সকালবেলা ঘুম ভেঙ্গে উঠে গা'টা কি একটু বেশি শিরশির করছে ? জানলার পর্দা সরিয়ে বাইরে উঁকি দিলে দেখা যাবে সাদা কুয়াশায় আবছা হয়ে আছে চারিদিক। সেই কুয়াশার ঘেরাটোপ সরিয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে নরম রোদ। বাগানে বা ব্যালকনি তে টবে ফুটে উঠেছে হলুদ-সাদা চন্দ্রমল্লিকা, কমলা গাঁদা আর লাল-গোলাপি ডালিয়া। স্কুলে যাওয়ার পথে বাজারের ধারে হটাত করে চোখ আটকে গেলো - ফলওয়ালার ঝুড়ি ভরে আছে মিষ্টি কমলা রঙের কমলা লেবুতে। দুপুর শেষ হতে না হতেই ঝুপ করে সন্ধে নেমে আসছে ...সন্ধেবেলা এক মন মাতানো গন্ধে ঘর ম -ম করছে ... দিদা যে রান্নাঘরে নতুন গুড়ের পিঠে বানাচ্ছেন ...এসে গেছে শীত ঋতু। আর এসে গেছে ছোটদের ই-পত্রিকা ইচ্ছামতীর দ্বিতীয় সংখ্যা - শীত সংখ্যা ২০০৮।
তোমাদের মধ্যে যারা ইচ্ছামতীকে প্রথম সংখ্যা থেকেই চেনো, তারা অনেকেই আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছ তোমাদের ভাললাগার কথা। যারা চিঠি লেখনি, তারা অন্যান্য ভাবে তাদের ভাললাগার কথা জানিয়েছ। তোমাদের চিঠি আর মতামত ইচ্ছামতীকে আরো সুন্দর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। যারা ইচ্ছামতীকে প্রথম দেখছ, তাদের জানাই - শুধুমাত্র ছোটদের জন্য নয়, যারা দেখতে বড় কিন্তু মনে মনে সেই ছোট্টটিই রয়ে গেছে, তাদের ও সবার জন্য রইল ইচ্ছামতী।
নতুন বছর ২০০৯ আসতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এই সময়টা কিন্তু বেশ খুশির সময়। অনেকের ই স্কুলের পরীক্ষা শেষ। কারোর কারোর আবার লম্বা ছুটি। মাঝে মাঝে উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসছে ঠান্ডা হাওয়া। এইরকম শীতের দুপুরবেলা নরম রোদে পিঠ দিয়ে কমলালেবু খাওয়ার মজাই আলাদা। এই সময় ই তো যত পিকনিক, ক্রিকেট খেলা আর বেড়াতে যাওয়ার সময়। নতুন বছরের প্রথম দিনে আমাদের প্রার্থনা থাকে যেন আগামি দিনগুলো আরো সুন্দর, আরো আনন্দে ভরে ওঠে। "নিউ ইয়ার্স ইভে" নতুনকে বরন করে নেওয়ার উতসবে মেতে ওঠে সবাই। কিন্তু সব আনন্দের মাঝখানে আমরা যেন কিছুতেই না ভুলে যাই গত ২৬ -২৮ নভেম্বর, সেই ভয়াবহ তিন দিনের কথা। মুম্বই নগরে, সেই ভয়ানক তিন দিনে আমরা হারিয়েছি কত কত নিরীহ মানুষকে, কত বীর সৈনিক কে। তাদের সবার আত্মার শান্তি কামনা করে, আমাদের সব কাজের মাঝে, আমরা যেন মনে রাখি, আমাদের লড়তে হবে হিংসার বিরুদ্ধে, হানাহানির বিরুদ্ধে। এই পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ছোট- বড়, আমাদের সবার।
ছোট্ট ইচ্ছামতী কিন্ত এই কদিনে বেশ বড় হয়ে উঠেছে। এই সংখ্যায় শুরু হল কয়েকটি নতুন বিভাগ। গত সংখ্যার "লেখালিখি" বিভাগে বলেছিলাম গল্প লিখে "হাত পাকানো"র বিষয় হল "বড়দিন"। কিন্তু হাত পাকানো নয়, আমরা পেয়ে গেছি "বড়দিন" নিয়ে লেখা দুটি দুইরকমের সম্পূর্ণ ছোট গল্প । আর বড়দিন নিয়ে না হলেও, গল্প লিখতে হাত পাকিয়েছে আমাদের এক স্কুল পড়ুয়া পাঠিকা। এই সংখ্যা থেকে আরো শুরু হচ্ছে সিনেমার ইতিহাস নিয়ে ধারাবাহিক "বায়োস্কোপের বারোকথা"। আছে আরেকটা ধারাবাহিক, "আমার ছোট্টবেলা" যেখানে প্রায় ৬০ বছর আগে বাংলাদেশে শৈশব কাটানো এক পাঠক জানাচ্ছেন তাঁর অন্যরকম ছোটবেলার কথা। এছাড়াও আরো কতগুলি নতুন বিভাগ শুরু হল। সেগুলি কি ? -জানতে হলে ইচ্ছামতীকে প্রথম থেকে শেষ অবধি পড়ে ফেলতে হবে। আর কেমন লাগছে ইচ্ছামতীকে, তা অবশ্যই আমাকে জানাতে হবে চিঠি লিখে।
শেষে কিছু পুরানো কথা আরেকবার বলি। এই ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে Unicode font ব্যবহার করে। এই ওয়েবসাইট সবথেকে ভাল দেখা যাবে Firefox Browser এ। Firefox Browser এবং Unicode font কি করে ডাউনলোড করবে, তার বিবরণ " Problem Reading Bangla " লিঙ্ক এ দেওয়া আছে।Internet Explorer 6 & 7 browser দুটি একটি অক্ষর ঠিক করে দেখাতে পারছে না। তাই আমরা "উত্সব", "হঠাত্" এই সব শব্দে 'খন্ড ত' এর বদলে 'ত -এ হসন্ত' ব্যবহার করেছি। না হলে দেখতে খারাপ লাগছে। যাঁরা সব খুব গম্ভীর চশমাআঁটা পড়ুয়া, ভুল বানান দেখলেই রেগে যান, তাঁরা নিশ্চয় আমাদের ওপর এই কারণে রেগে যাবেন না।
নতুন বছর ২০০৯ সবার ভালো কাটুক।
চাঁদের বুড়ি