাজ ম্যাজ ।
ছোট্ট পায়ের আলতো চাপে -
আঃ হাঃ আরাম ম্যা-সাজ !
নে, থামিস না আর
ছোট লাগাতার ।

[টিকটিকিটি একটু ছোটে
খানিক ছুটে, একটু থামে ।
(টিকটিকি কি ছুটলে ঘামে ?)
ছুটে লাফিয়ে পোকা ধারে ।
আরেকটা পোকা ওই যে দূরে।
আবার ছোটে একটু ঘুরে -
নাগাল পেতে - ধীরে ধীরে।
ছোটে - থামে,
ডাইনে - বামে
নানা কৌশল পোকা শিকারে ।
ছোটে না সে এক নাগাড়ে ।]

দেয়াল: [স্বগত]
অকারণে থামে কেন ?
ফাঁকি দিচ্ছে - মনে হচ্ছে যেন ।
[ভাবে দেয়াল - হয় বিরক্ত ।]
সুড়সুড়ি দেবে এক নাগাড়ে -
ব্যাপারটা কি ভীষণ শক্ত ?
[টিকটিকিকে] থামিস কেন যখন তখন ?
ছোট 'নন-স্টপ' - ছোট 'ম্যারাথন' !

টিকটিকি:
থামি কেন ? আছে কারণ ।
ভয় যে লাগে - যদি ঘটে অঘটন ।

দেয়াল:
সুড়সুড়ি আর কাতুকুতু
নিরীহ অতি - মজা শুধু ।
তাই দিয়ে ঘটাবি অঘটন ?
বাজে বকছিস ! ছোট এখন !

টিকটিকি:
ভেবে দেখো দেয়াল-দাদা,
যদি অবিরাম ছুটি তির-তির,
আরামে পিঠটা তোমার
করে উঠবে শির শির ।
সামলে ওঠার পাবে না অবকাশ ।
দম আটকে করবে হাঁস-ফাঁস !
ধীরে ধীরে নড়বে কেঁপে,
দুলবে তুমি হাসির বেগে ।
চিড় ! ফাটল ! ধরাম ধুপ!
ব্যস তুমি - ইট বালি সুরকির স্তূপ ।

দেয়াল:
ওরে হতভাগা ! কি বলছিস?
ভীষণ চক্রান্ত জাল - তুই বুনেছিস !
নিষ্ঠুর পেঁচাল চালে -
হাসিয়ে দুলিয়ে দিতে চাস ঠেলে !
শত-চূর্ণ ! অসহায় !
লুটিয়ে ভূতলে !
এতদিন বুঝি নি আমিওত
ভয়ানক অতি -
তোর মতিগতি !
তুই যে হিংস্র ডাইনোসরের নাতি!

[দেয়াল-দাদা রেগে ওঠে -
টিকটিকি তাই পালায় ছুটে ।
ছুট্টে পালায় তাড়াতাড়ি,
দেয়ালের পিঠে সুড়সুড়ি ।]

দেয়াল:
ওরে ওরে ! আস্তে আস্তে !
ছুটিস না ভাই । ধীরে সুস্তে ।
হাসি সামলানো হচ্ছে দায় !
পালাবি পালা - হিহি হিহি
টিপ টিপ - আলতো পায় ।

 

 

শিব শঙ্কর বসু
এপেক্স, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র