কথায় বলে -'মাঘের শীত বাঘের গায়ে'; তা সেই শীতের পাল্লায় পড়ে চাঁদের বুড়ি আর ইচ্ছামতী দুজনেই গান গাইছে!! -ভাবছ গান গাইছে কেন? আরে, ঠাণ্ডা যাতে কম লাগে! সেই ছোট বেলায় 'হাসিখুশি'তে পড়নি -
'উহুহু কি শীত,
বসে গাও গীত।'
-সেইরকম আর কি!
তা সেই শীতে জবুথুবু হয়ে গিয়ে তো আমার চরকা কাটতেও দেরি, আর ইচ্ছামতীর সাজুগুজু করতেও দেরি; কিন্তু দেখ, বলতে পারবে না শীত পার করে শীত সংখ্যা এসেছে। পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল , আর আমরা মাঘের মাঝামাঝি এসে গেছি। ঠিক কিনা?
চল, তাহলে এবার একটু গপ্প-সপ্প করা যাক। কেমন কাটালে তোমার শীতকাল? আমাদের পাড়ায় কিন্তু এবার জব্বর শীত পড়েছিল মাঝের কয়েকটা দিন, তা সত্বেও কাজের ফাঁকে ফাঁকে শীতকে বেশ উপভোগ করলাম আমরা। দুপুরের রোদে পিঠ দিয়ে কমলালেবু খেলাম আমরা, পৌষ-পার্বণে পিঠে-পুলি বানিয়ে খেলাম; উত্তুরে হাওয়ায় রঙিন মাফলার জড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপলাম, বাগানে নানা রঙা মরসুমি ফুল ফোটালাম। তুমি কি করলে? কোথাও বেড়াতে গেলে, বা নতুন কিছু শিখলে বা জানলে? আমাদের জানিও কিন্তু।
এই বছরটা আমাদের সবার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ন একটা বছর, কেন বলত? কারণটা হয়ত তুমি ইচ্ছামতীর এইবারের প্রচ্ছদকাহিনী দেখে বুঝেই গেছ। হ্যাঁ, এই বছরে আমরা পালন করতে চলেছি স্বামী বিবেকানন্দের ১৫০ তম জন্ম বার্ষিকী। ১৮৬৩ সালের ১২ই জানুয়ারি তাঁর জন্ম হয়। আর ১৯৮৪ সাল থেকে ভারত সরকার তাঁর জন্মদিনকে পালন করে চলেছে জাতীয় যুব দিবস রূপে। এবারের ইচ্ছামতীর প্রচ্ছদকাহিনীতে থাকছে স্বামী বিবেকানন্দের ছোট বেলার গল্প, যখন তাঁকে সবাই চিনত বিলে নামে। আর রয়েছে ১৮৯৩ সালে তাঁর আমেরিকা যাত্রা এবং শিকাগো ধর্ম মহাসভায় সারা বিশ্বের মন জয় করে নেওয়ার সেই অভাবনীয় গল্প। পড়ে দেখ অবশ্যই।
এবারের ইচ্ছামতীতে রয়েছে দুটি বিশেষ রচনা। ২০১২ সালে আমরা পালন করেছিল সবার সেরা শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের ১২৫ তম জন্ম বার্ষিকী। আমাদের প্রিয় সেই হাসির রাজাকে নিয়ে থাকছে একটি রচনা। অন্যটি লেখা হয়েছে এক দুর্লভ চরিত্র বিজ্ঞানী ডঃ আনন্দ কুমার কে নিয়ে। অবশ্যই পড়ে দেখ এই দুটি রচনা।
গত কয়েক মাসে আমরা হারিয়েছি আমাদের খুব প্রিয় কয়েকজন বিখ্যাত মানুষকে ।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
গত পূজোর সময়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন কাকাবাবু আর সন্তুর স্রষ্টা আমাদের প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
পন্ডিত রবি শঙ্কর
গত ডিসেম্বর মাসে আমরা হারালাম বিশ্ববিখ্যাত সেতার শিল্পী পন্ডিত রবি শঙ্করকে। আমাদের পরিচিত জনপ্রিয় গান 'সারে জাঁহা সে অচ্ছা' এবং আকাশবানী ও দূরদর্শনের থিম মিউজিকের স্রষ্টা তিনি। আর সত্যজিৎ রায়ের 'পথের পাঁচালী'র সেই মিঠে বাঁশীর সুর কি আমরা ভুলতে পারি!
অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়
মাত্র কয়েকদিন আগেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন বিখ্যাত অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত্যুর সময়ে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। এত বছর বয়স অবধিও তিনি নিয়মিত ভাবে ছায়াছবি এবং টেলিভিশন সিরিয়ালে কাজ করে গেছেন।
ইচ্ছামতীর এই সংখ্যা থেকে চেহারাটা যে বদলাচ্ছে সে তো বুঝতেই পারছ। এই সংখ্যা থেকে ইচ্ছামতীর কোন ছড়া, গল্প বা অন্যান্য রচনা তোমার পছন্দ হলে তুমি সরাসরি কমেন্ট করতে পারবে, এবং শেয়ার করতে পারবে ফেসবুক, ট্যুইটার আর গুগল প্লাস-এর পাতায়। তোমার পছন্দের লেখাকে স্টার রেটিংও দিতে পারবে তুমি। পছন্দের লেখাটিকে সরাসরি ইমেল ও করতে পারবে বন্ধুদের কাছে। আপাততঃ ইচ্ছামতীর শুধুমাত্র এই সংখ্যাটিতেই এই সমস্ত ফিচার দেওয়া হল। ধীরে ধীরে পুরনো সব সংখ্যা গুলিতেও এই ফিচারগুলি দিয়ে দেওয়া হবে।
এইখানে আরো একটা কথা না বললেই নয়। ইচ্ছামতীর সমস্ত গল্প-কবিতা ও অন্যান্য রচনাকে সাজিয়ে তোলার জন্য মৌলিক আঁকা সবসময়ে সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই বেশ কিছুদিন ধরে ইচ্ছামতীকে সাজিয়ে তুলতে আমি ব্যবহার করছি কিছু অসাধারণ হাতে আঁকা ছবি। এগুলি সবই নেওয়া হয়েছে কিছু ফ্রি ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে। এই ছবিগুলিকে ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য, ইচ্ছামতীর তরফ থেকে দেশ বিদেশের সেই সমস্ত নাম-না-জানা শিল্পী বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই, যাঁদের আঁকা ছবিগুলি যেন মাঝে মাঝে কি কাকতালীয়ভাবেই আমাদের গল্পের বা ছড়ার বিষয়বস্তুর সাথে হুবহু মিলে যায়।
আজকের মত আমার লেখা শেষ করছি এইখানেই। কথা আর বাড়াব না। এবার তুমি উল্টে-পাল্টে দেখ নতুন ইচ্ছামতীর পাতা। সবার শেষে তোমার জন্য দিলাম ছোট্ট এক গোছা ফুল।বল তো এটা কোন গাছের ফুল?
ভাল থেক।
চাঁদের বুড়ি
শনিবার
২রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩
১৯শে মাঘ, ১৮১৯
ছবিঃ
উইকিপিডিয়া
ফেসবুক
এসভি১৫০ ওয়েবসাইট