এই জন্য টিকলির ভুডুলমামাকে ভাল লাগে, পিসিমনির মতো দেখলেই গাল টিপে দেয় না কিম্বা ছোটকার মতো চুল ঘেঁটে দেয় না। দেখা হালেই ভুডুলমামা হাত বাড়িয়ে দেয় হ্যান্ডশেক কারার জন্য। বলিষ্ঠ হ্যান্ডশেক। টিকলির হাত ভুডুলমামার পাঞ্জার মধ্যে কয়েক মুহূর্তর জন্য হারিয়ে গিয়ে যখন বেড়িয়ে আসে তখন আত্মবিশ্বাসে টিকলির চোখ দুটো জ্বল জ্বল কারতে থাকে। তারপর ওই বিরাট চেহারাটা দেখে টিকলির আর ভয় কারে না।
কফিতে চুমুক দিয়ে ভুডুলমামা শরীরটা এলিয়ে দেয় দাদুর আরাম কেদারায় আর টিকলি পা ঝুলিয়ে বাসে তার হাতলে। শুরু হয় নানা আলোচনা।
কি নিয়ে আলোচনা? মনে এই প্রশ্নটা জাগা স্বাভাবিক। তবে তা জানতে গেলে আড়ি পেতে শুনতে হয়, তা তো সম্ভব না। ভুডুলমামা ধমক দিতে পারে। পাশেই আমার পড়ার ঘর তাই দু-এক টুকরো আলোচনা আমার কানে আসে, তাই তোমাদেরকে শোনাই।
*
ভুডুলমামা :
ভূত পেত্নী,
আর শাঁকচুন্নি।
টিকলি :
সে তো সেই-ই দাদাঠাকুরের কালে,
বাস করতেন - খালে বিলে মগডালে।
ভুডুলমামা :
হুঁ।
এখন কে কোথায় আছেন?
কোথায় যে ওঁরা আড্ডা গেড়েছেন?
তার খবর কেউ রাখে না।
নাই দুশ্চিন্তা, নাই ভাবনা।
উল্টে ধমকে ওঠে -
বলে, "অবান্তর প্রশ্ন করে -
মাথার ঘিলু দিলি তো ঘেঁটে!"
'ডোনটো কেয়ার' ভাবটা দেখে!
গাটা আমার রি রি জ্বলে!
টিকলি :
দেখেছো কি 'গুগুল' কারে?
হদিস মিললেও মিলতে পারে !
**
ভুডুলমামা :
মুরগি না ডিম, আবির্ভাব আগে কার?
নিতান্ত সরল প্রশ্নটি।
তবে,
ফিরে ফিরে গোঁত খাবি -
উত্তর খুঁজতে যাস যদি।
মগজ ঘিলু কারে তোলপাড়
হার মেনেছেন স্কলার প্রফেসার?
বাক বিতণ্ডা তর্কযুদ্ধ -
অথচ, উত্তর মেলেনি -
পরিণাম শূন্য!
টিকলি :
স্কলার প্রফেসার!?
ফার্স্ট-হ্যান্ড অভিজ্ঞতা যে চাই।
এ ব্যাপারে ওনাদের তা বোধহয় নাই।
তাই, উত্তর ভাসাভাসা।
তবে, উপায় আছে।
মুরগিকে ডেকে কাছে -
কারো জিজ্ঞাসা।
তারপর মনে হল, চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়য়ে ভুডুলমামা হাত বাড়িয়ে দিলো টিকলির দিকে - হ্যান্ডশেক কারার জন্য।
ভুডুলমামা :
তোর দেখছি - ধারালো ব্রেন !
প্রাপ্য - যুতসই পুরস্কার ।
ডিনার প্লেটে -
এগ-স্টাফড আস্ত চিকেন !
শিব শঙ্কর বসু
এপেক্স, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র