সবাইপুরের কাছে এসে ইছামতীর তীরের সৌন্দর্য আরও রহস্যময় হয়ে উঠলো। যেন তীরভূমির এই প্রাচীন অশ্বথ গাছটা, ওই প্রাচীন ষাঁড়া গাছগুলো আমায় চেনে আমার বাল্যকাল থেকে,যেন এখনি বলবে- এই দ্যাখো সেই খোকা কত বড় হয়েছে! সবাইপুরের বাঁক ছাড়িয়ে অদূরে কাঁচিকাটার খেয়ায় কারা পার হচ্চে। একটি ছোকরা,সঙ্গে একটি প্রৌঢ়া, দুটি ছেলেমেয়ে,একখানা সাইকেল। ছোকরা বললে, আশুরহাটে তাদের বাড়ী। পাশেই মরগাঙের খাল, বহুদিন পরে আমি ঢুকলাম নৌকো করে এই খালের মধ্যে। ছোট একটা বাঁশের পুলের তলা দিয়ে বাঁ ধারে আরামডাঙার বাঁশবন, খেজুরবাগানের তলা দিয়ে ওই গ্রামের একটা ঘাটে পৌঁছুই। ছোট্ট খালের এই ঘাটটি ঠিক যেন একটি ছবি। ছায়া নিবিড় স্নিগ্ধ অপরাহ্ন,নীল আকাশ,ঘন সবুজ জলজ ঘাস ও দুর্বাস্তৃত তৃণক্ষেত্র-সামনে কতকগুলি প্রাচীন গাছের আধ অন্ধকার তলায় একটা পুরোনো ইটের দরগা। কতকাল এদিকে আসিনি,আমারই গ্রামের পেছনে আরামডাঙার এই ঘাট কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না-হয়তো কখনো আসিই নি-অথচ কোথায় লিপুদারায় সেই বন্য সরোবর,ভালকীর সেই ঘন অরণ্য, মানভূমের মাঠাবুরু শৈলশ্রেণী,বামিয়াবুরু ও চিটিমিটি, রাঁচির পথে হির্নি জলপ্রপাত, ও পোড়াহাট রিজার্ভ ফরেস্ট। কোথায় দিল্লী,কোথায় আগ্রা, কোথায় চাঁট গাঁ,কোথায় শিলং,দার্জিলিং কোথায় না গিয়েচি! অথচ জীবনে কখনো আসিনি আমার গ্রাম থেকে মাত্র দুমাইল দূর আরামডাঙার এই ছবিটির মতো সুন্দর,তীরতরু শ্রেণীর নিবিড় ছায়াতলে অবস্থিত প্রাচীন পীরের দরগা ও ছোট্ট ঘাটটিতে।...
পড়ে পাওয়া বিভাগে আমরা আমাদের পছন্দের লেখক বা মনিষীদের লেখা থেকে বা তাঁদের জীবনের কিছু টুকরো তুলে ধরব। তোমার পছন্দের লেখক কে? তুমি কি তাঁর ছোটবেলা সম্বন্ধে কোন গল্প জানো ? জানলে লিখে পাঠাও আমাদের। আমরা সবাই মিলে সেই লেখা পড়ব । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়র লেখা কোন বই তুমি কি পড়েছ? তাহলে লিখে জানাও আমাদের কেমন লেগেছে সেই বই।